ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ইইউয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ জ্ঞান, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং কর্মসংস্থানের ওপর বিশেষ গুরুত্বসহ ভবিষ্যতে বিস্তৃত অংশীদারিত্বের লক্ষ্যে কাজ করছে।

বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, গত দেড় দশকে অর্জিত টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে এশিয়া এবং এর বাইরেও দ্রুততম বর্ধনশীল একটি অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।

বেলজিয়ামকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে বর্ণনা করে ড. হাছান তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বেলজিয়ামে উচ্চতর অধ্যয়নের জন্য এসে দেশটির সমাজ, সংস্কৃতি এবং মানুষের সঙ্গে কাটিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।

তিনি ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফরের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন এবং আগামী দিনে বেলজিয়াম এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, জনযোগাযোগ, সুনীল ও বৃত্তাকার অর্থনীতিসহ নিরাপত্তার প্রচলিত এবং অপ্রচলিত ক্ষেত্রসমূহে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন যে, বাংলাদেশ ইইউয়ের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে যাতে বিশ্বে কোথাও মানুষকে যুদ্ধের ভয়াবহতা সহ্য করতে না হয়, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায় এবং বিশ্বজুড়ে মানবতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা যায়।

ইইউ এক্সটার্নাল এ্যাকশন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিকলাস কাভার্নস্টর্ম বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, ন্যায়বিচার, সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে যা বিদ্যমান অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে চলেছে। তিনি শিগগিরই বাংলাদেশের সঙ্গে পার্টনারশিপ এন্ড কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে ইইউয়ের আগ্রহের কথা জানান।

বেলজিয়াম সরকারের পক্ষে রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও বেলজিয়ামের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ আগামী দিনে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে নতুন রূপ দেবে।

রাষ্ট্রদূত মাহবুব হাসান সালেহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্র, সরকার ও বন্ধুদের অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং এক্ষেত্রে বেলজিয়াম এবং ইইউয়ের সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

   

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ১২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (২০ মে) সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৩৫ পিস ইয়াবা, ৫০ গ্রাম হেরোইন, ২ কেজি ৩৬০ গ্রাম গাঁজা ও ১০ পিস ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।
ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১২টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।
;

এবার লোৎসের চূড়ায় প্রথম বাংলাদেশি বাবর আলী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পেশায় চিকিৎসক হলেও নেশা পর্বতারোহণ। সেই নেশায় চট্টগ্রামের সন্তান বাবর আলীকে নিয়ে গিয়েছিল এভারেস্টের চূড়ায়। এর দুদিন পর লোৎসে পর্বতের চূড়ায় উঠতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (২১ মে) বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫ মিনিটে এভারেস্টের চূড়া ছুঁয়েছেন ৩৩ বছরের এই তরুণ। বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান। 

এর আগে গত রোববার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ৮টায় দীর্ঘ ১১ বছর পর এভারেস্টে সফল ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়েছেন বাবর। বাবর আলীর প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে আপডেট তথ্য দেওয়া 'ভারটিক্যাল ড্রিমার্স' পেজেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, 'বাংলাদেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে আজ লিখিত হলো অভূতপূর্ব ও রোমাঞ্চকর এক অধ্যায়। আর লেখক আমাদের স্বপ্ন সারথি-বাবর আলী। এটিই এই বাংলাদেশের কোনো সন্তানের প্রথম লোৎসে সামিট এবং প্রথম একই অভিযানে দুইটি ৮ হাজারি শৃঙ্গ সামিট। বাবর এখন নেমে আসা শুরু করেছে। বেসক্যাম্পে পৌঁছালেই হবে মূল উৎসব।'

