৫০ ভাগ চিকিৎসা আসছে বেসরকারি খাত থেকে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
সেমিনারে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সেমিনারে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ৫০ শতাংশ চিকিৎসা সেবা বেসরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো থেকে আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে অধিকতর কার্যকরী ও মানসম্পন্ন করা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ তথ্য জানান। স্বাস্থ্য অধিদফতর এ সেমিনারের আয়োজন করে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসায় বেসরকারি সেক্টরে ৫০ শতাংশ চিকিৎসা সম্পন্ন হলেও আমরা তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। অনেক সমস্যার কথা আমরা শুনি। কিন্তু সমাধান করতে পারি না। কেননা আমাদের সেই চর্চা নেই। আমাদের ক্ষমতা রয়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত যেকোনো হাসপাতালকে বন্ধ করে দেওয়ার। কিন্তু আমরা তা করতে পারছি না আমাদের চিকিৎসকদের সংযুক্তি বা যারা এ দায়িত্বে আছেন, তাদের সদিচ্ছা না থাকার কারণে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশের চিকিৎসা খাতে মেডিকেল হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) রোগীদেরকে এন্টিবায়োটিক ওষুধ প্রেসক্রাইব করছে। এ ধরনের কাজ সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। তাদেরকে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করার জন্য। এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করতে পারবে শুধুমাত্র এ সংক্রান্ত বিষেজ্ঞ বা চিকিৎসকরা। আমাদেরকে এ বিষয়ে জোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/18/1563442343997.jpg

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শিশু-কিশোরদেরকে ও চিকিৎসায় শিক্ষিত করতে হবে। আমাদের প্রাইমারি হেলথ কেয়ার ব্যবস্থাপনা অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের থেকে উন্নত। রোগ প্রতিরোধে শুরু হয় এই প্রাইমারি হেলথ কেয়ার থেকে। যার মাধ্যমে দেশের জনগণ নিজেরাই নিজেদের সেবা করতে পারবে। এই সেবাকেও ঢেলে সাজাতে হবে। কেননা দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে এই সেবা পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এটাকে বন্ধ করতে হবে।’

নন-কমিউনিকেবল ডিজিজের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রোগগুলো আমাদের দেশে বাড়ছে। এজন্য আমাদের জীবনযাত্রার মান পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। কেননা আমরা এই ধরনের রোগ প্রতিরোধে এখনো প্রস্তুত না। তাই এটাকেও প্রাইমারি হেলথ কেয়ারের অন্তর্গত করতে হবে।’

চিকিৎসকদের মেডিকেল প্র্যাক্টিস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের রেফারেল সিস্টেম এখনো দুর্বল। চিকিৎসকদের এক্ষেত্রে আরও মনোযোগী হতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি কিন্তু এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। এছাড়া চিকিৎসকদেরকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের সময় কমাতে হবে। সরকারি হাসপাতালে তাদেরকে বেশি সময় দিতে হবে। দুই ধরনের প্র্যাকটিস বিশ্বের অন্যান্য দেশে নাই। এ ক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের বেতন বাড়ানোর কথা আমরা ভাবছি।’

স্বাস্থ্য খাতে বাজেট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বাজেটে মেনটেনেন্সের জন্য মাত্র ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু এ বরাদ্দ প্রয়োজন ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা। বাজেটের দিকে আমরা আরও নজর বাড়াব। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আলোচনা করে বাজেটের বিষয় নির্ধারণ করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের এনজিওগুলো স্বাস্থ্য খাতে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছে না। তারা নিজেরাও কাজ করছে না, আমাদেরকেও দিচ্ছে না। এতে আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা নজরদারি বাড়াচ্ছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এর বাইরে কর্মকর্তাদের সংস্পর্শ বেশি। এটা অবশ্যই কমাতে হবে।’

সেমিনারে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক পাঁচটি জাতীয় গাইডলাইনের মোড়ক উন্মোচন করেন। গাইডলাইনগুলো হলো- ন্যাশনাল স্ট্র‍্যাটেজিক প্ল্যানিং অব পেশেন্ট সেফটি, ন্যাশনাল গাইডলাইন অব ইনফেকশন প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল, অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল স্টেয়ার্ডশিপ কিউআই ফ্রেমওয়ার্ক, ন্যাশনাল আর এমএনসিএএইচ কিউআই ফ্রেমওয়ার্ক, ন্যাশনাল আইসিইউ কিউআই ফ্রেমওয়ার্ক।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ ফায়েজ, ইউএনএফপিএ'র সিনিয়র উপদেষ্টা ডা. এস এ জে মো. মুসা, অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ ইকনোমিকস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এম এ হামিদ, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ইকবাল আনোয়ার, অধ্যাপক ডা. মো. লিয়াকত আলী, ডা. মো. আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।

