এক নজরে আলোচিত-প্রশংসিত



বৃষ্টি শেখ খাদিজা, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বিদ্যা বালান, ভিকি কৌশল, হৃতিক রোশন ও ‘টোটাল ধামাল’ ছবির কলাকুশলীরা

বিদ্যা বালান, ভিকি কৌশল, হৃতিক রোশন ও ‘টোটাল ধামাল’ ছবির কলাকুশলীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের সকল সফলতা ও ব্যার্থতা নিয়ে কয়েক ঘণ্টা পরই ২০২০ সালকে স্বাগত জানাবে সারা বিশ্ব। এরই মধ্যে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত সারা বিশ্ব। পিছিয়ে নেই নেই সিনেমার দুনিয়ার অন্যতম বড় বাজার বলিউড ও বলিউড তারকারা। ২০১৯ কেমন কেটেছে বলিউডের। সিনেমা থেকে শুরু করে সেখানকার তারকাদের চলতি বছরের হালচালের এক নজরে খবর নিয়েছে বার্তা২৪.কম।

সফল যারা

হিন্দি ছবির জন্য ২০১৯ ছিল রেকর্ড গড়ার বছর। এবার মোট ১৬টি ছবি বক্স অফিসে ১০০ কোটি রুপি আয় করেছে। ‘গুড নিউজ’-এর এই তালিকায় যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া ১০০ কোটির ক্লাবে ঢুকতে পারে ‘পতি পত্নি অউর ও’। কমেডি থেকে শুরু করে অ্যাকশন ও সামাজিক বক্তব্যধর্মীসহ বিভিন্ন ধাঁচের ছবি দর্শকদের মন জয় করেছে।

১৬টি ছবির মধ্যে ১৫০ কোটি রুপির ঘর পেরিয়েছে ‘ছিচ্চোরে’, ‘কেসারি’ ও ‘টোটাল ধামাল’। ২০০ কোটি রুপির অভিজাত ক্লাবে নাম লিখিয়েছে ‘মিশন মঙ্গল’, ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ও ‘ভারত’। ২৫০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে ‘কবির সিং’। আর ৩০০ কোটি রুপির বনেদি ক্লাবে যুক্ত হয়েছে ‘ওয়ার’।

‘কেসারি’ ছবির দৃশ্যে অক্ষয় কুমার

ফক্স স্টার স্টুডিওসের চারটি ছবি (টোটাল ধামাল, মিশন মঙ্গল, ছিচ্চোরে, হাউসফুল ফোর) ও টি-সিরিজের চারটি ছবি (ভারত, কবির সিং, দে দে পেয়ার দে, সাহো) আছে ১০০ কোটির ক্লাবে। ‘পতি পত্নি অউর ও’ যদি এই ঘরে ঢুকতে পারে তাহলে টি-সিরিজের সংখ্যা বাড়বে।

প্রযোজকদের মধ্যে সাজিদ নাদিয়াড়ওয়ালার তিনটি ছবি (সুপার থার্টি, ছিচ্চোরে, হাউসফুল ফোর), অক্ষয় কুমারের প্রতিষ্ঠান কেপ অব গুড ফিল্মসের তিনটি ছবি (কেসারি, মিশন মঙ্গল, গুড নিউজ), জি স্টুডিওসের দুটি ছবি (কেসারি, ড্রিমগার্ল), করণ জোহরের ধর্মা প্রোডাকশন্সের দুটি ছবি (কেসারি, গুড নিউজ) ও সালমান খান ফিল্মসের দুটি ছবি (ভারত, দাবাং থ্রি)।

‘গুড নিউজ’ ছবির পোস্টার

অভিনেতাদের মধ্যে বছরটা সবচেয়ে সফল ছিল আয়ুষ্মান খুরানা ও ভিকি কৌশলের। দু’জনের ছবি অভাবনীয় ব্যবসা করেছে, এছাড়া উভয়ে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

অক্ষয় কুমার এবার সর্বাধিক চারটি ১০০ কোটি রুপির ছবি (কেসারি, মিশন মঙ্গল, গুড নিউজ, হাউসফুল ফোর) উপহার দিয়েছেন। এছাড়া অজয় দেবগণ (দে দে পেয়ার দে, টোটাল ধামাল), আয়ুষ্মান খুরানা (ড্রিম গার্ল, বালা), সালমান খান (ভারত, দাবাং থ্রি), হৃতিক রোশন (ওয়ার, সুপার থার্টি), চাঙ্কি পান্ড (হাউসফুল ফোর, সাহো) ও জ্যাকি শ্রফের (ভারত, সাহো) দুটি করে ছবি আছে ১০০ কোটি রুপির ক্লাবে। তাদের মধ্যে ‘টোটাল ধামাল’ ছবিতে ভয়েস দিয়েছেন জ্যাকি। এছাড়া ‘গালি বয়’ তারকা রণবীর সিংয়ের ‘সিম্বা’ এ বছরও আয় করেছে, কারণ এটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর।