অভিযানের সমন্বয়ক ফরহান জামান জানান, 'রোববার এভারেস্ট সামিট শেষে তিনি বেসক্যাম্প-৪ এ বিশ্রামে ছিলেন। সোমবার রাতে তিনি লোৎসে সামিটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মঙ্গলবার (২১ মে) ভোর ৬টা ৫ মিনিটে তিনি লোৎসে সামিট সম্পন্ন করেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'এখনো আমাদের অভিযান শেষ হয়নি। নিরাপদে বেসক্যাম্পে ফিরে এলেই আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবো। আশা করছি বাবর ২৩ মে'র মধ্যে বেসক্যাম্পে নেমে আসবে এবং আগামি ৩ জুন দেশে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।'

১১ বছর পর মাউন্ট এভারেস্ট শীর্ষে আরোহণ করে গত দুই দিন ধরে বাংলাদেশের পাহাড় প্রেমি মানুষের মাঝে আনন্দের কম্পন বইয়ে চলেছেন বাবর আলী। দুইদিনের ব্যবধানেই এই পর্বতারোহী আবারও খুশির ঝড় তুললেন পৃথিবীর চতুর্থ শীর্ষ পর্বত (২৭ হাজার ৯৪০ ফুট) উচ্চতার মাউন্ট লোৎসের শীর্ষে লাল সবুজের অলংকার এঁকে দিয়ে। এটিই প্রথমবারের মতো কোন বাংলাদেশি পর্বতারোহীর মাউন্ট লোৎসে শিখর স্পর্শ করার ঘটনা।

বাবর আলী মূলত এই অভিযানে মাউন্ট এভারেস্টের পাশাপাশি মাউন্ট লোৎসে শীর্ষে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এপ্রিলের শুরুতে দেশ ছেড়েছিলেন। বাংলাদেশের পর্বতারোহীরা ইতিপূর্বে মাউন্ট এভারেস্ট শীর্ষে সামিট করলেও একই অভিযানে দুটি আট হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত কোন বাংলাদেশি সামিট করেননি। বাবর আলী এভারেস্ট ও লোৎসে শীর্ষ স্পর্শ করে বাংলাদেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। তৈরি করেছেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৯ মে এভারেস্ট সামিট করে ক্যাম্প-৪ এ ফিরে আসেন তিনি। এতে সময় লেগেছে প্রায় ১৪ ঘণ্টা। স্বাভাবিকভাবেই শরীরও হয়ে যায় ক্লান্ত। ছক আঁকা ছিল সারাদিন বিশ্রাম নিয়ে রাতে আবার শুরু করবেন লোৎসের উদ্দেশ্য যাত্রা। কিন্তু শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে তিনি শেরপাদের ছককে নিজের মতো করে পরিবর্তন করেন। নিজেকে ঝুঁকি মুক্ত রাখতে ওই রাত তিনি থেকে যান ক্যাম্প-৪ এ এবং সয়ে নেন এভারেস্ট চূড়া অভিযানের ধকল।

এদিকে ওই স্থানের সাথে যোগাযোগ বিভ্রাটে এই বিলম্ব নিয়ে শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত ঘুমের পর গতকাল (সোমবার) মধ্যরাতে শুরু করেন তার চূড়ান্ত লক্ষ্য মাউন্ট লোৎসের উদ্দেশ্যে যাত্রা। টানা প্রায় দুইদিন অনিশ্চিত অবস্থায় থেকেও অবশেষে মঙ্গলবার সকল সুহ্রদদের উদ্বেগের অবসান ঘটিয়ে নেপালের স্থানীয় সময় সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে বাবর আলী স্পর্শ করেন কাঙ্খিত লোৎসে পর্বত শিখর। এই অভিযানের পরিচালক প্রতিষ্ঠান স্নোয়ি হরাইজনের স্বত্বাধিকারী বোধা রাজ বান্ডারি এবং বেসক্যাম্পের ধর্মা তামাং এর দেওয়া তথ্যের বরাতে এসব তথ্য জানান অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান। এভারেস্ট এর মতো এই সামিটেও বাবরের সাথে ছিলেন তার শেরপা সাথী বীর বাহাদুর তামাং।

