রংপুরে টার্কি খামারিদের ৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক সংবাদ সম্মেলন করেন, ছবি: সংগৃহীত

টাকা আত্মসাতের ঘটনায় অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক সংবাদ সম্মেলন করেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ছয় পরিচালকের বিরুদ্ধে আট কোটি টাকার অধিক আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। টার্কি মুরগির খামারিদের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন ও বেকার পুনর্বাসনের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় আট কোটি টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় নিজ চেম্বারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এই অভিযোগ করেছেন অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেড কোম্পানির পরিচালক ডা. সৈয়দ আবু তালেব ও সাবেক চেয়ারম্যান মওদুদা আখতার।

গা ঢাকা দেওয়া ছয় পরিচালকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আনতে ১৮ নভেম্বর রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা হয়েছে বলেও প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে ডা. সৈয়দ আবু তালেব বলেন, চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আমার গ্রামের বাড়ি মিঠাপুকুর এলাকার শাকিল নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ইসমাইল হোসেন শাওনের পরিচয় হয়। পরবর্তীতে শাওন বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে স্থানীয় খামারিদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলাসহ এলাকার বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেন।

তিনি বলেন, গত বছরের ৩ এপ্রিল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি হতে অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেড নামে এই কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। ওই সময়ে আমার স্ত্রী মওদুদা আখতারকে চেয়ারম্যান, ইসমাইল হোসেন শাওন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তাকে সহ আরও ছয় জনকে পরিচালক করা হয়। ব্যক্তিগত কারণে চলতি বছরের ২৫ জুন কোম্পানির চেয়ারম্যান পদ থেকে মওদুদা আখতার পদত্যাগ করেন।

অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেডের এই পরিচালকের অভিযোগ, কোম্পানির কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাওন ও বাকি পরিচালকরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকেন। এমনকি গ্রাহকদেরকে যুক্ত স্বাক্ষরে চেক দেওয়ার নিয়ম থাকলেও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শুধুমাত্র কোম্পানির চেয়ারম্যানের একক স্বাক্ষর করা চেক সরবরাহ করে।

কোম্পানির কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে কোম্পানির আয়-ব্যয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার জন্য সকল পরিচালককে নিয়ে সভা আহ্বান করতে বলা হলেও কেউ কোনো সাড়া না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে। চার্টার্ড একাউন্টিং ফার্মের মাধ্যমে হিসাব সম্পন্ন করার জন্য তাগাদা দেয়া হলে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন শাওন, পরিচালক আরমানুল হক, শফিকুল ইসলাম, ফিরোজ কবির, আবুল কালাম আজাদ ও তাজুল ইসলাম কোনো কিছু না জানিয়ে গ্রাহকের ৮ কোটি টাকার অধিক পাওনা রেখে গা ঢাকা দেয়।

কোম্পানির পরিচালক হিসেবে এই ঘটনায় নিজের ব্যর্থতা ও দায়ভার এড়িয়ে যাবার সুযোগ নেই উল্লেখ করে ডা. সৈয়দ আবু তালেব বলেন, ‘গা ঢাকা দেওয়া পরিচালকদের একজন ছাড়া বাকিরা সবাই দিনাজপুর, নওগাঁ ও গাইবান্ধা জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। এদেরকে আইনের হাতে সোপর্দ করার জন্য খামারিদের দরকার। আমি এবং আমার স্ত্রী কোম্পানির পরিচালক হিসাবে যতোটুকু দায়ভার বর্তায় তা পরিশোধ করতে বাধ্য থাকব।

এদিকে ডা. সৈয়দ আবু তালেবের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন আরেক পরিচালক ফিরোজ কবির। তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমাদের কোম্পানি ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক টাকা নষ্ট হয়েছে। একারণে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে খামারিদের সাথে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। কোম্পানিতে চেয়ারম্যান মওদুদা আখতার ও তার স্বামী পরিচালক সৈয়দ আবু তালেবের ৪০ ভাগ শেয়ার রয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলার মানে তারা নিজেরা যে অর্থ আত্মসাৎ করেছে, তা আড়াল করতে পায়তারা করছে। তবে অফিস কার্যক্রম বন্ধ রেখে গা ঢাকা দিয়ে থাকার বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।’