‘পতি পত্নি অউর ও’ ছবির পোস্টার

অভিনেত্রীদের মধ্যে দুটি করে ১০০ কোটি রুপির ছবি উপহার দিয়েছেন ইয়ামি গৌতম (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বালা), শ্রদ্ধা কাপুর (সাহো, ছিচ্চোরে), কিয়ারা আদভানি (কবির সিং, গুড নিউজ), কীর্তি কুলহারি (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, মিশন মঙ্গল), টাবু (দে দে পেয়ার দে, ভারত), সোনাক্ষী সিনহা (মিশন মঙ্গল, দাবাং থ্রি)। সোনাক্ষী অবশ্য ‘টোটাল ধামাল’ ছবির একটি আইটেম গানে নেচেছেন। ‘পতি পত্নি অউর ও’ যদি এই ক্লাবে পৌঁছায় তাহলে ভূমি পেডনেকর যোগ দেবেন তাদের সঙ্গে। তার অভিনীত ‘বালা’ আছে এই তালিকায়।

শুক্রবারের রাজা

২০১৯ সালে বক্স অফিসের আলো কেড়েছেন বেশ কয়েকজন তারকা। তবে মুক্তির প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি আয়ে এগিয়ে আছেন হাতেগোনা কয়েকজন। হৃতিক রোশনের ‘ওয়ার’ (৫০ কোটি ৬১ লাখ রুপি), সালমান খানের ‘ভারত’ (৪১ কোটি ৬২ লাখ রুপি) ও ‘দাবাং থ্রি’ (২৪ কোটি ৫০ লাখ রুপি), অক্ষয় কুমারের ‘মিশন মঙ্গল’ (২৮ কোটি ৪৫ লাখ রুপি) ও ‘কেসারি’ (২০ কোটি ৪০ লাখ রুপি), প্রভাসের ‘সাহো’ (২৫ কোটি ৮২ লাখ রুপি), শহিদ কাপুরের ‘কবির সিং’ (২০ কোটি ২২ লাখ রুপি)।

আলোচিত অভিনেতা

আয়ুষ্মান খুরানা (আর্টিক্যাল ফিফটিন, ড্রিম গার্ল, বালা), রণবীর সিং (গালি বয়), অক্ষয় কুমার (কেসারি, মিশন মঙ্গল, হাউসফুল ফোর, গুড নিউজ), সাইফ আলি খান (লাল কাপ্তান), শহিদ কাপুর (কবির সিং)।

আলোচিত অভিনেত্রী

কঙ্গনা রনৌত (জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া), আলিয়া ভাট (গালি বয়), ভূমি পেড়নেকর ও তাপসী পান্নু (সান্ড কি আঁখ), বিদ্যা বালান (মিশন মঙ্গল), ইয়ামি গৌতম (বালা)।

ব্যবসাসফল ৫

ওয়ার (২৯২ কোটি ৭১ লাখ রুপি), কবির সিং (২৭৬ কোটি ৩৪ লাখ রুপি), উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক (২৪৪ কোটি রুপি), হাউসফুল ফোর (২০৫ কোটি ৪৯ লাখ রুপি), ভারত (১৯৭ কোটি ৩৪ লাখ রুপি), সাহো, গালি বয়, ছিচ্চোরে, সুপার থার্টি, মিশন মঙ্গল, কেসারি

আলোচিত ছবি

উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক (ভিকি কৌশল ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: আদিত্য ধর), গালি বয় (রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট, পরিচালক: জোয়া আখতার), বালা (আয়ুষ্মান খুরানা, ভূমি পেডনেকর ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: অমর কৌশিক), আর্টিক্যাল ফিফটিন (আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক; অনুভব সিনহা), সান্ড কি আঁখ (ভূমি পেডনেকর ও তাপসী পান্নু, পরিচালক: তুষার হিরানন্দানি)।

প্রশংসিত ছবি

ফটোগ্রাফ (নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি ও সানিয়া মালহোত্রা, পরিচালক: রিতেশ বাত্রা), গালি বয় (রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট, পরিচালক: জোয়া আখতার), আর্টিক্যাল ফিফটিন (আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক; অনুভব সিনহা), ছিচ্চোরে (সুশান্ত সিং রাজপুত ও শ্রদ্ধা কাপুর, পরিচালক: নিতেশ তিওয়ারি), সঞ্চিরিয়া (সুশান্ত সিং রাজপুত ও ভূমি পেডনেকর, পরিচালক: অভিষেক চৌবে)

প্রশংসিত অভিনেতা-অভিনেত্রী

সোনম কাপুর ও দুলকার সালমান (দ্য জয়া ফ্যাক্টর), প্রতীক বাব্বর ও তাহির রাজ ভাসিন (ছিচ্চোরে), অক্ষয় খান্না (সেকশন ৩৭৫), সানিয়া মালহোত্রা (ফটোগ্রাফ), গুলশান দেবিয়াহ (মর্দ কো দর্দ নাহি হোতা), শ্বেতা ত্রিপাঠি (গন কেশ), শ্বেতা বসু প্রসাদ (দ্য তাশখন্দ ফাইলস), মোহিত রানা ও মানসী পারেখ গোহিল (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক), অন্নু কাপুর (ড্রিম গার্ল, দ্য ফকির অব ভেনিস), টনি লুক (বদলা), রাসিকা দুগ্গাল ও সুমিত কৌল (হামিদ), সোহম মজুমদার (কবির সিং), মনোজ পাহওয়া ও কুমুদ মিশ্র (আর্টিক্যাল ফিফটিন), সুরজ পাঞ্চোলি (স্যাটেলাইট শঙ্কর), আথিয়া শেঠি (মতিচোর চাকনাচোর), বিশাল জেথোয়া (মারদানি টু)।

