ঈদের বিকেলে ঘোরাঘুরিতে আনন্দ নগরবাসীর



রেজা-উদ্-দৌলাহ্ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪
হাতিরঝিলে মানুষের ভিড়, ছবি: বার্তা

হাতিরঝিলে মানুষের ভিড়, ছবি: বার্তা

  • Font increase
  • Font Decrease

'আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে
জানি নে, জানি নে'

এই রবীন্দ্র সঙ্গীত যে কোনো প্রকৃতিপ্রেমীর মননে বেজে ওঠে। কিন্তু এবার সেটি কিছুটা আগেই ধরা দিল। ঈদের দিন যেখানে বেজে ওঠার কথা নজরুলের সেই বিখ্যাত গান ‘রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ সেখানে মানুষের মনে ঠোঁটে জায়গা করে নিয়েছে রবীন্দ্র সঙ্গীত। আর এ জন্য অবশ্য দোষ দিতে হবে প্রকৃতিকেই। রবীন্দ্র-নজরুল চিরায়ত বিতর্কে আমরা না যাই। কেননা বৃষ্টি ভেজা ঈদের দিন, মানুষের ঈদ আনন্দকেও শীতল করে দিয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559743736604.jpg
সকাল থেকেই আকাশের ছিল মন খারাপ, ছবি: বার্তা২৪

 

দীর্ঘ একমাস সিয়াম সাধনার পর বাংলাদেশে আজ মঙ্গলবার (৫ জুন) উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ঈদের চাঁদ দেখা নিয়ে রাতভর চলে বিভিন্ন নাটকীয়তা। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে সপ্তাহজুড়েই দেশের আকাশসীমায় ছিল কালো মেঘের আনাগোনা। কখনো ছিল ভারী বৃষ্টি, আবার পরক্ষণেই ভ্যাপসা গরম, সেই সঙ্গে সূর্যের ক্ষিপ্ততা। মঙ্গলবার সারাদিন আকাশের মন খারাপ ছিল। কিন্তু তাতে যে চাঁদ দেখা যাবে না সেটা কারো ভাবনাতেও ছিল না। তাই মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে চাঁদ দেখার খবর না পাওয়ায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি ঘোষণা দিল, বৃহস্পতিবার ঈদ। কিন্তু ততক্ষণে কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারি, নাগেশ্বরী থেকে চাঁদ দেখার খবর ঢাকা এসে পৌঁছে।

এদিকে, পার্শ্ববর্তী ভারত পাকিস্তানেও চাঁদ দেখা গেছে। দুই ঘণ্টা পর কমিটির আবারো মিটিং! এবার ঘোষণা পাল্টে জানিয়ে দিল বুধবারই পালিত হবে ঈদ। অবসান হয় চাঁদ দেখা নিয়ে নাটকীয়তা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559743889365.jpg
আকাশের মন ভালো হতেই হাতিরঝিলে মানুষের ঢল নামে, ছবি: বার্তা২৪

 

অন্যদিকে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকেই ভারী বর্ষণ শুরু হয় রাজধানীসহ কয়েকটি জেলায়। সকাল থেকে বৃষ্টি আরও তীব্রতর হয়। বৃষ্টির তীব্রতায় ঈদের নামায পড়তে গিয়েও জনদুর্ভোগে পড়ে মুসল্লিরা।

সড়কগুলো পানি ওঠায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। ঈদের নামাজ শেষ হলেও দিনভর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি রাজধানীবাসীকে অঘোষিত গৃহবন্দী করে রাখে। টেলিভিশন দেখে কিংবা বই পড়ে, পরিবারের সঙ্গে গল্প করেই গৃহবন্দীর সময়টা উপভোগ করেন নগরবাসী। কারও কারও বাসায় পোলাও মাংসকে অঘোষিত এক যুদ্ধে হারিয়ে ডাইনিং টেবিলের জায়গা দখল করে নেয় খিচুরি,মাংস।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559743980103.jpg
সোহরাওয়াদী উদ্যানে কেউ দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, ছবি: বার্তা২৪

 

তবে, বিকেলের পর থেকে ভালো হতে থাকে আকাশের মন। কমতে থাকে কান্না। সেই সুযোগে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে মানুষজন ঘর থেকে বের হতে শুরু করেন। ভাঙে অঘোষিত কারাবন্দীর সাজা!

