'যৌন নিপীড়নে' অভিযুক্ত শিক্ষককে রেজিস্ট্রার নিয়োগ, পাল্টাপাল্টি বিবৃতি



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেয়া নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) থেকে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ১৬ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত 'বিতর্কিত শিক্ষককে জবির রেজিস্ট্রার নিয়োগ'-কে কেন্দ্র করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি থেকে দুইটি পৃথক বিবৃতি দেওয়া হয়।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদলিপি দেয়া হয় এবং সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত অপর বিবৃতিতে বলা হয়, জবি শিক্ষক সমিতির প্রকাশিত প্রতিবাদপত্রে সকল সদস্য একমত নয় এবং প্রতিবাদপত্রের সাথে শিক্ষক সমিতি সংশ্লিষ্ট নয়।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মহসীন রেজা কর্তৃক প্রকাশিত বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, দৈনিক জনকণ্ঠে বিগত ১৬/৪/২০২৪ তারিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত অধ্যাপক, প্রাক্তন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, আইসিবি সিকিউরিটির পরিচালক এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম এর নামে প্রকাশিত একটি খবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রকাশিত খবরটির নিন্দা জানাচ্ছে এবং এই ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ ধরনের সর্বৈব মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ খবর প্রকাশ শুধু অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম নয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহত সুনামকে কালিমালিপ্ত করার অপপ্রয়াস বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মনে করে।

বিবৃতিতে আরও বলেন, অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে সরকারের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছেন। যাচাই-বাছাই না করে খেয়াল খুশি মতো এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রকাশ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না করে ভবিষ্যতে সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছে।

অন্যদিকে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মমিন উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত সহকর্মী অধ্যাপক ড. মো: আইনুল ইসলামকে নিয়ে গত ১৬/০৪/২০২৪ তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত খবরের প্রেক্ষিতে অদ্য ১৭/০৪/২০২৪ তারিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নামে প্রচারিত প্রতিবাদপত্রের সাথে শিক্ষক সমিতির সকল সদস্য একমত নন এবং প্রতিবাদপত্রের সাথে আমরা সংশ্লিষ্ট নই।

পাল্টাপাল্টি বিবৃতি নিয়ে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: জাকির হোসেন বলেন, সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়েছিল। সভায় সিদ্ধান্ত হয় আমরা শিক্ষক সমিতির প্যাডে জনকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ লিপি দিব। এক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরে অনীহা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে একই প্যাডে আবার বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এটা আসলে কতটা স্বাভাবিক, উদ্দেশ্যে প্রণোদিত কিনা সেটি আমার প্রশ্ন? এভাবে দুইবার শিক্ষক সমিতির প্যাডে বিবৃতি দেওয়া বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।

সাধারণ সম্পাদক ড: শেখ মাশরিক হাসান বলেন, যাকে নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তার কাছ থেকে আবেদনপত্র জানানোর কথা বলা হয়েছিল। এছাড়াও এর আগে যেসব শিক্ষক নিয়ে নিউজ হয়েছে তাদের জন্যও বিবৃতি দিতে বলা হয়। কিন্তু নিজেদের মতো করে বিবৃতি দিয়ে শিক্ষক সমিতির প্যাডে সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে বিবৃতি দেওয়ার আমাকে অপমান করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম-কে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১১ সালের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং বাংলা বিভাগের এক সহকারী শিক্ষিকার যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় যুক্ত থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ পদ থেকে আইনুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় সিন্ডিকেট সদস্য তৎকালীন ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রেজা আলীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

   

ফোনে ঘোষণা দিয়ে হত্যা: আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের গড়িমসি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের গড়িমসি

আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের গড়িমসি

  • Font increase
  • Font Decrease

মুঠোফোনে কল করে ঘোষণা দিয়ে ঈদের দিন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে শাহীন আহমদকে (২৫) হত্যা করা হয়। ঘটনার পর নিহতের বড়ভাই মো. শামীম আহমদ স্থানীয় থানায় ১০জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলার আসামিরা এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতারে গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি মামলার বাদী ও পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সিলেট জেলা প্রেসক্লাব ও অনলাইন প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন কোম্পানীগঞ্জের নিহত শাহীনের বড়ভাই ও ইছাকলস নিজগাও গ্রামের আলমাছ আলীর ছেলে মো. শামীম আহমদ ।

তবে, পুলিশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শামীম আহমদ জানান, গত ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাত পৌনে আটটায় সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসীচক্র সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইছাকলস নিজগাও গ্রামের পাকা সড়কের উপরে প্রকাশ্যে তার ছোট ভাই রাজধানী ঢাকার ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী শাহীন আহমদকে (২৫) নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের ২০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে মামলার মূল আসামিদের গ্রেফতারে অসহযোগিতা ও গড়িমসি করছে পুলিশ।

