সদ্য বিগত ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গন মাতিয়েছেন তারা। বিশ্বের রাজনৈতিক মঞ্চের পুরোটা জুড়েই ছিল তাদের দাপট। আলোচনা-সমালোচনা কিংবা নিন্দা-প্রশংসায় তারা আকর্ষণ করেছিলেন সকলের দৃষ্টি। তারা ছিলেন ২০১৯ সালে বিশ্বরাজনৈতিক মঞ্চের কুশীলব। বছরের পুরোটা সময়ই তাদেরকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃশ্যপট।
বছর জুড়েই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তাদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা ইস্যু। তারা আলোচনার পাশাপাশি জন্ম দিয়েছেন অনেক সমালোচনার। বছরের বিভিন্ন সময় তাদের কর্মকাণ্ডে প্রশংসা কিংবা নিন্দার ঝড় উঠেছে গণমাধ্যমে এমনকি নিজের দেশে বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
২০১৯ সালে বিশ্বমঞ্চে এমন অনেক নেতার দেখা পাওয়া গেছে, যারা নিন্দার ছিলেন নির্লিপ্ত, খামখেয়ালীতে ছিলেন লাগামছাড়া, সমালোচনায় ছিলেন ভ্রূক্ষেপহীন, শক্তি ও ক্ষমতার ব্যবহারে ছিলেন অতি উগ্র মনোভাবাপন্ন। অতীতে বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চের দুই-চার জন নেতার ব্যক্তিত্ব আলোচনার টেবিলে উঠে আসলেও ২০১৯ সালে তেমন আলোচিত-সমালোচিত নেতার তালিকা বেশ বড়। শুধু ইউরোপ বা আমেরিকায় নয়, এশিয়া বা আফ্রিকায় এমন নেতার দেখা পাওয়া গেছে, নানা কথা ও কাজের জন্য মানুষ তাদেরকে মনে রাখবে। ২০১৯ সাল বিদায় নিলেও তাদের ইমেজ বিদায় নেবে না আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে। ইতি বা নেতিবাচক কারণে মানুষের মনে অনেক দিন রয়ে যাবে তাদের নাম।
বার্তা২৪.কম বিশ্লেষণ করেছে ২০১৯ সালে বিশ্ব রাজনৈতিক মঞ্চে সরব এমনই কয়েকজন আলোচিত-সমালোচিত আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে, যাদেকে বলা যেতে পারে বিগত বছরের বৈশ্বিক দৃশ্যপটের প্রধান কুশীলব:
ডোনাল্ড ট্রাম্প (যুক্তরাষ্ট্র)
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও লেখক হিসেবে রাজনীতি ও প্রশাসনে এসেই সবার নজরে চলে আসেন নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে।
যদিও তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা হাতে নেওয়ার আগে থেকেই তুমুল সমালোচনার জন্ম দেন এবং নির্বচনী প্রচারণার কাজের শুরুতেই অসংলগ্ন কটূক্তি আর লাগামছাড়া কথাবার্তার জন্য নিন্দার সম্মুখীন হন। মার্কিন নেতাকে এক অর্থে বিশ্ব নেতা হলেও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি বিশ্ব নেতা তো অনেক দূরের কথা, তার পূর্বসূরি নেতৃত্বকেও করেছেন হেয় প্রতিপন্ন।
রাজনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কাজে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে ব্যর্থতার পাশাপাশি তিনি চীন, রাশিয়া, ইরাক, উত্তরকোরিয়া শেষমেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও সম্পর্ক প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক অবস্থার অবনতি, রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক ইস্যুতে জলঘোলা, ইরানের সঙ্গে হরমুজ প্রণালী নিয়ে বিতর্ক, আফগানিস্থানের সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে ব্যর্থ, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক চুক্তিতে বিতর্ক ইত্যাদি কাজ করে সমালোচিত হন তিনি।
