সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে দুই বছরে বার্তা২৪.কম



উবায়দুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
উবায়দুল হক, ছবি: বার্তা২৪.কম

উবায়দুল হক, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সত্য ও বস্তুনিষ্ঠতার মাপকাঠিতে ভর করেই তৈরি হয় সংবাদ। বর্তমানে প্রতি মিনিট বা মুহূর্তের আপডেটের জন্য সবার ভরসার মাধ্যম হয়ে উঠেছে অনলাইন গণমাধ্যম। আর সেই গণমাধ্যম যদি হয় বাংলাদেশে অনলাইন সাংবাদিকতার জনকের হাতে গড়া, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। ‘বিসমিল্লাহ বলে শুরু পথচলা’ দিয়ে যাত্রা শুরু যে গণমাধ্যমের, সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে আজ সেটি এক বছরের মাইলফলক স্পর্শ করেছে।

বলছিলাম আমার অনলাইন সাংবাদিকতার হাতেখড়ি, প্রাণের প্রতিষ্ঠান বার্তা২৪.কমের কথা। দেশের দু’দুটি শীর্ষ স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রতিষ্ঠার পর ডিজিটাল গণমাধ্যমের সফল স্বপ্নদ্রষ্টা আলমগীর হোসেন নতুন চ্যালেঞ্জ নিলেন ‘বাংলার, বাঙালির সংবাদ সারথী-বার্তা২৪.কম’ নিয়ে। গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে বার্তা২৪.কমকে গড়েছেন মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজপোর্টাল হিসেবে।

তার বদৌলতেই আমার অনলাইন সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার শুরু হল। স্বপ্ন ছিল একদিন দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিকের সঙ্গে কাজ করব। হঠাৎ সেই স্বপ্ন ধরা দিল আমার ভুবনে। একজন আলমগীর হোসেনের বদান্যতায় তৃণমূলের এই আমি আজ দেশের প্রথম সারির অনলাইন নিউজপোর্টালের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট। শুকরিয়া আল্লাহর কাছে, অশেষ কৃতজ্ঞতা বার্তা২৪.কমের ‘প্রাণভোমরা’ আলমগীর হোসেনের প্রতি।

Barta

মফস্বলে অনলাইন সাংবাদিকতা। তিনটি শব্দের এ বাক্যটি শুনলেই অনেকের চোখ বুঝি রীতিমত কপালে ওঠার অবস্থা। সেক্ষেত্রে গণিত বিভাগে অনার্স সম্পন্ন করা আমি চ্যালেঞ্জ নিলাম, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করব অনলাইন সাংবাদিকতায়।

যে চিন্তা-ভাবনা সেই মোতাবেক কাজ। বার্তা২৪.কমের জন্য আমি দৌড়েছি ময়মনসিংহের এক মাথা থেকে আরেক মাথায়। আমার মোবাইল ফোনের কি-বোর্ড কখনও হয়ে উঠেছে এক প্রকার ল্যাপটপ, আবার এই মোবাইল ফোনেই ধারণ করেছি ভিজ্যুয়াল দৃশ্য। বার্তা২৪.কমকে বলা হচ্ছে, একের ভেতর দুই। অনেকেই নিউজ পড়ছেন, চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন। আবার অসাধারণ সব ভিডিওতে হারিয়ে যাচ্ছেন গভীরে।

যেমন মা দিবসে আমার একটি ভিডিও স্টোরি দেখে বেশ কয়েকজন ফোন করে শুভ কামনা জানালেন। তারা বলেছেন, ভিডিও স্টোরিটি দেখে তারা ছোটবেলায় হারিয়ে গেছেন। মাকে অনুভব করেছেন হৃদয়ের সবটুকু উষ্ণতায়।

টেলিভিশনে রিপোর্টিং করার প্রবল ইচ্ছা নিয়েই মূলত আমার সাংবাদিকতায় আসা। কিন্তু চাইলেও সেই সুযোগটা কখনও হয়ে ওঠেনি। তবে দেশের প্রথম ও জনপ্রিয় মাল্টিমিডিয়া অনলাইন নিউজপোর্টাল বার্তা২৪.কম সেই সুযোগটা আমাকে করে দিয়েছে।