সত্যি ঘটনা অবলম্বনে

১. গণিতবিদ আনন্দ কুমারের বায়োপিক ‘সুপার থার্টি’ (হৃতিক রোশন ও ম্রুনাল ঠাকুর, পরিচালক: বিকাশ বেহেল)।

২. ২০১৬ সালে পাকিস্তানসংলগ্ন কাশ্মীর সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযান নিয়ে ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ (ভিকি কৌশল ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: আদিত্য ধর)।

৩. ভারতের ১৩তম প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বায়োপিক ‘দি অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ (অনুপম খের ও অক্ষয় খান্না, পরিচালক: বিজয় রত্নাকর গুট্টে)।

৪. ‘থাকরে’ (নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি ও অমৃতা রাও, পরিচালক: অভিজিৎ পানসে)।

৫. ১৮৯৭ সালে সারাগারহি যুদ্ধে দশ হাজার আফগান সৈন্যের বিরুদ্ধে ২১ জন শিখ সৈন্যের যুদ্ধকে ঘিরে ‘কেসারি’ (অক্ষয় কুমার ও পরিণীতি চোপড়া, পরিচালক: অনুরাগ সিং)।

৬. ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীদের জীবন অবলম্বনে ‘মিশন মঙ্গল’ (অক্ষয় কুমার, বিদ্যা বালান, সোনাক্ষী সিনহা, তাপসী পান্নু)।

৭. শার্পশুটার চান্দ্রো ও প্রকাশি তোমরের বায়োপিক ‘সান্ড কি আঁখ’ (ভূমি পেডনেকর ও তাপসী পান্নু, পরিচালক: তুষার হিরানন্দানি)।

৮. ১৮ বছরের কিশোরী আয়শা চৌধুরীর বায়োপিক ‘দ্য স্কাই ইজ পিঙ্ক’ (ফারহান আখতার, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও জায়রা ওয়াসিম, পরিচালক: সোনালি বোস)।

৯. ২০০৮ সালে দিল্লির জামিয়া নগরের বাটলা হাউসে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের বন্দুকযুদ্ধকে ঘিরে ‘বাটলা হাউস’ (জন আব্রাহাম ও ম্রুনাল ঠাকুর, পরিচালক: নিখিল আদভানি)।

১০. ১৭৬১ সালে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের ঘটনা নিয়ে ‘পানিপথ’ (অর্জুন কাপুর ও কৃতি স্যানন, পরিচালক: আশুতোষ গোয়াড়িকর)।

১১. ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু অবলম্বনে ‘দি তাশখন্দ ফাইলস’ (মিঠুন চক্রবর্তী, নাসিরুদ্দিন শাহ ও শ্বেতা বসু প্রসাদ, পরিচালক: বিবেক অগ্নিহোত্রী)।

১২. ভারতীয় মুজাহিদীনের প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসিন ভাটকালকে গ্রেফতারের কাহিনি ‘ইন্ডিয়াস মোস্ট ওয়ান্টেড’ (অর্জুন কাপুর, পরিচালক: রাজকুমার গুপ্ত)।

প্রথাবিরোধী ছবি

আর্টিক্যাল ফিফটিন (আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক; অনুভব সিনহা), জাজমেন্টাল হ্যায় কেয়া (কঙ্গনা রনৌত ও আয়ুষ্মান খুরানা, পরিচালক: প্রকাশ কোভেলামুড়ি), বালা (আয়ুষ্মান খুরানা, ভূমি পেডনেকর ও ইয়ামি গৌতম, পরিচালক: অমর কৌশিক), উজড়া চামান (সানি সিং, পরিচালক: অভিষেক পাঠক), এক লাড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লাগা (সোনম কাপুর, রাজকুমার রাও, অনিল কাপুর ও জুহি চাওলা, পরিচালক: শেলি চোপড়া ধর), খান্দানি শাফাখানা (সোনাক্ষী সিনহা, পরিচালক: শিল্পী দাশগুপ্ত), সেকশন ৩৭৫ (অক্ষয় খান্না ও রিচা চাড্ডা, পরিচালক: অজয় বেহেল), মারদানি টু (রানি মুখার্জি, পরিচালক: গোপি পুত্রান), গন কেশ (শ্বেতা ত্রিপাঠি, পরিচালক: কাসিম খালো)।

বড় পর্দায় অনুপস্থিত

এ বছর বলিউডের কয়েকজন সুপারস্টার ও নতুন প্রজন্মের তারকার শূন্যতা ছিল চোখে পড়ার মতো, যাদের একটি ছবিও মুক্তি পায়নি বড় পর্দায়। এ তালিকায় আছেন শাহরুখ খান, দীপিকা পাড়ুকোন, রণবীর কাপুর, আনুশকা শর্মা, সারা আলি খান ও জানভি কাপুর।

