মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান: স্বস্তিতে অভিভাবকরা



মুফতি এনায়েতুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

লেখার শিরোনামের সঙ্গে অনেকেই তীব্র আপত্তি জানাতে পারেন। বলতে পারেন কটূকথাও। কিন্তু এটাই বাস্তবতা। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে অনেক অভিভাবক স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। অনেকে বলছেন, একটা ফলাফল না আসা পর্যন্ত অব্যাহত থাকুক এই অভিযান।

আমার পরিচিত অনেক অভিভাবক সন্তানের মাদকসঙ্গ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, মাদকের সহজলভ্য সমাজের মাদক প্রসারের জন্য বেশি দায়ী। চলতি অভিযানে, মাদকের বাজারে ক্রাইসিস দেখা দেবে, তাতে অনেকেই মাদকগ্রহণ বা সেবনের মওকা পাবে না। সুতরাং চলুক এই অভিযান, এটা যেনো বন্ধ না হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাদকের বিরুদ্ধে পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযানে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাদক উদ্ধার, এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার এবং কোনো কোনো মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের মতো ঘটনা ঘটেছে। এতে গত এক সপ্তাহে পঞ্চাশের বেশি মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। উদ্ধার হয়েছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের মাদক।

আগেই বলেছি, মাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযান ইতিবাচক হলেও ‘বন্দুকযুদদ্ধ’র ঘটনা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে বন্দুকযুদ্ধের নামে প্রাণহানি কাম্য নয়। অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি বিধান করতে হবে। বন্দুকযুদ্ধ ছাড়া কি মাদক দমনের অন্য কোনো পন্থা নেই? তবে এ কথা অনস্বীকার্য, সারাদেশে মাদক যেভাবে সর্বগ্রাসী রূপ লাভ করেছে, তাতে এমন ‘অ্যাকশন’ ছাড়া গতি নেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মাদক ব্যবসার যারা মূল হোতা তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসার যে ‘চেইন’ সৃষ্টি হয়েছে তাতে কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কিছু মাদক উদ্ধার ও বন্দুকযুদ্ধের নামে কিছু লোক নিহত হলেও অন্যরা এ সময় সাবধান হয়ে যাচ্ছে। তারা মাদক ব্যবসা আপাতত বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছে। অভিযান বন্ধ বা সহনীয় পর্যায়ে এলেই তারা আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে।

দীর্ঘদিন ধরেই দেশে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন চলছে। এক সময় ভারত থেকে সীমান্ত দিয়ে যেমন বানের পানির মতো ফেনসিডিল দেশে প্রবেশ করত, এখন মাদকের নতুন সংস্করণ ইয়াবা প্রবেশ করছে মায়ানমার থেকে। এই মাদক এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সীরা এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এমনকি শ্রমিক ও গাড়ি চালকদের মধ্যেও ইয়াবার বিস্তার ঘটেছে।

আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, দেশের ভবিষ্যত যে তরুণ শ্রেণী; তাদের মধ্যে ইয়াবা আসক্তি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যে পরিবারের তরুণটি মাদকাসক্ত সে পরিবারে কী অশান্তি ও দুর্দশা সৃষ্টি হয়, তা আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি। মাদকাসক্ত পুত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে কোনো কোনো অভিভাবক পুলিশের হাতে পুত্রকে তুলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মাদকের টাকার জন্য ছেলে বাবা-মা-ভাই-বোনকে খুন করেছে। বহু পরিবার পথে বসে গেছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, মাদকের প্রসার এবং এর সঙ্গে জড়িতেদের নিয়ে পত্র-পত্রিকায় বহু বছর ধরেই লেখা হচ্ছে। তাতে ফল খুব কমই পাওয়া গেছে, এটা বলার কারণ নেই। মানুষ সচেতন হয়েছে, কোথাও কোথাও পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে হ্যাঁ, ফলাফল কাঙ্খিত হয়নি। এর কারণ হচ্ছে, যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার; তাদেরই একটি শ্রেণির প্রশ্রয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা অবাধে ব্যবসা করে চলেছে। সহযোগী এক পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, খোদ রাজধানীতে প্রায় ৫৪টির মতো স্পটে নিয়মিত মাদকের হাট বসে। এ খবর পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পরও এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। লেখালেখি হলে কিছুদিন রাখঢাক করে মাদক বেচাকেনা হয়, তারপর আবার তা পুরোদমে চলতে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণির সদস্যর নিয়মিত যোগযোগ এবং মাসোহারার সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি কোনো কোনো সদস্য সরাসরি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে কোনোভাবেই মাদকের আগ্রাসন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

