রাজবাড়ীর বিখ্যাত চমচমের কারিগর শংকর সাহা মারা গেছেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে সুপরিচিত রাজবাড়ীর বিখ্যাত শংকরের চমচম। সুস্বাদু এই চমচমের কারিগর রাজবাড়ী বাজারের বিশিষ্ট মিষ্টি ব্যবসায়ী শংকর মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের প্রতিষ্ঠাতা শংকর সাহা মারা গেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় মৃত্যুর বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন শংকর সাহার ভাতিজা পুলক সাহা।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১ টার দিকে তিনি মারা যান।

তিনি রাজবাড়ী পৌরসভার বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ ছাড়াও তিনি লক্ষ্মীকোল হরিসভা (পুরাতন) মন্দিরের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপালন করছিলেন।

পুলক সাহা বার্তা২৪.কমকে জানান, বুধবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তিনি বাথরুমে যান। সেখানে মাথা ঘুরে পড়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

শংকর সাহার ছোট জামাই শ্রীকান্ত বিশ্বাস রাহুল জানান, তার শ্বশুর শংকর সাহা দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজবাড়ী শহরের পৌর মহাশ্মাশানে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।

শংকর সাহার মৃত্যুতে রাজবাড়ী লক্ষ্মীকোল হরিসভা মন্দির কমিটিসহ শহরের বিশিষ্টজনেরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শেষ বারের মতো দেখতে এলাকাবাসীসহ শুভাকাঙ্ক্ষীগণেরা বিনোদপুর পাওয়ার হাউজ সংলগ্ন বাসভবনে ভিড় করছেন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ মেয়েসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন।

১৯৮২ সালে শংকর সাহা প্রতিষ্ঠিত করেন ‘শংকর মিষ্টান্ন ভান্ডার’। সেই থেকে টানা ৪২ বছর সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। রাজবাড়ীর চমচম বলতে সারাদেশে শংকরের চমচমকেই বোঝায়। শংকর সাহার মৃত্যুতে তার নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত শংকর মিষ্টান্ন ভান্ডার আজ বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকবে বলে জানান তার স্বজনরা।

   

রিকশার প্যাডেলে জীবনযুদ্ধ বৃদ্ধ ইব্রাহিমের

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
সত্তরোর্ধ্ব ইব্রাহিম ফকির

সত্তরোর্ধ্ব ইব্রাহিম ফকির

  • Font increase
  • Font Decrease

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া সত্তরোর্ধ্ব ইব্রাহিম ফকির।যে বয়সে অবসর সময় কাটানোর কথা, সেখানে রিকশার প্যাডেল চালিয়ে অবিরাম ছুটে চলছেন রাস্তা-ঘাটে। ব্যাটারিবিহীন এ রিকশায় যাত্রী নিয়ে চলতে কষ্ট হলেও পেটের তাগিদে ছুটছেন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে।

বুধবার (০১ মে) ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার পশ্চিম গোবরাকুড়া গ্রামের সড়কে যাত্রী নিয়ে রিকশা চালাতে দেখা যায় বৃদ্ধ ইব্রাহিম ফকিরকে।

জানা যায়, ২০ বছর বয়সে ১৯৭২ সালে দেড়হাজার টাকা দিয়ে একটি প্যাডেলচালিত রিকশা কিনে চালাতে শুরু করেন তিনি। সেই রিকশা এখনও চালিয়ে সংসারের হাল সামলাচ্ছেন তিনি।

ইব্রাহিম ফকিরের কোন ছেলে সন্তান নেই। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। এখন স্বামী-স্ত্রী দুজনের সংসার তার। সারাদিন রিকশা চালিয়ে যা আয় করেন তা দিয়েই কোনমতে সংসার চালে বলে জানান তিনি।

ইব্রাহিম ফকির জানান, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে এখন আর কেউ প্যাডেলচালিত রিকশায় উঠতে চায় না। যার কারণে সারাদিন রিকশা চালিয়েও ১০০ টাকা আয় হয় না। এখন প্রায় সব জিনিসের দাম বেশি, এতো অল্প আয়ে সংসার চালানো কষ্ট হয় বলে জানান তিনি।