বিকেল থেকে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সোহরাওয়াদী উদ্যান, রমনা, শাহবাগ, হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে দেখা যায় অনেক মানুষ বের হয়েছেন। ঘুরে বেড়াতেই তাদের আনন্দ। ছোট-বড়, নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী রং বেরংয়ের নতুন পোশাক পড়ে মুক্ত পরিবেশের শীতল হওয়া গায়ে মাখিয়ে দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেলফি বন্দী করে রাখছেন নিজেদের।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559744142045.jpg
ঘুরতে এসে পরিবার নিয়ে একটি সেলফি না হলে যে ঈদটাই পানসে লাগবে, ছবি: বার্তা২৪

 

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেখা যায়, খোলা মাঠে লাল-নীল দুই দলে বিভক্ত হয়ে ফুটবল খেলায় মেতে উঠেছেন কয়েকজন। বিবাহিত-অবিবাহিতদের মধ্যকার এই খেলা অনেকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন। উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বরের পাশে সারি সারি বেঞ্চ। বেঞ্চগুলোতে মানুষজন বসে আছেন, আড্ডা দিচ্ছে। একটা বেঞ্চও খালি পাওয়া ছিল দুষ্কর। বেঞ্চে যারা জায়গা পায়নি তারা গিয়ে উঠেছেন স্বাধীনতা চত্বরের বেদীতে। সেলফি ও ছবি তোলাতেই তাদের মূল আকর্ষণ। কেউ কেউ আবার টিকেট কেটে স্বাধীনতা জাদুঘরের ভেতরেও ঢু মেরে আসছেন।

এখানেই কথা হল চাকরিজীবী রানা আহমেদের সঙ্গে। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘বিকেল বেলা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় ঘুরতেই আনন্দ। কিন্তু সারাটা দিন বেরসিক বৃষ্টির কারণে মাটি হয়ে গেছে সব।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559744252542.jpg
নিজ পরিবারের তিন রাজকন্যা নিয়ে ঘুরতে এসেছেন বাবা-মা, ছবি: বার্তা২৪

 

পাশেই কিছু মানুষ ভিড় করেছেন উদ্যানের শিখা চিরন্তন অংশে। জ্বলন্ত অগ্নিশিখার সামনে দাঁড়িয়ে তারা ছবি তুলে ফ্রেমবন্দী করছেন ঈদের বিকেলকে।

উদ্যান থেকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে গেলে দেখা যায় কিছুটা ভিড় রয়েছে সেখানে। ঈদের দিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা। তাই ছুটির দিনে পরিবার পরিজন নিয়ে জাদুঘরে ঘুরতে এসেছেন।

এখানে কথা হল আব্দুল মালেক দম্পতির সঙ্গে। মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছেন তারা। তারা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এবার ঈদে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়নি। তাই শহরে ঈদ করছি। মেয়েকে নিয়ে জাদুঘর ঘুরতে এসেছি।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559744346382.jpg
জাতীয় জাদুঘরে এসেছেন অনেকেই, ছবি: বার্তা২৪

 

শাহবাগ থেকে হাতিরঝিলে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। তবে সেখানে মানুষের উপস্থিতি ছিল আরও বেশি। হাতিরঝিলের এফডিসি মোর থেকেই ঘুরতে বের হওয়া মানুষের সরব উপস্থিতি। মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকারে চড়ে কিংবা পায়ে হেঁটেই তারা এসেছেন হাতিরঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। কিছুটা সময় একান্তে কাটাতে। হাতিরঝিলের মধুবাগ ও মহানগর ব্রিজেও ছিল মানুষের ঢল।

হাতিরঝিলে কথা হয় দুই বন্ধু আসিফ ও শাহানের সঙ্গে। তারা বলেন, ‘আমরা এমনিতেই হাতিরঝিলে ঘুরতে আসি। আড্ডা দেওয়ার জন্য এটা অনেকের প্রিয় জায়গা। আর ঈদের দিন বিকেলে আড্ডা আর ঘোরাঘুরি তো করতেই হয়।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559744420569.jpg
বৃষ্টি থামতেই ঈদকে উপভোগ করতে বেড়িয়ে পড়েন অনেকেই, ছবি: বার্তা২৪

 

ঈদের খুশিতে সবকিছুর দাম দ্বিগুণ!