অন্যদিকে মিঠাপুকুরের টার্কি মুরগি খামারের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কম-কে জানান, অক্টালিংক এগ্রো লিমিটেড ঝুঁকিবিহীন চুক্তি ভিত্তিক টার্কি খামার ব্যবস্থাপনায় সর্বনিম্ন ২৫ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১০ লাখ ২০ হাজার টাকার প্যাকেজে সহস্রাধিক খামারির কাছ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা নিয়ে খামার পরিচালনা করেন। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী ৯০ থেকে ৯৯ দিন পূর্ণ হলে অর্থ পরিশোধের কথা বলা হলেও তারা খামারিদের টাকা পরিশোধ করছে না।

   

কর্ণফুলী নদী থেকে অপরিশোধিত ২২ বস্তা চিনিসহ নৌকা জব্দ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
কর্ণফুলী নদী থেকে অপরিশোধিত ২২ বস্তা চিনিসহ নৌকা জব্দ

কর্ণফুলী নদী থেকে অপরিশোধিত ২২ বস্তা চিনিসহ নৌকা জব্দ

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী থেকে ২২ বস্তা অপরিশোধিত চোরাই চিনি ভর্তি একটি নৌকা জব্দ করেছে নৌ পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আগেই নদীতে লাফ দিয়ে পায়ে যান দুই চোরাকারবারি।

গতকাল শনিবার (৪ মে) রাত ১১টার দিকে কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা খালের মুখে তাতিয়া পুকুর পাড় সংলগ্ন এলাকা থেকে এসব অপরিশোধিত চিনি জব্দ করা হয়।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাতিয়া পুকুর সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে অভিযান চালানো হয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই চোরাকারবারি নদীতে লাফ দিয়ে সাঁতরে পালিয়ে যান। রাত হওয়ায় তাদের আর ধরা যায়নি।

এসময় তাদের নৌকা থেকে ২২ বস্তা চিনির কাঁচামাল উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, আমদানি করা চিনির কাঁচামাল ভর্তি জাহাজ থেকে এসব র’ চিনি চোরাকারবারিরা চুরি করে পাচার করছিলেন।

;

মানুষের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেত মিল্টন: হারুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের আশ্রিত গরিব-অসহায় মানুষগুলোকে কষ্ট দিয়ে পৈশাচিক আনন্দ উপভোগ করতেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাদকাসক্ত মিল্টন সমাদ্দার। 

যখন মানুষগুলোর অপারেশনের প্রয়োজন হতো, তখন নিজ হাতে ব্লেড দিয়ে তাদের আঙুল কেটে ফেলতো মিল্টন। ব্লেড, ছুরি দিয়ে কাটাছেঁড়ার কারণে অসহায় মানুষগুলো অমানবিক কষ্ট পেতেন, আর্তনাদ করতেন। এসব দেখে পৈশাচিক আনন্দ পেতেন মিল্টন। 

রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত লোমহর্ষক তথ্য সম্পর্কে জানান ডিএমপি'র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