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের মাসখানেক আগে থেকে সন্ত্রাসীরা তাকে ও তার ভাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলো। তাদের ক্রমাগত হুমকিতে ভয় পেয়ে তিনি নিরাপত্তার চেয়ে ঢাকার বংশাল ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় একাধিক জিডি করেন। ঈদুল ফিতরের জামাত থেকে খুনি সন্ত্রাসী চক্র তাদের উপর আক্রমণ করার জন্য আমাদের গতিবিধি লক্ষ্য করে আসছিল। বিষয়টি বুঝতে পেরে তারা ঘর থেকে বের হননি। সন্ধ্যায় তাদের এলাকার ইউপি সদস্য নেছার মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উভয় পক্ষের মধ্যে সালিশ মীমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করলে তারা নিজেদেরকে একটু নিরাপদ মনে করে ঘর থেকে বের হন। কিন্তু বের হয়েই সড়কে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী চক্রের আক্রমণের শিকার হন তিনি, তার চাচা ও ছোটভাই শাহীন আহমদ। এই হামলায় তিনি ও তার চাচা আমির আলী বেঁচে গেলেও সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান তার ছোট ভাই শাহীন।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের তিনদিন পর কোম্পানীগঞ্জ থানায় ১০জনকে আসামি করে মামলা দেন। মামলার ১নং আসামি মরম আলী ও ৮নং আসামি র‌্যাব ও পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু হুমকিদাতা এবং হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি শাহেদ ও আনোয়ারসহ সকল আসামিরা প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আসামিদের সঠিক অবস্থান পুলিশকে জানানোর পরও রহস্যজনক কারণে তাদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশ গড়িমসি করছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি পুলিশ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের কাছে তার ভাই হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহতের চাচা আমির আলী, ছোটবোন শামিমা আক্তার, ছোট বোনের স্বামী শাহিন মিয়া ও আত্মীয় রিপন আহমদ।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ থানার এসআই মো. মনজুর রহমান জানান, মামলার প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারেও পুলিশের তৎপরতা রয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয় ।

এবিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম দস্তগীর আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

;

নরসিংদীতে নগদের মাঠকর্মীকে গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতার ৩



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীতে নগদের দুই মাঠকর্মীকে গুলি করে ৬০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকৃত ১৬ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- সদর উপজেলার শালিধা এলাকার মৃত অলি মিয়ার ছেলে বিধান মিয়া (৩০), জীতরামপুর এলাকার মৃত লিটন মিয়ার ছেলে হৃদয় (২৪) এবং পলাশ উপজেলার ইছাখালী এলাকার মোশারফ মিয়ার ছেলে সোলাইমান মিয়া (৩৭)।

পুলিশ সুপার জানান, গত ৪ এপ্রিল নগদের নরসিংদী ডিপো থেকে মোটরসাইকেলে করে রায়পুরায় যাচ্ছিলেন নগদের দুই কর্মী। এ সময় রায়পুরা থানার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের মাহমুদ নগর এলাকার একটি ব্রিজের পাশে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা গুলি ছুড়ে তাদের আহত করে ৬০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে এ বিষয়ে রায়পুরা থানায় মামলা হলে ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযানে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া আসামিদের নামে জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

;

আইন মানছে না সিগারেট কোম্পানি, দিচ্ছে রাজস্ব ফাঁকি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

তামাকজাত পণ্য ও সিগারেট কোম্পানিগুলো আইন না মেনে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে জানিয়ে এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা কয়েকটি সংগঠন।

গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলা হয়, পণ্য মোড়কজাতকরণ বিধিমালা-২০২১ এবং ভোক্তা অধিকার আইন অনুসারে কোনো পণ্যের মোড়কে উৎপাদনের তারিখ দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও সিগারেট কোম্পানিগুলো এই আইন একেবারেই মানছে না।

৫৯ শতাংশ ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্যের (জর্দ্দা ও গুল) মোড়কে উৎপাদনের তারিখ পাওয়া গেলেও বিড়ি ও সিগারেটের প্যাকেটে সেই হার মাত্র ৩ শতাংশ। উৎপাদনের তারিখ না দেওয়ায় তামাক কোম্পানিগুলো কর ফাঁকির সুযোগ নিচ্ছে।

পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান না করার সুযোগও নিচ্ছে তারা।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) গুলশানের একটি হোটেলে অ্যারিস্টোক্র্যাট ইন-এ টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভির্সিটি ও বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা)-এর আয়োজনে ‘তামাকজাত দ্রব্যের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন- বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক এক গবেষণার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) উপউপাচার্য প্রফেসর ড. গনেশ চন্দ্র সাহা।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, সিটিএফকে’র গ্র্যান্ট ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম মিয়া, ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্টিভিটিস অব সোসাইটি (ডাস্)-এর টিম লিড আমিনুল ইসলাম বকুল, এইড ফাইন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশন সেলের অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর মো. আব্দুল বাসেদ।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী এবং ‘প্রত্যাশা’ মাদকবিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ।

টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি)-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গবেষণার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল (টিসিআরসি)-এর সদস্য সচিব ও প্রকল্প পরিচালক এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান।

অনুষ্ঠানে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞেরা উপস্থিত ছিলেন।

