রাজধানীর ডেমরায় বাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ৫ বছর বয়সি এক শিশুকে কামড়ে তার মুখ ও মাথা ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে বেওয়ারিশ তিনটি কুকুর।
রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে ডেমরার বক্সনগর আলফালা স্কুলের পাশে তাদের বাসার গেটের সামনেই এই ঘটনা ঘটেছে। মুমূর্ষু অবস্থায় শিশু মাহিনুর আক্তারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অটোচালক মতিউর রহমান ও কুলসুম বেগম দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে মাহিনুর ছোট। সে তার পরিবারের সঙ্গে আলফালা স্কুলের বিপরীত পাশের একটি বাসায় থাকে।
শিশুর মা জানান, দুপুরের বাসার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল মাহিনুর। হঠাৎ একটি কুকুর প্রথমে তাকে আক্রমণ করে। কুকুরটি তার মাথায় কামড়ে ধরে। পরে আরও ৩টি কুকুর তার সারা মুখে কামড়াতে থাকে। শিশুটির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে কুকুরগুলোকে তাড়ানোর চেষ্টা করে। তবে কুকুরগুলো শিশুটিকে না ছাড়ায়, পরে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে সেগুলোকে তাড়ানো হয়। পরে বাবা মাকে খবর দিলে তারা শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
ঢাকা মেডিকেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির সারা মুখমন্ডলে কুকুরের আঁচড় ও কামরানোর কারণে মাংসগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়া মাথায়ও কামড়ের চিহ্ন আছে। তার অবস্থা গুরুতর বলে জানান চিকিৎসকরা।
১৪ ঘণ্টা পর নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
সোমবার (১৩ মে) সকাল ৮টার পর থেকে বিমান ওঠানামা শুরু হয়। তবে সকাল ৯ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রানওয়ের বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ত্রুটি শনাক্ত করতে পারেনি বিমানবন্দরের প্রকৌশল বিভাগ।
এর আগে রোববার (১২ মে) সন্ধ্যা ৬ টার পর থেকে নাইট ল্যান্ডিং সিস্টেম কাজ না করায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভো এয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি করে ফ্লাইট বাতিল করা হয়। ফলে ঢাকাগামী দুই শতাধিক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সূত্র জানায়, বিমানবন্দর রানওয়েতে উন্নয়ন কাজ চলছিল। এ অবস্থায় কোথাও বৈদ্যুতিক সংযোগ কাটা পড়ে। এরপর থেকে রানওয়ের বাতিগুলো জ্বলছে না। বিমানবন্দরের প্রকৌশল বিভাগ বিষয়টি জানার পর ত্রুটি খুঁজে দেখছে। রাতভর চেষ্টা করে ত্রুটি শনাক্ত করতে পারেনি তারা।
বিমানবন্দরের ম্যানেজার সুপ্লব কুমার ঘোষ বলেন, আজ সকাল ৮ টা ১ মিনিটে নভোএয়ার, ৮টা ৭ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান ও ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি করে ফ্লাইট অবতরণ করে। দিনের বেলায় বিমান চলাচলে কোনো সমস্যা নেই। চলমান সমস্যা নিরসনে বিশেষজ্ঞ প্রকৌশল দল কাজ করছে। আশা করি সন্ধ্যার মধ্যে সমস্যা সমাধান হবে।
বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়ার কারণে ভালো নেই মেগাসিটি ঢাকা। জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে দূষিত হচ্ছে বিশ্বের ছোট- বড় বিভিন্ন শহর। সোমবার (১৩ মে) ঢাকার বাতাসে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। তবে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ভারতের দিল্লি।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৪৯ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা, যা সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ১৮১ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে দিল্লি, ১৭৮ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপোলিস শহর, ১৬৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। আর চতুর্থ অবস্থানে থাকা পাকিস্তানের লাহোর শহরের স্কোর ১৫৫।
একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।
বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।
