নবীর শহর মদিনায় যেভাবে পালিত হয় রমজান



যাইনাব আল গাযী, অতিথি লেখক, ইসলাম, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে কিছুটা ভিন্ন নবীর শহর বলে পরিচিত মদিনা মোনাওয়ারার রমজান চিত্র। এখানকার খাওয়া-দাওয়া ইবাদত-বন্দেগি, বাচ্চাদের ছোটাছুটি, খেলাধুলা, ইফতার ও সেহেরির আয়োজন- সব মিলিয়ে খুব মনোরম এক পরিবেশ সৃষ্টি হয় রমজান মাসে। এ পরিবেশ অন্য মাসগুলো থেকে একেবারেই ভিন্ন। আলাদা ঘ্রাণ অনুভূত হয়, যেন দয়াময় আল্লাহ তার রহমত দিয়ে ঢেকে নিয়েছেন এই শহরকে।

মদিনায় শাবান মাস থেকেই শুরু হয় রমজানের প্রস্তুতি। তখন থেকেই সবাই যেন মনে এটা লিখে নেন, আগত মাস উত্তম আখলাকের মাস। সবাইকে সাহায্য করার মাস। সবাইকে নিজের করে নেওয়ার মাস, সবার সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার মাস।

রমজানে শহর সাজানো হয় লাইট এবং লাল নীল প্রিন্টের কাপড় দিয়ে। উঁচু উঁচু বিল্ডিং, শপিংমল এবং রাস্তার দু’ধারের সড়কবাতির খুঁটিগুলোতে লাগানো ছোটছোট লাইট। হোটেলের দরজা, টেবিলের দস্তরখান ও ঘরবাড়ির দেয়াল থেকে শুরু করে বিভিন্নস্থানে লাল নীল কাপড় লাগিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় শহরকে।

ধনাঢ্য আরব পরিবারগুলো তাদের পরিচিত অসহায় পরিবারগুলোর প্রতি বিশেষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। অনেকে তো ঘরের ভাঙা ফার্নিচার বদলানো থেকে শুরু করে চাল ডাল তেল সব কিনে দেন। নিজেরাও নতুন প্লেট, বাটি, চামচ, গ্লাস, জগ কেনেন। পাড়া-পড়শীদের ইফতার ও সেহেরি দেওয়ার রেওয়াজ তো অনেক পুরোনো। এটা তাদের হররোজকার আমল।

রমজানে সুপারমার্কেটগুলোয় দেওয়া হয় নানা অফার। অন্যমাসে যে খাবারের দাম থাকে ১০ রিয়াল তা রমজান উপলক্ষে হয় ১ রিয়াল। খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুরই দাম একদম কমে যায়।
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য

বিভিন্ন প্রকারের পানীয়, দই, জুস, ফল, খেজুর ও কেক ইত্যাদি দিয়ে ইফতারের প্যাকেট বানিয়ে ধনীরা পথে-ঘাটে মসজিদে বিতরণ করেন। এ ছাড়া পথে পথে, বিভিন্ন অলিগলিতে পেতে দেওয়া হয় টেবিল। ওই সব টেবিলে এলাকার বাচ্চারা এরাবিয়ান স্পেশাল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, মান্তু ও বালিলা (চটপটির মতো) নিয়ে বসে থাকে রোজাদারদের আপ্যায়নের জন্য।

রমজানে প্রায় ঘরেই এ্যারাবিয়ান স্পেশাল সুরবা (স্যুপ) রান্না করা হয়। ওটস ও তাজা খাসির গোস্ত দিয়ে খুব ঘন করে রান্না হয়। এটা সারাদিন না খেয়ে থাকার ঘাটতি পূরণ করে খুব সহজে। রমজানে সুরবা হলো- আরবদের মূল খাবার। আমাদের দেশে যেমন বুটমুড়ি। সুরবা ছাড়া আরবদের ইফতার অনেকটাই অসম্পূর্ণ থাকে।