জনপ্রিয় গান

আপনা টাইম আয়েগা (গালি বয়), পস্তাওগে (অরিজিৎ সিং), ও দিন (ছিচ্চোরে), বেখেয়ালি (কবির সিং), তেরি মিট্টি (কেসারি), তুঝে কিতনা চাহনে লাগে (কবির সিং), চাষনি (ভারত), ঘুঙরু (ওয়ার), কলঙ্ক (কলঙ্ক), ফকিরা ঘর আ জা (জংলী),ও সাকি সাকি (বাটলা হাউস), বাস্তে (ধানি ভানুশালি), দুনিয়া (লুকা চুপি), কোকা কোলা (লুকা চুপি), তেরা বান জাউঙ্গা (কবির সিং), সাইকো সাইয়া (সাহো)।

সেরা ৫ সংলাপ

আপনা টাইম আয়েগা (গালি বয়), হাউ’স দ্য জোশ (উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক), আজ রাজা কা বেটা রাজা নাহি বানেগা, রাজা ওহি বানেগা জো হাকদার হোগা (সুপার থার্টি), উমিদ, হোপ দুনিয়া কে সাবসে বড়ি তাকাত হ্যায়… অর ইসি তাকাত নে হাম সাব কো জিন্দা রাখ হ্যায় (ভারত), তুমহারা রেজাল্ট ডিসাইড নাহি কারতা হ্যায় কি তুম লুজার তো কি নাহি…তুমহারি কোশিশ ডিসাইড কারতি হ্যায় (ছিচ্চোরে)।

প্রেম ও ছাড়াছাড়ি

এ বছর বলিউডে প্রেমের হাওয়ায় ভেসেছেন বেশকিছু তারকা। তারা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন, কেউবা সম্পর্ক বদল করেছেন। একইভাবে ছাড়াছাড়ির ঘটনাও ছিল।

প্রেমে পড়েছেন রণবীর কাপুর-আলিয়া ভাট, মালাইকা অরোরা-অর্জুন কাপুর, ফারহান আখতার-শিবানি ডান্ডেকার, কার্তিক আরিয়ান-অনন্যা পাণ্ডে, সুশান্ত সিং রাজপুত-রিয়া চক্রবর্তী, আরবাজ খান-জর্জিয়া আন্দ্রিয়ানি, হুমা কুরেশি-পরিচালক মুদাসসার আজিজ, কৃতি খারবাদা-পুলকিত সম্রাট, অর্জুন রামপাল-গ্যাব্রিয়েলা ডিমিত্রিয়াডিস।

ছাড়াছাড়ি হয়েছে কার্তিক আরিয়া-সারা আলি খান, ইলিয়েনা ডি’ক্রুজ-অ্যান্ড্রু নিবোন, অর্জুন রামপাল-মেহের জেসিয়া, ইমরান খান-অবন্তিকা মালিক, দিয়া মির্জা-সাহিল সংঘ, ডিজাইনার মাসাবা গুপ্তা-প্রযোজক মধু মান্টেনা।

টুইটারে শীর্ষে

লাইক ও রিটুইট ভিত্তিতে অভিনেতাদের তালিকায় আছে যথাক্রমে অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, সালমান খান, শাহরুখ খান, তামিল তারকা বিজয়, এ. আর. রাহমান, রণবীর সিং, অজয় দেবগণ, মহেশ বাবু, অ্যাটলি। অভিনেত্রীদের মধ্যে শীর্ষে সোনাক্ষী সিনহা। এরপর আছেন যথাক্রমে আনুশকা শর্মা, লতা মঙ্গেশকর, প্রযোজক অর্চনা কল্পাতি, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, আলিয়া ভাট, কাজল আগারওয়াল, সানি লিওনি, মাধুরী দীক্ষিত, রাকুল সিং প্রীত।

সবচেয়ে টুইট হওয়া ছবি

গালি বয়, কবির সিং, মিশন মঙ্গল, কেসারি, হাউসফুল ফোর, উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, কলঙ্ক, সুপার থার্টি, দ্য তাশখন্দ ফাইলস, আর্টিক্যাল ফিফটিন।

গুগল সার্চে শীর্ষ ছবি

কবির সিং, সুপার থার্টি, মিশন মঙ্গল, গালি বয়, ওয়ার, হাউসফুল ফোর, উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক

আইএমডিবি’র দৃষ্টিতে সেরা ১০ ওয়েব সিরিজ

কোটা ফ্যাক্টরি, স্যাক্রেড গেমস টু, দ্য ফ্যামিলি ম্যান, দিল্লি ক্রাইম, হিউমারাসলি ইউরস, টিভিএফ ট্রিপলিং, মেড ইন হ্যাভেন, ফ্লেমস, ইনসাইড এজ, বার্ড অব ব্লাড।

   

২০২৩ সাল: রংপুরের যত আলোচিত ঘটনা



বর্ণালী জামান,স্টাফ করেসপন্ডেট, রংপুর
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘটনাবহুল আরেকটি বছর শেষ করতে যাচ্ছে রংপুরবাসী। ২০২৩-এ নানান ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকছে এ অঞ্চলের মানুষ। এ বছরের কয়েকটি ঘটনা দেশবাসীকেও নাড়া দিয়েছে।

সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রংপুরের গণমহাসাবেশে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা। এ বছরেই রংপুরে গ্যাস এসেছে। ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রংপুরে সতর্কতা জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

আলোচিত এসব ঘটনার কয়েকটি তুলে ধরা হলো-

২২ মার্চ: জেলা প্রশাসক 'স্যার' ডাকতে বাধ্য করায় অবস্থান কর্মসূচি' হাতে লেখা এমন প্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে বসে বেগম রোকেয়া শ্বিবিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন তিনি।

এপ্রিল: গ্রীষ্মের তাপদাহে পুড়ে রংপুর। এবাররই প্রথম গরমে অতিষ্ঠ মানুষদের মধ্যে পানির বোতল বিতরণ করা হয়েছে।

১ জুন: নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে এ দিন ৫ মিনিট স্তব্ধ থাকে রংপুর। এ কর্মসূচি পালনে সর্বস্তরের মানুষ সাড়া দেয়।

২ আগস্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় মহাসমাবেশে অংশ নেন। তিনি ২৭ টি প্রকল্পের উদ্ধোধন করেন। সেই সাথে তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তায়নের ঘোষণা দেন।

১৯ সেপ্টেম্বর: এ দিনে গ্রামীণ কৃষি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের এর বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়। একই দিনে রংপুর বিনোদন চিড়িয়াখানায় রয়েল বেঙ্গল টাইগার দম্পতি রোমিও-জুলিয়েটকে আনা হয়েছে।। বিকালে বিশেষ ব্যবস্থায় রোমিও-জুলিয়েটকে নিয়ে আসা হয়।

২৬ সেপ্টেম্বর: মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম শহিদ শংকু সমজদারের মা দীপালী সমজদার মারা যান। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ভোরে নগরীর কামাল কাছনায় নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

১ অক্টোবর: এদিনে নগরীতে ৩৫ টাকা কেজি দরে এ খোলাবাজারে আলু বিক্রি করা শুরু হয়। কাচারীবাজার এলাকায় খোলা ট্রাকে এই বিক্রি কার্যক্রম চলে।

৪ অক্টোবর: ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রংপুরে সতর্কতা জারি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর পরের দিন টানা বর্ষণে বন্যায় প্লাবিত হয় জেলার বিভিন্ন এলাকা।

১৪ নভেম্বর: রংপুরের মানুষ বছরের পর বছর থেকে গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করে আসছিলেন। অবশেষে এ দিনে উন্নয়ের ডানা মিলে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস আসে। এদিন সকালে ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্যাস সঞ্চালন লাইনের উদ্বোধন করেন। তারপর পেট্রো বাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার জেলার পীরগঞ্জে গ্যাস স্টেশন প্রাঙ্গণে ফলক উন্মোচন করেন।

 

;

দেশের ফুটবলে উত্থান-পতনের ছোঁয়া



নজরুল ইসলাম, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা২৪.কম
ভালো-মন্দ মিলিয়ে একটি বছর পার করল বাংলাদেশের ফুটবল

ভালো-মন্দ মিলিয়ে একটি বছর পার করল বাংলাদেশের ফুটবল

  • Font increase
  • Font Decrease

মাঠের পারফরম্যান্সে উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ২০১৯ সালকে বিদায় জানিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। শুধু স্বপ্নভঙ্গের গল্প লেখেনি দেশের ফুটবলাররা। উৎসব করার মতো সাফল্যও ধরা দেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের হাতে। সদ্য বিদায় নেওয়া বছরে দেশের ফুটবলের সেই হাসি আর কষ্টমাখা স্মৃতিগুলো একবার রোমন্থন করা যাক-

কাতার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশ

২০১৯ সালে মাঠের লড়াইয়ে বেশ উজ্জ্বল ছিল বাংলাদেশের জাতীয় ফুটবল দল। উতড়ে যায় বিশ্বকাপ প্রাক বাছাই পর্বের বাধা। দুরন্ত পারফরম্যান্সে লাওসকে হারিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে পা রাখে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে দাপুটে প্রতিরোধ গড়ে ড্র ছিনিয়ে নেয় দেশের দামাল ছেলেরা। যে পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ফুটবলের সোনালি অতীতে ফিরে যাওয়ার আভাস দেয়।

অন্য দিকে প্রীতি ম্যাচে কম্বোডিয়ার বিপক্ষেও জেতে বাংলাদেশ। আর ঢাকায় ভুটানকে দুই ম্যাচে ধরাশায়ী করে কোচ জেমি ডে-র শিষ্যরা।

ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে ট্রফি জয়

সদ্য অতীত হওয়া বছরে অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছে দেশের ছেলেরা। মালদ্বীপকে হারিয়ে চার দলের উয়েফা অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে সেরা হয় বাংলাদেশ।

এএফসি কাপের সেমিতে আবাহনী

ক্লাব ফুটবলে গেল বছর নতুন কীর্তি গড়ে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এএফসি কাপের আঞ্চলিক সেমি-ফাইনালের টিকিট কাটে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী দলটি। তা আবার প্রথমবারের মতো। শেষ চারের প্রথম লেগে জয়ও ছিনিয়ে নেয় আবাহনী। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ উত্তর কোরিয়ান ক্লাব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভকে ধরাশায়ী করে তারা। কিন্তু পিয়ংইংয়ের ফিরতি লেগে হারের তেতো স্বাদ নিয়ে ঘরে ফেরে আবাহনী।