রোববার (০৫ মে) দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হারুন অর রশীদ আক্ষেপ করে বলেন, মিল্টন সমাদ্দারের মতো সাইকোপ্যাথিক মানুষ কীভাবে মানবতার ফেরিওয়ালা হয়? তা আমাদের বোধগম্য নয়। তিনি যে নির্যাতন করে, ব্লেড ছুরিতে নিজেই অপারেশন করতেন, টর্চার সেলে মানুষকে পেটাতেন, তাদেরকে তিনি বানর বলে অভিহিত করতেন। পিটিয়ে নিস্তেজ করতেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে, এসব করে তিনি পৈশাচিক আনন্দ পেতেন। আমরা তার টর্চার সেল থেকে আলামত জব্দ করেছি। কথিত অপারেশন থিয়েটার থেকে ব্লেড,  ছুরি জব্দ করেছি।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার ভয়াবহ অপরাধ করেছেন। একটি দুটি অপরাধ করেননি, তার বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ তো ভয়াবহ। তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। তার একাউন্টে এখনো ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা আছে। এতোগুলো টাকা থাকার পরও তিনি কাউকে চিকিৎসা করাননি। তিনি নিজেই হয়ে গেছেন অপারেশন থিয়েটারের হেড। তার অপারেশন থিয়েটারে থাকতো একটা ছুরি ও কিছু ব্লেড। তিনি এগুলো দিয়েই নিজেই অপারেশন করাতেন। এরকম ভয়াবহ, অমানবিক আচরণ, অসভ্য আচরণ, এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্যই তো লজ্জাজনক। যারা তার সঙ্গে জড়িত, যারা পেট্রনাইজড করেছে, সহযোগিতা করেছে, ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য যারা পেট্রন করেছে, ফাউন্ডেশনের মেম্বার তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হারুন বলেন, যে ছেলেটা সেই উজিরপুর থেকে বাবাকে পিটিয়ে ঢাকায় এসে ঔষধের দোকানে চুরি করেছেন, এরপর একটা আশ্রম গড়ে তোলেছেন। যেখানে সে অসহায়, গরীব শিশু, বৃদ্ধ, প্যারালাইজড, বাকপ্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে সংগ্রহ করে আশ্রমে নিতেন। তাদের দেখিয়ে তিনি ফেইসবুকে ফলোয়ারের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতেন। সেই টাকা আবার তিনি খরচা করতেন না।

তার আশ্রমে ৯০০ লোক মারা গেছে বলে নিজেই প্রচার করতেন উল্লেখ করে হারুন বলেন, মানুষগুলো মারা গেছেন। জানাজা হলো না, রাতের অন্ধকারে কবর দেয়া হলো, আত্মীয়-স্বজনকে জানানো হলো না, মিথ্যেভাবে সিল স্বাক্ষর দিয়ে নিজেই ডেথ সার্টিফিকেট দিলেন, পরেও স্বজনদের জানালেন না, এসবই আমাদের তদন্তে আসবে।

যেসব শিশু তার আশ্রমে ছিল, তাদের খোঁজ পাবার পর দেখা করতে দেয়া হতো না স্বজনদের। ওই শিশুদের ক্ষেত্রে আসলে কী ঘটেছিল? বিক্রি করতো? কিছু পেয়েছেন আপনারা? এমন প্রশ্নের উত্তরে হারুন বলেন, একটু ধৈর্য ধরেন সবই বেরিয়ে আসবে। এরকম আরও যেসব মিল্টন সমাদ্দার বাংলাদেশে যদি আরও থেকে থাকে, তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা নামে এ ধরনের অপকর্ম করে থাকে তাদের ব্যাপারেও খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।

মিল্টন সমাদ্দার নিজেই বলেছেন, ৯০০ লোকের প্রাণ নিভে গেলো! কীভাবে নিভে গেলো? তিনি তো তাদের হাসপাতালে নেননি, ডেথ সার্টিফিকেটও নেননি, থানা পুলিশকে অবহিত করেননি। আবার ৯০০ লোকের প্রাণ যাবার যে কথা তিনি বলেছেন, সেটা আদৌ সত্য কিনা, নাকি এটা টাকা ইনকামের একটা কথার কথা! সত্য হলে কি করেছেন। সব তদন্তে নিয়ে আসবো। এই আশ্রমের সঙ্গে আরও যারা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

হারুন বলেন, অটিজম শিশুদের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা লজ্জাজনক। কারণ বঙ্গবন্ধুর নাতনী প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিজম নিয়ে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসের (ডব্লিউএইচওএসইএআরও) আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বৈশ্বিক অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল)। আর সেই দেশে অটিজমের নাম ধারণ করে অসহায়, বাক প্রতিবন্ধী ভারসাম্যহীন মানুষ সংগ্রহ করে ফেইসবুকে প্রচার করে ফলোয়ারদের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেছেন। অন্যদিকে তিনি সেই টাকা খরচা করেননি। এটা তো লজ্জাজনক।

তাকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি কীভাবে ডেথ সার্টিফিকেট দিতেন। আমরা তো সেখানে যাতায়াত করা ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি বলেছেন, মিল্টন সমাদ্দার তার সিল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ডেথ সার্টিফিকেট দিতেন, যা তিনি জানতেন না। মিল্টন সমাদ্দার নিজেও তা স্বীকার করেছেন। তিনি নাকি মানবতার ফেরিওয়ালা। এসব অপকর্ম করে কীভাবে একজন মানুষ মানবতার ফেরিওয়ালা হয়?