ঈদের দিনে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালারা ঈদের খুশিতে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। যেন দাম বাড়ানো হচ্ছে ঈদের আনন্দ! অনেক ক্রেতা হাসিমুখে সে দাম মেনে নিলেও, কারো কারো মধ্যে ছিল অস্বস্তি।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলুনের দামাদামি করছিলেন কয়েকজন অভিভাবক। প্রতিটি ৩০ টাকায় বিক্রি করছিলেন ফেরিওয়ালা। কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, দাম প্রায় দ্বিগুণ। শুধু বেলুনই নয়, উদ্যানের চায়ের দোকানে লাল কিংবা দুধ চায়ের জন্য দাম গুনতে হয়েছে ১০ টাকা করে। রিকশা ভাড়াও ছিল বেশি বেশি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/05/1559744490439.jpg
ঈদের খুশিতে দাম বাড়িয়ে ভালোবাসার বেলুন বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালা, ছবি: বার্তা২৪ 

 

একই চিত্র ছিল হাতিরঝিলেও। সেখানে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছিল রাসেল। স্বাভাবিক দাম ১০ টাকা হলেও আজকে দিন ২০ টাকায় বিক্রি করছিল সে। জানালো, ঈদের দিন হিসেবে বেচাকেনা খারাপ। বৃষ্টির দিন মানুষ কম বের হয়েছে।

   

ভারতে গিয়ে নিখোঁজ সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ভারতে গিয়ে চার দিন ধরে নিখোঁজ বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

পরিবারের পক্ষ থেকে গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) জানানো হয়েছে, চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১৬ মে) থেকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে স্বজনদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। এ নিয়ে স্বজনেরা উদ্বিগ্ন।

আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস রবিবার বিকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যান। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান।

মুমতারিন ফেরদৌস ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তার বাবা ভারতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। বিষয়টি জানাতে তিনি ডিবি কার্যালয়ে এসেছেন।

ডিবি মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ভারতে একটি বাংলাদেশি মুঠোফোন ও একটি ভারতীয় মুঠোফোন ব্যবহার করেন। নম্বর দুটি কখনো বন্ধ আবার কখনো খোলা পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। আনোয়ারুল আজিমের কী হয়েছে, সেটা জানার চেষ্টা চলছে।’

আনোয়ারুল আজিমের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, গত ১২ মে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। ১৪ মে পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তবে ১৬ মে সংসদ সদস্যের মুঠোফোন থেকে আবদুর রউফের কাছে ফোন আসে। তিনি ফোন ধরতে পারেননি। পরে আবার তিনি ফোন করলে মুঠোফোনটি বন্ধ পান। এর পর থেকে সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০১৪ সাল থেকে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তিনি।

;

র‍্যাব হেফাজতে মৃত্যু, নান্দাইল থানার এসআই প্রত্যাহার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ময়মনসিংহ
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

র‍্যাব হেফাজতে সুরাইয়া খাতুন (৫২) মৃত্যুর ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ময়মনসিংহের নান্দাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) রাতে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে নান্দাইল থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) রাতে নান্দাইল মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, নান্দাইলে গৃহবধূ রেখা আক্তার (২০) মৃত্যু মামলার আসামি তার শ্বশুর আজিজুল ইসলাম ও শ্বাশুড়ি স্ত্রী সুরাইয়া খাতুন। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই নাজমুল হাসান। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই আসামিকে নান্দাইল মডেল থানায় ডেকে নেন এসআই নাজমুল। সেখানে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে কিছুক্ষণ পরে তাদের ছেড়ে দেন। থানার সামনে আসতেই র‍্যাবের একটি দল আজিজুল ইসলামকে ছেড়ে দিয়ে সুরাইয়াকে আটক করে ভৈরব ক্যাম্পে নিয়ে যায়। এর পর শুক্রবার সকালে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরাইয়া খাতুনকে মৃত ঘোষণা করে।

এ মৃত্যুর ঘটনায় সুরাইয়া খাতুনের স্বামী আজিজুল ইসলাম র‍্যাবের হেফাজতে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। পরে মরদেহের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করে নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওই দিন শনিবার দুপুরে সুরাইয়া খাতুনের জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয় উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের বরুনাকান্দা গ্রামে।

নান্দাইল মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মজিদ জানান, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসআই নাজমুল হাসানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছেন। এর চাইতে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।

ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. শামীম হোসেন বলেন, বিভিন্ন কারণে তাকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনে করেন, কাজের প্রতি তার আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। তাই, তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

;

নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী হুর মাজার মেলা অনুষ্ঠিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম নওগাঁ
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ হুর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এখানে ‘হুর’ মানে কোন রমনি কে বুঝানো হয়না। গ্রামের একটি বিশেষ বট গাছের নিচে দিনব্যাপী হুড় হুড় (তাড়াহুড়ো) করে এ মেলা শুরু ও শেষ হয় বলে একে হুর মেলা বলে।

