বিদেশি গরু আমদানি না করার দাবি খামারিদের



ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইল: সামনে কোরবানির ঈদ। তাই গরু মোটাতাজা করতে ব্যস্ত সময় পার করছে নড়াইল জেলার খামারিরা। দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করায় এখানকার গরুর চাহিদা রয়েছে জেলার বাইরেও। প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার খামারিরা ও কৃষকরা গরু মোটাতাজা করে থাকেন। বিদেশি গরু হাট-বাজারে না আসলে এ বছরও লাভবান হবেন খামারিরা। বিদেশি গরু আমদানি না করার দাবি জেলার খামারিদের।

জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার কৃষক ও খামারিরা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করে থাকে। চলতি বছরে ৩১ হাজার পশু মোটাতাজা করছে খামারিরা। যার মধ্যে ২৩ হাজার ৪শ দেশি গরু এবং ৭ হাজার ৬শ ছাগল রয়েছে। খামারি ছাড়াও জেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি আয়ের জন্য বাড়িতে একটি দুটি করে গরু মোটাতাজা করে থাকে। বর্তমানে জেলায় মোট রেজিস্ট্রিকৃত গরুর খামার রয়েছে ৩৯৫টি (কোনো কৃষকের তিনটি গরুর বেশি থাকলে একটি খামার ধরা হয় )। দেশীয় পদ্ধতিতে কৃষকরা গরু মোটাতাজা করেন, তাই এই জেলার গরুর চাহিদা বেশি। গত ঈদে আকার ভেদে প্রতিটা গরু ৩৫ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন এখানকার কৃষকরা।

জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার চাকই, সিংগাশোলপুর, মির্জাপুর, শাহবাদ, জুড়ুলিয়া, ডুমুরতলা, লোহাগড়া উপজেলার শিয়েরবর, চাচই, কোলা, কুমড়ি, দিঘলিয়া, মল্লিকপুর, মাকড়াইল, লাহুড়িয়া, কালিয়া উপজেলার বড়দিয়া, মহাজন, টোনা, খাশিয়াল, বাবরা গ্রামের কৃষক ও খামারিরা অন্যন্য এলাকা থেকে পরিমাণে বেশি গরু মোটাতাজা করে থাকে। জেলায় মোট যে গরু মোটাতাজা করা হয় তার ৫৫ ভাগ করে খামারিরা আর বাকি ৪৫ ভাগ জেলার সাধারণ কৃষকরা।

পৌরসভার ডুমুরতলা এলাকার খামারি হাবিবুর রহমান বলেন,‘আমার খামারে ৩০টি গরু রয়েছে। গরুগুলোকে আমরা দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করে থাকি। খড়-ভুসি-খৈল এবং ঘাস খাইয়ে গরু পালন করি। এখানে কোনো প্রকার রাসায়নিক সার বা ইনজেকশন ব্যবহার করা হয় না।‘

সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের আমিন হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছরই আমি কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে থাকি। এ বছরও ৬ মাস আগে ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে ৪টি বাছুর কিনে লালন-পালন করছি। আশা করছি কোরবানিকে সামনে রেখে একটি গরু ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা দামে বিক্রি করতে পারবো।’

/uploads/files/z5hl4EHAsGafZ3ir35SR2McO9nWeItjd0HEZngxz.jpeg

চাকই গ্রামের কৃষক আরাফাত বলেন, ‘কোরবানিকে সামনে রেখে আমাদের এলাকায় প্রায় বাড়িতেই গরু মোটাতাজা করা হয়। সারা বছর খাবার হিসাবে কাজের ফাঁকে বিল থেকে কাঁচা ঘাস কেটে এনে খাওয়ানো হয় এবং ঈদের পূর্বে খড়, খৈল, কুঁড়া ও ভুষি খাওয়ানো হয়।’

লোহাগড়া উপজেলার শরশুনা গ্রামের খামারি আকবার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ গরু মোটাতাজা করে ঈদের সময় একটু বেশি দামে বিক্রি করে থাকেন। গত বছর ভারতীয় গরুর আমদানি কম থাকায় দেশি গরুর চাহিদা বেশি ছিল। এ বছরও যদি বাইরের গরু আমদানি করা না হয় খামারিরা লাভবান হবে। আর বাইরের গরু আমদানি করলে খামারিরা লোকসানে পড়বে।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মারফি হাসান জানান, বছর দশেক পূর্বে নড়াইলের কৃষকরা অল্প পরিসরে কোরবানির জন্য গরু মোটাতাজা করত। সে সময় সরকার বিদেশ থেকে গরু আমদানি করায় জেলার অনেক খামারি ও কৃষকরা গরুর ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হত। গত কয়েক বছর ধরে সরকার বিদেশ থেকে গরু আমদানি না করায় জেলার স্থানীয় খামারিদের গরুর চাহিদা বাড়ছে। এতে করে স্থানীয় খামারি ও কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। তাই দিন দিন খামারির সংখ্যাও বাড়ছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে কৃষক বা খামারিদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। এছাড়া কৃষক ও খামারিদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। আশা করা যাচ্ছে এ বছরও জেলার খামারি ও কৃষকরা লাভবান হবে।

