মেঘপাহাড়ের ডাক-১১

চেরাপুঞ্জিতে খাসি আতিথেয়তা



মাহমুদ হাফিজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মধ্যাহ্নভোজ ও চা পানের বিরতির জন্য স্ট্রিমলেট ডেখারের বোন ভিক্টোরিয়া কারশিংতোর বাসার দিকে গাড়ি ছুটে চললো। আমি আর জলি পেছনের সিটে। জলি ফিস ফিস অনুযোগ করলো ‘তোমার খবর আছে, কতবার বলেছি মেঘের আবছা আঁধারে আমার ছবি তুলে দিতে, তুমি কানে তুললে না’।

বললাম- ‘হবে হবে’।

তার সাফ জবাব- ‘কই, এখন তো আকাশে মেঘ বৃষ্টি কিছুই নেই। মেঘ পাবা কোথায়?’

দীর্ঘদিন বাচ্চাদের পড়িয়ে পড়িয়ে মনটি নরম মেঘের মতো হয়ে যাওয়া এই ভদ্রমহিলা মেঘ, বৃষ্টি, ফুল, পাখি, কোলের শিশু দেখলে ছবি তুলতে ব্যগ্র। ‌আমার তা জানা থাকলেও যতোটা মনোযোগ স্ত্রীরা সাধারণত: পেয়ে থাকে, দল বেঁধে ভ্রমণে তা পায় না এবং এই ভ্রমণে সে নিশ্চিতভাবেই বঞ্চিত হচ্ছে সন্দেহ নেই। দর্শনীয় স্থানে নেমে সবাই ছবি, সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। কারও প্রতি কারও বিশেষ মনোযোগ দেয়ার সুযোগ কম। কয়েকবার মেঘবৃষ্টির দেখা পাওয়া গেলেও মনের মতো ছবি তুলতে না পারায় আমাকে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।

ঘটনা মিরাকলের মতোই। সেভেন সিস্টার্স ভিউপয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরুর পরই মেঘবৃষ্টি উধাও। রোদ না উঠলেও চারদিক পরিষ্কার। তবে আমি চিন্তিত না। চেরাপুঞ্জিতে প্রথম এলেও জানি এখানে এই রোদ, এই মেঘ, এই বৃষ্টি। দেখা যাবে আমাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই হয়তো মেঘ বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাবে। সময়ের ফারাক তিন মিনিট হোক আর তিরিশ মিনিট।

মেঘপাহাড়ের ডাকের আরও নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: 'মেঘপাহাড়ের ডাক'

ডেখারের বোনের বাসা চেরাপুঞ্জির ডুকান রোডে। চেরাপুঞ্জির একদম কেন্দ্র বলতে যা বোঝায়, সেখানে। সোহরা-শেলা সড়ক থেকে বাঁয়ে সোহরা-লেইটকিনসো সড়কে ঢুকে দ্বিতীয় গলিটিই ডুকান রোড। গাড়ির ভেতর থেকে স্ট্রিমলেট এর আরেক বোন- আমাদের আজকের সহযাত্রী ‘ডোডো’ নির্দেশনা দিতেই গলির দু’তিনটি বাড়ির পরে সুদৃশ্য একটি বাড়ির সামনে গাড়ি থেমে গেল। ওপরে টিন, নিচে কংক্রিটের দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। সামনে মধ্যবয়স্ক মার্জিত রুচির সুশ্রী এক ভদ্রমহিলা দু’হাত উঁচিয়ে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছে। সবাই নেমে দ্রুত গেট দিয়ে ভেতরে অদৃশ্য হয়ে গেল। আমি ও জলি পেছনের আসন থেকে পরে নামতেই দেখি স্বাগত জানাতে এসেছে মেঘদল। এতক্ষণ বুঝতে পারিনি। প্রধান সড়ক দিয়ে আসার সময়ও চারদিক পরিষ্কার ছিল। আকস্মিক ডুকান রোডে ভিড় করেছে দুনিয়ার সব মেঘদল। চারদিক অন্ধকার। ঠাণ্ডা তুলতুলে মেঘ ও কুয়াশা আমাদের ছুঁয়ে চলে যাচ্ছে ধীরে। কিংবা আমরাই মেঘের ভেতরে ঢুকে পড়েছি। ভাবলাম, ‘বাঁচা গেল’।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/23/1561292847594.jpg