এবারের মেলায় প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন দোকান পসরা সাজিয়ে বসেছে। দিনব্যাপী মেলায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার বেচাকেনার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এ মাজারে মনের বিশ্বাসে মানত করেন নানান ধর্মের মানুষ। তবে উদ্যেশ্য যাই হোক কেন, মনোবাসনা পূরণই যেন সকলের প্রত্যাশা। গ্রামীণ এ মেলার মধ্য দিয়ে সম্প্রতির বন্ধন অটুট হবে এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

চেরাগপুর গ্রামের পুকুর পাড়ে একটি বিশেষ বট গাছের নিচে মাটির একটি ঘরের মধ্যে মন্ডপ ও মাজার। আর এ মাজারে ধর্ম-বর্ণ বিনিশেষে সকল শ্রেনীর মানুষরা মানত করে থাকেন।

প্রতি বছরের পহেলা বৈশাখের দ্বিতীয় রবিবার এ বটগাছের নিচে মেলা হয়ে থাকে। তবে এ বছর থেকে জৈষ্ঠ্য মাসের রবিবার মেলা হয়। কৃষিপ্রধান এলাকা হওয়ায় ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর বটগাছের আশপাশেসহ ফাঁকা মাঠে এই মেলা হয়। এটি ঐতিহ্যবাহী ‘হুর মাজার মেলা’ নামে পরিচিত।

এবারের মেলায় বিভিন্ন পদের মিষ্টান্ন ও খাবারের দোকান, খেলনা সামগ্রী, কসমেটিক, মৌসুমি ফল এবং কৃষি যন্ত্রপাতিসহ আসবাবপত্রের দোকান দিয়ে সাজানো হয়েছে। এমনকি রুই, কাতলা ও পাঙ্গাস মাছ এবং গরু ও মহিষের মাংসও বিক্রি হয়। দিনব্যাপী এ মেলা হলেও কসমেটিক ও কাঠের আসবাবপত্রের দোকান থাকে আরো কয়েকদিন।

মানত করে যাদের মনোবাসনা পুরণ হয় তারা এ মাজারে এসে রান্না করে সবার মাঝে খাবার বিতরণ করেন। আবার অনেকে এখানে পরিবারের সবাই দল বেঁধে এসে রান্না করে খান। আশপাশের অন্তত ১৮-২০ টি গ্রামের মানুষের পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গন এক মিলন মেলায় পরিনত হয়।

স্থানীয়রা জানান, হুর মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে এ মেলায় মানুষ আসে। এ ছাড়া মেয়ে ও জামাইকে দাওয়াত করে নিয়ে আসা হয়। একদিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে আত্মীয়-স্বজনদের আগমনে যেন আনন্দ উৎসব বিরাজ করে।

মাজারের খাদেম শুকচান বলেন, ‘বিভিন্ন ধর্মের মানুষরা মানত করে থাকে। তাদের আশা পুরন হলে পরে এ মাজারে এসে রান্না করে সবাইকে খাওয়ায়। দেশ স্বাধীনের পর থেকে বটগাছের নিচে এ মাজারে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।’

মিষ্টির দোকানী উজ্জল কুমার বলেন, ‘দিনব্যাপী মেলা হলেও একদিন আগে এসে বিকাল থেকে দোকান সাজিয়ে বেচাকেনা শুরু করেছি। দিনব্যাপী মেলায় লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন মিষ্টান্ন বিক্রি হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা কিছুটা কম। কারন হতে পারে মানুষের এখনো ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়নি। হয়ত টাকা-পয়সা নেই। এ কারণে মেলায় মানুষের আগমন কিছুটা কম।’

মেলা কমিটির সভাপতি ও ইউপি মেম্বার জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রাচীনতম এ হুর মেলায় ধর্মবর্ণ বির্নিশেষে বিভিন্ন এলাকা থেকে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের আগমন ঘটে। তবে কবে থেকে এ মেলা হয়ে আসছে তা জানেন না স্থানীয়রা। তবে দেশ স্বাধীনদের পর থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। একদিনের জন্য এ গ্রাম মিলন মেলায় পরিনত হয়। মেলায় প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন দোকান অংশ নিয়েছে।’

;