মূল প্রবন্ধে মো. বজলুর রহমান বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণের নানা পদ্ধতির মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান অন্যতম। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০০৫ (সংশোধনী ২০১৩)-এর ধারা ১০ অনুযায়ী সব তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের উভয়পাশের মূল প্রদর্শনী তলের উপরিভাগের ৫০ শতাংশ এলাকা জুড়ে তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতি সম্পর্কিত সচিত্র সতর্কবার্তা প্রদান করতে হবে।

টোব্যাকো কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ সেল তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে গত ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশের ৮টি বিভাগের বিভাগীয় শহর থেকে ২শ ৭২টি তামাকজাত দ্রব্যের মোড়ক থেকে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

গবেষণার উল্লেখযোগ্য ফলাফলের মধ্যে ৮৫ শতাংশ তামাকপণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া গেছে। ৭৬ শতাংশ মোড়কের উভয়পাশে এই সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হয়নি। ২৬ শতাংশ মোড়কে ৫০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হয়েছে। ৭ শতাংশ মোড়কে ছবির সঙ্গে লিখিত বার্তা প্রদান করেনি। ৭২ শতাংশ মোড়কের লিখিত সতর্কবাণী কালো জমিনে সাদা হরফে মুদ্রিত হয়েছে।

বিড়ির ৮০ শতাংশ মোড়কেই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ব্যান্ডরোল দিয়ে ঢেকে থাকতে দেখা গেছে এবং ২৫ শতাংশ মোড়কে ‘শুধুমাত্র বাংলাদেশে বিক্রয়ের জন্য অনুমোদিত’ মর্মে কোনো বাণী প্রদান করা হয়েছে। কোনো সিগারেটের কার্টনেই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী পাওয়া যায়নি।

এছাড়া ৩৩ শতাংশ তামাকজাত পণ্যের মোড়কে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নম্বর পাওয়া গেছে। ৯ শতাংশ মোড়কে ট্রেড লাইসেন্স নম্বর ছিল। ৫১ শতাংশ মোড়কে উৎপাদনের তারিখ ছিল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. গনেশ চন্দ্র সাহা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে উৎপাদিত পণ্যের মোড়কে উৎপাদনের তারিখ এবং উৎপাদনকারী কোম্পানির নাম, ঠিকানা প্রদান বাধ্যতামূলক করা উচিত। বিদেশি ব্র্যান্ডগুলো তামাকপণ্য আমদানি করে বাংলাদেশে বিক্রি করতে হলে তাদেরও আমাদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মেনে প্যাকেজিং করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী তামাক নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার। কিন্তু তামাকজাত পণ্যের মোড়কের ভিন্নতা, মানহীন মোড়ক, সাইজের ভিন্নতা, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের উপযুক্ত মোড়ক না থাকা এসব সমস্যার একমাত্র সমাধান হতে পারে স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং। সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর সঠিক বাস্তবায়নে স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং প্রবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সভাপতির বক্তব্যে হেলাল আহমেদ বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত আইন লঙ্ঘন করছে। তারা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ করছে। প্যাকেজিং আইন লঙ্ঘন করছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের (জর্দ্দা, গুল প্রভৃতি) ব্যবহার বাংলাদেশের কালচারের সঙ্গে মিশে আছে। এর ব্যবহার কমাতে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বড় ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে মোড়কে এই সতর্কবাণীর পরিমাণ ৫০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৯০ শতাংশ করা অত্যন্ত জরুরি।

আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, সমস্যা উদ্ঘাটন ও সমাধানের জন্য গবেষণা করা প্রয়োজন। সিদ্ধান্ত নিতে হলে গবেষণা করতে হবে। আজকের এ গবেষণার ফল সরকারকে তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। তামাক নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের গবেষণা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করা সম্ভব বলে আশা করছি!

;

কেএনএফ'র আরও ২ সদস্য কারাগারে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
কেএনএফ'র আরও ২ সদস্য কারাগারে

কেএনএফ'র আরও ২ সদস্য কারাগারে

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় কেএনএফ সন্দেহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক আরও ২ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুর ২টায় বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. নুরুল হকের আদেশের প্রেক্ষিতে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।

আসামিরা হলেন, বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ফারুক পাড়ার বাসিন্দা মিকা এল বম (৪৩) এবং সদর ইউনিয়নের লাইমি পাড়ার বাসিন্দা লাল লুং সাং বম (৪২)।

বান্দরবান আদালতের পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রুমা থানার মামলায় কেএনএফের সন্দেহভাজন দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাদের কারাগার পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, ২৯ এপ্রিল (সোমবার) বিকেলে রুমা উপজেলা সদরে যৌথবাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহভাজন এই দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের আদালতে তোলা হয়।

এপর্যন্ত মোট ৭৯ কেএনএফ সদস্য ও একজন চাঁদের গাড়ির চালকসহ মোট ৮০ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী রয়েছেন।

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে প্রকাশ্যে ব্যাংক লুটের পর বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর বিভিন্ন ধারায় এ পর্যন্ত রুমাতে পাঁচটি ও থানচিতে চারটি মোট ৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বান্দরবানে গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলায় অভিযুক্ত ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’র সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগে সমগ্র বান্দরবান জুড়ে যৌথ বাহিনীর চিরুনি অভিযান চলমান রয়েছে।

;