রংপুরে ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে ভ্রাম্যমাণ আদালত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে ভ্রাম্যমাণ আদালত/ছবি: বার্তা২৪.কম

ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে ভ্রাম্যমাণ আদালত/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে অভিযান পরিচালনায় নেমে ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে পড়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আদালত পরিচালনাকারীদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করেছেন ব্যবসায়ীরা।

শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে রংপুর নগরীর জেলা পরিষদ মিনি মার্কেট ও নবাবগঞ্জ বাজারে অভিযানকালে এ ঘটনা ঘটেছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভ্রাম্যমাণ আদালত অস্বাভাবিকভাবে জরিমানা করেছে। এর প্রতিবাদে নবাবগঞ্জ বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাত বিন কুতুব বলেন, অভিযানের সময় বেশ কিছু দোকানে মূল্য তালিকা না থাকাসহ অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করতে দেখা যায়। এসময় মুগ্ধ ট্রেডার্স, মুন্না ডাল ঘর ও টুপি ডাল ঘরকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

করোনার অজুহাতে চাল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এ পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান এই ম্যাজিস্ট্রেট।

অভিযানের সময় রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সৈয়দ এনামুল কবীরসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে নবাবগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই জরিমানা বেআইনি। আদালত অন্যায়ভাবে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে জরিমানা আদায় করছে। এর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বাজারের সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

   

ময়মনসিংহে জাল ডলার প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
জাল ডলার প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আটক

জাল ডলার প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অভিযানে জাল ডলার প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করা হয়েছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জেলা গোয়েন্দা শাখা, ময়মনসিংহ (ডিবি) কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আটককৃতরা হলো-কেশবপুরের মৃত মীর হোসেনের ছেলে মো. ইদ্রিস আলী (৫০) ও ঈশ্বরগঞ্জের মৃত আঃ সোবহানের ছেলে মো. মোজাম্মেল হক (৪৫)।

এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে ত্রিশালের বালিপাড়া এলাকা হতে তাদের আটক করে। তাদের কাছ থেকে ৮৫টি কথিত জাল ডলার উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।

জেলা গোয়েন্দা শাখা,ময়মনসিংহ (ডিবি) ইনচার্জ ওসি মো. ফারুক হোসেন বলেন, ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় একটি জাল ডলার প্রতারক চক্র ডলারের লোভ দেখিয়ে সাধারণ লোকজনদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই শেখ গোলাম মোস্তফা রুবেলসহ একটি চৌকস টিম অভিযান পরিচালনা করে ত্রিশালের বালিপাড়া মোড় হতে ৮৫টি জাল ডলার কারবারি চক্রের সদস্য দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে। প্রতিটি ডলারের গায়ে THE UNITED STATES OF AMERICA এবং নিচে ONE HUNDRED DOLLARS লেখা রয়েছে।

ইনচার্জ (ওসি) ফারুক হোসেন আরও জানান, আটককৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ জাল ডলার ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। তার মধ্যে ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে একটি মামলাও আছে। এ চক্রের সাথে আরও যারা জড়িত রয়েছে, তাদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় মামলা দায়ের করে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

;

জলঢাকায় সাবেক মেয়রের ছেলে মেয়র হলেন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার উপ-নির্বাচনে সাবেক মেয়র ইলিয়াস হোসেন বাবলুর বড় ছেলে নাসিব সাদিক হোসেন নোভা বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি পেয়েছেন, ১২ হাজার ৫শ ৯১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফাহমিদ ফয়সাল কমেট চৌধুরী পেয়েছেন ৮ হাজার ৭শ ৬৭ ভোট।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ১৮টি ভোটকেন্দ্রে ১শ ১৭টি বুথে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিন প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বেসরকারি ফলাফলে মোট ৬৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ ভোটার ভোট প্রদান করেন।

নির্বাচনে তিনজন মেয়র প্রার্থী উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তারা হলেন, প্রয়াত সাবেক পৌর মেয়র উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বাবুলের ছেলে নাসিব সাদিক হোসেন নোভা (নারিকেল গাছ)। জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেট (রেল ইঞ্জিন) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জলঢাকা উপজেলা শাখার আমির ও বর্তমান জেলা কমিটির সুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক সাদের হোসেন (মোবাইল ফোন)।

প্রসঙ্গত, জলঢাকা পৌরসভার মোট ভোটার সংখা ৩৭ হাজার একশ ৯১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ৭শ ৭৪ জন এবং নারী ভোটার ১৮ হাজার ৪শ ১৭ জন।

গত ১৯ জানুয়ারি জলঢাকা পৌরসভার মেয়র ইলিয়াস হোসেন বাবলুর মৃত্যুতে মেয়র পদটি শূন্য হয়।

