পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু



সেন্ট্রাল ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বজ্রপাতের আঘাতে দেশের পাঁচ জেলায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুরে চারজন, বগুড়ায় তিনজন, জামালপুরে দুইজন, সিরাজগঞ্জে একজন এবং মানিকগঞ্জে একজন।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

ফরিদপুর

দুপুরে ফরিদপুরের সালথা, নগরকান্দা ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় বজ্রপাতে নারীসহ চার জনের মৃত্যু হয়েছে।

সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদি গ্রামে ঈদ্রিস আলীর স্ত্রী বাড়িতে রান্না করার সময় হাসি বেগম (৪৫) নামে এক নারী ও একই ইউপির বাতা গ্রামে সৌদি আরব প্রবাসী বিল্লাল মাতুব্বর (৪৭) ছেলেকে নিয়ে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে।

অন্যদিকে, নগরকান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান সরদার মনিরুজ্জামান জানান, তালমা ইউনিয়নের বিলনালিয়া গ্রামের ইমরান ব্যাপারী কুমার নদে পাট ধোয়া ( পরিস্কার) করার সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।

এছাড়া জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.বিল্লাল মোল্লা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন ভাই হঠাৎপাড়া এলাকার একটি খালের পানিতে পাট ধুচ্ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে হাফিজুর শরিফ ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার বাড়ি জেলার সালথা উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের বাহিরদিয়া গ্রামে।

বগুড়া

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বজ্রপাতে স্বামী-স্ত্রীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার কর্নিবাড়ি ইউনিয়নের ডাকাতমারা চরে দুই জন এবং চর বাটিয়া গ্রামে একজন নিহত হন।

নিহতরা হচ্ছেন- ডাকাতমারা চরের আমিরুল ইসলাম (৪৫) ও তার স্ত্রী ফেলানী খাতুন (৩৮)। অন্যজন চর বাটিয়া গ্রামেন তহসিন আলীর ছেলে সুমন মিয়া (৩২)।

জানা গেছে, বিকেল ৪টার দিকে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সময় মাঠে গরু আনতে গেলে বজ্রপাতে স্বামী-স্ত্রী আহত হন। একই সময়ে চরবাটিয়া গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় সুমন মিয়া আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে একই সময়ে কুতুবপুর ইউনিয়নের ডেবডাঙ্গা এলাকায় বজ্রপাতে আব্দুল মমিনের মেয়ে নিজামুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া আকতার (১৫) এবং কালীতলা এলাকার তবিবর রহমানের ছেলে সুমন মিয়া (১৮) আহত হয়। আহতদেরকে সারিয়াকান্দি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জামালপুর

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার খিলকাঠি ও চরগোলাবাড়ী নামাপাড়া গ্রামে বজ্রপাতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।

মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে জোড়খালী ইউনিয়নের খিলকাঠি গ্রামের টিটু মিয়ার ছেলে সারোয়ার হোসেন (১৫) বজ্রপাতে নিহত হয়। সে বাড়ির পাশ্ববর্তী বিলে মাছ ধরার সময় এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে একই ইউনিয়নের চরগোলাবাড়ী নামাপাড়া গ্রামের গণি মিয়ার ছেলে রাসেল (২২) পাট ধুয়ে বাড়ি ফেরার সময় বজ্রপাতে মারা যান।

সিরাজগঞ্জ

বেলা ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ব্রম্মগাছা ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামে বজ্রপাতের মো. ধুইতা সেখ (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত ধুইতা সেখ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত জসিম উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলাম ছরওয়ার লিটন জানান, বিকেলে ধুইতা শেখ নিজ কৃষি জমিতে আগাছা পরিষ্কার করার কাজ করছিলেন এ সময় বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার মৌহালী এলাকায় বজ্রপাতের আঘাতে মঙ্গল চন্দ্র সরকার (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে মৌহালী এলাকার নিজ বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যাওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মঙ্গল চন্দ্র সরকার মৌহালী এলাকার লালু চন্দ্র সরকারের ছেলে।

মঙ্গল চন্দ্র সরকারের ছেলে কার্তিক চন্দ্র সরকার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে
জানান, দুপুরে কৃষি জমিতে কাজ শেষে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে গোসল করতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে গুরুতরভাবে আহত হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

   

কুমিল্লায় ট্রাক চাপায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার উদালিয়া এলাকায় ট্রাকের চাপায় মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২০ মে) দুপুর ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সানজুর মোর্শেদ।

ওসি জানান, ঘটনার পর তাৎক্ষণিক নিহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

বিস্তারিত আসছে....

