ঈদ-উল আযহা দেশে দেশে



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
দেশভেদে ঈদ-উল আযহাকে বরণ করাতে রয়েছে পার্থক্য

দেশভেদে ঈদ-উল আযহাকে বরণ করাতে রয়েছে পার্থক্য

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম জাতি মুসলিম। ৬১০ সালে ইসলামের নবী মুহম্মদ (সা.)-এর নবুয়্যত প্রাপ্তির মধ্যদিয়ে যে আদর্শ জন্মলাভ করে, আজ তা বিস্তৃত পৃথিবীর প্রত্যেকটি কোণে। শুধু আলাদা বিশ্বাসব্যবস্থা না, ইসলাম নিয়ে এসেছিল স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, জীবনবোধ এবং ভাবধারা। আচার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি তাই দিয়েছে উৎসবের ধারণাও। মুসলিম জাতির বৃহত্তম উৎসবের দিন হিসাবে গণ্য করা হয় ঈদ-উল আযহাকে।

কুরবানির ঈদ বা পল্লীবাংলায় বড় ঈদ নামে পরিচিত ঈদ-উল আযহা। পালিত হয় হিজরি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ। মুসলিম জাতির পথিকৃৎ ইবরাহিম (আ.) মহান আল্লাহর কাছে নিজের ইচ্ছাকে সমর্পণ করার মধ্যদিয়ে আদর্শ স্থাপন করেছেন। উদ্ধত হয়েছিলেন নিজের পুত্রকে কুরবানি করতে। মুসলিম জাতি মূলত সেদিনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা হিসাবেই পালন করে এই দিন। গ্রহণ করে নিজেদের মতো করে উৎসাহ আর উদ্দীপনা নিয়ে।

তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঈদ-উল আযহাকে বরণ করাতেও রয়েছে পার্থক্য। কিছুটা স্থানীয় সংস্কৃতির প্রভাব আর কিছুটা সময়ের বিবর্তন। নানান দেশের প্রেক্ষাপটে ঈদ-উল আযহাকে কিভাবে উদযাপন করা হয়, তা নিয়েই আজকের আয়োজন।

ইরান

প্রত্যুষে উঠে নতুন পোশাক পরিধান করে প্রস্তুত হয় ইরানের মানুষ। স্থানীয় মসজিদ কিংবা মাঠে হাজির হয়ে আদায় করে ঈদের নামাজ। ধর্মগ্রন্থ পাঠ এবং আলোচনা চলে দেশব্যাপী। পিতা ইবরাহিমের ঘটনাকে স্মরণ করে কুরবানি করা হয় বিভিন্ন ধরনের পশু। গরিব, পরিবার, বন্ধু এবং আত্মীয়দের সাথে ভাগাভাগি করা হয় খাবার। বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে সুষম বিলি-বণ্টন করা হয়। এই বিলি বা দান মূলত কুরবানির শিক্ষা। শিশু আর আত্মীয়রা পায় উপহার। যাদেরকেই কুরবানি দিতে দেখা যায়, আহবান করা হয় গরিব ও অভাবীদের জন্য এগিয়ে আসতে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565571863250.jpg
◤ ইরানে কুরবানির দৃশ্য◢


খাদ্যদ্রব্যের জন্য ইরানে ঈদ-উল আযহা নোনতা ঈদ বলেও অভিহিত হয়। কুরবানি পশুর গোশত দিয়ে নানান কিসিমের মুখরোচক খাদ্য প্রস্তুত করা হয়। বিশেষভাবে বলতে গেলে বিভিন্ন ধরনের কাবাব এবং হালিম। বাঘালির মতো স্থানীয় খাবারেরও প্রাচুর্য থাকে এই সময়।

আরব আমিরাত

ঈদ-উল আযহায় দশ দিন আগে চাঁদ দেখে দিন নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ উৎসবের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেবার সময় পান সবাই। তার জন্য ঈদের দিনের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সুপার মার্কেটগুলোতে ভিড় লেগে থাকে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে কমপক্ষে তিন দিন সরকারি বন্ধ দেওয়া হয়। সবথেকে গুরুত্ব দেওয়া হয় ঠিক আগের দিন অর্থাৎ আরাফাতের দিন।

হজ্ব না করলেও মুসলমানরা এদিন ইবাদতে অংশগ্রহণ করে। আরাফাতের দিন রোজা রাখার কথা হাদিস থেকে প্রমাণিত বলে এই দিনটা বেশ আড়ম্বরের সাথে পালিত হয়।