 

;

পুলিশের রেশনের ৩০০ বস্তা চাল গুদামে, ব্যবসায়ীকে জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার মধইল বাজারে পুলিশ সদস্যদের রেশনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া খাদ্য অধিদফতরের সিলযুক্ত ৩০০ বস্তা চাল মজুত করার দায়ে এক ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে জেলা গোয়েন্দা শাখা, ময়মনসিংহ (ডিবি) কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করে।

জানা যায়, সেদিন রাত ৮টার দিকে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পপি খাতুন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে উপজেলার মধইল বাজারের ভাই ভাই চাল আড়তের মালিক এনামুল হককে এ জরিমানা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পপি খাতুন বলেন, গোপন সূত্রে আমাদের কাছে খবর আসে উপজেলার মধইল বাজারের এক চাল ব্যবসায়ীর গুদামে সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল মজুত করা হয়েছে। খবর পেয়ে গতকাল শনিবার রাতে মধইল বাজারের ভাই ভাই চাল আড়তের গুদামে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গিয়ে গুদামে খাদ্য অধিদফতরের সিলযুক্ত ৩০ কেজি ওজনের ৩০০টি বস্তা পাওয়া যায়। ৩০০ বস্তায় মোট ৯০০০ হাজার কেজি (৯ মেট্রিক টন) চাল ছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যবসায়ী বলেন, খাদ্য অধিদফতরের সিলযুক্ত বস্তার ৯টন চাল তিনি জয়পুরহাট থেকে কিনেছেন। এসব চাল জয়পুরহাট জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া রেশনের চাল। রেশন কিংবা যে কোনো খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল এবং খাদ্য অধিদফতরের সিলযুক্ত বস্তায় চাল বিক্রয় ও বিপণন করা নিষিদ্ধ। এই অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীকে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম) প্রতিরোধ আইন-২০২৩-এর ৬ ধারায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

;

কেন টিকতে পারছে না প্রাইভেট এয়ারলাইন্স?



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করে ভারতের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইন্ডিগো। আজ তাদের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ৩৫৪টি। ভারত প্রায় দেড়শ কোটির জনসংখ্যার দেশ, ওখানকার মার্কেটও বড়। তাই তাদের সঙ্গে তুলনাটা ন্যায্য নাও মনে হতে পারে। আমাদের চেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ ও ছোট মার্কেট ভিয়েতনামের বেসরকারি এয়ারলাইন্স ভিয়েতজেট প্রতিষ্ঠার মাত্র ১৬ বছরে এখন ৭৭টি উড়োজাহাজের বহর তৈরি করেছে।

এবার বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে সবচেয়ে বৃহৎ বেসরকারি এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা ২৪টি। আর যদি দেশের বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সের দিকে তাকাই তাহলে মিলবে ধারাবাহিক ব্যর্থতার চিত্র।

১৯৯৭ সালে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম বেসরকারি এয়ারলাইন্স অ্যারো বেঙ্গল। যদিও তারা ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পায় দুই বছর আগে। ফ্লাইট চালু হওয়ার এক বছরের মধ্যে এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। একে একে এয়ার বাংলাদেশ, জিএমজি এয়ারলাইন্স, রয়েল বেঙ্গল এবং বেস্ট এয়ার যাত্রা শুরু করে। সবগুলো এয়ারলাইন্সই বন্ধ হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে সবাই অর্থ সংকটকে উল্লেখ করেন। দেশের ইতিহাসে এ পর্যন্ত ১৩টি প্রাইভেট এয়ারলাইন্স অনুমোদন পায়। এর মধ্যে দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ চালু হয় ২০০৭ সালে। খুব দ্রুততার সাথে একের পর এক উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত করে বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট চালু করে সাড়া ফেলেছিল তারা। এরপর পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিও হয় এটি। তবে শেষ পর্যন্ত সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালে রিজেন্ট এয়ার, ২০১৩ সালে নভোএয়ার ও ২০১৪ সালে ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরু করে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত টিকে আছে নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা ও ২০২২ সালে চালু হওয়া এয়ার অ্যাস্ট্রা।

যাত্রী বাড়ছে

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, ২০২৩ সালে দেশের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার করেছেন, এক কোটি ৭৪ লাখ যাত্রী। যাদের বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারী। অন্যদিকে ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছিল এক কোটি। ২০১৯ সালে এই সংখ্যা ছিল ৮৫ লাখ। আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আকাশপথের যাত্রী সংখ্যা হবে দ্বিগুণ।

এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক প্রতিবেদন বলছে, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দুই রুটেই ২০২২-২৩ অর্থবছরে আকাশপথে যাত্রী পরিবহন বেড়েছে ৩২ শতাংশ।

সবগুলো পরিসংখ্যানই বলছে, আকাশপথে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। তারপরেও কেন দেশের বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সগুলো টিকে থাকতে পারছে না। তা অনুসন্ধানে নেমে পাওয়া গেছে নানা কারণ।

কেন প্রতিযোগিতায় টিকছে না

বিশেষজ্ঞদের মতে, আকাশপথে যাত্রী বাড়ায় বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো এই চাহিদা পূরণে কার্যক্রম সম্প্রসারণ করতে পারতো। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার অভাবে তা হয়নি। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করতে অপেক্ষা করতে হয় মাসের পর মাস। এয়ারলাইন্সগুলো বিমানবন্দরে খুচরা যন্ত্রাংশ রাখতে না পারার কারণে ফ্লাইট সূচিও ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হয়।

এয়ারলাইন্সগুলোর অভিযোগ, বিমানের নির্দিষ্ট ওয়্যারহাউজ সুবিধা ছাড়াও হ্যাঙ্গারও রয়েছে। যে কারণে সার্ভিসিং ও খুচরা যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপনে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো পিছিয়ে পড়ছে। সেই সাথে নিয়ন্ত্রণমূলক ত্রুটি, অত্যধিক পরিমাণে শুল্ক, জেট ফুয়েলের উচ্চ মূল্য বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোকে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিচ্ছে। এমনও অভিযোগ রয়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে দেওয়া অযৌক্তিক পৃষ্ঠপোষকতাও এর পেছনে দায়ি।

সারচার্জ বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে একটি আতঙ্ক। দীর্ঘ এই সময়ে যেসব এয়ারলাইন্স বন্ধ হয়েছে এর পেছনে অন্যতম কারণ ছিল সারচার্জ। তাছাড়া জেট ফুয়েলের উচ্চমূল্য, অযৌক্তিক হার ট্যাক্স, বিশেষ করে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেনারেটর, বিভিন্ন ধরনের এলসিডি প্যানেল, ককপিটে ব্যবহৃত কম্পিউটার ডিসপ্লেসহ বহু যন্ত্রাংশ অত্যন্ত উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়। এসব যন্ত্রাংশের জন্য ১৫ থেকে ১৫০ শতাংশ ট্যাক্স দিতে হয়।

অনেক ব্যবসায়ী অন্য ব্যবসায়ের মতো মনে করে এই খাতে বিনিয়োগ করে। কিন্তু এয়ারলাইন্স ব্যবসা কিছুটা জটিল। শুরুতে একটি বা দুটি উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। পরবর্তীতে যখন সি চেকের সময় আসে তখন যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন হয় তা সময়মতো করতে পারে না মালিকপক্ষ। তখন উড়োজাহাজ বসিয়ে রেখে লোকসান গুনতে হয়। সেই সাথে যাত্রীরা ওই এয়ারলাইন্সের প্রতি আস্থা হারাতে থাকে।

কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেসরকারি খাতের এয়ারলাইন্সগুলোতে দক্ষ ব্যবস্থাপনার অভাব রয়েছে, তা অস্বীকার না করার কোনো সুযোগ নেই। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। সরকার ও বেবিচকের সহযোগিতারও অভাব রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে এ ধরনের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়ার নজির রয়েছে। তাছাড়া শুরুর দিকে অনেক এয়ারলাইন্সকে পার্কিং চার্জ, অ্যারোনটিক্যাল ও নন-অ্যারোনটিক্যাল চার্জ মওকুফ করা হয় যাতে তারা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ও বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, এয়ারলাইন্স ব্যবসা সহজ নয়। অনেকেই ভাবেন এটি লাভজনক ব্যবসা। সঠিক উড়োজাহাজ নির্বাচন, রুট প্ল্যানিং লাগবে। সেই সাথে দক্ষ ব্যবস্থাপনা।

তাছাড়া শুরুতে হয়তো একটি উড়োজাহাজ দিয়ে যাত্রা শুরু করে, পরবর্তীতে এই উড়োজাহাজ যখন মেজর চেকে যায়, তখন বড় অঙ্কের টাকা প্রয়োজন হয়। ওই সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী বিনিয়োগে ব্যর্থ হন।

বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম বলেন, তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ রুটে পার্কিং এবং বিমান চলাচল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন চার্জ অনেক। বিভিন্ন কারণে এসব চার্জ বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পরিশোধ করা না গেলে এয়ারলাইন্সগুলোকে ইন্টারেস্টসহ সেই অর্থ পরিশোধ করতে হয়।

;