   

কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন, গুলিবিদ্ধ ১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে এবার রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে পুলিশের সঙ্গে অটোরিকশা চালকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময় কালশী মোড়ের ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। এতে ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রোববার (১৯ মে) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশের বক্সে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোখলেসুর রহমান বলেন, কালশীতে আন্দোলনকারীরা সহিংস আন্দোলন করছে। তারা কালশী মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ বক্সে আগুন দিয়েছে। এটি ট্রাফিক পুলিশের একটি বক্স। আমরা ঘটনাস্থলে আছি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি।

এর আগে অটোরিকশা চালকরা এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া মিরপুর বেনারসি পল্লীর ৪ নম্বর সড়কে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে কয়েকট গাড়িও ভাঙচুর করে অটোরিকশা চালকরা। এ সময় বাসে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে বাস থেকে নেমে পড়েন। 

দুপুর সোয়া একটার দিকে অটোরিকশা চালকরা কালশী সড়ক আটকে দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় অনেকের হাতে লাঠি দেখা যায়। তারা গাড়ি ভাঙচুর করতেও উদ্যত হয়। তারা সড়কের মাঝখানে রশি টানিয়ে দিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সড়কে তারা গাড়ি আড়াআড়িভাবে রাখতে বাস চালকদের বাধ্য করেন। এতে ওই সড়ক ব্যবহারকারী হাজার হাজার যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন। গন্তব্যে যেতে মানুষজনকে পায়ে হেঁটে রওনা দিতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর আড়াইটার দিকে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরে পুলিশ একপাশ দিয়ে বাস ছেড়ে দিলেই উত্তেজিত অটোরিকশার চালকেরা লাঠি ও ইট-পাটকেল ছুড়ে বাসে ভাঙচুর চালায়। ওই সময় বাসে থাকা যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে দ্রুত নেমে পড়েন। দুপুরের ওই ঘটনার সময় আন্দোলনকারীরা মিরপুর-১০ নম্বরে বিআরটিসি ও আলিফ পরিবহন ছাড়াও কয়েকটি বাসে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, গণপরিবহনে ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন মিরপুর জোনের ডিসি জসিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ভাঙচুরের সঙ্গে যারা জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশ অনেক ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে সরিয়ে দিলেও পরে তারা আবারও ভাঙচুর চালায়। এদের পেছনে কেউ আছে কিনা, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।

;

চুয়াডাঙ্গায় নকল স্যালাইন জব্দ, দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় নকল ওরস্যালাইন বিক্রির অপরাধে দুই প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রোববার (১৯ মে) দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া ও হাটবোয়ালিয়া এলাকায় অভিযান চালান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চুয়াডাঙ্গা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সহল আহমেদ। অভিযানে সার-কীটনাশক, মুদি দোকান, স্যালাইনসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের প্রতিষ্ঠানে তদারকি করেন তিনি।

অভিযান সূত্রে জানা যায়, ভাংবাড়ীয়া এলাকায় মেসার্স মারিফুল স্টোর নামক প্রতিষ্ঠানে তদারকিকালে এসএমসির ওরস্যালাইন এন-এর নকল স্যালাইন বিক্রয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। এসময় প্রায় ১ কার্টুন (৫০০ প্যাকেট) নকল স্যালাইন জব্দ করা হয়। এছাড়া অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রয় ও সারের ক্রয়-বিক্রয় রসিদ সংরক্ষণ না করার অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. মারুফুল ইসলামকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪১ ও ৪৫ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পরবর্তীতে মারুফুলকে নিয়ে তার দেওয়া তথ্যমতে নকল ওরস্যালাইন-এর সাপ্লায়ার মেসার্স লিটন স্টোর নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটির মালিক লিটনুজ্জামান প্রথমে নকল স্যালাইন বিক্রয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তার বাড়ি ও গোডাউন তল্লাশি করতে চাইলে এক পর্যায়ে তিনি নকল স্যালাইন বিক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করেন।

পরে তার দেওয়া তথ্যমতে তার বাড়ি থেকে ৬ কার্টুন (৩ হাজার প্যাকেট) নকল এসএমসির ওরস্যালাইন এন জব্দ করা হয়। নকল ভেজাল স্যালাইন বিক্রয়ের অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক লিটনুজ্জামানকে ৪১ ধারায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং জব্দ করা নকল স্যালাইন আগুনে পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ জানান, সবাইকে যথাযথভাবে আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। প্রতিনিয়ত জেলার বিভিন্ন স্থানে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসময় কোনো পণ্য ক্রয়ের আগে ভালো করে যাচাই-বাছাই করে কেনার জন্য ভোক্তাদের অনুরোধ করেন। অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতায় ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একটি টিম।

;