কক্সবাজারের এক এমপি তো রীতিমতো ‘ইয়াবা সম্রাট’ হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ থাকলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বলা হয়ে থাকে, ইয়াবার মূল রুট কক্সবাজার-টেকনাফ তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আমরা মনে করি, মাদক ব্যবসায়ী এবং এদের পৃষ্ঠপোষক ও নেটওয়ার্ক যতই শক্তিশালী হোক না, যে কোনো মূল্যে তা নির্মূল করতে হবে।

মাদক নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা বাঞ্চনীয়। এর কোনো বিকল্প নেই। তবে এমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত নয়, যা বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে আমরা মনে করি, কথিত বন্দুকযুদ্ধে এ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন, তাদের প্রত্যেকের বিস্তারিত বিবরণ জনসম্মুখে তুলে ধরা অপরিহার্য। তারা মাদকব্যবসায়ী বলে ঘোষণা দিয়ে দায় সারলে হবে না। মাদকের সঙ্গে তাদের যথাযথ সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তার অনুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরতে হবে। আবার মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে নিরীহ কেউ যাতে এর শিকার না হয়, এদিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। রাজনৈতিক শত্রুতার জের ধরে মাদকের নামে যাতে কাউকে বন্দুকযুদ্ধে পড়তে না হয় এ ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে।

সবচেয়ে বড় কথা, গুলি করে মাদকের মতো সর্বগ্রাসী একটি সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। এতে সাময়িক স্বস্তি হয়তো পাওয়া যাবে, তবে দীর্ঘমেয়াদে বা পুরোপুরি নির্মূল করা যাবে না। এক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। পরিবার ও সমাজের অভিভাবকদের এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের সন্তান এবং এলাকার তরুণদের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে। তারা কোথায় যায়, কী করে, কাদের সঙ্গে মেলামেশা করে- এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত হবে এলাকাভিত্তিক মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে জনগণকে সম্পৃক্ত করা। পাশাপাশি নিজেদের বাহিনীর যারা মাদক ব্যবসাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং নিয়মিত মাসোহারা নিচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

বলার অপেক্ষা রাখে না, ‘সর্ষের মধ্যে ভূত থেকে গেলে, সে ভূত কখনোই তাড়ানো যায় না।’ কাজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লক্ষ্য হওয়া উচিত মাদকের সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক এবং যতই প্রভাবশালী হোক, তাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ হওয়া।

মনে রাখতে হবে, মুসলমানদের জন্য মাদক হারাম। ইসলাম মনে করে, মাদক ব্যক্তি, দল, সমাজ, দেশ ও জাতির জন্য অকল্যাণকর।

   

আমে বাজার সয়লাব, কতটুকু নিরাপদ?