মাগরিবের এক ঘন্টা আগে থেকেই শুরু হয় বাসায় বাসায় ইফতারি দেওয়া। প্রতিবেশীর ঘরে পাঠানো ইফতারের তালিকায় থাকে সুরবা, গাহওয়া, খেজুর, সমুচা, জেলি, ক্যারোমিল ও পাস্তা ইত্যাদি। অবস্থাটা এমন কেউ যদি ঘরে ইফতার নাও বানায়, তাহলেও তার দস্তরখানা ভরে যায় নানান পদের খাবারে।

আরবরা কখনও একা ইফতার বা সেহেরি করেন না। এখানকার বয়স্ক নারীরা রমজান আসার আগে পাড়ার দু’তিন জনকে বলে রাখেন একসঙ্গে ইফতার বানানোর জন্য। রমজানে তারা একসঙ্গে ইফতার বানায় এবং আশেপাশে ১০/১৫ ঘর, দোকানপাট যা আছে সবখানে ইফতার পাঠান। আজানের আগে আগে ইফতার নিয়ে ছোট বাচ্চাদের এ বাড়ি-ও বাড়ি ছুটোছুটি করার দৃশ্য বড়ই চক্ষুশীতলকারী। বিশ্বের আর কোনো দেশে এমন দৃশ্য দেখা যায় কিনা জানি না।

মদিনায় ইফতারের প্রধান খাবার হচ্ছে- সুরবা, সমুচা ও পাস্তা। প্রধান পানীয় হচ্ছে ভিমটু (রূহআফজা) ও ট্যাং। আর ইফতার থেকে সেহেরি পর্যন্ত কিছুক্ষণ পরপর খাওয়া হয় গাহওয়া ও খেজুর। গাহওয়া হচ্ছে- খুবই তিতা কিন্তু খুবই উপকারী একটা কফি।
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য

মাগরিবের আজানের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কিছু খাবার খেয়ে নামাজ আদায় করেন। এরপর শুরু হয় খাবারের মূলপর্ব। এই হলো- ঘর-বাড়ির ইফতার। এবার মসজিদের ইফতার আয়োজনের কথা বলা যাক। মসজিদে নববীতে ইফতারে অন্য রকম আয়োজন করা হয়। মসজিদের ভেতরে এক রকম আর বাইরে আরেক রকম।

মসজিদের ভেতরে প্রতি কাতারে লম্বা দস্তরখানা বিছানো হয়। প্রতিজনকে এক কাপ দই, একবাটি খেজুর, বাদাম, জমজম পানি, রুটি, গাহওয়া ও একটা বিশেষ এক প্রকারের মশলা দেওয়া হয়। যার আরবি নাম দুজ্ঞা। অনেকটা আমাদের দেশের চটপটির মশলার মতো।

আর মসজিদের বাইরের আয়োজন তো বিশাল কারবার। সেখানে থাকে কাবসা, বিরিয়ানি, চিকেনফ্রাই, পরোটা, বিভিন্ন প্রকারের ফল, খেজুর ও জমজম। এক কথায় কোনো খাবারের অভাব নেই। লম্বা লম্বা দস্তরখানা বিছানো হয়। নামকরা রেস্টুরেন্টগুলো থেকে গাড়ি ভর্তি খাবার আসে। এসব খাবার দস্তরখানায় সাজিয়ে মানুষদের জোর করে এনে বসায়। আর হাসিমুখে বলে, আজ আমাদের সঙ্গে ইফতার করুন।

যে খাবারটা অর্ডার করতে ১ ঘন্টা সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকবেন বছরের অন্য মাসে। ঠিক ওই খাবারটা খাওয়ানোর জন্য আপনাকে জোর করা হবে রমজান মাসে।

ইকামত হওয়ামাত্র পুরো মাঠ পরিষ্কার হয়ে যায়। আজান থেকে ইকামত- এটুকু সময় থাকে খাবারের। মানুষজন নামাজে দাঁড়াতে দাঁড়াতে ক্লিনাররা দস্তরখানা পরিষ্কার করে দিয়ে যান। এই হলো মসজিদে নববীর ইফতার আয়োজন।