এই অভিযানে মোট খরচ হচ্ছে ৪৫ লাখ টাকা। যাতে মূল পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আছেন ভিজ্যুয়াল নীটওয়্যার লিমিটেড। এছাড়া সহ-পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এভারেস্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ঢাকা ডাইর্ভাস ক্লাব, বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্লু জে, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশনী, গিরি, ভারটিক্যাল ড্রিমার্স।

এছাড়াও অভিযানের জন্য গণ তহবিল সংগ্রহে অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের নানা সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠন এবং অগণিত শুভাকাঙ্ক্ষী। অভিযানের সার্বিক সমন্বয় করেছে ডা. বাবর আলীর নিজের ক্লাব ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার বুডিশ্বচরে জন্ম নেওয়া এই তরুণ পেশায় একজন চিকিৎসক। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে শুরু করেছিলেন চিকিৎসা পেশা। তবে থিতু হননি। চাকরি ছেড়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। সঙ্গে নানা স্বেচ্ছাসেবী কাজে যোগ দেন। করোনায় তার ভূমিকাও ছিল বেশ প্রশংসার। সব কিছুকে পিছনে রেখে পাহাড়-প্রেমী হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন এই তরুণ।

২০১৪ সালেই ক্লাব কর্তৃক আয়োজিত নেপালে এক হিমালয় অভিযানে বাবর সামিট করেন এক পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত। সেই তার হিমালয়ে পথচলা শুরু। এরপর পর্বতারোহণের বিশুদ্ধতম ধরণ বলে পরিচিত আল্পাইন স্টাইলে ২০১৬ সালে ক্লাব থেকে সামিট হয় ভারতের মাউন্ট ইয়ানাম, যা ছিল বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার কোন ২০ হাজার ফুট উচ্চতার পর্বত সামিট এবং সেই দলের সদস্য ছিলেন তিনি।

পর্বতারোহণকে ধ্যান-জ্ঞান মেনে তিনি বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেন ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং থেকে। ২০১৪ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছর করেছেন এক বা একাধিক হিমালয় অভিযান। এছাড়াও নিজেকে উপযুক্ত করে তুলতে বাবর নিয়মিত দৌঁড়ান, করেছেন ক্রস কান্ট্রি সাইক্লিং, করেন কায়াকিং, পায়ে হেঁটে টানা ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন সিঙ্গেল ইজার প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে।

গত বছরের ১৩ এপ্রিল কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে সাইকেলযাত্রা শুরু করেছিলেন বাংলাদেশি পর্বতারোহী বাবর আলী। এক মাসের চেষ্টায় প্রায় চার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারি গিয়ে থেমেছিলেন তিনি। পথে যেতে যেতে ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করার সুযোগ হয়েছিল তার। এর আগে ২০১৯ সালে পরিবেশ রক্ষার ব্রত নিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলা হেঁটে পার করেন তিনি। হেঁটে বাংলাদেশ ও সাইকেলে ভারতবর্ষ পাড়ি দেওয়া বাবর আলী এবার লিখলেন নতুন গল্প। এই গল্প শুধু নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার নয়, দেশকে গর্বিত করারও। গল্পটা যে-এভারেস্ট-জয়!

;

ডিএমপির ‘রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪’ শুরু 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে জাইকার সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন  বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ‘রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪’ শুরু হয়েছে।

ঢাকা মহানগরীর যানযট নিরসনে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ট্রাফিক সচেতনতা কার্যক্রম বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়ত নানাবিধ প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিচ্ছেন।

এর আগে, গত ১৪ মে রাজধানীর আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাফিক সেফটি অ্যাওয়ারনেস  প্রোগ্রাম এন্ড রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪ এর আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন ডিএমপি কমিশনার। এসময় উপস্থিত ৮০০ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অংশীজনদের সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই যাত্রা শুরু হয়। 