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চলছে মধুর মাস। জৈষ্ঠ মাসের আজ চারদিন। এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ফল। দেশীয় ফলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি ফলেরও সমাহার। তবে ক্রেতাদের চাহিদায় প্রথমেই রয়েছে দেশীয় ফলের কদর। আর এই কদর থাকায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী অপরিপক্ব ফলে ফরমালিন মিশিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরেজমিন রাজবাড়ীর বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ফলের দোকানেই বিদেশি ফলের পাশাপাশি সাজিয়ে রেখেছে দেশীয় ফল। দেশীয় আমের মধ্যে বাজার দখল করে নিয়েছে সাতক্ষীরা গোবিন্দভোগ। এ আমের পাশাপশি রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আম। দেশীয় আমের সাথেই রয়েছে ভারত থেকে সংগ্রহ করা আম। যে আমগুলো রাজবাড়ীর বাজারে এসেছে আরো সপ্তাহ দুয়েক আগে।

এতো আগে বাজারে ভারতীয় আম আসায় ক্রেতাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে- বাজারে সয়লাব আমগুলো কতটুকু নিরাপদ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিভিন্ন কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তাদের ভাষ্য- যে কোন ফলই প্রথম দিকে বাজারে আসা ফল না কেনায় শ্রেয়। এতে অপরিপক্ব কিংবা ফরমালিন মিশ্রিত থাকার সম্ভাবনা থাকে অনেকটাই বেশি।

কথা হয় বালিয়াকান্দির মেছুয়া ঘাটার বাসিন্দা নজরুল মোল্লার সাথে। তিনি জানান, পরিবারের জন্য ফল কিনতে দোকানে এসেছিলেন। দোকানে  আম দেখে বেশ লোভ হয় তার। দোকানদারের কথার ওপর ভরসা করে তিনি চড়া দামে কিনে নেন সাতক্ষীরার আম। বাড়ীতে নিয়ে কেটে দেখেন আমের ভিতরের বীজটা অপরিপক্ব। আমের স্বাদ পানসে। কোন মিষ্টি নেই।  তখন তার মনে খটকা লাগে- আমের মধ্যে বীজটা অপরিপক্ব হলে আমের বাইরের দৃশ্য এতো চাকচিক্য কেন?

নজরুল মোল্লার এই প্রশ্নের উত্তর জানতে কথা বলি এক ফলের দোকানদারের সাথে। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে তিনি বার্তা২৪.কমকে জানান, তারা আম সংগ্রহ করেন যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে। পাইকারির আড়ৎ থেকে তারা যেভাবে সংগ্রহ করেন সেভাবেই সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। যদি কিছু মিশিয়ে আমগুলো রঙিন করে তাহলে এর সকল দায়ভার আড়তদারদের।

এই সময়ে বাজারে থাকা আমগুলো কতটুকু নিরাপদ- এমন প্রশ্ন করলে রাজবাড়ী জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারি পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, যে কোন ফলই প্রথম দিকে বাজারে আসলে সেটা না কেনায় ভালো। কারণ প্রথম দিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় অপরিপক্ব ফল বাজারে আমদানি করে। কিছু দিন পর কিনলে সেটাতে ঝুঁকি কম থাকে। এ বিষয়ে আপনার দপ্তরের ভূমিকা কি- এমন প্রশ্ন করলে এই কর্মকর্তা জানান, তারা নিয়মিত ক্রেতার সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ভোক্তা অধিকারের পর যোগাযোগ করা হয় কৃষি বিপণন দপ্তরের সাথে। রাজবাড়ীর কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: আকমল হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, রাজবাড়ীতে উল্লেখযোগ্য তেমন আম উৎপাদন হয় না। চাপাই এবং সাতক্ষীরার আমই রাজবাড়ীতে বেশি পাওয়া যায়। এখন বাজারে যে আম পাওয়া যাচ্ছে সেটা কতটুকু নিরাপদ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু আপনি নিরাপদের প্রশ্নটা তুললেন সেহেতু বিষয়টি দেখে বলতে হবে। আমরা দ্রুতই বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মহোদয়ের সাথে কথা বলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে বাজারে গিয়ে যাচাই করবো। এ বিষয়ে কৃষি বিপণী আইন-২০১৮ বিধিমালা-২০২১ একটি শক্তিশালী আইন রয়েছে। এই আইনের ধারা আমরা বাস্তবায়ন করবো।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপখাস, বৈশাখীসহ স্থানীয় জাতের আম বাজারজাতকরণ করার তারিখ নির্ধারণ করেছেন ৯ মে, গোবিন্দভোগ- ১১ মে, হিমসাগর- ২২ মে, ল্যাংড়া-২৯ মে এবং আম্রপালীর বাজারজাতকরণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন ১০ জুন।