এসএ গেমসে স্বপ্নভঙ্গ

নেপাল এসএ গেমসে আর্চারির দশটি স্বর্ণপদকই জিতেন রোমান সানারা। সুবাদে নিজেদের পুরনো রেকর্ড ভেঙে ১৯টি স্বর্ণপদক জেতার নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু ফুটবলে লেখা হয় ব্যর্থতার গল্প।

খেলার কথা অনূর্ধ্ব ২৩ দলের। সেখানে বাংলাদেশ লড়াই করেছে জাতীয় দল নিয়ে। তার চেয়ে বড় কথা। নেপাল এসএ গেমসে ফুটবল দল পাঠায়নি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভারত। তাই বাংলাদেশের ফাইনালে উঠার সম্ভাবনা জোরালো ছিল। কিন্তু গেমসে প্রথমবারের মতো ভুটানের কাছে হেরে ফাইনালে উঠার স্বপ্ন ভেঙে যায় বাংলাদেশের ছেলেদের। আর গেমসে মেয়েদের দলই পাঠায়নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

এএফসির সেরা গোল

মামুনুল ইসলাম ও সোহেল রানার গোল দর্শকদের ভোটে এএফসি-র সপ্তাহ সেরা গোলের মর্যাদা পায়। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উত্তর কোরিয়ার ক্লাব এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে করা আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানার গোলটি জায়গা করে নেয় এএফসি-র সেরা গোলের তালিকায়। তার আগে এএফসি কাপের গ্রুপ পর্বে নেপালের মানাং মার্সিয়াংদি ক্লাবের বিপক্ষে আবাহনীর মাঝ-মাঠের তারকা ও বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মামুনুল ইসলামের গোল সপ্তাহ সেরা নির্বাচিত হয়।

শেখ কামাল ক্লাব কাপ

শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে শিরোপা জিতে নেয় মালয়েশিয়ার তেরেঙ্গানু এফসি। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীকে ২-১ গোলে হারায় তেরেঙ্গানু। রানার্স-আপ ট্রফি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় কোচ মারুফুল হকের বন্দরনগরীর ক্লাবটিকে।

বসুন্ধরার লিগ ট্রফি

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবার পা রেখেই সবাইকে চমকে দেয় বসুন্ধরা কিংস। নিজেদের অভিষেক মৌসুমেই ঘরে তুলে দেশের লিগ ট্রফি। লিগের ২২তম ম্যাচে মোহামেডানের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেই শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে টুর্নামেন্টের নবাগত দলটি।

গোল্ডকাপ সেরা মেয়েরা

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা অনূর্ধ্ব-১৯ গোল্ডকাপে ছোবল দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ফণী। বাজে আবহাওয়ার কারণে ফাইনাল ম্যাচটিই মাঠে গড়ায়নি। অন্য ফাইনালিস্ট লাওসের সঙ্গে যুগ্মভাবে শিরোপা ভাগাভাগি করে দেশের মেয়েরা।

এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলে আঁখিরা

গেল বছর ফের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের মূল পর্বে খেলে দেশের মেয়েরা। টুর্নামেন্টের মূল পর্বে টানা দ্বিতীয়বারের মতো অংশ নেয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে নেপালের সাফ ফুটবলের শেষ চারে উঠেও ভারতের কাছে হেরে বিদায় নেয় বাংলাদেশের মেয়েরা।

ক্লাব পাড়ায় শুদ্ধি অভিযান

ক্যাসিনোর মূল উৎপাটন করতে মতিঝিলের ক্লাব পাড়ায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চালায় শুদ্ধি অভিযান। এতে স্তব্ধ হয়ে পড়ে মোহামেডান, আরামবাগ ও ফকিরেরপুলসহ ঢাকার অন্য ফুটবল ক্লাবগুলো। জুয়া আর ক্যাসিনোর অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে নতুনভাবে এগিয়ে চলার চেষ্টা করছে এখন অভিযুক্ত ক্লাবগুলো।

;

আলোচনায় ছিল জঙ্গিদের নতুন কৌশলে হামলা



শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০১৬ সালে পুরো বাংলাদেশকে স্তম্ভিত করে দিয়েছিল গুলশানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা। এ ঘটনার পরে জঙ্গিরা আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারেনি। একের পর এক অভিযানে মেরুদণ্ড ভেঙে যায় জঙ্গি চক্রের।

তবে ২০১৯ সালে এসে হঠাৎ জঙ্গিরা তাদের কৌশল পরিবর্তন করে নতুনভাবে হামলার পরিকল্পনা করে। রাজধানীসহ একাধিক জায়গায় আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে তারা।

এ ঘটনা আমলে নেন স্বয়ং পুলিশ প্রধান ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, জঙ্গিরা হামলার ধরন বদলে (লোন উলফ) ‘একাকী’ হামলার কৌশল আঁটায় তা উদ্বেগের নতুন কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গিরা এবার টার্গেট করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।