খাসি-গৃহে

 

সহসাই ভেতরে না ঢুকে ফটোসেশন কিংবা পুরোবস্তুর শুটিংয়ে লেগে গেলাম। জলিকে বললাম, গলির মাথায় হেঁটে গিয়ে আমার দিকে আস্তে আস্তে ফিরে আসতে। জলি সেভাবে এলো। আমি বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ক্লিকের পর ক্লিক করে যাচ্ছি। মেঘ ঘন ছিল। দৃশ্যমানতার হেরফেরে অপস্রিয়মাণ মেঘের বহুমাত্রিক ছবি এলো। প্রথম খুব ঝাপসা, তারপর আস্তে আস্তে পরিষ্কার ছবি।

ঘনমেঘের আস্তরণের মধ্যে কিছুক্ষণ দাঁড়ালেই কাপড়চোপড় ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে মেঘ। ঠাণ্ডাও লাগছে বেশ। এই না হলে চেরাপুঞ্জি! ‘আমি আসছি’ বলে তাকে দ্রুত বাড়ির ভেতরে পাঠালাম।

শুটিংয়ে এবার আমার পালা। ভেতরের দিকে আগুয়ান পুত্রধন তুসুকে ডেকে নিলাম। তার প্রযুক্তিজ্ঞান টনটনে। ছবিও তোলে ভাল। আমিও দূরে গলির মুখে গিয়ে আবার ফিরে আসতে লাগলাম। মেঘের ঘনত্ব মাঝে মাঝে কমবেশি হয়। তাই ঘনমেঘে উড়ে আসার আশায় এরকম কয়েকবার করলাম। আমি ঘনমেঘের আবছা আঁধার থেকে হেঁটে ক্রমশ: বের হয়ে আসি ক্যামেরার দৃশ্যমানতায়। তুসু ক্লিক করতে থাকে পটাপট। মনে হচ্ছে, হিন্দু সিনেমার কোন নায়ক গল্পের প্রয়োজনে মেঘের ভেতর থেকে পরিচালকের নির্দেশে ক্যামেরার দিকে এগিয়ে আসছে। টেক ওয়ান, টেক টু, টে থ্রি আওয়াজে চলছে শুটিং।

ডুকান রোডটি এসময় বড় নির্জন। কদাচিৎ দুয়েকটি গাড়ি চলে। বিকেলের দিকে বলে হয়তো এই নির্জনতা। গলির মাথায় বসতি ঘন নয়। রাস্তার নির্জনতা পেয়ে ফটো শুটিং নির্বিঘ্নেই চললো। ছবি দেখে নিজের গোবেচারা চেহারা নিজেই চিনতে পারছি না। ছবি ফেসবুকে পোস্ট হলে একজন কমেন্টবক্সে লিখলেন ‘হিরো নাম্বার ওয়ান’। লাজুক ভঙ্গিতে অস্ফুট ধ্বনি করলাম- যাহ।

গেট পেরিয়ে খোলা বারান্দা। বারান্দার পেছনে ড্রইংরুম। ঢুকে দেখি আধুনিক ও শহুরে পরিবেশ। বেত ও কাঠের ডাবল সোফা সেট। মেঝেতে কাঠস্টাইলের রেক্সিন। দেয়ালগুলো ডিজাইন করা কাঠে মোড়ানো। দেয়ালে বসানো শোকেসের মধ্যে কাঁসাপিতলের আসবাব। খাসি আতিথ্যগ্রহণে এসে শহুরে আধুনিকতা দেখে একরকম হতাশ হতে যাচ্ছি, তখন স্ট্রিমলেট বললেন, এই বাড়ি খাসি ঐতিহ্যের ছোঁয়া রেখেই সাজানো। শো কেসে প্রাচীন খাসিদের ব্যবহার করা কাঁসা পিতলের বাসন, ছাদ বা চাতালের দিকটা শীতলপাটির বুনন, দেয়ালসজ্জিত কাঠের আবরণে। শিলং শহরের খাসি বাড়িগুলোতেও আজকাল এগুলো নেই।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/23/1561292963647.jpg
খাসি পরিবারের সঙ্গে মেয়েদের গ্রুপ ছবি

