লোকসানের বৃত্তে পাটের সুদিন ফিরে আসার স্বপ্ন অধরা!



মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
পাট কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিক/ছবি: বার্তা২৪.কম

পাট কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিক/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পণ‌্যের মোড়কে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক আইন আছে ঠিকই কিন্তু প্রয়োগ নেই বললেই চলে। দেশে পাট পণ্য উৎপাদনে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প আছে কিন্তু বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের উদ্যোগ নেই। এতে পাট ও পাটজাত পণ্যের সুদিন ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে বহুকাল ধরে। লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছেন না কৃষক, পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও রফতানিকারকেরা।

লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছেন না কৃষক

খুলনা বিভাগীয় পাট অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, পাট ও পাটজাত পণ্যের সুদিন ফিরিয়ে আনতে ২০১০ সালে মোড়কে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক আইন প্রণয়ন করে সরকার। এর ফলে দেশে প্রতিবছর ১’শ কোটি পাটের বস্তার চাহিদা সৃষ্টি হয়। ধাপে ধাপে প্রথমে ৬টি এরপর মোট ১৯টি পণ্যের সংরক্ষণ ও বিপণনে পাটের মোড়ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। শুরুতে আইন প্রয়োগে পাট মন্ত্রণালয় সচেষ্ট থাকলে সময়ের আবর্তে দীর্ঘ ৯ বছরে ঝিমিয়ে পড়েছে সে উদ্যোগ।

পাটের বস্তা তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিক

আরো জানা যায়, ২০১৫ সালে ১৯টি পণ্যে পাটের বস্তার ব্যবহারে সরকার কড়াকড়ি আরোপ করলে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলি লোকসানের বৃত্ত থেকে বেরিয়া আসার স্বপ্ন বুনতে থাকে। ২০১৬ সালের প্রথম দুই মাসে খুলনা যশোর অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল উৎপাদন করে প্রায় ৮০ লাখ বস্তা। কিন্তু বিক্রি হয় মাত্র ১০ লাখ বস্তা। কারখানাগুলোতে বহুমুখী পণ্য উৎপাদনে ব্যর্থতা ও বিজেএমসির ত্রুটিপূর্ণ বিপণন ব্যবস্থার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন।

পাটের দড়ি দিয়ে বস্তা সেলাই করছে এক শ্রমিক

এছাড়া উচ্চ আদালতের নিদের্শে ৭টি পণ্যে (চিনি, ডাল, আটা, ধান, গম, ভুট্টা, চাল) পাটের বস্তা ব্যবহারে স্থগিতাদেশের পর বন্ধ হয়ে যায় চটের বস্তার ব্যবহার। একইসঙ্গে আমদানি পণ্যেও মানা হচ্ছেনা পণ্যের মোড়কীকরণ আইন।

পাট অধিদফতরের মুখ্য পাট পরিদর্শক রাধে শ্যাম নাথ বলেন, মোট ১৯টি পণ্যে পাটের মোড়ক ব্যবহারের কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের রিটের প্রেক্ষিতে ৭টি পণ্যের মোড়কে ব্যবহারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা দেয়। পরে চালের ওপর থেকে তা প্রত্যাহার করে। ফলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় চিনি, ডাল, আটা, ধান, গম ও ভুট্টার সংরক্ষণ-বিপণনে পাটের বস্তা ব্যবহার বাধ‌্যতামূলক করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে বিদেশ থেকে আসা পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ ১২টি পণ্যেও ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে পাটের বস্তা ব্যবহার করছে না। বাজার ব্যবস্থাপনা ও পণ্যের সংকট রোধে এর বিরুদ্ধেও কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে মোড়কে পাট পণ্যের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন ব্যহত হচ্ছে।

যশোর অঞ্চলের ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল উৎপাদন করে প্রায় ৮০ লাখ বস্তা

পাট অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৬০৮ ভ্রাম্যমাণ আদালত ১.৫১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড ও দুজনকে কারাদণ্ড দিয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৪৭৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ১.১১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১০৪৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬৩.৩১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮৯৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ৬৫.৩১ লাখ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছে।