ইতোমধ্যে বিশ্ব মিডিয়াতে বেশ বড় জায়গা জুড়ে আছে তার ইমপিচমেন্ট ইস্যু। যদিও বিষয়টিকে তিনি কোনো দোষ হিসেবে দেখছেন না। এটা তিনি এমনিতেই বলেছেন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বেশ আগে। উগ্র কথাবার্তা, শ্বেতাঙ্গ উন্নাসিকতা, নিজ দেশে অভিবাসী নাগরিকদের প্রতি অসহিষ্ণুতা ইত্যাদি কারণে ঘরে-বাইরে পুরো বছর জুড়েই সমালোচিত হয়েছেন এই মার্কিন নেতা। অতীতের বহুমাত্রিক ও সমন্বয়বাদী মার্কিন নেতৃত্বের তালিক বিষম রকম ব্যতিক্রম আর বিপরীত ছিলেন তিনি।
বরিস জনসন (ব্রিটেন)
ব্রিটেনের রাজনীতিতের যখন ব্রেক্সিটের জোয়ার-ভাটা শুরু হয় তখন তিনি বেশ উত্তাপ ছড়িয়ে ক্ষমতায় আসেন। নির্বাচনী প্রচারণায় ছিল- ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে ব্রেক্সিট থেকে ইংল্যান্ডকে রের করে নিয়ে আসা। কিন্তু সেই প্রচারণায় ব্যর্থ হন তিনি। কথা রাখতে পারেননি বরিস জনসন। একইসঙ্গে কূটনৈতিক ইস্যুতে ট্রাম্পকে চক্ষুশূল মনে করছেন জনসন। ক্ষমতায় আসার আগে ট্রাম্পের প্রিয় পাত্র জনসন এখন সেই ট্রাম্পকেই ব্রিটেনের নির্বাচন নিয়ে নাক গলাতেও মানা করেন। প্রথা ভেঙে ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিরঙ্কুশ জয় পায় জনসনের কনজারভেটিভ পার্টি।
তবে ব্রেক্সিট ইস্যুকে কেন্দ্র করেই বিগত চার বছর ধরে ক্ষমতার রদ বদল হয়েছে বেশ কয়েকবার। আর এখন ছেড়া পালের হাল ধরে বিপাকে পড়েছেন বরিস, যদিও তার ক্ষমতায় আরোহণকে গণ্য করা হয় বছরের সেরা চমক হিসেবে।
জেসিন্ডা আরডার্ন (নিউজিল্যান্ড)
সন্ত্রাস ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে শান্তি, সমন্বয় ও ঐক্যের প্রতীক হয়েছিলেন পশ্চিমা শ্বের এই নেত্রী। তার পুরো নাম জাসিন্ডা কেট লরেল আরডার্ন। নিউজিল্যান্ডের হ্যামিলটন শহরে ১৯৮০ সালের ২৫ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে নিউজিল্যান্ডের ৪০তম এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এছাড়াও তিনি ২০১৭ সালের ১ আগস্ট থেকে নিউজিল্যান্ড লেবার পার্টির সভাপতির দায়িত্বও পালন করছেন।
২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডে বন্দুকধারীর গুলিতে ৫১ জন প্রার্থনারত নিরীহ মানুষ নিহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে ভূমিকা জেসিন্ডা আরডার্ন রেখেছেন তা সকলের নজরে আসে। এমন বিতর্কিত বিষয়ে জেসিন্ডার অবস্থান সকল রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য অনুকরণীয়। হামলার শিকার শরণার্থী মুসলিমদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাদের জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন। এমনকি এই হামলাকে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। সামরিক যুদ্ধাস্ত্র অটোমেটিক সাব-মেশিনগানের বেসামরিক ব্যবহারকে তিনি নিষিদ্ধ করেছেন। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ যে বিশ্ব সমস্যা এবং একে ধর্মের নামে না ডেকে অপরাধের আলোকে দেখার শিক্ষা দিয়েছেন তিনি। পশ্চিমা জগতে সর্বধর্মের মিলন ও পারস্পরিক সৌহার্দ্যের উজ্জ্বল উপমা তিনি স্থাপন করেছেন সন্ত্রাস ও রক্তপাতের কঠিন পরিস্থিতিতে।
জাস্টিন ট্রুডো (কানাডা)
বছর জুড়েই মানবিকতা আর পরমত সহিষ্ণুতার কারণে আটলান্টিকের উত্তর তীরের দেশ কানাডার এই নেতা বিশ্বে মনোযোগের পাশাপাশি অর্জন করেন শ্রদ্ধা ও সম্মান।
জাস্টিন ট্রুডো কানাডার লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে ২০১৫ সালে দেশটির ২৩তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। জো ক্লার্কের পর তিনি কানাডার দ্বিতীয় কম বয়সী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাবা পিয়েরে ট্রুডোও কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