ঈদের দিন সবাই মিলিত হয় ঈদগাহে। নামাজের পরে পরস্পর কোলাকুলি ও ঈদ মোবারক জানিয়ে পরস্পরকে অভিবাদন জানায়। এর মধ্যদিয়েই শুরু হয় তিন দিনব্যাপী উৎসব। বিনিময় ঘটে উপহারের। শিশুরা দিনটাতে নতুন কাপড় পরে প্রতিবেশিদের ঈদ বিস্কুট বিলি করে। বাড়িকে সাজানো হয় ঈদের ব্যানারে। দুধ খুরমো এবং শির খুরমো নামে সুস্বাদু খাবার তৈরি হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572011736.jpg
◤ আরব আমিরাতে ঈদের রাত্রি ◢


আগের রাতে মেহেদী পড়ার সংস্কৃতি আরব আমিরাতে বেশ ভালোভাবেই আছে। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন পণ্যে বিশেষ ছাড় এবং অফার দেওয়া হয়। এজন্য অনেকেই সুযোগটাকে হাতছাড়া হতে দেয় না। তাছাড়া পরিবার নিয়ে বিভিন্ন রিসোর্টে ভ্রমণ কিংবা রেস্টুরেন্টে খাবার-দাবারের দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক। 

কানাডা

দিনটাকে উদযাপন করার জন্য কানাডার মুসলমানরা একত্রিত হয়। কানাডার মুসলিমদের সংগঠন The Muslim Association of Canada (MAC) এই দিনকে উৎসবমুখর করে তোলার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়। নানা রকম রাইড, শো কিংবা টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয়। চলে বিভিন্ন রান্নাও। উপস্থিত থাকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গও তাদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572131932.jpg
◤ ঈদ-উল আযহার শুভেচ্ছা জানাতে ট্রুডো ◢


ঈদ-উল আযহা কানাডায় সরকারি বন্ধ হিসাবে স্বীকৃত নয়। তবে কর্মস্থলে মুসলমানদের চাপ দেওয়া হয় না। বিশেষ করে মুসলিম সংগঠনগুলো স্বেচ্ছায় এদিন বন্ধ বা কর্মবিরতি পালন করে। মসজিদ কিংবা ঈদের নামাজের স্থলে দেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। 

ভারত

ভারতীয় উপমহাদেশে ঈদ-উল আযহা পরিচিত বকরি ঈদ নামে। নামটি মূলত বকরি কুরবানির ধারণা থেকেই গৃহীত। বৃষ্টি না হলে এদিনের বিশেষ নামাজ ঈদগাহেই পড়া হয়। সেখান থেকে ফিরে কুরবানি। সাম্প্রতিক সময়ে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উত্থানে মুসলিমরা একটু কোণঠাসা হবার দরুন গরু কুরবানি বিশেষভাব ভীতিকর হয়ে পড়েছে। তাই ঈদের দিন সাধারণত ছাগল বা ভেড়ার প্রাধান্য বেড়ে যাচ্ছে দিনকে দিন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572279972.jpg
◤ ভারতে ঈদের জামাত ◢


যারা কুরবানি করে তারা দরিদ্র এবং আত্মীয়দের দাওয়াত করে একবেলা খাওয়ানোর জন্য। ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা-দর্শনের উদ্দেশ্যে অনেকেই বেড়িয়ে পড়ে। যেহেতু ভারতের মাটি সুদীর্ঘকাল ধরে মুসলিম সাম্রাজ্যের কেন্দ্রভূমি ছিল, তাই তা থেকে নিজেদের পূর্বপুরুষের চিহ্নে খুঁজে পায় নতুন প্রেরণা। 

পাকিস্তান

পাকিস্তানে ঈদ-উল আযহা চার দিনব্যাপী উৎসব হিসাবে পালিত হয়। বেশিরভাগ স্থানীয় দোকান এবং শপিং সেন্টারগুলো বন্ধ হয়ে যায়। নামাজের মধ্যদিয়েই শুরু হয় উৎসবের আমেজ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572397201.jpg
◤ ঈদের দিনে পাকিস্তান ◢


সামর্থ্যবান প্রতিটি পরিবার তাদের সাধ্যমত পশু কুরবানি করে। যারা কুরবানি করতে পারেনি কিংবা যারা অক্ষম, তাদের নিমন্ত্রণ করা হয়। টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে চালু করে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। 

