ঋতুচক্রে পালাবদল!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিডিয়ায় প্রকৃতির বিরূপ আচরণের খবর আসছে। ঘোরতর বর্ষাতেও বৃষ্টির দেখা নেই। উত্তর জনপদে আষাঢ়েও খটখটে জমি। নদীতে পানি নেই। বৃষ্টিহীন বর্ষায় অতিক্রান্ত হচ্ছে অতীতের স্মৃতিময় জল ছলছল মৌসুম।

আষাঢ়েও পদ্মায় পানি প্রবাহ কম

আবহাওয়া যে বদলে যাচ্ছে, তেমন আঁচ ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। বর্ষায় বৃষ্টি যেমন নেই, তেমনি শীতেরও প্রকৃত আভাস পাওয়া যায় না। একদা ষড়ঋতুর বাংলাদেশে বিভিন্ন ঋতুর বর্ণিল আমেজে উৎসবমুখরতায় প্রকৃতিকে উপভোগ করেছে মানুষ। মানুষের জীবনে বারো মাসে তেরো পার্বণের সঙ্গে ঋতুবৈচিত্র্যের যথেষ্ট যোগ ছিল। কিন্তু সেই বৈচিত্র্য যেন কোথাও ভাটা পড়েছে।

শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্ব জুড়েই বেশ কয়েকটি বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে জোরালো আলোচনা হচ্ছে। কয়েক বছর আগেই সমুদ্রস্রোতের অস্বাভাবিক পরিবর্তনে-সৃষ্ট ‘এল নিনো’র ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ুর বিচিত্র পরিবর্তন সকলকেই ভাবিয়েছে।

বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া

আবহাওয়াবিদরা দেখেছেন অসময়ের প্রবল বৃষ্টি, খরা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, প্রচণ্ড শুষ্কতা, দাবদাহ, শীতের ওঠা-নামা স্বাভাবিক হিসাবের বাইরে চলে যাচ্ছে। পৃথিবীর জলবায়ুর এই বিচিত্র ব্যবহারের কার্য-কারণ খোঁজার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত একটি প্যানেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কয়েক বছর আগে। দীর্ঘ গবেষণার পর সেই প্যানেল একবাক্যে জানিয়েছে, এ পরিবর্তন প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে না। শিল্পবিপ্লব ও অতি যান্ত্রিকীকরণের ফলে উৎপাদন পদ্ধতির পরিবর্তনের ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে। আর এর ফলে নষ্ট হচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রাগত ভারসাম্য। তাই ঘটছে জলবায়ুর পরিবর্তন।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর আবহাওয়া, পরিবেশ ও প্রকৃতি সবসময় একই রকম থাকবে, এমনটি ভাবা উচিত নয়। এ বিশ্ব জগতের কোনো কিছুই স্থির নয়। বরং ধীর লয়ে হলেও পরিবর্তনশীল। আমরা টের পাচ্ছি না বটে, তথাপি আমাদের আবাসস্থলও পরিবর্তনের মাঝ দিয়েই চলছে। এই পরিবর্তন কতক প্রাকৃতিক আর কতক আমাদের ভুলের ফলে সৃষ্ট।

বিজ্ঞানীরা এটাও জানিয়েছেন, আজ থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে পৃথিবী ছিল গ্যাসের পিণ্ড। ক্রমে ক্রমে সূর্যের অন্যতম গ্রহ পৃথিবীতে তৈরি হয়েছে প্রাণের উপযোগী পরিবেশ। এই পরিবেশকে যত দীর্ঘসময় আঘাত-না-করে ধরে রাখা যায় ততদিনই প্রাণের অস্তিত্ব, মানুষের জীবনযাপন, সভ্যতার পথচলা ইত্যাদি জীবনমুখী কার্যক্রম ভারসাম্যপূর্ণভাবে সম্ভবপর হবে। আবহাওয়া থাকবে সুনিয়ন্ত্রিত। জলবায়ু ও পরিবেশ হবে সহনীয়। সামগ্রিক জীবনধারাই উপকারী প্রকৃতির সঙ্গে সুসমন্বিত হয়ে ছন্দোবদ্ধভাবে চলবে।

কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না। প্রকৃতি ও পরিবেশের নানামুখী ক্ষতি করার ফলে বিরূপ আবহাওয়াগত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে মানুষ ও সমাজ। উন্নত ও অনুন্নত, উভয় দেশেই কমবেশি মাত্রায় প্রকৃতি ও পরিবেশ হননের কাজটি হচ্ছে এবং পৃথিবীর সকল দেশের মানুষই সেই ক্ষতিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। রাজনৈতিক সীমারেখা দিয়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। নগরে আগুন লাগলে যেমন আলাদাভাবে দেবালয় রক্ষা করা যায় না, তেমনি বিশেষ কোনো দেশ সে বিপর্যয় থেকে বেঁচে থাকতে পারছে না। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর গোলার্ধের অতি উন্নত দেশগুলোকেও প্রাকৃতিক তাণ্ডবে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। শীতপ্রধান দেশেও বাড়ছে উষ্ণতা।

আবহাওয়া নিয়ে উন্নয়নশীল দেশের চিন্তা অনেক বেশি। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ব-দ্বীপ অঞ্চল, যারা পাহাড় ও সমুদ্রের সন্নিকটবর্তী, তাদের ভাবনার মাত্রাটি আরো গভীর। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পাহাড়ের বরফ গলে কিংবা সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়ে এই তটবর্তী দেশগুলোকে নানাভাবে বিপযস্ত করবে। কিছু কিছু কুপ্রভাব তো এখনই দেখা যাচ্ছে। গ্রীষ্মের দাবদাহ চরম ও প্রলম্বিত হচ্ছে। নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলের বাংলাদেশের গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বর্ষা ঋতুর নির্ধারিত সীমানা মানছে না। বর্ষায় বৃষ্টি না হলেও শরতে-হেমন্তে, এমনকি, নিকট-অতীতে শীতের কয়েকটি দিনেও বৃষ্টিপাতের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। শরতের নির্মল ছোঁয়া আর হেমন্তের মিষ্টি পরশ বলতে গেলে বিলীন। গরম আর বর্ষা দখল করেছে শরৎ আর হেমন্তকে। শীত অস্বাভাবিকত্ব দেখাচ্ছে। বসন্তের পেলবতাও চরম আবহাওয়ার কাছে লীন। বাংলাদেশ এখন ষড়ঋতুর বদলে শীত আর গরম, এই দুই ঋতুর দেশে পরিণত হতে চলেছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/02/1562069002900.jpg

জলবায়ু ও প্রকৃতির বিরূপতায় সৃষ্ট পরিবর্তমান পরিস্থিতি ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে আমাদের জীবনচক্রে। আবহাওয়ার চিরায়ত ধারা মনে হয় হারিয়ে গিয়ে নতুন একটি ঋতুগত কাঠামো আমাদেরকে আচ্ছন্ন করছে। জীবনের নান্দনিক প্রভায় ঋতুর বৈশিষ্ট্যকে উপভোগের দিন যেন অপসৃয়মাণ। প্রতিটি ঋতুতেই লেগেছে অদল-বদলের মাতাল হাওয়া। জীবনে ও সাহিত্যে চিরচেনা ঋতুগত কালগুলোকে আর আদি ও অকৃত্রিমভাবে নিটোল আকারে পাওয়া যাচ্ছে না। এ কথা গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত আর বসন্ত, সকল ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

বর্ষায় যেমন বৃষ্টিহীনতা দেখছি, তেমনি বিগত শীতে দেখতে পাওয়া গেছে অন্যরকম। শীতকে রোমান্টিক কুয়াশাবৃত আমেজে উপভোগের মনে হয়নি। মনে হয়েছিল ইউরোপের নির্মম বাতাসের পদধ্বনিতে সাইবেরিয়ার আবাহন। কবিতায় লেখা শীত বা অন্যান্য ঋতুর চিত্রকল্প মনে হয়, ইতিহাসের অংশ হয়ে জীবনের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণভাবে যাবে!

প্রকৃতি, পরিবেশ, ঋতু নিয়ে রচিত কবিতাগুলোকেও মনে হচ্ছে রূপকথার মতো। জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ছিল, ‘আমরা হেঁটেছি যারা নির্জন খড়ের মাঠে পউষ সন্ধ্যায়’, সেই কবিতার পথ ধরে পৌষের সন্ধ্যায় এখন আর হাঁটা সম্ভব নয়। তীব্র শীতের সন্ধ্যা ও রাতগুলো ঘরের ভেতরের উষ্ণতায় থাকতেই মন চায়। শৈত্যপ্রবাহের ফলে আরো তীব্র শীত আসবে সামনের বছরগুলোতে। গ্রীষ্মে যেমন আসবে উষ্ণতা ও দাবদাহ।

আমরা মনে হয়, প্রকৃতি ও পরিবেশের এক চরম পালাবদলের মধ্যে দিয়ে বিরূপ আবহাওয়া পেরিয়ে সামনের এক বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে চলেছি!

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;