মাত্র ৮ মাসের মেয়র আতিক!



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ডিএনসিসি‘র মেয়র আতিকুল ইসলাম

ডিএনসিসি‘র মেয়র আতিকুল ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

মেয়র আতিকের কার্যকাল আর রয়েছে মাত্র ৮ মাস। দায়িত্ব নেওয়ার পর গতকয়েক মাসে কার্যত তিনি দৃশ্যমান কিছুই করতে পারেননি। অবশ্য এই কয়েকমাসে সব সময় তার মুখে উচ্চারিত হয়েছে আশ্বাসের ‘ফুলঝুড়ি’।

আতিকুল ইসলাম যার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সেই আনিসুল হক ছিলেন আপদমস্তক এক মেয়র। যা পারবেন তাই আশ্বাস দিতেন এবং কার্যকর করতেন।


রাজধানীবাসীর সেবার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকা সিটি করপোরেশনকে উত্তর-দক্ষিণ দুইভাগে ভাগ করা হয়। শুরুতে এই বিভক্ত সিটি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও পরে অবশ্য মানিয়ে নিয়েছে নগরবাসী ও বিশিষ্ট জনেরা। বিভক্তির প্রায় ৪ বছর পর দুই সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই মেয়র আনিসুল হক ও মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দায়িত্ব গ্রহণের পর উত্তর সিটির প্রতিটি ওয়ার্ড চষে বেড়ানো শুরু করেন প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। নগরবাসীকে সবুজ ঢাকা মানবিক ঢাকা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে কাজ শুরু করেন। সেই পথ অনেক দূর এগিয়ে যান মেয়র। ৫ বছরের দায়িত্ব নিয়ে দুই বছরের মাথায় নগরবাসী হারায় মেয়র আনিসুল হককে। কিন্তু ওই দুই বছরের কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করার জন্য এখনো মানুষের মাঝে আনিসুল হকের স্বপ্ন উঁকি দেয়। কেউ কেউ বলেন মেয়র আনিসুল হক থাকলে উত্তর সিটি এতদিন সত্যি বদলে যেত।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/25/1561444660128.jpg

দায়িত্ব গ্রহণের পর একটা একটা করে জঞ্জাল পরিষ্কার করতে নামেন মেয়র আনিসুল হক। তেজগাঁও থেকে ট্রাক স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করে নগরবাসীর জন্য রাস্তা উন্মুক্ত করতে যেয়ে জীবন হুমকির মুখে পড়লেও পিছপা হননি মেয়র। এরপর বনানীতে যুদ্ধাপরাধী মোনায়েম খানের দখলকৃত জায়গা উচ্ছেদ করে রাস্তা করে দেন। কূটনৈতিক পাড়ায় প্রতিটি দূতাবাসের সামনের ফুটপাত দখলমুক্ত করে পথচারীদের কাছে ফিরিয়ে দেন। এরকম অনেকগুলো কাজ করে সবার স্বপ্নের মেয়রে পরিণত হন আনিসুল হক। লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর সবাইকে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নেন স্বপ্নবাজ সেই মেয়র।

দীর্ঘদিন তার যোগ্য উত্তরসূরি খুঁজতে থাকে সরকার। এরপর ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটিতে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে অনেকটা ফাঁকা মাঠে বিজয়ী হয় হন আরেক ব্যবসায়ী নেতা মো. আতিকুল ইসলাম। বিজয়ী হওয়ার পর চলতি বছরের ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কাছে শপথ নেন আতিকুল ইসলাম। শপথ গ্রহণের পর প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট ছিল ১২ মার্চ। প্রথম দিনেই যান উত্তরা শায়েস্তা খান এভিনিউ, আশকোনা সড়ক, বনানীর মেট্রোরেল প্রকল্পের পাশের খাল এবং বাড্ডার সুতি খাল পরিদর্শনে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/25/1561444689709.jpg


সেদিন পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমে স্বীকার করেছিলেন ওই এলাকার খাল দখল হয়ে গেছে। আমি এলাকাবাসীকে কথা দিয়েছি যারা দখলে নিয়েছে তারা নিজ উদ্যোগে না সরালে আমি উচ্ছেদ করব। আমি কথায় না কাজে প্রমাণ দিতে চাই, আমি ৭ দিন পর আবার পরিদর্শন করব। সেই ৭ দিনের জায়গায় চার মাস চলে গেলেও আর পরিদর্শন হয়নি মেয়রের।


এ বিষয়ে মেয়রের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ওখানকার কাউন্সিলর আমাকে জানিয়েছেন খালের সমস্যা কিছুটা দূর হয়েছে, তাই যাওয়া হয়নি। এটা তো একটা উদাহরণ। বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থামাতে কথা দিয়েছিলেন দুই মাসের মধ্যে আবরার যেখানে নিহত হয়েছেন সেখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করে দেওয়া হবে। দুই মাসের জায়গায় চার মাস গেলেও সম্পন্ন হয়নি ব্রিজ নির্মাণ। সবশেষ ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটির আগের দিন বসুন্ধরা গেটের সামনের ওই ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ কাজ এবং এলাকা পরিদর্শন করে প্রকৌশল বিভাগ ও ডিএনসিসি’র কর্মকর্তাদের কথা অনুযায়ী মেয়র বলেন কাজ করতে এসে টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দিয়েছে তাই সময় একটু বেশি লাগছে।