 

কিছুক্ষণ পর খাবার খাওয়ার জন্য ভেতরে ডাক পড়লো। ছোট্ট করিডোর পেরিয়ে ডাইনিং রুমে গিয়ে দেখি দেয়ালঘেষে চারদিকে চেয়ারপাতা। গৃহকর্তা ডেরিয়াস অটোমেটিক ইলেকট্রিক ওভেনে হাত-পা গরম করছেন। বাইরে থেকে আসায় তার হাত পা ঠাণ্ডা। জানা গেল, এখানে সংবছরই ঠাণ্ডা থাকে। আগুনের শেক দিয়ে হাত পা উষ্ণ রাখা বাসিন্দাদের অভ্যাস। পাশের চেয়ারে ডেরিয়াসের স্ত্রী ভিক্টোরিয়া। দু’জনের আয়েশি ভঙ্গির পাশে বসেছেন আমাদের মেজবান দলনেতা স্ট্রিমলেট ডেখার। আমরা আসন নিতে নিতেই পাশের টেবিলে বসে প্লেটে প্লেটে খাবার পরিবেশন শুরু করেছে ভ্রমণসঙ্গী বাখিয়া মুন। প্লেটে প্লেটে ভাত, ডিমসেদ্ধ, বানানা বল ওরফে কলা ভর্তা, আচার, ডাল।

গত কয়েকদিনে পরিচয় পাওয়া গেছে ভ্রমণসঙ্গী বাখিয়া মুনের। বয়সে অনেকটাই নবীন কলেজ শিক্ষক মুন সংসারী, করিৎকর্মা ও বন্ধু প্রিয়। বাড়ি থেকে নিজ হাতে রান্না করে মধ্যাহ্ন খাবার নিয়ে এসেছে। সঙ্গে প্লেট, চামচ আনতেও ভুল করেনি। তার ধারণা ছিল, ঝর্ণা, পার্কের উন্মুক্ত জায়গায় বনভোজন হতে পারে, তাই সব ব্যবস্থা। গাড়ির বুটে কয়েক ব্যাগে এসব রাখা ছিল। বনের বদলে বাড়িতে খাওয়ার আয়োজন হওয়ায় চালকের সহায়তায় ব্যাগগুলো ভেতরে আনা হয়েছে। ভাবলাম, একে বলে বরাত। পেটে ক্ষুধা আর খাবার দুটিই সঙ্গে করে নিয়ে এতক্ষণ ঘুরে বেরিয়েছি আমরা, ওপরের নির্দেশ আসেনি উদরপূর্তিরও ফুরসত মেলেনি।

ডাইনিং লাগোয়া রান্না ঘরের বেসিনে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। কবি কামরুল হাসান আগে আগে গিয়ে হাত ধুয়ে নোটবুক বের করেছেন। পাশের উনুনে চা বানানোয় নিয়োজিত লাজুক স্বভাবের তরুণীর নাম জিজ্ঞেস করে টুকে নিচ্ছেন। সে পরিষ্কার হিন্দিতে বলছে, মেরা নাম দয়া।

আমি, কবি কামরুল হাসান আর ডেরিয়াস কাছাকাছি চেয়ারে বসেছি। চা পানের সময় স্ট্রিমলেট বললেন, ডেরিয়াস চেরাপুঞ্জির নামকরা টেইলরিং মাস্টার। স্যূট- কমপ্লিট এর স্পেশালিষ্ট। চেরাপুঞ্জিতে স্যূট-কোট বলতেই ডেরিয়াস। পোশাক আর মানুষ সিনোনিমাস হয়ে গেছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/23/1561293618658.jpg

একথা শুনে ভ্রমণদলের কামরুল হাসান নড়েচড়ে বসলেন। ডেরিয়াসের সঙ্গে আগ্রহভরে আলাপ জমালেন। পেশায় এই বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপকের সিগনেচার ড্রেস স্যূট টাই। এখানে এ্যাডেভেঞ্চার ট্যুরিজমে এসেও নিজের ড্রেসকোড থেকে বিচ্যুত হননি। ভারত বা চেরাপুঞ্জিতে এর দামদর, ফেব্রিক ইত্যাদি নিয়ে নানা প্রশ্ন করে ঝালিয়ে নিচ্ছেন।