বিজেএমসির আঞ্চলিক সমন্বয় কর্মকর্তা বণিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, বিপণন ব্যবস্থা ভালো করতে ও পাটখাত স্বনির্ভর হবার জন্য আমার প্রযুক্তি পাল্টাতে হবে। একইসঙ্গে লোকবল বাড়াতে হবে এ খাতে। পণ্যে পাটের মোড়ক বাধ্যতামূলক আইন প্রণয়নের উদ্যোগে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো লোকসানের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার স্বপ্ন দেখেতে থাকে। কিন্তু বহুমুখী পণ‌্য উৎপাদন ব্যবস্থা চালু না হওয়া ও বিজেএমসির বিপণন ব্যবস্থায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকায় মিলগুলো প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পিছিয়ে পড়েছে। ২০১৫ সালে থেকে যেখানে মিলগুলোর লাভে যাওয়ার কথা, সেখানে গত পাঁচ বছরে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ জুট মিলে লোকসান ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।

মাত্র ১০ লাখ পাটের বস্তা বিক্রি হয়

 

কাঁচাপাট রফতানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশে জুট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, বিগত ৫ বছরে পাকিস্তান, ভিয়েতনামসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে কাঁচাপাট রফতানি বেড়েছে। গতবছর সরকার কাঁচাপাট রফতানি বন্ধ ঘোষণা করায় অধিকাংশ বিদেশি ক্রেতাই এখন আর বাংলাদেশ থেকে পাট কিনতে চান না। ফলে কাঁচাপাটের বাজার এখন ভারত নির্ভর যার সুবিধা নিচ্ছে ভারতীয় ক্রেতারা, লোকসান গুনতে হচ্ছে বাংলাদেশের রফতানিকারকদের।

কারখানায় মজুদ পাটের বস্তা

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ শহিদুল ইসলাম জানান, বিগত বছর‌ে খুলনা অঞ্চলের ১৪০ জনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ২’শতাধিক ব্যবসায়ী কাঁচাপাট রফতানি করতো। কিন্তু ২০১৯ সালে কাঁচাপাট রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে অধিকাংশ রফতানিকারক লোকসানে পড়ে এবং ব‌্যাংকে খেলাপি হয়ে পড়ে। ব্যববসায়ীদের প্রণোদনা দিতে প্রধানমন্ত্রী ও পাটমন্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংগুলোকে কাঁচাপাট রফতানিকারকদের ব্লকঋণ সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু অধিকাংশ ব‌্যাংক তা বাস্তবায়ন না করায় পুঁজি সংকটে বর্তমানে দেশে মাত্র ২০ জন রফতানিকারক কাঁচাপাট রফতানি করছে।

বর্তমানে দেশে মাত্র ২০ জন রফতানিকারক কাঁচাপাট রফতানি করছে

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম পিয়াস জানান, অর্থ সংকটে অধিকাংশ ব্যবসায়ী ফড়িয়াদের টাকা দিতে পারছে না। ফলে ফড়িয়ারা কৃষকদের কাছ থেকে কেনা পাটের দামও পরিশোধ করছে না। পাট ও পাটজাত পণ্যের সুদিন ফিরেয়ে আনতে যে আইন আছে তার সুষ্ঠু প্রয়োগ না থাকায় ব্যবসায়ী থেকে কৃষক সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতিতে বিরুপ প্রভাব পড়ছে যা কাম্য নয়।

   

বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহী চীন: কৃষিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহী চীন: কৃষিমন্ত্রী

বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহী চীন: কৃষিমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে এ বছরই আম নিতে চেয়েছে চীন। সেইসঙ্গে চীনের একটি এক্সপার্ট প্রতিনিধি দল আম পাকার সময়ে আম বাগান ও উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

তিনি বলেন, চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম দিকে প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসতে চায়। প্রতিনিধি দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চীনের কাস্টমস বিভাগ বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করবে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সচিবালয়ের নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন।

এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী, যুগ্মসচিব মো. মাহমুদুর রহমান, চীনা দূতাবাসের ইকোনমিক ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর সঙ ইয়াং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিতে চীনের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিকে আধুনিক ও যান্ত্রিকীকরণ করতে চীনের বিনিয়োগ ও কারিগরি সহযোগিতা প্রয়োজন। বিশেষ করে দেশের কৃষকেরা যাতে কম দামে আধুনিক কৃষিযন্ত্র পেতে পারে, এক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ, চীন থেকে তুলনামূলক কম দামে আমরা যন্ত্র কিনতে পারি।’

এর আগে দুপুরে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন বৈঠক করেন। বৈঠকে কৃষিখাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কৃষি গবেষণা জোরদার ও প্রযুক্তি বিনিময় বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