ছাত্র আন্দোলনের সময় মেয়র আতিকুল ইসলাম কথা দিয়েছিলেন খুব শিগগিরিই মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটিকে ‘মডেল সড়ক’ হিসেবে নির্মাণ করা হবে। সেই সিদ্ধান্তও আলোর মুখ দেখা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ডিএনসিসি’র প্রকৌশল বিভাগের দাবি ওখানে এমআরটি’র কাজ হবে তাই বাস্তবে করা যাবে কি না চিন্তা করা হচ্ছে।


তার নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা। ক্যাম্পেইনে বিভিন্ন সভা সমাবেশে বলছিলেন আমি নগরবাসীর অভিযোগ শুনতে ‘নগরঅ্যাপ’ সেবা চালু করব। যদিও এই অ্যাপ আনিসুল হক চালু করেছিলেন। সেখানে অভিযোগ দিয়ে তার সমাধানও মিলত। তবে প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সেটি আর স্থায়ীরূপ লাভ করেনি বলে দাবি ডিএনসিসি’র। বাস্তবতা হচ্ছে ওই অ্যাপ চালু থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সার্বক্ষণিক তৎপর থাকতে হত। অথচ সেই নগরঅ্যাপ এখনও চালু করতে পারেননি মেয়র আতিকুল ইসলাম।


ডিএনসিসি’র অধিকাংশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মেয়র আনিসুল হক আর আসবেন না। তার কাছাকাছি যাওয়ার যোগ্যতা কারও নাই। উনি যেভাবে মাঠে দৌড়াতেন যেভাবে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতেন সেই কাজের ধারের কাছেও নেই বর্তমান মেয়র। আসলে মেয়র আনিসুল হক সাহসী ছিলেন। আর উনি দৌড়াতেন পিছে পিছে আমলারা দৌড়াতেন। আর এখন মেয়র শুধু কর্মকর্তাদের কাছে পরামর্শের জন্য বসে থাকেন। তারা যেভাবে গাইড লাইন করেন সেভাবেই চলেন।


২০১১ সালে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন বিভক্তের পর ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল প্রথমবারের মত ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুই মেয়র ওই বছর ৬ মে শপথ গ্রহণ করেন। সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যেকোনো সময় ভোট করতে হবে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই আগামী বছরের মে মাসকে ভোটের জন্য প্রাথমিক তারিখ হিসেব নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে মে মাসে যেহেতু রমজান তাই আগের মাস অর্থাৎ এপ্রিলের শেষ নাগাদও হতে পারে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। তবে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের মে মাসকে নির্বাচনে সম্ভাব্য তারিখ রেখে খসড়া করা হয়েছে। কমিশন চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে তারিখ চূড়ান্ত করা হবে। ইতোমধ্যে এ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে কমিশন। সিদ্ধান্ত যাই হোক আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে কবে ভোট হবে তিন সিটিতে।

আইন অনুযায়ী নির্বাচনের পর মেয়রদের প্রথম কমিশন সভা থেকে মেয়রদের টাইম লাইন ধরা হয়। সেই হিসেব অনুযায়ী নির্বাচনের পর ঢাকা উত্তর সিটিতে প্রথম সভা হয় ২০১৫ সালের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ১৭ মে ও চট্টগ্রাম সিটিতে প্রথম সভা হয় একই বছরের ০৬ আগস্ট। সেই হিসাবে ঢাকা উত্তরের ক্ষেত্রে এই মেয়াদ হবে ২০২০ সালের ১৩ মে পর্যন্ত, দক্ষিণে ওই বছরের ১৬ মে পর্যন্ত। চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের জুলাইয়ে।


হিসেব মতে মেয়র আতিকুল ইসলামের মেয়াদ মাত্র ১২ মাস। এরইমধ্যে চার মাস অতিক্রম করেছেন। বাকী আছে আর ৮ মাস। বিগত চার মাসের কাজের গতি দেখে অনেকেই বলছেন বাকী ৮ মাসেও কোনো সিদ্ধান্ত পৌছাতে পারবেন না মেয়র। ফলে মেয়র আনিসুল হক এর রেখে যাওয়া উদ্যোগগুলোও আর আলোর মুখ দেখবে না।


 

   

ঘূর্ণিঝড় রিমাল’র প্রভাবে সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমাল’র প্রভাবে সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রোববার (২৭ মে) বিকেল থেকে সিলেটে নগরী এবং এর আশেপাশের উপজেলা সমূহে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়।

