শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে ভাবছে সরকার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি
জাতীয়
চলমান সংকটে ব্যয় কমাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি বাড়ানোর বিষয়ে ভাবছে সরকার বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেছেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলতি বছরই সাপ্তাহিক দুদিন ছুটির কথা ভাবছে সরকার। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য এই বিষয়ে চলছে চিন্তভাবনা। যদিও হয়নি সিদ্ধান্ত।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির ১৭তম জাতীয় সম্মেলন ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত ‘শোক হোক শক্তি, কারিগরি শিক্ষাই মুক্তি’ শীর্ষক এ সেমিনারে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মন্ত্রী।
সেমিনারে কারিগরি শিক্ষায় সরকারের বিভিন্ন নতুন কারিকুলাম ও প্রকল্পের কথা তুলে ধরে ডা. দীপু মনি বলেন, কারিগরি দক্ষতা অর্জনকে আমরা বিরাট গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা দক্ষ হয়ে গড়ে উঠেছে কিনা সেটি নিশ্চিত করতে চাই। শিক্ষার্থীদের মানবিক, সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য যেসব দিকে নজর দেওয়া দরকার, শেখ হাসিনা সরকার সেদিকে নজর দিয়েছে।
এর আগে আমরা শিক্ষক নিয়োগ করতে পারিনি দীর্ঘদিন। তবে, সম্প্রতি আমরা ৫ হাজার কারিগরি শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্যা থাকবে না। মন্ত্রী বলেন, মাঝখানে প্রায় ১০ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তি বন্ধ ছিল। অতীতের সরকার ব্যক্তিগত যোগাযোগ বা অন্য উপায়ে প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত করেছে। কিন্তু, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্বচ্ছ উপায়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে ভাবছে সরকার। এর আগে, ৫০টি প্রতিষ্ঠানকে ৭০ কোটি দেওয়া হয়েছে ল্যাব ও আনুষঙ্গিক কাজের জন্য। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান সে অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারেনি। কাজেই বরাদ্দ দিলেই শুধু হবে না, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা অর্জনে সেটি কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, সক্ষমতা হিসেব না করে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির একটা প্রবণতা আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সকল পর্যায়ে এ প্রবণতা আছে। ঢাকা শহরের সবচেয়ে নবীন প্রতিষ্ঠানে ৬৬ জন করে প্রতি ক্লাসে শিক্ষার্থী আছে, তারা সেটি ৭৫ জনে উন্নীত করতে চায়। আমি বলেছি ৬৬ থেকেও কমাতে হবে।
দীপু মনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষ মানব শক্তি উৎপাদনের জন্য শিক্ষার্থীদের তৈরি করে তুলতে হবে। যেই দেশ যত উন্নত হয়েছে সেই দেশে কারিগরি শিক্ষার হার, এনরোলমেন্ট অনেক বেশি। কিন্তু, আমাদের দেশে উলটো- কম মেধা সম্পন্ন, কম অবস্থাপন্ন শিক্ষার্থীদের কারিগরি পড়ানো হয়।
বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির (বাপশিস) (কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ) সভাপতি মো. আমান উল্লাহ খান ইউছুফজীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বাপশিস’র সাধারণ সম্পাদক জি. এম. আকতার হোসেন, ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট’র অধ্যক্ষ প্রকৌশলী কাজী জাকির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন বাপশিস’র বিভিন্ন সদস্য ও শিক্ষকরা।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ভুবন চন্দ্র শীলের শ্যালক পলাশ চন্দ্র শীল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় অপারেশন করে দুটি স্প্লিন্টার বের করা হয়। কিন্তু তিনি লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় আজ মারা যান।
গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সিটি পেট্রলপাম্প এবং বিজি প্রেসের মাঝের সড়ক দিয়ে ভাড়ার মোটরসাইকেলে চড়ে বাসায় যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন ভুবন। তার মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায় গুলি। শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীদের করা গুলি লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে আহত হন ভুবন। তাকে প্রথমে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ভুবনকে রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বরিশালের পাইকারি বাজারে আজ থেকে আলু বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।
সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে না পারার কারণে গত বৃহস্পতিবার নগরীর আড়তগুলো আলু শূন্য হয়ে পড়ে। এরপর থেকে গত চারদিন ধরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি বন্ধ ছিলো। কোন আড়তে আলু দেখা যায়নি।