মসজিদে নববীর ইফতারের বিশাল আয়োজনের মতো না হলেও মদিনার অন্য মসজিদগুলোর ইফতার আয়োজনও একেবারে ছোট নয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষ ইফতারের আয়োজন করেন। মসজিদের বাইরে বিরাট ডেকচি খাসি দিয়ে রান্না করা এরাবিয়ান বিরিয়ানি, রোজ বোখারি ও কাবসা বিতরণ করা হয়। মসজিদের ভেতরে ও বাইরে ইফতারের জন্য দস্তরখান বিছানো হয়। অনেকে পেটপুরে খেয়ে বাসায়ও খাবার নিয়ে যান।

মদিনায় যারাই ইফতারের আয়োজন করেন না কেন, পথে-ঘাটে থাকা মানুষদের কথা ভুলেন না। তাই ছোট ছোট প্যাকেট সাজান ইফতারের। তাতে দই, রুটি, খেজুর ও জুস থাকে। কোনো প্যাকেটে থাকে বিরিয়ানি। সিগন্যালে গাড়ি থামলে যাত্রীদের হাতে হাতে তুলে দেওয়া হয় সেই প্যাকেট। ঘরে-বাইরে কোনো একটা মানুষও যেনে অনাহারে না থাকেন- এটা সবাই চিন্তা করেন।
মসজিদে নববীতে ইফতারের দৃশ্য

ইফতার শেষে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন তারাবির নামাজে অংশ নিতে। ইফতারের পর পরই মসজিদে নববীর ভেতর কানায় পূর্ণ হয়ে মাঠও ভরে যায়। মসজিদে নববী ছাড়া আরও বেশ কিছু বড় মসজিদে তারাবির নামাজ হয়। শেষ দশ দিন মসজিদগুলো উপচেপড়ে মুসল্লি দ্বারা। তখন রাস্তাঘাটে কার্পেট বিছিয়ে নামাজের ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় সব মসজিদেই মহিলাদের জন্য আলাদা জায়গা থাকে।

মদিনায় খুব ধীরস্থিরভাবে তারাবির নামাজ হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ২০ রাকাত নামাজ পড়তে ২ ঘন্টার বেশি সময় লাগে। তারাবি শেষে ক্লান্ত মহিলারা বাসায় ফেরেন, পুরুষরা চলে যান কর্মস্থলে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খেলাধুলায় মেতে উঠেন রাস্তায়। এভাবে চলে সেহেরি পর্যন্ত।

মদিনায় ইফতারের যেমন আয়োজন হয়, সেহেরির সময়েও তেমন আয়োজন হয়। সেহেরিও আদান-প্রদান হয় ঘরে ঘরে। সেহেরিতে কাবসা, রোজ বুখারি থাকে। মসজিদের খাবার দেওয়া হয়। ইতেকাফকারী থেকে শুরু করে, ওমরা করতে যাওয়া ভিনদেশি ও স্থানীয় সবাই যেখানেই থাকেন না কেন, খাবার তার জন্য আশেপাশেই থাকে।

সেহেরি রান্না হয় ইফতারের সময়। তাই তারাবির পর নারীরা বেশ লম্বা সময় পান। তখন তারা কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকারসহ বিভিন্ন নফল ইবাদতে মশগুল থাকেন। ফজরের পর এলাকার কোরআন শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে সবাই এসে জমা হন। সেখানে উস্তাদের সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে তেলাওয়াত করেন। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন ঘন্টা সময় নিয়ে দেড় পারা করে তেলাওয়াত করা হয়। এরপর সবাই যার যার ঘরে ফিরে ঘুম দেন। ঘুম থেকে উঠে আবার কোরআন তেলাওয়াত করেন। আসরের আগ পর্যন্ত কেউ ঘর থেকে নামাজ ছাড়া বের হন না। কারও সঙ্গে কথা বলেন, কোনো কাজও করেন না। আসরের পরেই শুরু হয় ইফতারের আয়োজন।

রমজানের শেষ দশ দিনের চিত্র আরও ভিন্ন। তখন নারীরা তারাবি পড়ে আর ঘরে ফেরেন না। তারা একসঙ্গে তাহাজ্জুদ শেষে ঘরে ফেরেন।

ঈদের ২-৩ দিন আগে ধনীরা দরিদ্র পরিবারের বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাইকেই ঈদের নতুন কাপড় উপহার দেন। এই হলো নবীর শহর মদিনার রমজানচিত্র।

   