জানা যায়, গত ২ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। শুক্রবার ও শনিবার দিবাগত রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও কমেনি তাপমাত্রা। এছাড়াও মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে সিলেটে চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪ বার রেকর্ড করা হয়েছে। গত ১৬ মে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। পরে ২৩ মে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় ৩৭ দশমিক ৫ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়।

শুক্রবার (২৪ মে) বিকাল ৩টায় ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি ও চলতি বছরের পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে শনিবার (২৬ মে) বিকাল ৩টায় ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে রোববার বিকেলে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিন বিকেল থেকে সিলেটে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও হালকা বাতাস থাকার ফলে জনমনে অনেকটা স্বস্তি দেখা যায়। এই রিপোর্ট রাত সাড়ে ১২টায় লেখার সময়েও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, ‌বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় রিমামে পরিণত হয়েছে। ইতোমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সিলেট কিছু উপজেলায় ও নগরীতে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, রাত নয়টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সিলেটে ১৫ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সিলেটে খুব একটা পড়বে না।

এদিকে সন্ধ্যায় আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মো.মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিমি) থেকে অতিভারী (৮৯ মিমির বেশি) বর্ষণ হতে পারে। চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

;

৬ ঘণ্টার মধ্যে উপকুল অতিক্রম করবে রিমাল

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রিমাল

রিমাল

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোংলার দক্ষিণপশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে পরবর্তী ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাত ১টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক।

তিনি বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে আগামীকাল সারাদেশে মৃদু ও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে কোন কোন জেলায় বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী

বন্দরসমূহকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝড়ো হাওয়া সহ ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি,

খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারে।

;

ঘূর্ণিঝড়ে দক্ষিণের ৪০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমাল-এর প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গাছ পড়ে, লাইন ছিঁড়ে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। আবার দুর্ঘটনা এড়াতে অনেক এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক এলাকায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মোবাইল কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও ফোন জরুরি সেবার অন্তর্গত। দুর্যোগের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখতে বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) এক কর্মকর্তা জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২৫ লাখ ৬৯ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎহীন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে পটুয়াখালী, বাগেরহাট, ভোলা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও ঝালকাঠি। পটুয়াখালীতে ৬ লাখ, বাগেরহাটে সাড়ে ৪ লাখ ও ভোলায় সোয়া ৪ লাখ, পিরোজপুরে ৩ লাখ, বরিশালে ১ লাখ ৮০ হাজার, সাতক্ষীরায় ১ লাখ ৭০ হাজার এবং ঝালকাঠিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। রাতে আরও ৮-১০ লাখ গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।

দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি ওজোপাডিকোরও ২-৩ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যথাসময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি প্রয়োজনে বাতিল এবং অতিরিক্ত জনবল প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গভীর সমুদ্রে তেল খালাস কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিপিসি সূত্রে জানা গেছে। নিরাপত্তার কারণে জ্বালানি তেলবাহী দুটি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে।

একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে তেল পরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে রিমালের কারণে এলএনজি সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না বলে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান।

ওই কর্মকর্তা জানান, দুটি ভাসমান টার্মিনাল থেকে (এফএসআরইউ) এলএনজি সরবরাহ করা হচ্ছে। রাতের মধ্যে ১০০ কোটি ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জানান, সাগরের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় শুক্রবার এলএনজি সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে শনিবার সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। কারণ এফএসআরইউ যেদিকে, রিমাল সেদিক দিয়ে যাচ্ছে না। তাই ক্ষতির আশঙ্কা কম।

একটি বিতরণ কোম্পানির সাবেক একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি হবে, এটা স্বাভাবিক। তবে তা যতটা কমানো যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এখন নিয়মিত ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে। তাই বিতরণ ব্যবস্থাপনা এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তা ঝড়েও টিকে থাকে। এ ছাড়া কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জেনারেটরের পাশাপাশি ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে, যাতে দুর্যোগকালীন জরুরি প্রয়োজনে তা বিকল্প উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি) জানায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় উপকূলে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য মোবাইল কোম্পানিগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, উপকূলে ঝড় শুরুর আগে সন্ধ্যা বেলাতেই অনেক এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। টাওয়ারগুলোতে চার ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে চলে গেছে। ঝড় থেমে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলে আবার নেটওয়ার্ক সচল হবে।

;

বান্দরবানে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসেনি কেউ, পাহাড় ধসের শঙ্কা

  ঘূর্ণিঝড় রিমাল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবা‌ন
বান্দরবানে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসেনি কেউ

বান্দরবানে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আসেনি কেউ

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় বান্দরবানে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন। বান্দরবান ও লামা পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে জেলার ৭ উপজেলায় ২১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে এ সকল ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোতে ধসের সৃষ্টি হলে ব্যাপক জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বার বার ঝুঁকিপূর্ণস্থানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়নি।

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র শামসুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা মাঠে কাজ করছি। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে জেলার সাত উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় ২১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যেকোন ধরনের দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুত ও জরুরি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

;