তৈমুর লঙ : ঘোড়ার পিঠে বিশ্ববিজয় (পর্ব-৩)



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
তৈমুর লঙ : পৃথিবীকে তটস্থ করে রাখা এক বীর

তৈমুর লঙ : পৃথিবীকে তটস্থ করে রাখা এক বীর

  • Font increase
  • Font Decrease

● পর্ব-১ পড়তে ক্লিক করুন
● পর্ব-২ পড়তে ক্লিক করুন

তৈমুর লঙের আকাশে তখন গনগনে মধ্যদুপুর। মধ্য এশিয়ার সমগ্র অঞ্চল, পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপের বড় অংশ তার অধিকারে। বাকি অংশও ভীত-সন্ত্রস্ত। ভাগ্যক্রমে ভারতে ততদিনেও থাবা পড়েনি তৈমুরের। খুব সম্ভবত এ ব্যাপারে তার মনেই পড়েনি বলাটা বেশি যৌক্তিক হবে। কিন্তু সেই অপেক্ষা স্থায়ী বেশিদিন হলো না। শীঘ্রই তৈমুর তৈরি হলেন ভারত অভিযানে।

ভারত অভিযান

মোটা দাগে, ভারত আর তৈমুর—উভয়ের জন্যই এই অভিযান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের অপরিমেয় ঐশ্বর্যের গল্প তৈমুরের কানে যেতেও বাকি থাকেনি। যদিও তার আগে চেঙ্গিস খানও ভারতে আসার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন; তথাপি মুলতান এবং পঞ্জাব পর্যন্ত অগ্রসর হয়ে আর রুচি ধরে রাখতে পারেননি। তৈমুর বোধহয় সেই না হওয়া অভিযানকে পূর্ণতা দিতেই আগমন করলেন।

তখন ভারতের মসনদে মাহমুদ শাহ তুঘলক। শাসক হিসাবে তাকে অযোগ্য বলা হলেও কম বলা হয়ে যাবে। তুঘলক সালতানাতের তখন নড়বড়ে অবস্থা। মাহমুদ শাহের দুর্বলতার জন্য সাম্রাজ্যের ভেতরে কোন্দল জন্ম নিতে থাকে। বিশেষ করে আমীর-উমরাহদের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। রণনিপুণ তৈমুর লঙ এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন। নাতি পীর মুহম্মদের নেতৃত্বে একদল সৈন্যকে ভারত আক্রমণ করার জন্য পাঠালেন ১৩৯৮ সালে।

পীর মুহম্মদ পাঞ্জাবে প্রবেশ করলেন সিন্ধু পার হয়ে। অবরোধ করলেন মুলতান। ছয় মাস অবরোধের পর পরাজিত হন মুলতানের শাসনকর্তা সারাঙ খান। তার আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে তৈমুরের অধিকারে আসে মুলতান। আর সেই সাথে অধিকারে আসে ব্যাপক ধন সম্পত্তি। কতিপয় সেনানায়কের বিরোধিতা সত্ত্বেও তৈমুর নিজে ভারত আক্রমণ করতে মনস্থ হলেন।

তুঘলক সালতানাত তখন অন্তঃকলহে জর্জরিত


১৩৯৮ সালের ডিসেম্বর মাস। প্রায় ৯০ হাজার সৈন্য নিয়ে দিল্লির উপকণ্ঠে পৌঁছালেন তৈমুর লঙ। মাহমুদ শাহ এবং তার সেনাপতি মাল্লু খান ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে প্রতিরোধে নামেন। রক্তাক্ত যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলো মাহমুদ শাহ। তৈমুর দিল্লিতে প্রবেশ করলে জনগণের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া হলো। প্রচুর ধন সম্পদ নেবার মানসিকতায় ক্ষমা করলেন তিনি। কিন্তু শীঘ্রই প্রকাশ পেয়ে গেল তার সৈন্যদের লুটতরাজ। যে যেভাবে পারল জনসাধারণের বাড়ি ঘর লুট করতে লাগল। আস্তে আস্তে জনগণের একাংশ ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। আক্রমণ করে বসে তৈমুরের সৈন্যদের ওপর।