নেদারল্যান্ডস সরকারের উদ্যোগে ময়মনসিংহের ভালুকায় পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার নির্মাণ ও চালুর বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। এ সংরক্ষণাগারে সারা বছর পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যাবে বলে জানানো হয়।

এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘পেঁয়াজ আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফসল। পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে আমরা পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণে গুরুত্বারোপ করছি। নেদারল্যান্ডস সরকারের উদ্যোগে সংরক্ষণাগার নির্মাণ এক্ষেত্রে খুবই সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

নেদারল্যান্ডস সরকারের উদ্যোগে ময়মনসিংহের ভালুকায় নির্মিত পেঁয়াজ সংরক্ষণাগারটি আগামী ২ মে কৃষিমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন।

;

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি: গণপূর্তমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি: গণপূর্তমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি: গণপূর্তমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

এসময় তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব্ বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক মোঃ জাফর ওয়াজেদ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কবি, প্রাবন্ধিক ও লেখক অজয় দাশ গুপ্ত প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারা এ দেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি। একটা গভীর রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ হিসেবে জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় পুত্র শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল অত্যন্ত অমায়িক, ভদ্র ও মিশুক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। তিনি একজন স্মার্ট মিলিটারি অফিসার ছিলেন। মাত্র সতেরো বছর বয়সে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। তার মতো দেশপ্রেমের উজ্জ্বল নক্ষত্রকে যারা হত্যা করতে পারে তাদের নির্মমতা সহজেই অনুমেয়। তরুণ প্রজন্মকে শেখ জামালের মতো দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার মতো জীবন গঠনের আহ্বান জানান।

যুবলীগ সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, জিয়াউর রহমান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলো। একটি পৃথক কমিশন গঠন করে এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে জিয়ার ভূমিকা উন্মোচন ও তার মরণোত্তর বিচারের দাবি জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

;

দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুরের পৌর মেয়র সাময়িক বরখাস্ত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুরের পৌর মেয়র সাময়িক বরখাস্ত

দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুরের পৌর মেয়র সাময়িক বরখাস্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের সেখকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপসচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়েছে, ইসলামপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের সেখের বিরুদ্ধে ১১ জন কাউন্সিলরের আনীত স্বেচ্ছাচারী আচরণ, সরকারি গুদামের মাল লুট, আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩২ (১) (খ) (ঘ) এবং (২) অনুযায়ী তাকে মেয়র এর পদ থেকে অপসারণের কার্যক্রম শুরু করা হয়।

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৩১ (১) অনুযায়ী 'পৌরসভা বা রাষ্ট্রের হানিকর কার্যকলাপে জড়িত থাকা' এবং অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মেয়র এর পদ থেকে আব্দুল কাদের সেখকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। এতে আরও বলা হয়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

এর আগে ২০২২ সালে ২৭ নভেম্বর জামালপুর জেলা প্রশাসকের কাছে মেয়র আব্দুল কাদের সেখের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১১ জন। একই সঙ্গে মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছেও আবেদন করেন তারা।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র (বরখাস্ত) আব্দুল কাদের সেখের মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।

;

পরিবেশ দূষণ রোধে ১০ সুপারিশ উপস্থাপন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পরিবেশ দূষণ রোধে ১০ সুপারিশ উপস্থাপন

পরিবেশ দূষণ রোধে ১০ সুপারিশ উপস্থাপন

  • Font increase
  • Font Decrease

কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল কারিগরি সহায়তায় এবং ইউএসএইড-এর সহযোগিতা বাস্তবায়িত প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি এন্ড রাইটস কর্মসূচি জাতীয় রাউন্ডটেবিল আলোচনায় খুলনা, ও ঢাকার প্রান্তিক মানুষের প্রতিনিধিরা পরিবেশ দূষণ রোধ, পরিকল্পিত নগরায়ণ ও নদীর পানি দূষণ রোধে ১০টি সুপারিশমালা উপস্থাপন করেছেন।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেলে টেকসই নগরায়ণ ও পরিবেশের সুরক্ষায় সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় রাউন্ডডটেবিল আলোচনায় সুপারিশগুলো উপস্থাপন করা হয়।