বরিশাল নগরীর পেঁয়াজপট্টি এলাকার আড়তদার মো. শিপন হোসেন জানান, রোববার বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে আড়তদাররা সাক্ষাৎ করেন। তিনি সহনশীল দামে আলু বিক্রির পরামর্শ দেন। আলু কেনা বেচার ভাউচার রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার আশ্বাসে সোমবার থেকে আলু বিক্রি শুরু করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা ও খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা দরে বিক্রির সিদ্বান্ত হয়েছে। এ সিদ্বান্ত অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ ও রাজশাহী অঞ্চল থেকে আলুবোঝাই ট্রাক সকালে বরিশালে এসে পৌঁছে। দুপুরের মধ্যে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বেচা-বিক্রি শুরু করা হবে।
আড়তদার মো. আল আমিন বলেন, দ্রব্যেমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আলু বেশি প্রয়োজন। সরকার ২৭ টাকা দরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রির সিদ্বান্ত দেয়। কিন্তু এ দামে আলু কোনভাবেই বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই আলু বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বরিশাল নগরীর পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় ৩৫টি আড়ত রয়েছে। এ সকল আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে দুই হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়। আলু না থাকায় আড়তদের চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ছিলো শ্রমিকরা। গত চারদিন বেচা-বিক্রি না থাকায় অনেক শ্রমিক অর্থ সংকটে ছিলো।
নোয়াখালীর চাটখিল পৌরসভা যুবলীগ নেতা রনি পলোয়ান হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে ১৪৫ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ এর সিপিসি-৩ এর নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মাহমুদুল হাসান।
এর আগে, গতকাল রোববার রাতে র্যাব-১১ তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় উপজেলার হালিমা দিঘীর পাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মো. খোকন (৩৫) উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের মৃত আলী আজ্জমের ছেলে। নিহত মোহাম্মদ রনি পলোয়ান (৩২) একই গ্রামের পলোয়ান বাড়ির শাহজাহানের ছেলে। সে চাটখিল পৌরসভা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিহত রনি পলোয়ান পেশায় একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন এবং স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাড়ি থেকে বের হন। রাতে বাড়ি না ফেরায় স্ত্রী সাজু আক্তার তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। পরেরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে ফটিক্কা বাড়ির বাগানে রনির গলাকাটা মরদেহ পাওয়ার খবর শুনে স্ত্রী সাজু আক্তার ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামীর মরদেহ শনাক্ত করেন। পরে তিনি চাটখিল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। সে তদন্তে খোকনের নাম চলে আসে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় উপজেলার হালিমা দিঘীর পাড় এলাকা থেকে খোকনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে চাটখিল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
আর্দ্রতা কমে গিয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ার ফলে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বর। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে অতীতের মৃত্যু ও আক্রান্তের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ‘ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর অনেক বেশি। দেশের আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডেঙ্গুর ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। আগে ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা পুরষ্কার পানিতে বংশ বিস্তার করে থাকলেও এখন সব ধরনের পানিতেই বংশ বিস্তার করছে। তাই আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হসপিটালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় অনেক বেশি। রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হলেই কেবল তারা ডাক্তারের কাছে আসছেন। ফলে ভর্তির ২৪ ঘন্টার মধ্যেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন।’
চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৬ জনের।আর এ বছরের শুরু থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৯০৯ জনের। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৭৮ হাজার ৯১৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮ হাজার ৮১০ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলেও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করার কারণে ডেঙ্গু আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। আগে ডেঙ্গু রাজধানী কেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