হজের সময় সৌদিতে তাপদাহের আশঙ্কা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজের আনুষ্ঠাকিতায় হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

হজের আনুষ্ঠাকিতায় হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হজের সময় সৌদি আরবের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন সৌদি ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজির প্রধান আয়মান গোলাম।

আসন্ন হজে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য সতর্ক করে প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আয়মান গোলাম বলেছেন যে, এ বছর হজের মৌসুম চলবে জুনের মাঝামাঝিতে। হজের মৌসুম সৌদি আরবে বছরের সবচেয়ে গরম সময়ের সঙ্গে মিলে গেছে।

বছরের এই সময়ে সাধারণত সৌদি আরবে তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতা দুটোই অনেক বেশি থাকে। ফলে হজে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক থাকতে অবহিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, হজ করতে আসা মুসল্লিদের ওপর তীব্র গরমের প্রভাব কমাতে তাদের বাসস্থানকে পর্যাপ্ত ঠাণ্ডা রাখা হবে হজ আয়োজনকারীদের অন্যতম অগ্রাধিকার। বিশেষ করে মিনা এবং আরাফাতের ময়দানে তাঁবুতে অবস্থান এবং হজের পাঁচতিন চলাচলে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

রোগীদের হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে সৌদির নির্দেশনা
যারা দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভুগছেন তাদের হজে যাওয়ার সময় চিকিৎসার নথিপত্র সঙ্গে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। রোগীরা হজে গিয়েও যেন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান তা নিশ্চিত করতেই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয় এমন কোনো রোগে যদি আপনি ভুগে থাকেন এবং বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে চিকিৎসার নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে ভুলবেন না। যেন সৌদিতে আসার ও যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান।

এ ছাড়া বিদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে আসার আগেই ‘নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস’ ভ্যাকসিন নিতে হবে এবং নিজ দেশের দ্বারা ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টির প্রমাণপত্র নিতে হবে।

বিদেশি হজযাত্রীদের পোলিও, কোভিড-১৯ এবং ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন নেওয়া থাকতে হবে। এতে করে সব হজযাত্রীর স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া সৌদিতে বসবাসরত যারা হজ করতে চান তাদের হজ সংক্রান্ত ভ্যাকসিনগুলো গ্রহণ করতে হবে।

এই ভ্যাকসিন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ হজযাত্রীদের পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের জন্য যেতে মন্ত্রণালয়ের সেহাতি অ্যাপে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে।

;

হজযাত্রী কমেছে ৩৭ হাজারের বেশি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন হাজিরা, ছবি: নূর এ আলম, বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন হাজিরা, ছবি: নূর এ আলম, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজের খরচ বাড়ায় গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় ৩৮ হাজার কমেছে হজযাত্রীর সংখ্যা। করোনা পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন বাংলাদেশি হজপালনে যান। যদিও বাংলাদেশের জন্য হজরে কোটা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের। গত বছর হজ কোটার বিপরীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কম ছিল নিবন্ধন সংখ্যা। যদিও সরকারি-বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার প্রাক-নিবন্ধনের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।

কিন্তু হজ প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধির দরুণ কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও এবার নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। অবশেষ ৮৩ হাজার ২০৯ জন চূড়ান্ত নিবন্ধন করেন। তন্মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৩১৪ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন হজপালন করবেন। আর ব্যবস্থাপনাসহ এবার হজে যাচ্ছেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এবার সারাদেশে হজযাত্রীর সংখ্যা কমেছে ৩৭ হাজার ৭৬৭ জন।

যদিও এখন পর্যন্ত সরকারি মাধ্যমে ২ হাজার ৭৭১ জন ও বেসরকারি মাধ্যমে ৭৮ হাজার ২৭৩ জন যাত্রী হজের জন্য প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন করে রেখেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতবারের তুলনায় এবার হজের মূল খরচ বেড়েছে। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজে যাওয়ার আগ্রহ কমেছে মানুষদের মধ্যে। এ কারণে অন্যবারের তুলনায় কমেছে হজযাত্রীর সংখ্যা।

আরও পড়ুন : বদলি হজ কখন করাবেন

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশনের (হাব) কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, হজের ব্যয় এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হজে যাওয়ার মানুষের সংখ্যা কমেছে।