আলোচনায় সুপারিশগুলোর মধ্যে বিদ্যমান কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা বাস্তবায়ন, একবার-ব্যবহার্য প্লাস্টিকের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, প্রস্তাবিত নীতিমালার বাস্তবায়ন, জাতীয় পর্যায়ে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল মনিটরিং ও নজরদারির ব্যবস্থা এবং পরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য বাংলাদেশের সকল সিটি কর্পোরেশনে মাল্টি-স্টেকহোল্ডার ওয়ার্কিং কমিটি গঠন, নিয়মিতভাবে মাল্টি-সেক্টরাল সভায় নদী এবং পরিবেশ দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও পদক্ষেপের অগ্রগতি আলোচনা, জাতীয় পর্যায়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তদারকি ক্ষমতার পরিধি বৃদ্ধি এবং নতুন সরকারি অবকাঠামোগত উন্নয়নমূলক প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশগত দিক মূল্যায়ন করা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরি বলেন, পিএআর কর্মসূচির মাধ্যমে প্রান্তিক মানুষ যেভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পিত নগরায়ণ,সরকারি সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর সেবা প্রদান ব্যবস্থা, নদী দূষণ রোধে সকলের অংশগ্রহণে সুপারিশসমূহ তৈরি করেছে এবং স্থানীয় পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ে সুপারিশমালা উপস্থাপন করেছে তা সুশাসন ও জবাবদিহিতার একটি মডেল পদ্ধতি হিসেবে পরিগণিত হতে পারে।

মন্ত্রী আরো বলেন, সংসদীয় কমিটিতে ককাস গঠন করে এই সব সুপারিশমালা দ্রুত বাস্তবায়ন ও সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশের আলোকবর্তিকার ধারক প্রান্তিক মানুষকেই উদ্যোগ নিতে হবে ও সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কাজ করতে হবে।

ইউএসএআইডি-এর অফিস অফ ইকোনমিক গ্রোথের পরিচালক মুহাম্মদ এন খান বলেন, মানবাধিকার এবং দেশের মৌলিক সংস্কারের জন্য সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি এবং রাইটস প্রোগ্রামের মতো উদ্যোগগুলি নাগরিকবান্ধব শাসনব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সুশীল সমাজ, প্রান্তিক মানুষ এবং সরকারের মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করায় মার্কিন সরকারের প্রতিশ্রুতিকে জোরদার করে। ইউএসএইড আজকের এই ফলপ্রসূ আলোচনার অংশ হতে পেরে গর্বিত এবং নাগরিকরা কীভাবে ইতিবাচক পরিবর্তনকে আরো প্রভাবিত করে আপনাদের সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করে যেতে চায়।

কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি কেটি ক্রোক অনুষ্ঠান বলেন, নানাবিধ নাগরিক সমস্যা সমাধানের জন্য একসাথে কাজ করায় সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সারা বাংলাদেশে জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য নাগরিক এবং নীতিনির্ধারকদের মধ্যে মেলবন্ধনের যে শিক্ষণীয় মডেল আপনারা সবাই তৈরি করছেন, তা আমাদের কাজকে সার্থক করে তুলেছে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের সংসদীয় নির্বাচনের আগে, পিএআর প্রকল্প বাংলাদেশি সহযোগী সংস্থাদেরকে দেশের অপেক্ষাকৃত কম ও প্রতিনিধিত্বহীন দুই হাজার ৩০৩ জন নাগরিককে একই কাতারে আনতে সহায়তা করে যারা নিজেরাই তাদের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা চিহ্নিত করে ও এবং তা সমাধানের কার্যকরী সুপারিশ দেয়। এরপর সেসব চিহ্নিত সমস্যা এবং সুপারিশ নিয়ে তারাই ২১৭ জন রাজনৈতিক নেতা এবং ৪৬ জন সংসদীয় প্রার্থীর কাছে সরাসরি তুলে ধরে ও নির্বাচনী ইশতেহারে এবং প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি সেগুলো অন্তর্ভুক্তির দাবি জানায়। যার ফলশ্রুতি রাজনৈতিক নেতা ও প্রার্থীদের কাছ থেকে ২৬৩ টি অঙ্গীকারনামা। নির্বাচনের পর পিএআর কর্মসূচি সেইসব নাগরিক সমস্যাগুলোর বাস্তব সমাধান প্রক্রিয়াকে আরো এগিয়ে নিতে রূপরেখা তৈরিতে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে যেখানে নির্বাচনী ইশতেহার এবং প্রার্থীদের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়েছে। এই রূপরেখা লাখ লাখ বাংলাদেশি নাগরিকরা যেন তাদের দেশের টেকসই উন্নয়নে পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করবে বলে পিএআর কর্মসূচি বিশ্বাস করে। 

;