খাসি, বাঙালি, শিলং, চেরাপুঞ্জি, বৃষ্টি মুখরতা নানা বিষয় নিয়ে অনেকক্ষণ আড্ডা চললো। বিদায়বেলায় গ্রুপ ফটো তোলার পর আবিষ্কৃত হলো ‘দয়া’র চেহারারই আরেক তরুণীর ছবি গ্রুপ ফটোতে। মনে হচ্ছিলো যমজ দু’জন। জিজ্ঞেস করে জানা গেল তার নাম ইভা। দয়া’র ছোট। সেও লেখাপড়া করছে। দুই মেয়ে নিয়ে ডেরিয়াস-ভিক্টোরিয়ার সুখের সংসার।

খাসি আতিথ্যে আমাদের মন উঠলো। চেরাপুঞ্জি গিয়ে দর্শনীয় স্থানকে ব্যাকগ্রাউন্ড করে ছবি তোলে অনেকেই, খাসি আতিথেয়তা ক’জন পায়!

   

বিখ্যাত মিমের ভাইরাল কুকুর কাবোসু আর বেঁচে নেই



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন মানুষ জুড়তে শুরু করলো ইন্টারনেটে নতুন অনেক নতুন উদ্ভাবনার দেখা মিললো। এমন এক ব্যাপার হলো মিম। বর্তমান সময়ে সেন্স অব হিউমারের (রসবোধ) এক অন্যতম মাধ্যম এই মিম। বিশেষত কোনো ছবি ব্যবহার করে তাতে হাস্যরসাত্মক কিছু জুড়ে দিয়ে এইসব মিমগুলো বানানো হয়।

২০১৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনই একটি ছবি ভাইরাল হয়। পরবর্তী সময়ে যা একটি বিখ্যাত ‘মিম ম্যাটেরিয়াল’-এ পরিণত হয়। কমলা-সোনালী এবং সাদা রঙের সম্বনয়ে বাহারি লোমের এই কুকুরটির নাম কাবোসু। কাবোসুর বয়স ১৯ বছর।

দুর্ভাগ্যবশত কুকুরটি আর বেঁচে নেই। ২৪ মে (শুক্রবার) দীর্ঘদিন ধরে রোগাক্রান্ত থাকার পর অবশেষে দেহ ত্যাগ করে কুকুরটি। কুকুরটির মালিক আতসুকো সাতো (৬২) জাপানের চিবা প্রিফেকচারের সাকুরা শহরের একটি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক।শুক্রবার তার প্রকাশিত ব্লগে একটি দুঃখের কবিতা আবৃত্তির পর তিনি এই খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

ভাইরাল কুকুর কাবোসু / ছবি: সংগৃহীত

১৯ বছর বয়সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। ২৬ মে রবিবার কাবোসুর স্মরণে একটি স্মরণ সভার আয়োজনও করা হবে। কুকুরটির মারা যাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলে দুঃখ প্রকাশ করছে।

২০২২ সালে ক্রোানক লিম্ফোমা লিউকুমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। সেই থেকেই কাবোসুর চিকিৎসা চলছিল। তবে দুঃখের বিষয়, সে আর সুস্থ হয়ে ফিরতে পারলো না।

কাবোসুর ত্যাড়া চোখে দৃষ্টির একটি ছবি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। এটি ইন্টারনেটে সবচেয়ে আইকনিক এবং স্বীকৃত ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম। এমনকি ক্রিপ্টো কারেন্সির দুনিয়াতেও তার নাম ছিল।

;

বুদ্ধ পূর্ণিমার তাৎপর্য



অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা। বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এক মহান দিন এটি। এই দিনে গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেন। একই দিনে মহাজ্ঞানী বুদ্ধত্ব এবং বুদ্ধ মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। এই তিথিকে বলা হয় বৈশাখী পূর্ণিমা, যা আজ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক ভেসাক ডে হিসেবে পালন করা হয়। বৈশাখ মাসের এই তিথিতে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল। ত্রি-স্মৃতিবিজড়িত এ তিথির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অত্যন্ত বিশাল।