কানাডার রাজধানী অটোয়াতে জন্ম নেয়া ট্রুডো কলেজ জিন-দ্যে-ব্রেবুফ এ পড়ালেখা করেন। ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৪ সালে এবং ১৯৯৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে স্নাতক করেন। বাবার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে দেয়া একটি বক্তব্যের মাধ্যমে সবার নজরে আসেন ট্রুডো। স্নাতক শেষে ট্রুডো ভ্যানকুভারের ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিক্ষকতাও করেন।
গৃহযুদ্ধ কবলিত সিরিয়ার বাস্তুহারা মানুষের প্রতি সহায়তায় হাত বাড়ানো, মন্ত্রিসভার ১৫টি পদে নারী নিয়োগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে ইতোমধ্যে উদারপন্থী সরকার হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন ট্রুডো। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও বিদ্বেষের মুখে তিনি সংখ্যালঘুর ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকারের পক্ষে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন।
আবি আহমেদ (ইথিওপিয়া)
শান্তিতে নোবেল পেয়ে আফ্রিকান নেতা ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ বিশ্বব্যাপী আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন। মূলত ইথিওপিয়ায় শান্তি রক্ষা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন, সীমান্ত এলাকায় বিরোধ নিষ্পত্তি এবং প্রতিবেশী দেশ ইরিত্রিয়ার সঙ্গে সমঝোতা করায় তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। কিন্তু সমালোচকরা তাকে আপসকামী বলেও অভিযুক্ত করেছে।
২০১৮ সালের ২ এপ্রিল ১৫তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে থাকা ইথিওপিয়াতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা ছিল তার। শুরুতেই তিনি জরুরি অবস্থার অবসান, বন্দিদের মুক্তি, বিদেশিদের বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে আলোচনায় আসেন। দুই দশক ধরে চলমান বৈরী সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ইরিত্রিয়ার সঙ্গে সংলাপে বসেন তিনি। তারই ফলশ্রুতি শান্তিচুক্তি এবং বিশ বছর ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান হয়। ইথিওপিয়ার অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী ক্ষমতাসীন জোটের প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া এই নেতা আফ্রিকার গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বমঞ্চেও আলোচিত হয়েছেন।
অং সান সুচি (মায়ানমার)
২০১৩ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া এই নারী নেত্রী প্রবল সমালোচিত হন সামরিক জান্তাকর জাতিগত নিধনে সমর্থন করার কারণে। তিনি দীর্ঘদিনের বন্দি জীবন থেকে মুক্তির দুই বছরের মাথায় বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়ে ক্ষমতার অংশ হন। কিন্তু তারপর তার অবস্থান রাতারাতি পাল্টে যায়।
মায়ানমারের গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার তাকে ‘নেলসন মেন্ডেলা’র উত্তরসূরি খেতাব এনে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি সেই উপাধির মর্যাদা ধরে রাখতে পারেন নি।
সুচি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু শান্তির জন্য বিশ্বখ্যাতি ‘অর্জন’ করে তা ‘রক্ষা’ করার ক্ষেত্রে তিনি পরাজিত হয়েছেন। মিয়ানমারের নিপীড়িত সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা হয় সুচির নামে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক হত্যা, ধর্ষণ, বান্তুচ্যুতি এবং অগ্নিসংযোগসহ জাতিগত রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অত্যাচারের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