পরবর্তীতে ঢাকা মহানগরীতে অবস্থিত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাফিক সচেতনতা বৃদ্ধির এ কার্যক্রমে ও রোড ট্রাফিক সেফটি কনটেস্ট-২০২৪-এ যেন সকল ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করতে পারেন সেজন্য ডিএমপি মিডিয়া, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ  প্রিন্ট- ইলেকট্রনিকস মিডিয়া ও জাইকা ব্যাপকভাবে প্রচার করে।

ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-এ্যাডমিন এন্ড রিসার্চ) ও ঢাকা রোড ট্রাফিক সেফটি প্রজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা মহানগরীর যানযট নিরসনে ডিএমপির কমিশনারের এ উদ্যোগকে আরো বেগবান করতে প্রতিদিন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ও রেজিস্ট্রারগণের সাথে সার্বিক সমন্বয় করেন। যেন ছাত্র-ছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ট্রাফিক সচেতনতামূলক এ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

জাইকার কারিগরি সহযোগিতায় ‘রোড সেফটি স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪’ সফল করতে এরই মধ্যে ডিএমপির এডিসি (ট্রাফিক-এ্যাডমিন এন্ড রিসার্চ) ও ডিআরএসপি'র প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম জাইকা প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইইউবি'র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর এর কাছে স্লোগান কনটেস্ট এর লিফলেট হস্তান্তর করেন। এছাড়াও বিজয়ী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ডিএমপি কমিশনার পুরস্কার ও সার্টিফিকেট প্রদানের বিষয়টি অবগত করেন।

এসময় ঢাকা মহানগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সকলের সহযোগিতা ও সচেতনতার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ঢাকা মহানগরবাসী ও বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষরা ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সচেতনতামূলক কার্যক্রমের  ব্যাপক প্রশংসা করেন।

;

রোগীর গোপনীয়তা নষ্ট করছে ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিরা, সহযোগিতায় আনসার



রাজু আহম্মেদ ও আল আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর জাতীয় শিশু হাসপাতালে বেড়েছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য। রোগীদের গোপনীয়তা নষ্ট করাসহ নানা অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিক্রয় প্রতিনিধিদের যত্রতত্র বাইক পার্কিংয়েও জটলার সৃষ্টি হচ্ছে হাসপাতালের বহির্বিভাগ সামনে। এতে রোগী চলাচলের পথ সংকুচিত হওয়াসহ অ্যাম্বুলেন্স অথবা রোগী পরিবহনেও বেগ পেতে হচ্ছে চালকদের বলে অভিযোগ অনেকের।

রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের বহির্বিভাগে সেবা নিয়ে ডক্টরস চেম্বার থেকে বের হতেই ঘিরে ফেলেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। নানা আলোচনায় ওষুধ নির্দেশিকার নাম করে তুলে নেন প্রেসক্রিপশনের ছবি। ফলে রোগীর গোপন রোগ বা ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে তাদের হাতে। এতে গোপনীয়তা নষ্ট হচ্ছে রোগীদের। এছাড়া নিজ কোম্পানির ওষুধ কিনতে নানাভাবে হয়রানিরও অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ করে টিম বার্তা২৪.কম। সরেজমিন অভিযোগের সত্যতাও মেলে শিশু হাসপাতালে গিয়ে। গত বৃহস্পতিবার দিনভর শিশু হাসপাতালে অবস্থান করে দেখা যায়, রোগী বের হলেই কিছু বিক্রয় প্রতিনিধি ঘিরে ধরে তাদের। হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে তুলছে ছবি। বেশিরভাগ রোগী বিরক্ত হলেও বিক্রয় প্রতিনিধির সংখ্যা বেশি থাকায় কেউ করতে পারছে না প্রতিবাদ।

কেউ কেউ অভিযোগ করলেও আমলে নিচ্ছে না শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা। অভিযোগ আছে হাসপাতাল বোর্ডের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও অর্থ নিয়ে আনসার সদস্যরা বিক্রয় প্রতিনিধিদের প্রবেশে করে সহযোগিতা। ফলে কর্তৃপক্ষের নজরে আসে না রোগীর অভিযোগ।