খ্রিস্টপূর্ব ৬২৩ অব্দে এই দিনে আড়াই হাজার বছর আগে মহামতি গৌতম বুদ্ধ ভারতবর্ষের তৎকালীন কপিলাবস্তু দেবদহ নগরের মধ্যবর্তী লুম্বিনী কাননে মাতা রানী মায়াদেবীর পিতৃগৃহে যাবার পথে শালবৃক্ষের নিচে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৮ অব্দে ৩৫ বছর বয়সে বোধিবৃক্ষমূলে কঠোর সাধনা বলে তিনি বুদ্ধত্ব লাভ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৫৪৩ অব্দে ৮০ বছর বয়সে একই দিনে ৪৫ বছর দুঃখ মুক্তির ধর্ম প্রচার করে কুশীনগরে যুগ্মশাল তরুণমূলে চিরনির্বাসিত হয়ে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন অর্থাৎ তিনি দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। পৃথিবীতে আর জন্মলাভ করবেন না। গৌতম বুদ্ধের পিতার নাম ছিল রাজা শুদ্ধধন ও গৃহী নাম ছিল সিদ্ধার্থ। ২৫২৭ বছর আগে ভারতবর্ষে যখন ধর্মহীনতা মিথ্যা দৃষ্টি সম্পন্ন বিশ্বাস্বে ধর্মে সমাজের শ্রেণি বৈষম্যের চরম দুরবস্থা ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত, প্রাণী হত্যায় চরম তুষ্টি ,তখন শান্তি মৈত্রী অহিংস সাম্য ও মানবতার বার্তা নিয়ে মহামতি বুদ্ধের আবির্ভাব ঘটে।

গৌতম বুদ্ধ অহিংস ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করেছেন। এই জীবজগৎ অনিত্য দুঃখ অনাত্মাময় প্রাণমাত্রই প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। অস্থায়ী বা অনিত্য কার্যতকারণের অধীন। তিনি জীবনের প্রগাঢ় খাটি চার আর্যসত্য আবিষ্কার করলেন। জগতে দুঃখ আছে, দুঃখের অবশ্যই কারণ আছে, দুঃখের নিবৃত্তি আছে, দুঃখ নিবৃত্তির উপায় আছে। দুঃখ নিবৃত্তির উপায় হলো নির্বান লাভ। এই নির্বান লাভের ৮টি মার্গ আছে। যেমন সম্যক বা সঠিক দৃষ্টি , সম্যক সংকল্প, সম্যক বাক্য, সম্যক কর্ম, সম্যক জীবিকা, সম্যক প্রচেষ্টা, সম্যক স্মৃতি, সম্যক সমাধি। এই পথ পরিক্রমায় শীল সমাধি প্রত্তোয় নির্বাণ লাভের একমাত্র উপায়। সব প্রাণী সুখী হোক, পৃথিবীর সবচেয়ে পরম, মহৎ বাণী তিনি প্রচার করেছেন। শুধু মানুষের নয়, সব প্রাণ ও প্রাণীর প্রতি, প্রেম, ভালোবাসা, অহিংসা, ক্ষমা, মৈত্রী, দয়া, সহনশীলতা, সহমোর্মিতা, সহানুভূতি, মমত্ববোধ, প্রীতি, সাম্য, সম্প্রীতির কথা তিনি বলেছেন।

১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ৫৪/১১৫ রেজুলেশন এ দিনটিকে আন্তর্জাতিক ভেসাক ডে হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। সেই থেকে এই দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ “ভেসাক ডে” হিসেবে পালন করে আসছে। বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র এই দিনকে বিভিন্ন নামে পালন করা হয়। বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, নেপালে বুদ্ধ পূর্ণিমা, লাওসে বিশাখ পূজা, ইন্দোনেশিয়া হারি ওয়াইসাক ডে, মালয়শিয়ায় ওয়েসাক ডে, মায়ানমারে ফুল ডে অব কাসন, সিঙ্গাপুরে হারি ভেসাক ডে নামে পালন করে থাকে আবার কেউ বুদ্ধ জয়ন্তী দিবস হিসেবেও পালন করে থাকে।

জাতিসংঘের মহাসচিব এস্তেনিও গুতেরেজ ভেসাক ডে উপলক্ষে বলেছেন, “On the day of Vesak, Let us celebrate Lord Buddha’s wisdom by taking action for others with compassion and solidarity and by renewing our commitment to build a peaceful world.”