বিষয়টি নিয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) নেতারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, হজ কোটা পূরণ না হওয়ার প্রভাব তাদের ব্যবসায় পড়বে। কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় অনেক ট্রাভেল এজেন্সি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চলতি বছর একজন বাংলাদেশিকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে গড়ে প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকা খরচ হবে, যা অনেক আগ্রহীকে হজ পালনে নিরুৎসাহিত করেছে। বিমানভাড়া, সৌদি আরবে বাসাভাড়া, মক্কা ও মদিনায় যাতায়াত ব্যয়সহ মোয়াাল্লিম ফি অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে মূল হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।

হাব নেতাদের মতে, আগে মোয়াল্লিমের জন্য নির্ধারিত ফি ছিল এক হাজার থেকে ১২ শ রিয়াল, বর্তমানে তা করা হয়েছে পাঁচ হাজার রিয়াল, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিমানভাড়া করা হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া সৌদি সরকারের শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট আরোপ অন্যতম।

তাদের মতে, হজের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের করার কিছু নেই। তবে বিমানভাড়া নির্ধারণ বা ভাড়া কম রাখার বিষয়টি সরকার হস্তক্ষেপ করে হজের খরচ কমানোর ব্যবস্থা করতে পারত।

২০০৯ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৬২৮ জন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে হয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২২ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা কমে দাড়ায় ৬০ হাজার ১৪৬ জনে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন।

;

বদলি হজ কখন করাবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যস্ততার কারণে কেউ হজে যেতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো যাবে না। কারণ এটি শরিয়ত নির্দেশিত অপারগতা নয়। বদলি হজ কেবল শরিয়তের দৃষ্টিতে মক্কায় যেতে অপারগদের জন্য প্রযোজ্য। বদলি হজের বিধান হলো-

হজ ফরজ হওয়ার পর হজ করা হয়নি, এখন শারীরিকভাবে মক্কায় যেতে অক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য অন্য কাউকে পাঠিয়ে হজ করা ফরজ। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

বার্ধক্য বা অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম হতে হবে। -মানাসিক লি-মোল্লা আলি কারি

অসিয়ত না করলেও মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা চাইলে তার জন্য বদলি হজ করাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো- ওয়ারিশদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন লাগবে এবং ওয়ারিশদের মধ্যে কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকলে তার ভাগের সম্পদ থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না। -আদ দুররুল মুখতার

যার পক্ষ থেকে হজ করা হবে, তাকেই খরচ বহন করতে হবে। অসিয়ত করে গেলে প্রথমে তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায় করতে হবে। এরপর অসিয়তের বিধান অনুযায়ী বাকি সম্পদ তিন ভাগ করতে হবে। এর মধ্যে এক ভাগ থেকে অসিয়তের অংশ নিতে হবে। হজের অসিয়ত করে গেলে সেই খরচও এই অংশ থেকে নিতে হবে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা

আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের সেবায় সৌদি ঐতিহ্য

বদলি হজের বিনিময়ে মজুরি নেওয়া নাজায়েজ। কারণ ইবাদতের বিনিময়ে কোনো মজুরি নেওয়া যায় না। কেউ দিলে এবং নিলে দুজনেই গোনাহগার হবেন। হজের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের বাইরে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। -আল-বাহরুল আমিক

টাকা-পয়সার হিসাবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য হজে পাঠানো ব্যক্তি যদি বদলি হজকারীকে বলেন, আপনাকে পুরো টাকা হাদিয়া হিসেবে দিলাম, তাহলে এই টাকা দিয়ে বদলি হজ আদায় হবে না। কারণ হাদিয়া দেওয়ার কারণে বদলি হজকারী ওই টাকার মালিক হয়ে যান। -যুবদাতুল মানাসিক

হজ করেছেন এমন নেককার ব্যক্তিকে বদলি হজের জন্য পাঠানো উত্তম। হজ করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো বৈধ। তবে হজ ফরজই হয়নি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহে তানজিহি। আর হজ ফরজ হলেও আদায় করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহ তাহরিমি তথা নাজায়েজ। -সুনানে আবু দাউদ