এদিকে কর্তৃপক্ষের কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শিশু হাসপাতালের সামনে যত্রতত্র বাইক রাখেন ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিরা। এতে রোগী পরিবহনে যেমন অসুবিধায় পড়ে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা, তেমনি জরুরি অবস্থায় ওষুধ নিয়ে যাতায়াত কিংবা রোগী নিয়ে যেতে বিপাকে পড়েন স্বজনরা। এমন অবস্থায় বিক্রয় প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।

আকলিমা আক্তার নামের এক ভুক্তভোগী জানান, রুম থেকে বের হতেই দুই তিনজন আসল। কিছু বোঝার আগে আমার চিকিৎসা সেবা পত্রের ছবি নিলো। আমার সন্তানকে জরুরিভাবে ডক্টর দেখাতে নিয়ে আসছি। তাদের কারণে এর জন্য আমার ১০ মিনিট গেলো। নিজের কোম্পানির ওষুধ কিনতে নানা ভাবে জানালো। এভাবে এক প্রকার হয়রানির শিকার হচ্ছি আমরা।

মোজাম্মেল নামের আরেকজন বলেন, ‘আমার বাচ্চাকে জরুরিভাবে অক্সিজেন দিতে বলেছে ডাক্তার। আমি চেম্বার থেকে বের হয়ে তাড়াহুড়ো করছিলাম। কোথা থেকে আসল কজন, আমাকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দাঁড় করালো। তাদের ফোন দিয়ে ছবি নিল। আমি প্রতিবাদ করলে দায়িত্বরত আনসার সদস্য আমাকে যেতে বললেন। এমন হলে আমাদের গোপনীয়তা থাকে কোথায়?’  

এ বিষয়ে বার্তা২৪.কম কথা বলার চেষ্টা করে উপস্থিত অভিযুক্ত বিক্রয় প্রতিনিধিদের সাথে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে রোগীর স্বজন পরিচয় দিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে ওষুধ বিক্রেতারা। নিমিষেই শৃঙ্খলা ফিরে আসে বহির্বিভাগে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি উপস্থিত আনসার সদস্যরা। তবে হাসপাতালের দায়িত্বরত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) হালিম শেখ কথা বলতে রাজি হলেও তিনি জানান কোন অভিযোগ নেই তাদের বিরুদ্ধে। এদিকে, আনসার সদস্যরা নিজেদের দোষের ঊর্ধ্বে দাবি করলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। বিক্রয় প্রতিনিধিসহ আনসারদের কার্যকলাপে বিরক্ত খোদ হাসপাতাল পরিচালক।

এ বিষয়ে  শিশু হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘আমরা বোর্ডে সিদ্ধান্ত নিয়েছি হাসপাতালে শুধু দুইদিন বিক্রয় প্রতিনিধিরা প্রবেশ করবে। তাদের মোটর সাইকেল পার্কিংয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে তারা কীভাবে প্রবেশ করে আমাদের বোধগম্য নয়। আনসারদের সহযোগিতায় এমনভাবে প্রবেশ করে বলে আমরাও অভিযোগ পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, আনসারদের আনসারদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এর আগেও এক ঘটনায় দুইজন গ্রেফতার হয়েছে। আমরা বোর্ড মিটিংয়ে এসব আলোচনা করেছি। তাদের অপরাধের পরিধি বাড়ছে। আসলে তাদের (আনসার) কোন চরিত্র নেই। তারা এমন অপরাধ করছে,  যা সিকিউরিটি গার্ডদের থেকেও নীচ। আমরা আনসারের বিপরীতে অন্য কিছু ভাবছি। সম্ভব হলে আনসারের সেবাটি অন্যভাবে ব্যবস্থা করার আহ্বান করব হাসপাতালের বোর্ডে।

;