ভারতে তৈমুরের আগমন ছিল ঝড়ের মতো তাণ্ডব আর উন্মত্ততায় পূর্ণ


এই অপরিণামদর্শী কাজের ফলাফল হলো ভয়াবহ। ক্রোধে উন্মত্ত তৈমুর প্রতিশোধের জন্য নির্বিচারে হত্যা ও অগ্নিসংযোগের আদেশ দিলেন। শুরু হলো ব্যাপক হত্যাকাণ্ড। পঁচিশ দিন পর্যন্ত চলল লুণ্ঠন ও হত্যাযজ্ঞ। নিহত হলো লক্ষাধিক। দিল্লি পরিণত হলো ধ্বংস্তূপে। প্রভূত ধন সম্পদ নিয়ে তারপরেই নিজের দেশে ফিরলেন তৈমুর। যাবার পথেও বিধ্বস্ত করে গেলেন মিরাট, আগ্রা এবং জম্মু। ভারত ত্যাগের আগে খিজির খানকে লাহোর আর মুলতানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে গেলেন। সুনামির শেষে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে থাকা ভূমির মতো থেতলে থাকল ভারত।

মূলত তৈমুর লঙের আক্রমণের সদূরপ্রসারী ফলাফল হিসাবেই দিল্লিতে তুঘলক বংশের পতন এবং সৈয়দ বংশের উত্থান ঘটে। ভারত ত্যাগ করার আগে এখান থেকে প্রচুর সংখ্যক শিল্পী, স্থপতি এবং কারিগর তৈমুর সাথে করে সমরকন্দ নিয়ে যান; যারা সেখানে শিক্ষা ও সংস্কৃতির নতুন যুগের সূচনা করে। বিখ্যাত ঐতিহাসিক আর সি মজুমদার তার লেখা ‘এন এডভান্স হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’-তে দাবি করেছেন, “যতবার ভারত বৈদেশিক শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যে তৈমুরের আক্রমণই সর্বাপেক্ষা মর্মন্তুদ ঘটনা।”

মামলুকদের সাথে সংঘাত

তৈমুরের বয়স তখন সত্তর পার হয় হয়। এই বয়সে সবাই বিশ্রামে চলে যায় পার্থিব বিষয়াদি থেকে। হয়তো তৈমুরও তাই চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি তা হতে দিল না। মিশর ও সিরিয়ার মামলুক সাম্রাজ্যের সাথে লেগে গেল দ্বন্দ্ব। এই সময়টাতে মামলুকদের মসনদে ছিল মালিক আন নাসির ফারাজ। ফলত, পূর্ব ঐতিহ্য আর গৌরব স্তিমিয়ে পড়তে শুরু করেছে তখন। তৈমুর লঙ সবটা শুনে সমরকন্দ হতে আজারবাইজানের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।

বাগদাদের রাজা তখন সুলতান আহমদ। নির্বিচারে বহু সাধারণ লোককে হত্যার জন্য তার বিরুদ্ধে জনগণ ক্ষেপে ওঠে। বিদ্রোহ অদমনীয় হয়ে উঠলে পালিয়ে কারা কুয়ুনলু বংশের কারা ইউসুফের কাছে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন আহমদ। তৈমুর লঙ আজারবাইজান পার হয়ে প্রথমে সিভার্স দূর্গ দখল করেন। তারপর সিরিয়া যাবার পথে অধিকার করেন বাহাসনা দূর্গ। ১৪০০ সালের নভেম্বরের দিকে তার সৈন্যরা আলেপ্পো অবরোধ করল। শাসনকর্তা দামরুদ শাহ বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করলেও দিনশেষে পরাজিত হলেন তৈমুরের প্রশিক্ষিত সৈন্যের কাছে।

এরপরেই অবরোধ করা হলো দামেশক। মামলুক শাসক আন নাসির ফারাজের কানে পানি গেল তৈমুরের তাণ্ডবের গল্প আর নিজের সম্ভাব্য পরিণাম শুনে। তিনি মিশরীয় সৈন্যসহ এগিয়ে এলেন তৈমুরকে বাধাদানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু পরাজয় নিশ্চিত মনে করে শীঘ্রই মিশর ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সিরিয়া বাহিনীই শেষ পর্যন্ত মুখোমুখি হলো তৈমুরের। আত্মসমর্পণ না করার অপরাধে সিরিয়াবাসীর ওপর চলল নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ; যা সিরিয়াবাসী আগে কখনো দেখেনি। ১৪০১ সালে দামেশক বিজয় সমাপ্ত হলে দখল করেন বাগদাদ। তবে মামলুক শাসকের সাথে বোঝাপড়া শেষ হবার আগেই তাকে ফিরে আসতে হয় অটোম্যান শক্তির মোকাবেলা করার জন্য। কারণ খবর আসে, এশিয়া মাইনরে অটোম্যান সুলতান বায়েজিদ সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে।