;

‘কাদা ছোড়াছুড়ি করতে চাই না’ তাপসকে উদ্দেশ করে খোকন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ডেঙ্গু আক্রান্তের তথ্য নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ‘কাদা ছোড়াছুড়ি করতে চাই না’ বলে মন্তব্য করেছেন ডিএসসিসি'র সাবেক মেয়র এবং ঢাকা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাঈদ খোকন।

এ সময় একে অপরকে দোষারোপ না করে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (১৮ মে) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ‘এগিয়ে ছিল দক্ষিণ ঢাকা, স্মৃতির পাতায় ফিরে দেখা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সাঈদ খোকন এ সব কথা বলেন।

‘মেয়র মো. হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে মো. সাঈদ খোকন বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের মাঝে বিভিন্ন সমস্যা আসতেই পারে। কিন্তু, আমাদের সমস্যাগুলোকে মোকাবিলা করতে হবে। আরেকজনের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজের ব্যর্থতাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা না করে একসঙ্গে কাজ করা উচিত।

তিনি বলেন, সামনে ডেঙ্গুর যে ভয়াবহতা আসছে, সেটিকে আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে মোকাবিলা করতে চাই। আমরা বরং একে অপরকে দোষারোপ না করি! দোষারোপের রাজনীতি না করে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করা উচিত। আমরা একটি সুন্দর, নিরাপদ ঢাকা চাই। আমাকে কর্তৃপক্ষ যখনই ডাকবে, আমি তখনই হাজির হয়ে যাবো।

বর্তমান ডিএসসিসি মেয়রকে উদ্দেশ করে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, দুই, তিনদিন আগে বর্তমান কর্তৃপক্ষ বললেন, ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। কর্তৃপক্ষের এমন বক্তব্যে আমি কষ্ট পেয়েছি!

আমরা গত বছর (২০২৩) দেখেছি, ২০২২ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখের বেশি ছিল। সারাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭শ ৫ জন। পত্র-পত্রিকাতেও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২৩ সালে ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী বেশি ছিল। বর্তমান ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ যে কথা বলেছে, সেটির সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের কোনো মিল নেই।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালে আমি দক্ষিণ সিটির দায়িত্বে ছিলাম। ২০১৯ সালে থেকে ডেঙ্গু বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়া শুরু হয়েছে। ২০১৯ সালে আমি দক্ষিণ সিটির দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। আমার চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। অনেক চেষ্টা করেও আমি ডেঙ্গু আক্রান্তের এবং মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে পারিনি। কিন্তু আমি চেষ্টা না করে বিদেশে চলে যাইনি। আমি জনগণের সঙ্গে ছিলাম।

;

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন সরকারি কর্মচারীরা 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি কর্মচারীদের বেতন ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি ও বৈষম্যহীন ৯ম জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণা না করলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ৩য় শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি।

শনিবার (১৮ মে) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি'র সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন সমিতির মহাসচিব মো. ছালজার রহমান।

তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০১৫ সালে ৮ম জাতীয় বেতনস্কেল প্রদানের পর বিগত ১০ বছরে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ঔষধ, চিকিৎসা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শতভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে সরকারি কর্মচারীরা অর্থকষ্টে জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থা উত্তরণে অন্তর্বর্তীকালীন বিশেষ সুবিধা ৫% থেকে ৩০% উন্নতি করা এবং অবিলম্বে জাতীয় ৯ম জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণার বিকল্প নাই।

সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য নিরসনকল্পে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ১৯৭৩ সালের ১ম জাতীয় বেতন স্কেলের ন্যায় ২০ ধাপের পরিবর্তে ১০ ধাপে বৈষম্যহীন ৯ম জাতীয় বেতনস্কেল ঘোষণা, কর্মচারীদের জন্য স্থায়ী রেশনিং পদ্ধতি চালু, সচিবালয়ে এবং সচিবালয়ের বাইরে সকল পদের জন্য এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন, সকল ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেড প্রদান, পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রথা চালু টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড প্রদান, অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর এবং ইনক্রিমেন্টের শেষ ধাপ ব্লক না রেখে নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট চালু রাখতে জোড় দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দাবি আদায়ের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে সমিতির সভাপতি মো. লুৎফুর রহমান বলেন, আগামী ২১ মে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, ২৬ থেকে ৩০ মে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে জনসংযোগ ও দাবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণ এবং ১ জুন প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও বলেন, এ সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণি সরকারি কর্মচারী সমিতি জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও আরও উপস্তিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মো. মিজানুর রহমান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের রফিকুল ইসলাম মামুন, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের নূরনবী, হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে'র সেলিম মোল্লা, মুগদা মেডিকেল কলেজের মনিরুল ইসলাম, ক্যান্সার হাসপাতালের তাপস কুমার সাহা, মাহবুব, কুষ্ঠ হাসপাতালের মো. রায়হান উদ্দিন, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মফিজুল ইসলাম পিন্টু, জাতীয় আর্কাইভের মনির হোসেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মোফাজ্জল হোসেন, বিএসটিআই'র ইব্রহিম মিয়া, আনোয়ার হোসেন, বিএসএমএমইউ'র সিরাজুল ইসলাম, শেখ রাসেল, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের আনোয়ার হোসেন, মৎস অধিদপ্তরের আরিফুল ইসলাম, লিপি আক্তার, মৃত্তিকা সম্পদ অধিদপ্তরের হাদিউজামান, ইবনে ফারুক, টেমো'র আরিফুল ইসলাম, চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের কামরুন্নাহার, গণপূর্তের রেখা, মোহাম্মদ আলী, রেজিস্ট্রি অফিসের রুবি, কিডনি হাসপাতালের সাইদুর রহমান, বিএসইটি'র সাজেদুল ইসলাম, নিপোর্ট'র মোজাম্মেল হক, বিআইডারটিএ'র সাব্বির রহমান, ঢাকা জজ কোর্টের আসাদুজ্জামান পিয়াল, সিজিএম কোর্টের আব্দুল্লাহ আল মামুন, ঢাকা সিভিল সার্জন অফিসের জহিরুল ইসলাম, শেবাকৃবি'র নূর-ই মোফাজ্জল, বক্ষব্যধির শাহজাহান, ঢাবির কবির, বিজি প্রেস'র ইলিয়াস হোসেন, খামারবাড়ির ইমরানসহ ঢাকা মহানগরীর সকল দপ্তরের নির্বাচিত কর্মচারী প্রতিনিধিরা।

;

ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেলে দুই ভাইয়ের



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আফজাল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা দিনাজপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চকদফরপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিহতরা সম্পর্কে আপন খালাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘরভাড়া নিয়ে সেখান থেকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতো আফজাল হোসেন ও আমির হোসেন। আজ শনিবার ভোরে বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে ৬ জন শ্রমিক ধান কাটতে ছিল। এসময় বৃষ্টি শুরু হলে ধান ক্ষেত থেকে দৌঁড়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় আফজাল ও আমিরের ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

বীর বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন জানান, আজ সকালে কয়েকজন শ্রমিক হযরত আলীর ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এসময় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি সাথে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও চারজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কালিহাতী থানার এসআই রাজীব জানান, নিহতের স্বজনেরা অপমৃত্যু মামলা দায়ের করলে ওসি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;