এখানে একাধারে আমি অনলাইন পোর্টালের জন্য রিপোর্ট ও টেলিভিশনের মত করে পিটিসিসহ পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ করতে পারছি, যা ছিল আমার চাওয়া। এক্ষেত্রে টেলিভিশনে কাজ করতে না পারার যে আক্ষেপ আমার মনে ছিল সেটি অনেকাংশেই কমে গেছে। সেজন্যই বার্তা২৪.কম হচ্ছে একের ভেতর দুই। আমার স্বপ্নে পূর্ণতা দেওয়া গণমাধ্যম।

আমার প্রাণের প্রতিষ্ঠান বার্তা২৪.কমের প্রথম বর্ষপূর্তিতে মনে পড়ছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা বিমল পালের গল্পগাথা। যেটি তুলে ধরেছিলাম আমাদের এই মাল্টিমিডিয়ায়। একজন বিমল পাল দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে পথে-প্রান্তরে এবং স্কুলে ঘুরে ঘুরে তরুণ প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে কাজ করছেন। তার এমন মহৎ কাজকে ছড়িয়ে দিতে আমি তাকে নিয়ে রিপোর্ট ও প্যাকেজের মাধ্যমে নতুনভাবে উপস্থাপন করি।

প্যাকেজটি ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার হবার পর বিমল পাল কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বার্তা২৪.কমের প্রতি। আলাপচারিতায় তার একটি কথা আমার মনে গেঁথে আছে। তিনি বলেছিলেন-এখন মানুষ টিভির চেয়ে অনলাইনমুখী বেশি। চলার পথে ও ব্যস্ততার শেকলবন্দী জীবনে মানুষের টিভি দেখার ফুসরত হয়ে ওঠে না।

তাই টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও কিন্তু বেছে নিয়েছে অনলাইনকেই। বার্তা২৪.কম যেমন একটি রিপোর্ট ফেসবুকে বা ইউটিউবে প্রচার করে, টিভি চ্যানেলগুলোও একই কাজ করছে। কারণ দর্শক এখন অনলাইনমুখী।

বার্তা২৪.কম শুধু কি এলিট শ্রেণীর গণমাধ্যম? বিষয়টি অবশ্যই তেমন নয়। খেটে খাওয়া মানুষের স্বপ্ন সাধ মেটানোর অন্যতম প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠেছে বার্তা২৪.কম। বিশেষ করে অনলাইন সাংবাদিকতার রূপকারের নির্দেশনায় আমরা সেই বিষয়টিই বারবার আঁচ করতে পেরেছি এবং সেই মোতাবেক সম্পূর্ণভাবে নিজেদের নিয়োজিত করেছি মাঠ সাংবাদিকতায়।

কিছু কথা না বললেই নয়। উদাহরণ দেব বার্তা২৪.কমে আমার প্রকাশিত আরও কয়েকটি সংবাদের। যেসব সংবাদের শিরোনাম যেমন ছিল আকর্ষণীয়, তেমনি গভীর আবেদনও ছিল। সংবাদগুলো প্রকাশে অনেকের জীবন ঘুরেছে, আবার অনেকে ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। আবার অনেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার স্বপ্নে দিন গুজরান করছেন।

একদিন আমার কাছে খবর এল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন হাশেম নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। এক সময় তার ছিল সবকিছু, কিন্তু এখন তিনি সব হারিয়ে নিঃস্ব। শেকলবন্দি হয়ে কাটছে তার জীবন।

তাকে নিয়ে বড্ড অসহায় তার বৃদ্ধ বাবা। তার নিদারুণ কষ্ট আর জীবনের গল্প তুলে আনলাম বার্তা২৪.কমে। অতঃপর নজরে এল স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লীরা তরফদারের। তিনি তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর ব্যবস্থা করলেন।

ব্রহ্মপুত্র পাড় ঘেঁষা জয়নুল উদ্যানে একদিন হাঁটতে হাঁটতেই চোখে পড়ল বয়স্ক একজন মানুষের অন্যকম জীবনযুদ্ধ। কৌতূহল নিয়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। জমে গেল আলাপচারিতা।

তিনি জানালেন, তার জীবনের অনন্য সংগ্রামের কথা। তার নাম আব্দুল আজিজ। সংসারে স্বচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও গৌরীপুরে নিজের বাড়ি ছেড়ে ময়মনসিংহ থাকেন শুধু স্বনির্ভর থাকার জন্যই। তাকে নিয়ে করা আমার স্টোরিটি ময়মনসিংহে প্রশংসিত নিউজের মধ্যে অন্যতম।