;

হজযাত্রীদের সেবায় সৌদি ঐতিহ্য



রাহাফ জামবি
অতীতে হজযাত্রীরা দীর্ঘসময় নিয়ে জাহাজে করে আসতেন জেদ্দায়, ছবি: সংগৃহীত

অতীতে হজযাত্রীরা দীর্ঘসময় নিয়ে জাহাজে করে আসতেন জেদ্দায়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষাটের দশকে বেশিরভাগ মানুষ পবিত্র হজপালন করতে আসতেন জলপথে অর্থাৎ জাহাজে। কোনো হজযাত্রীর জেদ্দাবন্দরে পৌঁছাতে চার-পাঁচ মাস সময় লেগে যেত। জেদ্দায় আসার পরে চড়তে হতো মক্কার বাসে। এ সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের যাত্রার সঙ্গী হতেন একজন মুতাওয়িফ।

মুতাওয়িফ হলেন একজন গাইড, হজযাত্রীদের সেবা প্রদানকারী। তিনি মক্কা-মদিনায় হজযাত্রীদের নানাভাবে, নানাক্ষেত্রে সহায়তা করেন এবং তাদের যত্ন নেন, আবাসান ও খাবারের ব্যবস্থা করেন। ঐতিহ্যগতভাবে একজন মুতাওয়িফ পারিবারিকভাবে দায়িত্বটি পালন করতেন এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এভাবেই রীতিটি হস্তান্তরিত হতো। একসময় এই অতীত রীতি ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।

রিয়াদের বাসিন্দা হায়াত ইদ একজন সাবেক মুতাওয়িফ। তিনি অতীতের কথা স্মরণ করে বলেন, এ সময়টাতে তিনি তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরে, বাড়িতে ধূপ জ্বালিয়ে দূর থেকে আসা হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকতেন।

ইদের দাদা একসময় হজযাত্রীদের আবাসনের ব্যবস্থা করে দিতেন এবং সেগুলো নিজেই পরিষ্কার করতেন। তিনি হজযাত্রীদের সহায়তা দেওয়ার জন্য সুপারভাইজার এবং অনুবাদক নিয়োগ করতেন। পরে এ দায়িত্ব বর্তায় তার ছেলে ইদের বাবার হাতে।

হায়াত ইদের বাবা জামিল আবদুর রহমান ইদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হজযাত্রীদের ‘শায়খ’ (শায়খ একটি সম্মানসূচক পদবি। এটি সাধারণত ধর্মীয় শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো। তবে সৌদি আরবে কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞদের পদবি হিসেবেও শায়খ ব্যবহৃত হয়।) ছিলেন বলে জানান তিনি। জনসাধারণের মাঝে মুতাওয়িফদের শায়খ হিসেবেই পরিচিতি ছিল।

ইদ পরিবার বংশ পরম্পরায় হাজিদের সেবা করে আসছেন, ছবি: সংগৃহীত

হায়াত ইদ বলেন, ‘আমার দাদার পাশাপাশি দাদীও মুতাওয়িফ ছিলেন। আমার দাদা ছিলেন ‘জাভার শায়খ’ অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়া থেকে আগত হজযাত্রীদের সেবা করতেন তিনি। আমার দাদা-দাদি মারা যাওয়ার পর আমার বাবা মুতাওয়িফের পদ গ্রহণ করেন।’

যাট ও সত্তরের দশকের সেই দিনগুলোর কথা মনে করে ৫০ বছর বয়সী ইদ বলেন, হজযাত্রীরা তার পরিবারকে চিঠি পাঠাতেন যেন তাদের আবাসনের সুযোগ হয়। হজযাত্রীদের জন্য ঈদের সময় বাড়তি খাবারেরও প্রস্তুতি নিত তার পরিবার।

শায়খরা হজযাত্রীদের হজের আচার-অনুষ্ঠান এবং তাদের কী করা উচিত সেসব বুঝিয়ে দিতেন। তাদেরকে মক্কা এবং অন্যান্য স্থানে নিয়ে যাওয়া এবং সঙ্গে করে বাড়ি ফিরে আনার দায়িত্ব ছিল তাদের।