এদিকে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় করা সিটি করপোরেশনের মৃত সনদ জাল কারার অভিযোগের মামলায় রিমান্ড শেষে মিল্টন সমাদ্দারকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে শনিবার দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে সেসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার আশ্রমের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে মিল্টনের স্ত্রীকে রোববার দুপুরে ডিবিতে ডাকা হয়েছে। তাকেও আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব।

রাজধানীর মিরপুর থেকে গত বুধবার রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর জোনাল টিম। তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় ৩টি মামলা করা হয়েছে। আরও কয়েকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। গত বৃহস্পতিবার মিল্টনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমে জাল মৃত্যুসনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এদিকে মিল্টন সমাদ্দারের গ্রেফতার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে মিরপুরের পাইকপাড়া এবং বরিশালের উজিরপুরের সাধারণ মানুষজন। এছাড়া বুধবার রাতেই রাজধানীতে আনন্দ মিছিল করে স্থানীয়রা। গ্রেফতারের পর থেকেই ভুক্তভোগীদের অনেকে মিল্টনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।

প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক কোটি ৬০ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে মিল্টন সমাদ্দারের। অভিযোগ রয়েছে এই বিশাল অনুসারীদের কাজে লাগিয়ে তার মূল টার্গেট ছিল বিভিন্ন মানবিক কাজ প্রচার করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা।

;

টাঙ্গাইলে বজ্রপাতে বাবুর্চির মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বজ্রপাতে ওয়াজেদ আলী খান (৫০) নামে এক হোটেল বাবুর্চির মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) রাতে ঘাটাইল উপজেলায় ফতেরপাড়া-খিলপাড়া রোড এলাকায় বজ্রপাতের সময় এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

রোববার (৫ মে) সকালে উপজেলার ঝাইকা রাস্তার নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত ওয়াজেদ আলী খান ঘাটাইল সদর ইউনিয়নের খিলপাড়া গ্রামের মৃত সোনা খানের ছেলে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রায়হান খান ও নিহতের পরিবার জানান, ওয়াজেদ আলী একটি হোটেলের বাবুর্চি ছিলেন। শনিবার দিবাগত রাতে হোটেলের কাজ শেষ করে ঘাটাইল থেকে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আকাশে ঘন ঘন বজ্রপাত হচ্ছিল। রাত ১১টায় বজ্রপাতের এক পর্যায়ে ফতেরপাড়া-খিলপাড়া রোডে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। রোববার সকালে স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পরিবারকে খবর দেয়। পরে ঝাইকা রাস্তার নদীর পাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন অংশ বজ্রপাতে ঝলসে গেছে। নিহতের পরিবার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছে।

;

দায়িত্বের কাছে তুচ্ছ তাপমাত্রা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে চলমান দাবদাহে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা যখন কঠিন, তখন ঘণ্টার পর পর ঘণ্টা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। গেল দু-একদিন বৃষ্টি হলেও রোদের তীব্রতা কমার নাম নেই। ফেনীতে গড়ে প্রতিদিন ৩৩ থেকে ৩৬ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা অব্যাহত আছে। গরমে সাধারণ মানুষের যখন হাঁসফাঁস অবস্থা ট্রাফিক পুলিশদের দায়িত্বের কাছে তাপমাত্রা যেন তুচ্ছ।

রোববার (৫ মে) দুপুরে ফেনীর মহিপাল, ট্রাংক রোড়, মিজান রোড়, ডাক্তার পাড়া মোড়সহ শহরের বি়ভিন্ন ব্যস্ত সড়কে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় দেখা যায় তাদের। কড়া রোদ, তীব্র গরম, যানজট, উচ্চ শব্দের হর্ন চারদিকে। এরমধ্যে রয়েছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। সব মিলিয়ে অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হলেও ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা পরিস্থিতির সম্মুখে থেকে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