দেশের সব বিভাগেই ঝড়বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবুও সারা দেশে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পশ্চিমা লঘুচাপের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। দেশের কিছু কিছু জায়গায় ঝড়বৃষ্টির প্রবণতা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনার ঈশ্বরদীতে রোববার (১২ মে) দেশের সর্বোচ্চ ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এদিন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস বলছে, সারা দেশে সোমবার দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। আগামীকাল মঙ্গলবার (১৪ মে) দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে। এ ছাড়া এদিন রাত ও পরদিন বুধবার (১৫ মে) দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে।
বর্ধিত ৫ দিন তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ সময়ের শেষ দিকে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সাতক্ষীরায় গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, গোলাপখাসসহ বিভিন্ন জাতের আম বাজারে উঠতে শুরু করেছে। আমে আমে সয়লাব বাজার। যেদিকে তাকায় সেদিকে আম আর আম। ভৌগোলিক অবস্থার কারণে আগে ভাগে বাজারে আসে সাতক্ষীরার আম। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হলেও সঠিক দাম পাচ্ছে না বলে অভিযোগ অনেকের। এদিকে অনেকেই বাজারে আম নিয়ে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিক্রি হচ্ছে না বলে। সঠিক দাম ও ক্রেতা না থাকায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা।
সোমবার (১৩ মে) সাতক্ষীরা বড়বাজারে গেলে দেখা যায়, আমের বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার মধ্যে দরকষাকষি করছে অনেকেই। গোবিন্দভোগ ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা মণ, গোপালভোগ ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। তবে অনেকেই বলছেন আমের সাইজ অনুযায়ী দামদর করা হচ্ছে। যাদের আমের সাইজ অনেক ভালো তাদের দরও বেশি হচ্ছে। আবার অনেকেই অভিযোগ করে বলছেন বাজার সিন্ডিকেটের জন্য আমের সঠিক মূল্য পাচ্ছি না এবং তাদের কারণে বাইরের কোনো ব্যবসায়ী বাজারে ঢুকতে পারছে না। যার কারণে আমের সঠিক মূল্যও আমাদের দিচ্ছে না।
আম বিক্রি করতে আসা মহিদুল ইসলাম বার্তা২৪.কম’কে বলেন, এবার ১০ লক্ষ টাকার বাগান কিনেছি। আশা করছি আগের বারের তুলনায় এবার অনেক লাভবান হতে পারবো। কারণ এবার আমের ফলন অনেক ভালো। যার কারণে গাছে প্রায় দেড় হাজার মণ আম হবে বলে তিনি আশাবাদী।
আম বিক্রি করতে আসা সামাদ সদ্দার বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ফলন কম হওয়ায় দাম ভালো পাচ্ছি তবে ক্রেতা নেই। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে ক্রেতা সংকট। তাদের কারণে বাজারে বাইরে থেকে ক্রেতা ঢুকতে পারছে না।
ফলন কম হওয়ার কারণে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবছর প্রচুর গরম পড়েছে যার কারণে আম গাছ থেকে ঝড়ে গেছে। মুকুল আসা থেতে শুরু করে আম পাড়া পর্যন্ত এবার খুব গরম ছিল যার কারণে ফলন এবার অনেকটাই কম।
আম বিক্রি করতে আসা জাকির আক্ষেপ করে বলেন, সকাল ৬টায় আম নিয়ে আসছি বাজারে তবে এখনও কেউ দাম করেনি। বাজারে সিন্ডিকেট ঢুকে গেছে কিন্তু দেখার কেউ নেই। আমের সাইজ ভালো, আমও ভালো কিন্তু কেনার মানুষ নেই। এই কষ্ট করে ভ্যান ভাড়া করে নিয়ে এসেছি এখন যদি ফিরে নিয়ে যেতে হয় তাহলে আবার বাড়তি খরচ। আমার মতো অনেক আমচাষি ফিরে যাচ্ছে আম বিক্রি না হওয়ার কারণে। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এদিকে একটু খেয়াল রাখবেন।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, জেলায় এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এরমধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৮ হেক্টর, তালায় ৭১৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৮০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৮২৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৪৫ হেক্টর ও শ্যামনগরের ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। জেলায় সরকারি তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগান ও ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি রয়েছেন। সবমিলে ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় কয়েকটি জাতের আম দিয়ে ৯ তারিখ থেকে সাতক্ষীরায় আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ২২ মে হিমসাগর, ২৯ মে ল্যাংড়া ও ১০ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ হবে। মনে রাখতে হবে গাছের সব আম একসাথে পাকে না। সুতরাং আমের রং আসার আগে না পাড়ার অনুরোধ জানান তিনি।