নিজস্ব উদ্ভাবন, ফেঞ্চুগঞ্জে নিরবিছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুশিয়ারা নদীর পানি দিয়ে চলে ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র। নদীটির তীরে অবস্থিত পাম্প হাউজ মনিটরিং নিয়ে বিড়ম্বনার অন্ত ছিল না। কখনও নাব্যতা কমে যাওয়া, কখনও মোটরের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পানি সরবরাহ নিয়ে নাকাল ছিল বিদুৎকেন্দ্রটি।

পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রও বন্ধ হয়ে যেতো। গত বছরও ৩১বার বিভ্রাটের কবলে পড়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদুল আলম, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তাফিজ আহমেদ ও সহকারী প্রকৌশলী নয়বিৎ মন্ডল নিজেরাই তাক লাগানো সমাধান এনে দিয়েছেন। তাদের উদ্ভাবন স্বস্তি এনে দিয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে।

যে কাজে বিদেশি কনসালটেন্ট ভাড়া করতে হলে অর্ধকোটি টাকার উপরে খরচ হতে পারতো, ওয়াহিদুল ইসলামরা সেই কাজ করেছেন মাত্র ৩০ হাজার টাকা খরচে। এখন আরও তাদের দেড় কিলোমিটার দূরে গিয়ে পাম্প হাউজ দেখে আসতে হয় না। যেকোনো জায়গায় বসেই পাম্প অপরেট করা যাচ্ছে। পানির স্তরও জেনে যাচ্ছেন এক ক্লিকেই।

প্রকৌশলী ওয়াহিদ আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আগে প্রতি মাসেই পাম্প পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটতো। এতে করে ফেঞ্চুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশনের ২টি স্টিম টারবাইন, ৪টি গ্যাস টারবাইন, ৪টি এইচআরএসজি কুলিংয়ের পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতো। এ কারণে ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিভ্রাট দেখা দিতো। গত ৪ মাস থেকে প্রোগ্রামেবল লজিক কন্ট্রোলার সফটওয়ারের মাধ্যমে প্রোগ্রাম তৈরি করায় এখন সব সংকট দূর হয়ে গেছে। এখন অফিসে বসেই সব সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে। কোনো রকম যান্ত্রিক ত্রুটি হলে সঙ্গে সঙ্গে ধরতে পারছি। আগে দেড় কিলোমিটার দূর পাম্প হাউজে গিয়ে তারপর সমস্যা চিহ্নিত করতে হতো। এতে করে বছরের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।’

ওয়াহিদুল ইসলাম ও তারে টিমের সদস্যদের ভাবনার জায়গাটিও আশান্বিত হওয়ার মতো। ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চিত্ত-বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা নেই। অবসর সময় কাটাতে তারা উদ্ভাবনীতে মনোনিবেশ করেন। আর শুরুতেই প্রাধান্য পায় দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত সমস্যা পাম্প হাউজ।

আগে সরেজমিন গিয়ে দেখে আসতে হতো পাম্প হাউজ ও নদীর নাব্যতা। লোকবল সংকটের কারণে মনিটরিং করা কঠিন হয়ে পড়তো। এতে করে নানা রকম সংকট দেখা দিতো। আর সংকটের শেষ ধাপে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বিকল হয়ে বসে যেতো। এ কারণে সংকট ছিল প্রতি মাসের চিত্র। সেই সংকট দূর করে হিরোতে পরিণত হয়েছে ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদুল ইসলাম ও তার টিম।

টিমটি তাদের উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগ আয়োজিত ‘ইনোভেশন শোকেসিং-২০২৪ এ।’ এতে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়। ওয়াহিদুল ইসলাম দাবি করেছেন ফেঞ্চুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওই পদ্ধতি বৃহত্তর পরিসরে পাইলটিং করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্র, ওয়াসা, মেরিন ভেসেলে হুবহু পদ্ধতি ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে।

উদ্ভাবন শোকেসিং আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিকল্প ও সহজলভ্য উৎস আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের সমস্যা আমাদেরকেই আমাদের মতো করে সমাধান করতে হবে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্ট (এআই) এখনই অনেক সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছে। এআই-এর ব্যবহার বাড়িয়ে গ্রাহক সন্তুষ্টিতে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রযুক্তির ব্যবহার যতো বাড়বে অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় ততো হবে। একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্যও নিশ্চিত হবে।’

উল্লেখ্য, ইনোভেশন শোকেসিং ২০২৪-এ আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) থ্রি-ডি প্রিন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন স্পেয়ার পার্টস তৈরিকরণ-এ প্রথম স্থান, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বেজড ‘স্মার্ট কাস্টমার এসিস্ট্যান্ট- চ্যাটবট’ ২য় স্থান অর্জন করে।

;