তুরস্ক

মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান কেন্দ্রবিন্দু তুরস্ক। ঈদ সেখানে সবচেয়ে পুরাতন উৎসবের মধ্যে একটা। আনাতোলিয়ার তুর্কি বেলিক এবং পরবর্তীদের অটোম্যান সাম্রাজ্যের উত্থানে তুরস্কে ঈদকে অন্যরকম মর্যাদায় উন্নীত করেছে সবার মধ্যে।

পুরাতন বিশ্বাস মতে, এই দুইদিনের মধ্যে বিয়ে কিংবা নতুন কোনো ব্যবসা শুরু করা ঠিক না। প্রত্যেক বাড়ি থেকে ভোরে ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাওয়া হয়। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে ঈদের বিশেষ নামাজের পর শুরু হয় কুরবানি। কোনো কোনো অঞ্চলে পশুকে মেহেদি এবং কাপড় দিয়ে সাজানো হয়। অন্যান্য অঞ্চলের মতোই কুরবানির গোশত বণ্টন করে আত্মীয় ও অভাবীদের মধ্যে বিলি করা হয়। পশু হিসাবে থাকে সাধারণত মেষ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572544630.jpg
◤ তুরস্কের মাটিতে ঈদের আমেজ ◢


সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্কে কেউ কেউ পশু কুরবানি না করে সমপরিমাণ অর্থ দরিদ্র তহবিল কিংবা মুসলিম উন্নয়ন সংস্থাতে দান করে। কেউ দরিদ্রদের বিশেষ দেখাশোনার ভারও গ্রহণ করে। ছুটির প্রথম দিনটা থাকে মূলত প্রতিবেশি ও আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে যাবার জন্য। বয়স্কদের হাতে চুমু দেওয়া সম্মান জানানোর নামান্তর। বন্ধ থাকে মোটামুটি চার দিন। 

মরক্কো

ঈদ-উল আযহা মরক্কোতে ঈদ-উল কাবির নামে স্বীকৃত। সাধারণত অন্যান্য দেশের মতোই দিনটা শুরু হলেও স্থানীয় সংস্কৃতির আমেজ দেখা যায়। ঈদের নামাজের পর পশু কুরবানিকে গণ্য করা হয় আল্লাহর উদ্দেশ্যে ত্যাগ। পশু গরু, ছাগল কিংবা ভেড়া থাকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565572690748.jpg
◤ মরক্কোতে ঈদ পালিত হয় উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে ◢


মরক্কো একসময় মুসলিম সাম্রাজ্যের অন্যতম বিচরণভূমি থাকায় ইসলামী প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে। ঈদের দিন তারা স্থানীয় মসজিদ ও স্থাপত্য পর্যবেক্ষণে সময় দিতে পছন্দ করে। তাছাড়া কুরবানির পশু এবং তাজিনের মতো স্থানীয় খাবার আত্মীয় ও দরিদ্রদের সাথে ভাগাভাগি করা হয়। 

মিশর

“ক্বুল সানা ওয়া ইনতা তায়েব” বলে মিশরীয়রা একে অপরকে অভিনন্দন জানায় পবিত্র ঈদ-উল আযহায়। ঈদকে ঘিরে আয়োজন করা হয় হরেক কিসিমের খাবারের। প্রতিবেশি এবং আত্মীয়দের মধ্যে দরিদ্রদের সাথে ভাগ করা হয় ঈদের আনন্দ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573155325.jpg
◤ মিশর ঈদ উদযাপনে পিছিয়ে নেই ◢


শহরব্যাপী অভাবীরা দিনটার জন্য অপেক্ষায় থাকে। ধনী কিংবা মুসলিম সংস্থাগুলো থেকে যেন পর্যাপ্ত সাহায্য সহযোগিতা পায়। 

যুক্তরাজ্য

কয়েকটি ব্রিটিশ শহরে ঈদ-উল আযহা বেশ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে পালিত হয়। কিছু কিছু মসজিদে ইসলাম এবং ইসলামের ইতিহাস নিয়ে লেকচারের আয়োজন করা হয়। সাধারণত হিথ পার্ক ব্রিটিশ মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান বলে বিবেচ্য।

২০১৭ সালে ইউরোপের সবচেয়ে বড় জমায়েত হয়েছে বার্মিংহামে। ১০৬০০০ জন মুসলিম ২৫ জুন একসাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে। জ্যামের কথা মাথায় রেখে জনতাকে সাড়ে সাতটার ভেতরে হাজির হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। যদিও নামাজ শুরুর কথা থাকে সাড়ে আটটার দিকে। তবে আবহাওয়া যদি বিরূপ হয়, তবে নামাজ স্থানীয় মসজিদেই আদায় করা হয়। এই দিক মাথায় রেখে গ্রিন লেন মসজিদে নামাজের সময় দেওয়া হয়েছে সাড়ে আটটা, সাড়ে নয়টা এবং সাড়ে দশটা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573289817.jpg
◤ ইউরোপের মাটিতে বৃহত্তম জমায়েত হয় যুক্তরাজ্যে ◢