;

রাজধানীজুড়ে অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, অসহনীয় যানজট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ। এতে নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে তীব্র ভোগান্তিতে। শহরের মূল সড়কসহ অলিগলিতে তৈরি হয়েছে অসহনীয় যানজট।

সোমবার (২০ মে) সকালে রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, ডেমরায় পুলিশের সঙ্গে অটোচালকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জুরাইনে রাস্তা অবরোধ ও মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বেড়িবাঁধে রিকশা চালকরা বিক্ষোভ করছে।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিয়েছেন রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ ও চালকরা।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ সড়ক পরিবহন মন্ত্রী, বিআরটিএ ও ঢাকা মহানগরের দুই মেয়রের ঘোষণার পর মিরপুর, লালবাগ, গেন্ডারিয়া, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রিকশা আটক, ব্যাটারি খুলে নেওয়া, ডাম্পিং ও চালক-মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের হয়রানির এবং মিরপুর এলাকায় আন্দোলনরত রিকশা শ্রমিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিকল্প ব্যবস্থা না করে মন্ত্রী, বিআরটিএ ও মেয়রদের এই অযৌক্তিক, গণবিরোধী, ও লাখ লাখ মানুষকে কর্মহীন করে বেকারের মিছিল দীর্ঘ করার অগণতান্ত্রিক ও তুঘলকি সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানান। অন্যথায় এই লাখ লাখ কর্মহীন ও বেকার চালকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে রাজপথে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেন। একইসাথে সংগ্রাম পরিষদ থ্রি-হুইলার ও সমজাতীয় মোটরযান নীতিমালা চূড়ান্ত ও কার্যকর করে ইজিবাইক, রিকশাসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনের দ্রুত নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিটসহ সংগ্রাম পরিষদ ঘোষিত ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলের সভাপতিত্ব করেন সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি জালাল আহমেদ। সঞ্চালনা করেন অর্থ সম্পাদক রোখসানা আফরোজ আশা। আরও বক্তব্য রাখেন সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, অর্থ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সংগ্রাম পরিষদ কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, রাহাত আহমেদ, এস এম কাদির, ঢাকা মহানগর এর যুগ্ম সম্পাদক দাউদ আলী মামুন, সদস্য সেকান্দার আলী, আবদুস সালামসহ অনেকে।

;

ভাওয়াল রিসোর্টসহ ৭ প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ৩ কোটি টাকা জরিমানা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরে পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকার অভিযোগে ভাওয়াল রিসোর্ট, হোটেল এক্সসহ সাত প্রতিষ্ঠানকে দুই কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগের দায়ে ভাওয়াল রিসোর্টকে জরিমানা করা হয়েছে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা। এসময় ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছাড়পত্র গ্রহণ না করা পর্যন্ত সকল ধরণের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

সোমবার (২০ মে) সকালে বার্তা২৪.কম এর প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নয়ন মিয়া।

এর আগে গত ১৪ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইং এর পক্ষ থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক পরিবেশ দূষণের সরেজমিন তথ্য পাওয়ার পর সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৯২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক নয়ন মিয়া বার্তা২৪ কে জানান, দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শালবনের জমি দখলসহ পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছিল ভাওয়াল রিসোর্ট, হোটেল এক্সসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন ছাড়পত্র ছিল না। বিষয়টি নজরে এলে, পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইং একটি কমিটি গঠন করে। পরে কমিটির সদস্যরা গত কয়েক দিনে গাজীপুরে সাতটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে এবং নানা অনিয়মের সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে গাজীপুরের সাতটি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের গত ১৪মে তলব করা হয়।

এসময় গাজীপুর সদর উপজেলার নলজানি এলাকার ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা সেন্টারকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বনের জমিতে অবস্থিত হোটেল এক্সকে ১০ লাখ টাকা, গাজীপুর সদর উপজেলার ভবনীপুর এলাকা ইউনাইটেড শক্তি লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা, শিরিরচালা এলাকার কোয়ালিটি ইন্টিগ্রেটেড এগ্রো লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা, একই এলাকার মেঘনা অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানকে ১০ লাখ টাকা, ভবানীপুর এলাকার সোয়ান নিট কম্পোজিট লিমিটেডকে ১২ লাখ টাকা, একই এলাকার হলিকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নয়ন মিয়া বলেন, পরিবেশ দূষণ, ছাড়পত্র না থাকায় তাদের জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের সকলকার্যকর বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