অটোম্যান পরাশক্তিকে নাস্তানাবুদ

খুব সম্ভবত তৈমুর লঙের সামরিক ইতিহাসে অটোম্যান অভিযানই সর্বশ্রেষ্ঠ। এশিয়া এবং ইউরোপের অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি অটোম্যানরা যখন ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করছে; সেই সময়ে ঝড়ের মতো এসে তৈমুর তাদের অহঙ্কার ধুলায় মিশিয়ে দিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে দুই শক্তিমানের এমন নাটকীয় লড়াই অন্যরকম অধ্যায়ের সূচনা করে।

প্রথমত দুজন শাসকই ছিলেন উচ্চাভিলাষী। তার ওপর তৈমুরের রাজ্য বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বিস্তৃত হয়ে গিয়েছিল অটোম্যান সাম্রাজ্য অব্দি। তৈমুর চেঙ্গিস খানের উত্তরাধিকারী হিসাবে এশিয়া মাইনরে নিজের আধিপত্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখতেন। অন্যদিকে বায়েজিদ নিজেকে সেলজুক তুর্কিদের উত্তরসূরী হিসাবে প্রভূত্ব স্থাপন করতে চাইলেন নিজের। ফলে চাপা একটা ঈর্ষা কাজ করছিল উভয়ের মধ্যেই। তার ওপরে, বায়েজিদ বাগদাদের বিদ্রোহী সুলতান আহমদ এবং আজারবাইজানের বিদ্রোহী রাজপুত্র কারা ইউসুফকে আশ্রয় দিয়েছিল; যারা ছিল তৈমুরের শত্রু। আর তৈমুর আশ্রয় দিয়েছিলেন আইডিন ও কাস্তেমুনীরের পলাতক যুবরাজ ও আমীরদের; যারা ছিল বায়েজিদের শত্রু।

মসির যুদ্ধ ধীরে ধীরে পরিণত হলো অসির যুদ্ধে


তৈমুর পত্র প্রেরণ করলেন—বায়েজিদ যেন তৈমুরের শত্রু আহমদ ও কারা ইউসুফকে ফিরিয়ে দেয়। বায়েজিদ চিঠির জবাবে কেবল তৈমুরের প্রস্তাব নাকচই করল না; তার শত্রু তাহেরতীনকে ফিরিয়ে দেবার জন্য পত্র দিলেন। ক্ষুব্ধ তৈমুর পরের চিঠিতে বায়েজিদের খ্রিস্টান স্ত্রী ডেসপিনার প্রসঙ্গ এনে বায়েজিদের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনেন। জবাবে বায়েজিদও তৈমুরের হেরেম এবং পত্নী নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। এভাবে উভয়পক্ষের চিঠি চালাচালি আস্তে আস্তে এক ভয়াবহ যুদ্ধে রূপ নেয়। তৈমুর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তুর্কিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবার জন্য। 

সিভার্স দূর্গের পতন এবং পুত্র তুঘ্রীলের মৃত্যু বায়েজিদকে ক্ষিপ্ত করে দেয়। তখন তিনি কনস্টান্টিনেপল অবরোধে ব্যস্ত। সেই অবরোধ প্রত্যাহার করেই তৈমুরের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি শুরু হলো। সকল তুর্কি সৈন্য অংশগ্রহণ করল এতে। সার্বিয়ার সম্রাট স্টিফেনের নেতৃত্বে ২০ হাজার সার্বিয়ান ও বলকান অশ্বারোহী যোগ দিল। হাজির হলো গ্রিক ও ওয়ালিচিয়ার সৈন্যরাও। বায়েজিদের সৈন্য সংখ্যা দাঁড়াল প্রায় দুই লাখ। সেনাপতি তিমুরতাশ এবং দুই পুত্র সুলায়মান এবং মুহম্মদ বাহিনী পরিচালনার ভার নিলেন।