গোটা যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মুসলমানদের জীবনযাপনের মান আরো উন্নত করার দিকটা তাদের কাছে প্রাধান্য পায়। তাছাড়া পশু কুরবানি, প্রতিবেশিদের সাথে ভাব বিনিময় এবং বিশেষ স্থানসমূহে ঘুরতে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। 

যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী মুসলিমরা সাধারণত বিক্ষিপ্ত। ঈদ তাদের জন্য একত্রিত হবার সুযোগ করে দেয়। বিশেষ করে শিকাগো এবং ফ্লোরিডাতে ভিড় জমে মধ্যপ্রাচ্য, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং আফ্রিকা থেকে আসা মানুষের। নিজ ঐতিহ্যের পোশাক এবং খাবার দিয়ে তার ঈদকে বৈচিত্র্য দান করে।

২০১৬ সালের ঈদ-উল আযহাতে নিউ ইয়র্কের সরকারি স্কুলগুলি বন্ধ ছিল। টেক্সাসে ঈদের সালাতের আয়োজন হয় জর্জ আর ব্রাউন কনভেনশন সেন্টারে। আয়োজন করেছিল Islamic Society of greater Houston (ISGH)।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573468503.jpg
◤ আমেরিকান মুসলিমদের জন্য ঈদ অন্যমাত্রা নিয়ে আসে ◢


কেউ আবার নিজ দেশে টাকা প্রেরণ করে কুরবানি করার জন্য। কেউবা অভাবীদের সহযোগিতার আশায়। ঈদ-উল আযহা তিন দিন স্থায়ী হয়। 

তিউনিশিয়া

অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর মতো ঈদ-উল আযহা তিউনিশিয়াতে সরকারি ছুটি হিসাবে গণ্য হয়। ঈদের দিন পুরুষেরা সকাল সকাল ঈদগাহের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। নারীরা বাসায় অবস্থান করে প্রস্তুত করেন খাবার-দাবার। 

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573633894.jpg
◤ ঈদ পুরনো সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে তিউনিশিয়ায় ◢


পুরুষেরা ফিরে এলেই কুরবানি পর্ব শুরু। তিনভাগের একভাগ পরিবারের জন্য, একভাগ আত্মীয় এবং একভাগ গরিবদের জন্য রাখা হয়। ঈদের জন্য বিশেষ ধরনের পিঠা ও বিস্কুট তৈরি হয় তিউনিশিয়ায়। তাছাড়া শিশুদের জন্য থাকে মিষ্টি এবং খাবার।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ঈদ-উল আযহা কুরবানির ঈদ বা বকরি ঈদ নামে পরিচিত। ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় দুইভাবেই পালন করা হয় এখানে। প্রায় একমাস আগে থেকে সারা পড়ে যায়। দোকান কিংবা সুপার মার্কেটগুলো জমজমাট হয়ে পড়ে ক্রেতার ভিড়।

কুরবানির পশু ক্রয়ের জন্যও চলে প্রায় পনের দিন আগে থেকেই তোড়জোড়। কেউ কেউ বাইরে থেকে উট আনলেও গরু, ছাগল এবং মহিষই এখানে বেশি মাত্রায় কুরবানি দেওয়া হয়। সপ্তাহব্যাপী চলে টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান। পার্ক এবং দর্শনীয় স্থানগুলোতে থাকে উপচে পড়া ভিড়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/12/1565573823933.jpg
◤ বাংলাদেশের শোলাকিয়াতে ঈদের জামাত ◢


গ্রাম বাংলায় বাহারি ধরনের পিঠা, সেমাই, ফিরনি এবং পায়েশ রান্না হয়। আত্ময় স্বজনদের বাড়ি ঘুরতে যাওয়া কিংবা দাওয়াত করে বাসায় এনে একসাথে উপভোগ করা হয় ঈদের আনন্দ। দরিদ্র ও অভাবীদের পাশে সাধ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসেন সামর্থ্যবানেরা। 

আরো পড়ুন ➥ উপমহাদেশের প্রসিদ্ধ যত ঈদগাহ

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;