Barta

সাধারণত সাংবাদিকতার প্রাণ ধরা হয় মাঠ সাংবাদিকতাকে। তৃণমূল সংবাদকর্মীকে বলা হয় সংবাদের ফেরিওয়ালা। যেহেতু সংবাদেরই পেছনে ছুটে চলাই আমাদের কাজ। এক্ষেত্রে আমাদের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, ভিন্নধর্মী ‘এক্সক্লুসিভ’ সংবাদ তুলে আনার। পাঠকের দৃষ্টি নিবদ্ধ করার।

মাত্র মাস দু’য়েক আগের ঘটনা। এক রাতে নগরীর টাউনহল থেকে সানকিপাড়া বাসার দিকে ফিরছিলাম। হঠাৎ এগিয়ে আসা এক রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। এসময় আলাপচারিতায় তিনি জানালেন, তার সংগ্রামী জীবনের দিনলিপি। জানালেন, তার এক ছেলে পড়াশোনা করছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে আর আরেক মেয়ে অনার্সে পড়ছেন মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজে। সংসারের খরচ আর সন্তানদের স্বপ্নপূরণ করতে দিনে কৃষি কাজ ও রাত হলেই রিকশা নিয়ে ঘোরেন শহরের এ মাথা থেকে ও মাথা। তাকে নিয়ে করা সংবাদটি বার্তা২৪.কমে প্রকাশ হলে পাঠক মহলের দৃষ্টি কাড়ে।

মানসিক ভারসাম্যহীন সোহেলের কথা কি মনে আছে? নামটি অবশ্যই ময়মনসিংহবাসীর জন্য খুবই পরিচিত। সাংবাদিক-পুলিশ মিলে তার জীবন পাল্টে দিয়েছিলেন। আর তাদের অসাধারণ ভালো উদ্যোগের খবর প্রথম সচিত্র প্রতিবেদন এবং ভিডিও স্টোরি করে বার্তা২৪.কম।

যেটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও। বার্তা২৪.কমের খবরের সূত্র ধরেই চার বছর পর মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকটি ফিরে পায় তার পরিবারকে। তিনি এখন সুখে স্বচ্ছন্দেই জীবন কাটাচ্ছেন। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই এমন খবরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে বার্তা২৪.কম।

এবার বার্তা২৪.কমকে আরও বেশি দেবার পালা। একজন বটবৃক্ষ আলমগীর হোসেনের আশীর্বাদ আর মানসিক জোরই আমাদের এগিয়ে চলার শক্তি। জয় হোক বার্তা২৪.কমের। রৌদ্রোজ্জ্বল হোক এই মাল্টিমিডিয়ার সামনের দিনগুলো। অশেষ ধন্যবাদ বার্তা২৪.কমের পাঠকমহলকে।

   

ঢাকার বাতাস আজও খুব 'অস্বাস্থ্যকর'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দিন দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেড়েই চলেছে বায়ুদূষণ। দীর্ঘদিন ধরেই মেগাসিটি ঢাকার বাতাসেও বাড়ছে দূষণ। শুক্রবার (১৭ মে) সকালে ঢাকার বাতাসে স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে বলে জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। যদিও সবচেয়ে বেশি দূষণ কঙ্গোর কিনশাসা শহরের বাতাসে।

এদিন সকাল ১০টার দিকে আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৪৮ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় সপ্তম অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা, যা সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত।

দূষিত শহরের তালিকায় ১৭৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে চিয়াং মাই। এ ছাড়া দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতের শহর দিল্লির স্কোর ১৭২। আর ১৬০ স্কোর নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে আছে যথাক্রমে জার্মানির শহর মিউনিখ ও নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ভিয়েতনামের হ্যানয় শহরের স্কোর ১৫৫।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।

;

নীলফামারীতে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে অমিচা বেওয়া (৫৬) নামে এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।  

বৃহস্পতিবার (১৬মে) তার নিজ বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত বৃদ্ধ উপজেলার কালিকাপুর হাজি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। 

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত বৃদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে পেট ব্যথাজনিত রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার তার প্রচণ্ড পেট ব্যথা উঠলে সহ্য করতে না পেরে নিজ ঘরে আত্মহত্যা করেন। পরে স্বজনরা তার মরদেহ ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেয় পুলিশ এসে উদ্ধার করে। 

থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। 

;

টেস্ট করাতে টানাটানি, আনসারদের দৌরাত্মে বেহাল হাসপাতাল



রাকিব হাসান, গুলশান জাহান সারিকা স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা ২৪.কম 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