এ সময় তার ভাই আদেল ইদ বলেন, মুতাওয়িফের ভূমিকা অতীতে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান ছিল কিন্তু এখন এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকায় পরিণত হয়েছে।

হজযাত্রীদের খাবারের প্রস্তুতি, ছবি: সংগৃহীত

প্রত্যেক মুতাওয়িফকে তাদের সামর্থ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্টসংখ্যক হজযাত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হত। কেউ মাত্র ১০০ জনের দায়িত্ব নিত, আবার অনেকে ১ হাজার জনেরও দায়িত্ব নিতে পারত। তবে তাদের অবশ্যই হজযাত্রীদের ভাষা বোঝার জন্য বা তাদের সঙ্গে কথা বলতে দোভাষী নিয়োগ দিতে হত।

তিনি বলেন, প্রত্যেক মুতাওয়িফ একাই হজযাত্রীদের সেবা করতে পারতেন। তারা নির্দিষ্ট এলাকার হজযাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে সেবা প্রদানের জন্য সেসব দেশে ভ্রমণ করতেন এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়গুলো শিখে আসতেন। তাদের খাদ্যাভ্যাস, রুচি, আচার-আচরণ ও ভাষা রপ্ত করাও ছিল একজন মুতাওয়িফের বিশেষ গুণ।

ইদ পরিবার ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা হজযাত্রীদের সহায়তা করত। তাই তারা মালয় ভাষা এবং তাদের মেহমানদের পছন্দের মশলা এবং খাবার সম্পর্কে শিখেছিলেন, যেন তারা হজযাত্রীদের যতটা সম্ভব মক্কাকে নিজের বাড়ি অনুভব করাতে পারেন।

একইভাবে ৪৬ বছর বয়সী উইজদান আবদুর রাজ্জাক লুলু বুকাস উত্তরাধিকারসূত্রে মুতাওয়িফের পেশা পেয়েছেন। তিনি মালয় ভাষায় সাবলীল ছিলেন। তার বাবা এবং দাদার কাছ থেকে মালয় ভাষা রপ্ত করেন তিনি।

১৯৯৩ সালে হজযাত্রীদের সঙ্গে আবদুর রাজ্জাক লুলু বুকাস, ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, কিছু জাতীয়তা বা দেশের ভাষা অন্যদের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে আমরা সে দেশের অনুবাদক নিয়োগ দিই। উদাহরণস্বরূপ, আমরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হজযাত্রীদের সেবাপ্রদানের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলি। কিন্তু চীনা ভাষা কঠিন, তাই আমরা চীনা যাত্রীদের জন্য একজন দক্ষ অনুবাদক নিয়োগ দিয়েছি।

বুকাস বলেন, কিছু হজযাত্রী ঈদুল আজহায় মুতাওয়িফকে উপহার দেওয়ার জন্য উপহার হিসেবে সোনা বা মুক্তা নিয়ে আসতেন। তার বাবা, আবদুল হান্নান লুলু বুকাস হজযাত্রীদের কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছেন বলে তার নামের সঙ্গে লুলু যোগ করেছেন যার অর্থ মনিমুক্তা।

মুতাওয়িফ থাকা অবস্থায় ঘটা এক অবিস্মরণীয় পরিস্থিতির বর্ণনা করেন বুকাস। তিনি একজন গর্ভবতী নারী হজযাত্রীর কথা বলেন, যিনি হজে এসে বাচ্চা জন্ম দিয়েছিলেন। তিনিই তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং ওই নারী নিরাপদে সন্তান জন্ম দেন।

বুকাস বলেন, তিনি বছরের পর বছর ধরে হজের বহু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তবে বর্তমান সময়ে বেশ ভালোই পরিস্থিতির পরিবর্তন দেখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, অতীতে এবং আধুনিক সময়ের হজের মধ্যে পার্থক্য হলো- যাতায়াত ও আবাসনের অসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগে কয়েক মাস সময় লেগে যেত। যা এখন মাত্র ঘণ্টায় সমাধান হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সৌদি সরকারের প্রশাসনিক সুবিধার বিষয়টির ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

আরব নিউজ থেকে অনুবাদ আসমা ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম

;