প্যাডেলচালিত রিকশা চালানোয় তিনি এই বয়সেও অন্যদের থেকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম আছেন বলে দাবি তার।

ইব্রাহিম ফকির জীবনের প্রায় শেষপ্রান্তে এসেও এই কাজে বেশ সন্তুষ্ট। পুরাতন রিকশা ছেড়ে একটি নতুন রিকশার মুখ দেখার স্বপ্ন দেখলেও টাকা জমিয়ে কেনার সামর্থ্য তার নেই।

;

ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ

ওআইসির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ

  • Font increase
  • Font Decrease

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার রাজধানী বানজুলে শুরু হয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্স (ওআইসি) -এর ১৫তম শীর্ষ সম্মেলন। দুই দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এ বৈঠকে যোগ দিয়েছে বাংলা‌দেশ। সম্মেলনটির এবারের প্রতিপাদ্যে ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য সংলাপের মাধ্যমে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি’।

বুধবার (১ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, দুই দিনব্যাপী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। বৈঠকে সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. জাবেদ পাটোয়ারী, নাইজেরিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও গাম্বিয়ায় বাংলাদেশের অনাবাসিক হাইকমিশনার মাসুদুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আন্তর্জাতিক সংস্থা) ওয়াহিদা আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নিচ্ছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বল‌ছে, বৈঠকটি ফিলিস্তিন এবং আল-কুদস আশ-শরিফ ইস্যুতে খসড়া রেজ্যুলেশন, খসড়া চূড়ান্ত ঘোষণা এবং বানজুল খসড়া ঘোষণা চূড়ান্ত করছে, যা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে গৃহীত হবে। গাজায় সাম্প্রতিক নৃশংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিন সম্পর্কিত ইস্যুতে আলোচনা প্রাধান্য পাবে।

বৈঠকে অর্থনৈতিক, মানবিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মুসলিম উম্মাহর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন নারী ও যুবকদের বিষয়ে আলোচনা হবে।

;

তাদের শ্রমে পরিচ্ছন্ন থাকে সড়ক

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’



আশিকুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দাঁ হাতে সকাল শুরু হয় রোজিনা, আলেয়াসহ কয়েকজন নারী শ্রমিকের। কখনো ধারালো দাঁ দিয়ে সড়কের পাশের ঝোপঝাড়, আগাছা পরিষ্কার করেন। আবার কখনো কোদাল হাতে ভরাট করেন ছোট বড় গর্ত। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের এই কঠোর শ্রমে সড়ক পরিচ্ছন্নের কাজ করেন তারা। মাসে ৯ হাজার টাকা বেতনের এই শ্রমিকদেরও রয়েছে রঙিন স্বপ্ন। অল্প টাকা বেতনে চলে সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা। মায়েদের ঝড়ানো ঘাম আর কঠোর শ্রমে সুশিক্ষায় বেড়ে উঠবে সন্তান এমনটাই স্বপ্ন তাদের। 

গাজীপুরের সফিপুরে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) এর তত্ত্বাবধানে একটি আঞ্চলিক সড়ক পরিচ্ছন্ন কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ১০ জন নারী শ্রমিক। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মোট ৮ ঘণ্টা কাজ করেন তারা। বিনিময়ে মাথা পিছু বেতন পান ৯ হাজার টাকা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দাঁ হাতে নিয়ে সড়কের দুই পাশের আগাছা, ঝোপঝাড় পরিষ্কার করেন তারা। তীব্র তাপদাহে চারপাশ যখন হাসফাস করছে তখনো তাদের এই কর্মযজ্ঞ চলে। ঘাম ঝড়া ক্লান্ত শরীর নিয়ে কোন গাছের নিচে বিশ্রাম আর দুপুরের খাবার খেতে দেখা যায় তাদের।