"দ্য গুড ফিজিশিয়ান ট্রিটস দ্য ডিজিস, দ্য গ্রেট ফিজিশিয়ান ট্রিটস দ্য পেশেন্ট হু হ্যাজ দ্যা ডিজিসেজ" স্যার উইলিয়াম অসলারের উক্তিটি আর যে কোনোভাবেই দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য প্রযোজ্য নয়, তা বলা বাহুল্য। এখানে হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসক পর্যন্ত পৌঁছাতেই জেরবার হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসকের পরামর্শ পেতে পদে পদে হতে হচ্ছে হয়রানি আর প্রতারণার শিকার। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পরপর দুই দিন সরেজমিন দেখে এর প্রমাণ মিলেছে। 

১৫ মে বুধবার সকাল ১১টা। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে সন্তানকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন শিউলি বেগম। এখানে এসে রীতিমতো বিপাকে পড়তে হয়েছে তাকে। প্রথমে দীর্ঘ সিরিয়াল দাঁড়িয়ে টিকেট কেটেও দীর্ঘ অপেক্ষা। অবশেষে ডাক্তার দেখাতে পারলেও তার দেয়া টেস্টের একটি বড় তালিকা নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন শিউলি। এতসব নানা রকমের টেস্ট! কোথায় করবেন কিভাবে করবেন তার কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া তিনি পাননি হাসপাতাল থেকে। কিন্তু হাজির আনসার সদস্যরা। হাসপাতালের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তারাই এখন টেস্ট বাণিজ্যের দালাল। রোগীর হাতে টেস্টের কাগজপত্র দেখলেই আনসার সদস্যরা শুরু করে দেয় ডাকাডাকি- টানাটানি। 

নিজেদের মধ্যেই চলে পাল্লাপাল্লি। কোন রোগীকে কে কব্জা করবে। যেখানে রোগীর লাইন, সেখানেই আনসারের দৌরাত্ম। টিকেট কাটতে আসা রোগীদের ভীর ঠেলে আনসার ঢুকে যাচ্ছে কারো জন্য লাইন ভেঙ্গে টিকেট কেটে দিয়ে টুপাইস কামিয়ে নিচ্ছে। ডাক্তার দেখানোর সিরিয়ালেও তারা হানা দিচ্ছে। টাকা নিয়ে পড়ে আসা রোগীকে আগে সিরিয়াল পাইয়ে দিচ্ছে। ইমার্জেন্সি বিভাগে আসা রোগীদের ক্ষেত্রেও তাদের দৌরাত্ম দেখা গেলো। গুরুতর অসুস্থ রোগীদেরও পেছনে ফেলে আনসারের আনা রোগীদের আগে দেখা হচ্ছে। আর এসব দেখার কেউ নেই। 

কোন কোনো রোগীর স্বজনদের দাবি, আনসার সদস্যদের সাথে এসব বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করলে কটাক্ষ আর গালাগাল শুনতে হয় তাদের। 

এখানেই শেষ নয়, হাসপাতালের কর্মচারী আর আনসারদের যোগসাজশে চলছে ট্রলি কিংবা হুইলচেয়ারের বাণিজ্যও। সরকারের এসব সামগ্রী রোগীর জন্য বিনামূল্যে ব্যবস্থা করা হলেও তা চলে গেছে এইসব অসাধুদের দখলে। তারা সেগুলো কব্জায় রেছে রোগী বুঝে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার বিনিময়ে ছাড়ছে। রোগী পৌঁছালেই তারা শুরু করে দেয় ট্রলি নিয়ে দরকষাকষী। কেউ টাকা না দিলে তাদের রোগীকে ছুয়ে পর্যন্ত দেখে না কর্মচারীরা। আর যদি কোনো রোগীর স্বজন সামান্য প্রতিবাদও করে তাহলে তাদের কপালে জোটে দুর্ব্যবহার। 

পরিচয় গোপন রেখে ইমার্জেন্সি বিভাগে দায়িত্ব পালন করা আনসার সদস্য আ: হাই এর সাথে কথা বলে জানা যায় এম্বুলেন্স থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল টেস্টসহ প্রায় সকল সার্ভিস তিনি দিতে পারবেন। 

অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা যাবে কি-না? এমন প্রশ্নে বললেন, হাসপাতালের মাত্র একটা এম্বুলেন্স সেইটা কই আছে জানিনা। তবে যদি কেউ প্রাইভেট এম্বুলেন্স চায় তাহলে যেকোনো সময় তিনি ম্যানেজ করে দিতে পারি। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলের ভাড়া কতো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৫০০-১৬০০ টাকা হলেই চলবে। 