অতীতের একাধিক হামলার ঘটনা পর্যালোচনা করে এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে পুলিশের সব ইউনিটে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশও দেন পুলিশ প্রধান। সে অনুযায়ী সারা দেশের পুলিশ সতর্ক হয়ে ওঠে।

সর্বশেষ খুলনার খানজাহান আলী থানার আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় এ হামলা হয়। কেউ হতাহত না হলেও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, উদ্ধার করা হয় ককটেল।

গত তিন বছরে কোণঠাসা হয়ে থাকা জঙ্গিরা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে ২০১৯ সালে। এরই ধারাবাহিকতায় বছরের শুরুতে অর্থাৎ মার্চ ও এপ্রিল মাসে গুলিস্তান এবং মালিবাগে পুলিশ বক্স ও পুলিশ ভ্যানে বোমার বিস্ফোরণ ঘটনায় তারা। আর ২৩ জুলাই প্রায় একই সময়ে পল্টন ও খামারবাড়িতে দুই পুলিশ বক্সের পাশে তারা বোমা রেখে যায়। যদিও বোমা দুটি বিস্ফোরিত না হওয়ায় তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে ২০১৯ সালে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের নজরে আসতে চায় এ দেশের জঙ্গিরা। আইএস জঙ্গিগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে প্রত্যেকটি ঘটনার দায়ও স্বীকার করেছে।

পুলিশ বলছে, হামলায় ব্যবহৃত হতো ককটেল কিন্তু ইমপ্রোভাইজড। যা সাধারণ ককটেলের চেয়ে শক্তিশালী। প্রত্যেকটা ঘটনা ‘লোন উলফ’ (একাকী) বা উলফ প্যাকের (৪/৫ জন মিলে) পরিকল্পনা ফলো করে হামলা করে জঙ্গিরা। 

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে জঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষায়িত সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘লোন উলফ (একাকী) বা উলফ প্যাক (৪/৫ মিলে)’ হামলার কৌশলে জঙ্গিদের সংগঠিত হওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশে নতুন ছিল। এর সদস্যরা নিজেরা নিজেরা র‌্যাডিক্যালাইজড হয়ে হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। এরকম একাধিক ‘উলফ প্যাক’ রয়েছে বলেও ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দারা বলছেন, সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি ‘সেল্ফ র‌্যাডিক্যালাইজড’ হয়ে ‘লোন উলফ’ বা ‘উলফ প্যাক’-এর মাধ্যমে হামলার পরিকল্পনা করলে তা ঠেকানো অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোও এভাবে হামলা চালানোর জন্য নিয়মিত আহ্বান চালিয়ে আসছে।

জানতে চাইলে সিটিটিসির প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনার পর জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আমরা ভেঙে দিতে পেরেছি। কিন্তু এরা যেহেতু বিচ্ছিন্ন ও মতাদর্শিকভাবে এক্সিস্ট করে, সে হিসেবেই তারা বিচ্ছিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই চেষ্টা বা কার্যক্রম চালানোর প্রক্রিয়া হিসেবেই এরকম আরও কিছু ছোট ছোট ‘স্লিপার সেল’ বা ‘উলফ প্যাক’ তৈরি হয়েছে। অভিযান চালিয়ে তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

;

আন্তর্জাতিক ফুটবল

লিভারপুল-ব্রাজিলের শিরোপা উৎসব, ব্যালন ডি'অরে মেসির রেকর্ড



নজরুল ইসলাম, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা২৪.কম
কেটেছে লিভারপুল-ব্রাজিলের শিরোপা খরা, ব্যালন ডি'অর রাজ্যে মেসির ফেরা

কেটেছে লিভারপুল-ব্রাজিলের শিরোপা খরা, ব্যালন ডি'অর রাজ্যে মেসির ফেরা

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্ণিল একটি বছর পার করল আন্তর্জাতিক ফুটবল। বিতর্ক, সাফল্য, শিরোপা জয় আর চমকে ভরা বছরটা সন্দেহ নেই স্মরণীয় থাকবে বিশ্ব ফুটবলের ইতিহাসের পাতায়। ঘটনাবহুল বিদায়ী বছরের স্মৃতিচারণায় নিশ্চিত আগামী দিনগুলোতে মুখরিত থাকবেন ফুটবল অনুরাগীরা। লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নস লিগ, পর্তুগালের ন্যাশন্স কাপ আর ব্রাজিলের কোপা আমেরিকা জয়, উয়েফা অ্যাওয়ার্ডে ভার্জিল ফন ডাইকের চমক, মেসির নিষেধাজ্ঞা আর ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর জয়ের কীর্তি গড়ার মতো গেল বছরের আলোচিত ঘটনায় একবার চোখ ফেরানো যাক তাহলে-

ব্রাজিলের কোপা আমেরিকা জয়

কোপা আমেরিকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছিল শিরোপা খরা। তা প্রায় এক যুগ। সেই খারাপ সময়টা পেরিয়ে ২০০৭ সালের পর ব্রাজিলের ঘরে বিদায়ী বছরে প্রথম এসেছে কোপা আমেরিকার ট্রফি। ফাইনালে পেরুকে হারিয়ে আসরের নবম শিরোপা জিতে অনেক দিনের হতাশা দূর করেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ২০১৪ বিশ্বকাপে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হারের ক্ষত কিছুটা হলেও শুকিয়ে দিয়েছে ঘরের মাঠের এ শিরোপা জয়।