   

কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ধান কাটা নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় ইউনুস আলী (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। 

শনিবার (১৮ মে) সকালের দিকে উপজেলার খোর্দ্দ বনগ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইউনুস আলী কুমারখালি উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোদ্দ বনগ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, শনিবার সকালে ৭টার দিকে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ইউনুস আলী ও মুক্তার আলীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মুক্তার আলী ও তার লোকজন মিলে ইউনুস আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ইউনুসকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুজন, তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, সকালে ধান কাটাকে কেন্দ্র করে ইউনুস আলী ও মুক্তার আলীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ইউনুস আলী জখম হন। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর মারা যান।

তিনি আরও জানান, নিহত ইউনুস আলী ও মুক্তার আলী একে অপরের আত্মীয়। সম্পর্কে বেয়াই। তাদের উভয়ের ছেলে মেয়ের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশান্তি বিরাজ করছিল। ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

;

২৮ বছরে ঢাকার সবুজ কমে দাঁড়িয়েছে ৯ শতাংশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের রাজধানী ঢাকায় গত ২৮ বছরে সবুজ এলাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ শতাংশ, অন্যদিকে জলাভূমিও নেমে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৯ শতাংশ এ। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) এক গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে।

শনিবার (১৮ মে) সকালে রাজধানীর জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে নগর গবেষণা কেন্দ্রের ৫২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী সম্মেলনে এই তথ্য জানা যায়।

বিআইপির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঢাকা শহরের সবুজ এলাকা এবং জলাভূমি কমেছে সেই সঙ্গে দুই দশকে বেড়েছে মাত্রাতিরিক্ত ধূসর এলাকা ও কংক্রিটের পরিমাণ, যা শহর এলাকার তাপমাত্রা বাড়িয়ে আরবান হিট আইল্যান্ডের প্রভাবও বাড়ছে। দেশে চলমান যে তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে তার মূল কারণ নগরে সুবজায়ন কমে যাওয়া।

বাংলাদেশের মতো ক্রান্তীয় আর্দ্র জলবায়ুর দেশে নগর পরিকল্পনায় সাধারণ মানদণ্ড অনুযায়ী একটি আদর্শ শহরে ২৫ শতাংশ সবুজ এলাকা এবং ১০ থেকে ১৫ শতাংশ জলাশয়-জলাধার থাকা বাঞ্ছনীয়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় গত বছরে তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাড়ার কথা ছিল ১ থেকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিআইপি-এর গবেষণা অনুযায়ী ঢাকায় কংক্রিট আচ্ছাদিত এলাকা ১৯৯৯ সালে ছিল ৬৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, ২০০৯ সালে বেড়ে হয়েছিল ৭৭ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশে। ফলে সার্বিকভাবে ঢাকার পরিবেশের ভারসাম্য ব্যাহত হচ্ছে নেতিবাচকভাবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল সরোয়ার জানান, তাপপ্রবাহের কারণে মানুষের বিভিন্নভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়, শ্রমিকের কর্মক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, অবনতি হয়েছে কৃষি উৎপাদনে, ব্যাহত হয় শিল্প প্রক্রিয়া, তাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন অবকাঠামো।

তিনি আরও জানান, চলমান তাপপ্রবাহকে চরম আবহাওয়াগত পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাপপ্রবাহ মানবস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। চলমান প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে ২০২৪ সালে সমগ্র বাংলাদেশে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ জনের মৃত্যু হয়।

অনুষ্ঠানে নগর গবেষণা কেন্দ্রে সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে ছিলেন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবুল কালাম, বুয়েটের অধ্যাপক ড. ইসরাত ইসলাম, বিআইপির সভাপতি ড. আদিল মুহাম্মদ খান স্থাপতি ইকবাল হাবীব।

;

ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ধোলাইখালে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট।

শনিবার (১৮ মে) সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে আগুন লাগে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।

তিনি জানান, ধোলাইখালে চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে সূত্রাপুর ও সিদ্দিকবাজার থেকে পাঁচটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। 

;

জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নওগাঁর সাহাগোলার ‘মটকা চা’



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ আত্রাই উপজেলার সাহাগোলার মোড় স্টেশন এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ‘মটকা চা’। দুধ, চিনি ও বিভিন্ন মসলার সংমিশ্রণে তৈরি এ চা খেতে প্রতিদিন স্টেশনে ভিড় করেন চা-প্রেমীরা। মাটির ছোট্ট হাড়িতে পরিবেশন করা হয় এই মটকা চা।