আনসার সদস্য আ: হাইকে দেখা গেলো একজন রোগীর আত্মীয়র সঙ্গে তার ব্যস্ত সময় কাটছে। রোগীর ব্যবস্থাপত্র /টেস্টের তালিকার ছবি তুলে হাসপাতালের কোন একজন প্যাথলজিষ্টকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দিলেন। উল্টো দিক থেকে জেনে নিচ্ছেন তার খরচ কতো ইত্যাদি। যেনো তিনিই রোগীর সবকিছু। 

হাসপাতালে কি এসবের ব্যবস্থা নেই? এমন প্রশ্নের উত্তর খুজতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ল্যাবের দায়িত্বে থাকা একজন কর্মীর সাথে কথা হয়। তিনি জানালেন, প্রতিদিন সকালে মাত্র ৫০ জন রোগীর আল্ট্রাসোনোগ্রাফি হয় হাসপাতালে। তবে নানা রকমের সংকট ও সীমাবদ্ধতার কারণে হাতে গোনা কয়েকটি ব্লাড ও ইউরিন টেস্ট ছাড়া বাকি সব টেস্ট বাইরে থেকেই করতে হয়। 

ভুক্তভোগী শিউলি বেগম জানালেন, তার সন্তানের বেশ কয়েকদিন ধরে জ্বর ও বমি। সকালে হঠাৎ জ্বরের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কিছু টেস্ট করানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু হাসপাতালে টেস্ট করতে নানা রকমের ঝক্কি-ঝামেলা ও রিপোর্ট পেতে একদিন দেরি হবার কথা জানায় হাসপাতালের দায়িত্বরত কর্মচারীরা। এ সুযোগে একজন আনসার সদস্য তার হাতে থাকা টেস্টের কাগজপত্র দেখে ছবি তুলে নেন। এবং সকল টেস্ট তিনি করিয়ে দেবার আশ্বাস দেন। 

হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্বে অবহেলা করে টেস্ট বাণিজ্যের সাথে আনসার সদস্যদের জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে এবং টেস্ট এর রেজাল্টের দীর্ঘসূত্রিতার কারণ জানতে চাইলে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. শফিউর রহমান বার্তা ২৪ কে বলেন, আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে তা স্বীকার করছি। তবে সংকট কাটিয়ে উঠতে আমরা কাজ করছি। এছাড়া আনসার সদস্যদের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস ও টেস্ট বাণিজ্যের যে অভিযোগ উঠেছে তাও আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি কোন আনসার সদস্য এমন কাজে জড়িত তাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

আমাদের প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দুটি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সাধ্য অনুযায়ী সেবা দিয়ে যাচ্ছি। তবে খুব শীগ্রই আরও একটি অ্যাম্বুলেন্স যুক্ত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে। আশাকরি এম্বুলেন্স যুক্ত হলেই এই সংকটেরও সমাধান হবে, বললেন ডা. শফিউর। 

এক পর্যায় প্রতিবেদকের দেয়া তথ্য ও ছবি হাতে পেয়ে পরিচালক ডা. শফিউর রহমান তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত আনসার সদস্যকে ক্লোসড করেন। সেই সাথে এমন অনিয়মের কোন খবর চোখে পরলে সংবাদকর্মীদের জানানোর অনুরোধ করেন।

;

কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। 

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ৭ টার দিকে মহাসড়কের নানকরা এলাকায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী রিলাক্স পরিবহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এ ঘটনা ঘটে। 
স্থানীয়দের বরাতে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা জানান, ‘এখন পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ করা উদ্ধার হয়েছে বলে জেনেছি। দুর্ঘটনা-কবলিত গাড়িটি উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।’
নিহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার মতিউর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হোসেন (৩০) ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাহারছড়া গ্রামের নুরুল আবছারের ছেলে বদরুল হাসান রিয়াদ (২৬)। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছে ঘটনাস্থলেই ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করি। এছাড়া গুরুতর ৭-৮ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠাই। পরে হাইওয়ে পুলিশের নিকট নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করি।’

মিয়াবাজার হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লোকমান হোসেন জানান, ‘ভোরে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের দিকে যাচ্ছিল রিল্যাক্স পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাস। বাসটি মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বসন্তপুর এলাকায় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় প্রায় ১৫ জন। আমরা দুর্ঘটনা কবলিত বাসটিকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছি। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।’



;