তাদের একজন রোজিনা বেগম বার্তা২৪ কে বলেন, 'স্বামী অটোরিকশা চালায়। সংসারে দুই মেয়ে এক ছেলে। স্বামীর রোজগারে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি এই কাজ নিছি। রোদে গরমে সড়কে কাজ করতে খুব কষ্ট হয়। তারপরেও কষ্ট গায়ে মাখি না। এই টাকায় বাচ্চাদের পড়ালেখা করাই। একটু ভাল জামাকাপড় কিনে দেই। সন্তানরা একদিন বড় হলে আমাদের এই কষ্ট দূর হবে।'

তাদের একজন আলেয়া খাতুন বার্তা২৪ কে বলেন, 'আমাগো কাছে মাসে ৯ হাজার টেকা অনেক মনে হয়। এই টেকা থাইকা পোলাপাইন লইয়া মাসে একদিন গরুর মাংস খাই। পোলা মাইয়া রে স্কুলে পড়াই। আমাগো মতো গরিব মানুষের তো এত বড় স্বপ্ন নাই। যা আছে তা কোন মতে চইলা যায়।'

শ্রমিক দিবসে তাদের কি দাবি জানতে চাইলে, আলেয়া খাতুন বার্তা২৪ কে বলেন, 'আমরা কোন দিবস বুঝি না। পেটের দায়ে ঘাম ঝড়াই। কাম করি টেকা পাই। যে দিন বন্ধ পাই ওই দিনটা ঈদের মতো লাগে। তয় আমাগো একটাই চাওয়া সরকার আমাগো মতো অল্প বেতনের শ্রমিকদের দিকে একটু দয়া করুক।'

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা কালিয়াকৈর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন হান্নান বলেন, 'আমাদের দেশে অনেক নারী শ্রমিক আছেন যারা পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে কাজ করেন। তবে বেতনের ক্ষেত্রে কিছুটা বৈষম্য রয়েছে। শ্রমিক দিবসে আমাদের মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষ থেকে নারীদের বেতন বৈষম্য সমাধানের দাবি জানাচ্ছি।'

;

সাভারে ৫ শতাধিক আটোরিকশা নিয়ে র‍্যালি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান মে দিবস উপলক্ষে ঢাকার অদূরে সাভারে প্রায় ৫ শতাধিক আটোরিকশা নিয়ে র‍্যালি করেছে শ্রমিকরা। এসময় আটোরিকশা শ্রমিকদের সঙ্গে অন্য পেশার শ্রমিকরাও অংশ নেন।

বুধবার (০১ মে) সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে এ র‍্যালি শুরু হয়। সাভার রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সাভার বাসস্ট্যান্ড রানা প্লাজার সামনে এসে সমবেত হন শ্রমিকরা। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পুনরায় সাভার উপজেলা পরিষদে গিয়ে র‍্যালি শেষ হয়।

সাভার পৌর শ্রমিক লীগের এ আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌর কুলী শ্রমিক লীগ ও সাভার পৌর আটোরিকশা শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা। সবমিলিয়ে প্রায় ৫ শতাধিক আটোরিকশা ও ৭ শতাধিক শ্রমিক অংশ নেন এই আয়োজনে।

রানা প্লাজার সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মে দিবসের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়। শ্রমিকদের তাদের অধিকার আদায়ে সচেতন করার লক্ষ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতারা।

সাভার পৌর শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. নাজমুল হাসান লিমন বলেন, সাভারে প্রচুর আটোরিকশা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা না মেনে অনেক চালক পেটের তাগিদে মহাসড়কে উঠে পড়েন। তখনই পুলিশের জরিমানা বা রেকার বিলের চাপে পড়েন তারা। আমরা চাই আটোরিকশার জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা হোক। যাতে তারা পেটে-ভাতে বাঁচতে পারে।

তিনি বলেন, সাভারে আজকেও বেশ কিছু পোশাক কারখানা চালু ছিল। এমনটা আমরা আশা করি না। মে দিবসে সব প্রতিষ্ঠান যেন বন্ধ থাকে, শ্রমিকরা যাতে অন্তত এই দিনে নিজেদের দাবির কথা বলতে পারে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌর যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ও সাভার পৌর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম ক্বারী।

;