মেসির নিষেধাজ্ঞা

মেজর ফুটবল আসরে আর্জেন্টিনার দুঃস্বপ্নটা কিছুতেই যেন কাটছে না। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার সেই দুঃস্বপ্নটা আরো একটু স্থায়ী হলো বৈকি! দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলের সর্বোচ্চ এ টুর্নামেন্টের শেষ চারে চির শত্রু ব্রাজিলের মাঠে তাদের কাছেই হেরে ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি ফের পুড়লেন শিরোপা না জেতার আক্ষেপের আগুনে। সেই হতাশা হজম করতে না পেরে দিয়ে ফেলেন বিতর্কের জন্ম। যেটা নিপাট ভদ্র মেসির সঙ্গে কোনোভাবেই যায় না।

প্রতিবেশী ব্রাজিলের কাছে হেরে রেকর্ড ষষ্ঠবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী এ সুপারস্টার আয়োজকদের দাঁড় করান নিজের কাঠগড়ায়। অভিযোগ তোলেন পাতানো' কোপা আমেরিকা আয়োজনের। চিলিকে হারিয়ে কোপার তৃতীয় সেরা দলের মর্যাদা ছিনিয়ে নেওয়ার ম্যাচে মেসি দেখেন লাল কার্ড। ফের মাথা গরম করে ফেললেন। বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কের রসদ যোগান দেন আর্জেন্টাইন এ ফুটবল মহাতারকা। এবার অভিযোগ করেন- স্বাগতিক ব্রাজিলকে জেতাতেই সব ব্যবস্থা করে রেখেছে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। ঠিক এ অপরাধেই আন্তর্জাতিক ফুটবলে তিন মাসের জন্য নিষিদ্ধ হন মেসি।

ন্যাশন্স কাপ পর্তুগালের

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হাত ধরে ২০১৬ সালে ইউরো জয়ের পর ইউরোপিয়ান ফুটবলে গেল বছর আরো একটি বড় সাফল্য পায় পর্তুগাল। জিতে নেয় তারা উয়েফা ন্যাশন্স কাপের প্রথম আসরের ট্রফি। এ সাফল্যেও অসামান্য অবদান রাখেন পর্তুগিজ মেগাস্টার রোনালদো। পাঁচবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী সিআর সেভেনের হ্যাটট্রিকে সুইজারল্যান্ডকে ধসিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে পর্তুগাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে ধরাশায়ী করে নিজেদের দ্বিতীয় মেজর ট্রফি ঘরে তুলে কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের শিষ্যরা।

ব্যালন ডি'অরে মেসির রেকর্ড

প্রিয় জন্মভূমি আর্জেন্টিনার হয়ে এবছরও বড় কোনো শিরোপা জিততে পারেননি লিওনেল মেসি। ক্লাব বার্সেলোনার হয়ে জিতেন শুধু লা লিগা ট্রফি। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে বল পায়ে তার ফুটবল জাদু মুগ্ধ করে রাখে পুরো দুনিয়াকে। সুবাদে ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার বনে যান মেসি। তার ধারাবাহিকতায় ব্যালন ডি'অরে নিজের রাজ্যত্ব ফিরে পান আর্জেন্টাইন এ ফুটবল জাদুকর। ২০১৯ সালের ব্যালন ডি'অর জিতে লিখে ফেলেন নতুন ইতিহাস। পুরনো রেকর্ড ভেঙে গড়েন ষষ্ঠ ব্যালন ডি'অর জয়ের রেকর্ড।

ভার্জিল ফন ডাইকের চমক

লিভারপুলের হয়ে দুরন্ত পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে সবার নজর কাড়েন ভার্জিল ফন ডাইক। দ্য রেড শিবিরকে উপহার দেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি। সুবাদে সবাইকে চমকে লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে পিছনে ফেলে এ ডাচ ডিফেন্ডার জিতে নেন উয়েফার বর্ষসেরা ফুটবলার অ্যাওয়ার্ড।‌

লিভারপুলের ঘরে চ্যাম্পিয়নস লিগ

লিভারপুল সর্বশেষ ইউরোপ সেরার তকমা জিতে ছিল ২০০৫ সালে। দীর্ঘ ১৫ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের অধীনে সদ্য অতীত হওয়া বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি জিতেছে দ্য রেড শিবির। টটেনহ্যাম হটস্পারকে হারিয়ে ষষ্ঠ চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি ছিনিয়ে নেয় অ্যা‌নফিল্ড শিবির। তবে লিভারপুলের লিগ ট্রফির খরাটা এখনো কাটেনি। ১৯৯০ সালে সর্বশেষ লিগ ট্রফি জেতে তারা। তবে মাঠের লড়াই আর ফর্ম দেখে এটা বলাই যায়, কোনো অঘটন না ঘটলে দীর্ঘ ৩০ বছর পর চলতি মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ট্রফি উঠতে যাচ্ছে লিভারপুলের শোকেজেই।

;