;

ডাকাতি করতে গিয়ে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ডাকাতিকালে মূল্যবান জিনিসপত্র না পাওয়ায় কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আব্দুল্লাহ (২৪), তার সহযোগী মতিন (৩৫), চাঁন মিয়া (২৮) ও আয়নাল (২৫)। গতকাল রোববার রাতে র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব ১১ অভিযান চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় ভুক্তভোগীর মোবাইলসহ ১টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান, ১টি শাবল, ১টি দা, ২টি রামদা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, এই চক্রটি একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। তারা দিনের বেলায় বিভিন্ন পেশায় থেকে নির্দিষ্ট বাড়ি রেকি করেন। পরে সুযোগ বুঝে ঐ সকল বাড়িতে ডাকাতি করত। গত দুই বছর ধরে এই চক্রটি বিভিন্ন বাসা বাড়িতে ডাকাতি করে আসছিল। তারা কোন মূল্যবান জিনিসপত্র না পেলে ধর্ষণ-খুনসহ বাসাবাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র নষ্ট করতেন।

সোমবার (২০ মে) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এসব তথ্য জানান।


তিনি বলেন, গত ১৫ মে রাত আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় ডাকাতি কার্যক্রমকালে কোন মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটায়। ওই ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আড়াইহাজার থানায় মামলা করলে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১১ এর একটি অভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ওই গণধর্ষণের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন।

র‍্যাব মুখপাত্র বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ। এই চক্রে ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লার নের্তৃত্বে তারা গত ২ বছর যাবৎ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল বলে জানা যায়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আরাফাত ইসলাম বলেন, গ্রেফতারকৃতরা গত ১৫ মে রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বাড়িতে যায়। সেসময় গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ ও গ্রেফতারকৃত মতিন ঘরের জানালা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। ভিকটিম ও তার মায়ের ঘুম ভেঙ্গে গেলে তারা ভয়ে চিৎকার করলে গ্রেফতারকৃতরা তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা ঘরের দরজা খুলে দিলে গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ও গ্রেফতারকৃত আয়নালসহ অন্যান্য সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্রসহ ঘরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের মা সহ ঘরে উপস্থিত সকলের হাত,পা ও মুখ বেঁধে ফেলে।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা ঘরের ভিতর মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ক্ষোভে ভিকটিমকে হাত-পা বাধাঁ অবস্থায় তাদের বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে গ্রেফতারকৃতরা ভিকটিমের মুখ ওড়না দিয়ে পেচিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ভিকটিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় গ্রেফতারকৃতরা এই ঘটনা সম্পর্কে কাউকে জানালে ভিকটিম ও তার পরিবারকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন।


র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ এই ডাকাত চক্রের মূলহোতা। সে পূর্বে একটি স্পিনিং মিলে চাকুরির সময় থেকে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে ডাকাত চক্রটি গড়ে তুলে। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জের ভুলতা-গাউসিয়া এলাকার বাসের হেলপার ও রিক্সা চালাত।

গ্রেফতারকৃত মতিন গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহর অন্যতম সহযোগী। সে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে সিএনজি চালাত। সিএনজি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির জন্য টার্গেট নির্ধারণ করে ডাকাতির পরিকল্পনা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহকে প্রদান করতো। এছাড়াও সে তার সিএনজি দিয়ে ডাকাতির পূর্বে চক্রের অন্যান্য সদস্যদের ডাকাতির জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যেত এবং ডাকাতি শেষে চক্রের সদস্যদের সুবিধাজনক স্থানে দ্রুত পৌঁছে দিত। তার বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়া ও আয়নাল ডাকাত চক্রের অন্যতম সদস্য। তারা ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে যথাক্রমে বাস ও সিএনজি চালাত। তারা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহর নের্তৃত্বে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতো। গ্রেফতারকৃত চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে এবং এসকল মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আয়নাল এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া গ্রেফতারকৃ চারজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় র‍্যাব।

;