থেরেসা মে (ব্রিটেন)
ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় আসেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে দলের সমর্থন হারিয়ে নাকাল হয়ে চলতি বছর জুনে সিদ্ধান্ত নেন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবার। আর ব্রেক্সিটের জের ধরে ডেভিড ক্যামেরুনের পর দ্বিতীয় নেতা হিসেবে আলোচনায় আসেন থেরেসা মে।
থেরেসা মে ব্রেক্সিটকে জগাখিচুড়ি পাকিয়েছে বলে মন্তব্যও করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্রিটেনের দ্বিতীয় নারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই গত তিন বছর ধরে ব্রেক্সিট নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়েন মে। এই নিয়ে দেশটির পার্লামেন্টে বেশ কয়েক বার ভোটও হয়েছে। এতে কয়েক বার মে’র পক্ষে রায় গেলেও পার্লামেন্টে নিয়মিত তোপের মুখে ছিলেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদি (ভারত)
বছরজুড়ে বিতর্কে ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ব্যপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দিয়ে আলোচনায় আসেন মোদি। আর এখন সমালোচনার দাবানলে পুড়ছেন তিনি।
কাশ্মীর ইস্যুতে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, আসামে এনআরসির (নাগরিকপঞ্জি) চুক্তি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএবি), সম্প্রতি সিএবি'র বিরুদ্ধে ভারত জুড়ে বিক্ষোভ ইত্যাদি ইস্যুকে কেন্দ্র করে নিজেকে স্বৈরচারী ও হিন্দুত্ববাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন মোদি। শান্তি, ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের আহ্বান জানিয়ে গেলেও বিভিন্ন আইনের রদ বদল করে নাম লিখিয়েছেন কট্টরপন্থি নেতা হিসেবে। সমালোচকদের মতে, বৃহত্তর গণতন্ত্রের দেশ ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র যথেষ্ট ম্লান হয়েছে তার শাসনামলে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (ইসরায়েল)
রক্ষণশীল ও ইহুদি মৌলবাদী দেশ ইসরায়েলের কোনও নেতা বিশেষ কোনও কারণ ছাড়া বিশ্ব মিডিয়ার খবরে আসেন না। সেক্ষেত্রে সাবেক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়া নেতানিয়াহু সব সময় ছিলেন মিডিয়ার আলোচনায়।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পদে। দল ও সরকারের ভেতরে নিজেকে গড়ে তুলেছেন স্বৈরাচারী নেতা হিসেবে। মাথায় নিয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগ এবং পরিণত হয়েছেন আরব ও ফিলিস্তিনি জনতার নিধনকারী রূপে। মধ্রপ্রাচ্যের শান্তি প্রচেষ্টা তার কারণে একাধিক বার মুখ থুবড়ে পড়েছে।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের কারণে তিনটি পৃথক দুর্নীতির অভিযোগ দায়েরও করা হয়। ইসরায়েল রাষ্ট্রের ইতিহাসে যা এবারই প্রথম ঘটলো। তথাপি ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দেন নেতানিয়াহু। চলতি বছর দুই দফায় নির্বাচনে নেতানিয়াহু বা তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা সরকার গঠন করতে পারে নি। তবু ক্ষমতা ছাড়ার পাত্র নন তিনি। সামনের বছরের মার্চ মাসে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তখনই জানা যাবে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ভাগ্য সম্পর্কে।
২০১৯ সালর এইসব নেতৃবৃন্দ ২০২০ সালও বিশ্ব রাজনীতির মঞ্চে সরব থাকবেন। তাদের আচার-আচরণের বিশেষ কোনও পরির্তন হবে, নাকি নতুন কোনও নেতার আগমনে তারা ছিটকে পড়বেন, সেটা কেবল সদ্য-আগম ২০২০ সালের গর্ভে লুক্কায়িত ভবিষ্যতই বলতে পারবে।