সরেজমিনে শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে সাহাগোলা মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, মাটির তৈরি ছোট্ট পাতিল প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে জ্বলন্ত চুলায় গরম করা হচ্ছে, এবং উত্তপ্ত গরম হয়ে গেলে সেটিকে আবার নামিয়ে ভেতরে দুধ ঢালা হচ্ছে, এরপর বিভিন্ন ধরনের মসলা ও শেষে দেওয়া হচ্ছে দুধের সর। এভাবেই পরিবেশন করা হচ্ছে বিভিন্ন রকমের মসলা দিয়ে তৈরি মটকা চা।

জানা গেছে, দেশে প্রথম মটকা চায়ের আবির্ভাব ঘটে রাজধানী ঢাকার মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ‘মটকা চা এবং মোমো’ ক্যাফেতে। ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এটির যাত্রা শুরু হয়। মাটির পেয়ালায় পরিবেশন করা হয় এই মটকা চা। এই চায়ের মূল আকর্ষণ হলো মাটির পেয়ালা। ভিন্নধর্মী স্বাদের এই চা পান করতে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে যেতেন চা-প্রেমীরা। তবে এখন এই মটকা চায়ের বিস্তার দেশের অনেক প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। চায়ে নিজস্ব অনেক ইতিহাস থাকলেও মটকা চায়ের স্পষ্ট কোনো ইতিহাস অদ্যাবধি জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই মটকা চা প্রথমে রাজস্থান থেকে এসেছে। ভারতে প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ মটকায় চা পান করে। ভারতের মটকা চা ব্যাপক জনপ্রিয়। মূলত উৎপত্তিস্থল ভারতে।

মটকা চা খেতে আসা ছামিউল (২৮) বলেন, আমার বাড়ি নিয়ামতপুর উপজেলায়। শুনেছি সাহাগোলার মটকা চায়ের অনেক স্বাদ তাই কয়েক বন্ধু মিলে আজকে খেতে চলে এসেছি। চায়ের পাশাপাশি এখানকার পরিবেশ অনেক সুন্দর। তবে স্থায়ী জায়গা যদি করা যেত তাহলে আরও দূর থেকে মানুষজন এসে নিরাপদে খেতে পারতো।


আফরিন বলেন, আজকেই প্রথম এসেছি এখানে। জায়গাটা অনেক সুন্দর, আর পাশেই রেল-স্টেশন আছে। সব মিলিয়ে খুব ভালো লাগছে। মটকা চা আমি আগেও খেয়েছি, তবে এটির আলাদা মজা পেলাম খেয়ে। আবারো আসবো খেতে।

খাদেমুল ইসলাম ক্যাপ্টেন বলেন, আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম অনেক ভিড় এবং দোকানিও অনেক। আমার কাছে পরিবেশ ভালো লেগেছে, তবে চায়ের মান আরও উন্নতি করা দরকার।

এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আকমল বলেন, আমাদের এখানে এতো লোকসমাগম হতো না, কিন্তু যখন থেকে মটকা চা আর মালাই চা শুরু হয়েছে, তখন থেকেই এলাকাটা বেশ পরিচিত হয়ে গেছে। আমাদেরও ভালো লাগে, যখন দেখি দূর থেকে মানুষ চা খেতে আসে।

দোকানী আতাউল ইসলাম বলেন, প্রায় ২ বছর আগে সাহাগোলায় সর্বপ্রথম মটকা চা আমি বানানো শুরু করি। এখন ১৫টির অধিক দোকান আছে সেগুলো তখন ছিল না। আমরা সব সময় চেষ্টা করি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে চা পরিবেশন করতে। ভালো লাগে বলেই অনেক দূর থেকে মানুষ এসে আমাদের চা খায়।

আরেক দোকানি রনি বলেন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার বেশি ভিড় হয় এবং বিক্রি ভালো হয় বিধায় লাভও থাকে। এটি আমি ১ বছর ধরে বিক্রি করি। আতাউল ভাই শুরু করেছিল। লাভ মোটামুটি ভালোই হচ্ছে।

আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সঞ্চিতা বিশ্বাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সাহাগোলা নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে, যেহেতু অনেক লোকজন আসেন। এখানে শুধুমাত্র চা বিক্রি হচ্ছে না, পাশাপাশি দূর দূরান্ত থেকে মানুষজন বেড়াতেও আসছেন। এটা নিয়ে আমরা ভাবছি।

;