২০০০ সালে দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের বড় প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। সে বছর ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। এর পর থেকে প্রতিবছরই দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল ২০২২ সালে। এছাড়া ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের, ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের।
হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর এই সংখ্যা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে সাধারণ রোগী সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তারা।
রোগী এবং তাদের আত্মীয়রা বলছেন, হসপিটালে ভর্তি হলেই খচর, এই ভয়েই শুরুতে হসপিটালে আসা হয়না। দেশে ডেঙ্গু এখন মহামারি আকার ধারণ করেছে, এই অবস্থায় সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও মনে করছেন তারা।
অনেক পরিবারের একত্রে ২-৩ জন ডেঙ্গু আক্রন্ত হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছেন। অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসা বাবদ লাখ টাকার বেশি খরচ করে ফেলেছেন তারা। এই ব্যয় সংকুলান করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্ঘুম রাত কাটছে বলে জানিয়েছেন হসপিটালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা।ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা অন্যান্য রোগীদের তুলনায় অনেক বেশি
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, এক সময় বাংলাদেশে ডেঙ্গু মৌসুমি রোগ বলে মনে করা হলেও কয়েক বছর ধরে বছরজুড়েই এর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এর ফলে এই রোগের ভাইরাস আরও শক্তিশালী হয়ে দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য থেকে জানা যায়, জুন মাসে যেখানে ৫ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আগস্টে ৭১ হাজারের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তবে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী তুলনামূলক কম ছিল। জানুয়ারিতে আক্রান্ত হয়েছিল ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১ হাজার ৩৬ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যুর দিক থেকে জানুয়ারিতে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ২ জন, মে মাসে ২ জন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।
জুলাইয়ে তা বেড়ে মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। আগস্টে মৃত্যু হয়েছে ৩৪২ জনের। চলতি (সেপ্টেম্বর) মাসে ২৪ দিনেই ৩১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ২৩ হাজার ৮০৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৯৩ জনের।
আবার পুরো আগস্ট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বমোট ৭১ হাজার ৯৭৬ জন, মারা গেছেন ৩৪২ জন। ইতোমধ্যে চলতি মাসের ২৪ দিনে সারা দেশে ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৩১৬ জন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর মাসে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। চলতি মাসে গত ২৪ দিনে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৯১৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম জানান, ‘প্রতিটি মৃত্যু ভীষণ কষ্টের। আমরা চাইব মৃত্যু শূন্যের কোটায় আসুক। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন সবার সহযোগিতা দরকার।’ মশা কেড়ে নিয়েছে শতশত প্রাণ, ছাড়িয়েছে রেকর্ড!
ডা. আয়শা আক্তার বলেন, ‘এডিস মশা ভোরবেলায় কিংবা দিনের বেলায় আক্রমন করে থাকলেও এখন ২৪ ঘন্টার যে কোনো সময়ই আক্রমন করতে পারে। কেননা নগরায়নের ফলে সবসময়ই আমাদের চারপাশ আলোকিত থাকে। পূর্বে ডেঙ্গু রোগী কেবল ঢাকায় সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন সারাদেশে এর ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে রোগীর সংখ্যাও দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমাদের ডেঙ্গুর উৎস ধ্বংস করতে হবে। ডেঙ্গুর যে প্রজনন হচ্ছে সেগুলোকে যদি আমরা ধ্বংস করতে না পারি তাহলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। পরিবারের কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সবসময় মশারি, কয়েল, স্পে ব্যবহার করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া পরামর্শ মেনে চলতে হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু ভয়াবহতা অবাক করার মতো। সরকারের উচিত সিদ্ধান্ত নিয়ে জোরদার মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা। এতগুলো প্রাণ ঝরে পড়েছে মশার কামড়ে তা ভাবতেই কষ্ট লাগে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট ১ লাখ ৮৭ হাজার ৭২৫ জন মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এটা কেবল সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন তাদের হিসাব। এর বাইরেও প্রচুর মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন। তাদের মধ্যে যাদের অবস্থার অবনতি হচ্ছে তারাই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।