গৌরীপুরে ৭ দোকান আগুনে পুড়ে ছাই



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গৌরীপুরের শ্যামগঞ্জ বাজারে সাতটি দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা। অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও সূত্রপাত সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রোববার (১৯ মে) ভোররাতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে সাংবাদিক তিলক রায় টুলুর মার্কেট রয়েছে।

রোববার ভোররাতে ওই মার্কেটে আবুল মিয়ার লেপ-তোশকের দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই সে আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে মালামালসহ সাতটি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। খবর পেয়ে নেত্রকোনা, পূর্বধলা ও গৌরীপুর ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ বলেন, আমরা রাতে দোকান ভালো করে পরিষ্কার করে সব দেখেশুনে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যাই। পরে পাহারাদার ও অন্যান্য লোকজনের ডাকাডাকির পরে বের হয়ে দেখি, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে।

তিলক রায় টুলু বলেন, আমাদের মার্কেটে ১৫টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে আগুনে মালামালসহ সাতটি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দুই কোটি টাকা।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। আমরা চাই, পুলিশ তদন্ত করে বেরে করুক এটা দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা।

নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট প্রধান খানে আলম জানান, এ ব্যাপারে আবেদন করলে আমরা তদন্ত করে বলতে পারবো, ঘটনাটি নাশকতা নাকি শর্টসাকিট থেকে বা অন্যকিছু থেকে আগুন লেগেছে।

গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত করে দেখবে, আসলে এটি নাশকতা নাকি অন্যকিছু।

;

শতভাগ ই-ফাইলিং নিশ্চিতে কর আহরণ বাড়বে ৫ শতাংশ: সিপিডি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

শতভাগ ই-ফাইলিং নিশ্চিত করতে পারলে কর আহরণ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পাঁচ শতাংশ বাড়বে বলে মনে করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

এর ফলে, প্রথম বছরেই কর আহরণ ৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং চতুর্থ বছরে ৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার বাড়বে, যা বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী ৯০ হাজার ৮৬২ কোটি টাকার সমান।

‘বাংলাদেশে কর ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন: পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক এক ডায়ালগে রোববার (১৯ মে) এই তথ্য তুলে ধরেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

রাজধানীর একটি হোটেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় আয়োজিত ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বাড়াতে না পারায় অর্থনীতির জন্য বিপদজনক একটা পরনির্ভরশীলতা গড়ে উঠছে। এর ফলে বর্তমানে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) পুরোটাই ঋণ নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সরকারের পরিচালনা ও অনুন্নয়ন ব্যয় মেটাতে রাজস্ব আহরণের পুরোটাই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে রাজস্ব আহরণের কোন অর্থ উন্নয়নে ব্যয় করা যাচ্ছে না।

সিপিডির এই সম্মাননীয় ফেলো বলেন, সরকারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় রাজস্ব জিডিপি অনুপাত ২০২০ সালের মধ্যে ১৪ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য থাকলেও অর্জনের ধারে কাছেও ছিল না। চলতি অর্থবছরে জিডিপির ৯ শতাংশের বেশি কর আহরণের যে লক্ষ্য রয়েছে তা অর্জন করাও সম্ভব হবে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, জিডিপির ১৪ শতাংশ কর আহরণ করতে পারলে এ সময়ে এসেও সরকারের বাজেট বাস্তবায়নে এটা পয়সাও ঋণ করতে হবে না।

কর আহরণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সক্ষমতা বাড়ানো, দক্ষ জনবল ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, শতভাগ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে অন্যান্য পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে কর আহরণ ১৬৭ বিলিয়ন ডলারে উঠবে।

আর প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে না পারলে ওই সময়ে কর আহরণ হবে সর্বোচ্চ ৯০ বিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার কর আহরণ প্রায় ৮৬ শতাংশ বাড়াতে সহায়তা করবে।

ডায়ালগের শুরুতেই সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, দেশের চলমান উন্নয়ন ধরে রাখতে বড় ধরনের বিনিয়োগ দরকার। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিনিয়োগের চাহিদা বাড়লেও এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সঞ্চালন বা কর আহরণ বাড়ছে না।

এরই মধ্যে বহিস্থ খাত থেকে কিছু চাপ আসছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে আসার পর বিদেশি ঋণে সুদের হার বাড়বে। তাছাড়া বিদ্যমান ঋণের পরিশোধ ও সুদ বাবদ বড় একটা অর্থ চলে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের কোনই বিকল্প নেই।

কর আহরণে সমস্যাগুলো খুবই পুরাতন এবং এগুলো ইতোমধ্যেই চিহ্নিত আছে দাবি করে তিনি বলেন, কর ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করতে এনবিআরকে শক্তিশালী করতে হবে। দক্ষ জনশক্তি ও প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

‘মানুষ কর জালে আসতে একটা ভয়ের মধ্যে থাকে। কর আহরণ ব্যবস্থাকে সহজ করে করদাতাদের এই ভয় দুর করতে হবে, বলেন ড. ফাহমিদা খাতুন।

অনুষ্ঠানে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বক্তব্য রাখেন।

;