আঙ্গোরা যুদ্ধের ডায়াগ্রাম


১৪০২ সালের ২৮ জুলাই। আঙ্কারার প্রান্তরে দুইপক্ষের মোকাবিলা হলো। ইতিহাসের এই যুদ্ধ আঙ্গোরার যুদ্ধ নামে পরিচিত। তাতার বাহিনীর বিশ্বাসঘাতকতা আর তৈমুরবাহিনীর দ্রুততার কাছে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তুর্কি বাহিনী। প্রতিপক্ষের অগ্নিগোলকের সামনে টিকতে না পেরে অনেক তুর্কিই পলায়ন শুরু করে দিল। এমনকি সুলতানের পুত্র সুলায়মানও পলায়ন করলেন জীবন বাঁচাতে। শত প্রচেষ্টার পরেও নিজের পরাজয় ঠেকাতে পারেননি বায়েজিদ। বন্দী অবস্থায় হতাশ হয়ে ১৪০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সমগ্র এশিয়া মাইনরে তৈমুরের একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো।

এবং তারপর

আবার মামলুক শাসকের পালা। শত্রুর শেষ রাখতে নেই। তুর্কি সুলতান বায়েজিদের পরিণতি ইতোমধ্যে সকলের জানা হয়ে গেছে। তাই অনুরূপ পরিণতি বরণ করার জন্য কেউ আগ্রহী হলেন না। সময় থাকতেই তাই তৈমুরের দরবারে রাজদূত প্রেরণ করলেন বশ্যতা স্বীকার করে। তৈমুরকে কর প্রদান এবং তার নামে খুৎবা প্রদানেও স্বীকার করলেন মামলুক শাসক মালিক আল নাসির। ফলে মামলুকদের এশিয়া মহাদেশের এলাকাও অন্তর্ভুক্ত হলো তৈমুরের রাজ্যের সাথে।

নামমাত্র গোত্রপতির ছেলে থেকে হয়ে উঠলেন ইতিহাসের অন্যতম বিজয়ী


আঙ্গোরার সাফল্য আর মামলুকদের বশ্যতা তৈমুরকে তুলে দিল অনন্য উচ্চতায়। ইংল্যান্ডের রাজা চতুর্থ হেনরি এবং স্পেনের রাজা ষষ্ঠ চার্লস তাকে অভিনন্দন জানালেন। কনস্টান্টিনেপলের শাসক ম্যানুয়েল স্বীকৃত হলেন বার্ষিক কর প্রদানে। তৈমুর এখন ক্লান্ত। বিপুল সম্পদ, সেন্টপল ও পিটারের মূর্তি, ব্রুসার রৌপ্যনির্মিত সিংহদ্বার এবং বাইজান্টাইনের লাইব্রেরি সাথে করে নিয়ে তিন বছর পর সমরকন্দে ফিরে গেলেন বিজয়ীর বেশে।

মৃত্যু

খুব সম্ভবত বিষয়ের নেশা তৈমুরকে পেয়ে বসেছিল। তাই এত অভিযানের পরেও হঠাৎ চীন বিজয়ের অভিপ্রায় জাগ্রত হলো তার। ১৪০৫ সালে দুই লাখ সৈন্য সমেত অভিযানে বের হলেন। সারাটা জীবন ঘোড়ার পিঠে থেকে থেকে মানুষটা সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তারপরেও চীনের দুর্গম পথকে ডিঙিয়ে এগিয়ে যাবার ব্যবস্থা নেওয়া হলো। বরফের ওপর পশমী কাপড় বিছিয়ে তৈরি হলো চলার পথ। অনেক সৈন্য যাত্রাপথে মৃত্যুবরণ করলেন। হার না মানা একরোখা তৈমুর চলতে থাকলেন তবু। অতঃপর ওতবার নামক স্থানে তৈমুর নিজে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। 

এশিয়ার বিশ্ববিজয়ী তৈমুর লঙের সমাধিসৌধ


বয়সের ভার, অমানবিক পরিশ্রম আর অতিরিক্ত মদ্যপান তার শরীরকে ভেঙে ফেলেছিল। নানা রকম চেষ্টা করেও তাই বাঁচানো গেল না দিগ্বিজয়ী তৈমুর লঙকে। ১৪০৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চীন অভিযানের পথেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যু হয় একজন অভিযাত্রীর; যিনি খুব সাধারণ এক পরিবারে জন্ম নিয়ে বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়কে পরিণত হয়েছিলেন।

এইখানেই আমাদের গল্প শেষ টানলে তৈমুরকে কেবল বিজয়ে তৃষ্ণার্ত এক নৃশংস সাম্রাজ্যবাদী বলে মনে হবে। তাই প্রসঙ্গ টানব তার শিল্পবোধ আর শাসনবিত্তান্তের। তৈমুর অধ্যায়ের সবচেয়ে রহস্যময় দিক। কিন্তু সেই কথা পরের পর্বে।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;