জেলা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফেনী সদর, সোনাগাজী, দাগনভূঞাসহ ৬ জন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টি.আই), শহরে ৬ জন সার্জেন্ট/ টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (টিএসআই), ১০ জন অ্যাসিসটেন্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টরসহ (এটিএসআই) ৪০ জন কনস্টেবল ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কাজে নিয়োজিত আছে।

ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা বার্তা২৪.কমকে জানায়, তীব্র গরমকে উপক্ষো করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এছাড়াও হিট স্ট্রোকসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকি থাকলেও সাধারণ মানুষকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়।

কথা হয় ট্রাংক রোড মোড়ে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য কনস্টেবল জামালের সাথে। তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে এই তীব্র গরমে আমাদের রাস্তায় কাজ করতে হয়। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে বিধায় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খাবার স্যালাইন, পানি, ছাতা সরবরাহ করছে। এছাড়াও নিয়মিত শরীর চেকআপ করা হচ্ছে।

মহিপালে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছেন কনস্টেবল মো. রিপন। তিনি বলেন, জনগণের সেবা করা আমাদের দায়িত্ব। কষ্ট হলেও জনগণকে সেবা দিতে এই তীব্র দাবদাহে রাস্তায় আমরা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

এ প্রসঙ্গে জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল আজীম মজুমদার বলেন, তাপমাত্রা যদি ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসও হয় আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ আমরা যদি কিছুক্ষণের জন্য থেমে যাই তাহলে তীব্র যানজট লেগে শহর অচল হয়ে যাবে। যতই রোদ, বৃষ্টি, ঝড় লেগে থাকুক আমাদের সার্বক্ষণিক রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হয়।

পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) এস.এম শওকত হোসেন বলেন, ট্রাফিক পুলিশদের সবসময় রাস্তায় থেকে কাজ করতে হয়। ঝড়-বৃষ্টি, রোদ, যানবাহনের উচ্চ শব্দের হর্ন আর ধুলোয় থেকে শরীরে নানা অসুস্থতা বাসা বাঁধলেও জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করে যেতে হয়।

চিকিৎসকের মতে, তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকের সবচেয়ে ঝুঁকিতে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে হলে মাসল ব্রেকডাউন হতে পারে। এছাড়াও ডিহাইড্রেশন হয়, শরীরে পটাশিয়াম বেড়ে যায়। এর ফলে হার্টবিট অ্যাবনর্মাল হয়ে যেতে পারে, যে কারণে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি। পটাশিয়ামের মাত্রা অনেক বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসা নেওয়ার আগেই রোগীর মৃত্যু হতে পারে।

হিট স্ট্রোক রোধে চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করার (হালকা রঙের সুতির কাপড় হলে ভালো), যথাসম্ভব ঘরের ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার, রোদে বাইরে যাওয়ার সময় টুপি, ক্যাপ অথবা ছাতা ব্যবহার করার, প্রচুর পরিমাণে পানি বা খাবার স্যালাইন অথবা ফলের রস পান করার, রোদে দীর্ঘ সময় ঘোরাঘুরি না করা, তীব্র শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলার।

এ প্রসঙ্গে জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. আনোয়ারুল আজীম মজুমদার বলেন, ট্রাফিক পুলিশদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে সর্বোচ্চমাত্রায়। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি প্রতিরোধে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক পানি, স্যালাইন, ছাতা সরবরাহ করা হচ্ছে এবং প্রত্যেকটি কনস্টেবলের শরীরে কোনো সমস্যা আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করতে নিয়মিত চেকআপ করা হচ্ছে। যাদের সমস্যা ধরা পড়ছে তাদের স্থলে অন্য কনস্টেবলকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রত্যেককে নির্দেশনা দেওয়া আছে যাতে তীব্র রোদে একটানা কাজ না করে ৩০ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে কাজ করে। ওই ৩০ মিনিটে অন্য কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করবে। এভাবে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া আছে বলে জানান তিনি।

;