ফিলিস্তিনে আজ চরমভাবে মানবতা বিপন্ন হচ্ছে। অশান্তিময় এই পৃথিবীতে বুদ্ধের মৈত্রী, সংহতি, সাম্য, মানবতা ও শান্তির বাণী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আজও প্রাসঙ্গিক এবং খুব প্রয়োজন। বিশ্ব আজ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখোমুখি। পরিবেশ দূষণ, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, জলাবদ্ধতা, বৃক্ষ নিধন, বন উজাড়, জীব বৈচিত্র্য হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন এই সবুজ গ্রহের ইতিহাসে নজিরবিহীন। গৌতম বুদ্ধই প্রথম বৃক্ষকে এক ইন্দ্রিয় বিশিষ্ট জীবরূপে আখ্যায়িত করেছেন। বুদ্ধ ছিলেন বিশুদ্ধ পরিবেশবাদী দার্শনিক। পরিবেশ রক্ষা ও সংরক্ষণে তিনি সব সময় সোচ্চার ছিলেন। তাই বুদ্ধের জন্ম বুদ্ধত্ব লাভ ও মহা পরিনির্বাণ বৃক্ষের পদমূলের বিশুদ্ধ পরিবেশ মন্ডিত পরিবেশে সংগঠিত হয়েছিল।

এই পবিত্র দিনে বৌদ্ধরা বিভিন্ন দেশে দেশে সব প্রাণীর সুখ শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা করেন। অশান্ত পৃথিবীতে পরিবেশ সংরক্ষণে বুদ্ধের বাণী নীতি ও আদর্শ বিশ্ব মানবতার শিক্ষা, দর্শন, চিন্তা চেতনা ,ভাবনা সুন্দর, শান্ত, সাম্যময় পৃথিবী গড়ার বিকল্প নাই। সব প্রাণী সুখী হোক, দুঃখ থেকে মুক্তি লাভ করুক।

অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া
চিকিৎসক, লেখক, সংগঠক ও গবেষক

;

মহামতি সিদ্ধার্থ গৌতম



প্রদীপ কুমার দত্ত
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি।
ধর্মং শরণং গচ্ছামি।

সিদ্ধার্থ গৌতম খৃষ্টপূর্ব ৫৬৪সালে(এই সাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ আছে) কপিলাবস্তুর লুম্বিনীতে (বর্তমানে নেপালের অন্তর্গত) শাক্য রাজা শুদ্ধোধন এর প্রাসাদে তাঁর মহিষী মায়া দেবীর ঔরষে জন্মগ্রহণ করেন। দিনটি ছিল বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথি।

তিনি শৈশব থেকেই ছিলেন ভাবুক প্রকৃতির। রাজকার্য তাঁকে আকর্ষণ করতো না। জীবনের গূঢ় রহস্য নিয়ে তিনি চিন্তা করতেন। তিনি লক্ষ্য করলেন সংসারে কর্মই প্রধান। বাকি সবই অনিত্য। তিনি ভাবতেন জরা, ব্যাধি, মৃত্যু থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে। যৌবনের এক পর্যায়ে প্রাসাদে মাতা, পিতা, স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে রেখে এক রাতে তিনি বেরিয়ে পড়েন পথে। গ্রহণ করলেন শ্রমণের জীবন।

একসময় তিনি গয়ার নিকট উরুবিল্ব (বর্তমানে ভারতের বিহারের বৌদ্ধগয়া) গ্রামে এক বৃক্ষতলে মোক্ষলাভের উপায় ভাবতে জাগতিক সমস্ত আকর্ষণ ত্যাগ করে ধ্যান করতে বসেন। ক্ষুধা, তৃষ্ণা ইত্যাদি বাহ্যজ্ঞান লুপ্ত অবস্থায় এক বৈশাখী পূর্ণিমায় তিনি আলোকপ্রাপ্ত হন। তিনি লাভ করলেন দিব্যজ্ঞান। এই জ্ঞানই হলো অজ্ঞানতা ও অশিক্ষা, লোভ এবং আকাঙ্খা, রোগ ও দুঃখভোগ এবং পুনর্জন্ম থেকে মুক্তি। সেই মুক্তিলাভের উপায় হলো জীবন যাপনে শুদ্ধাচার।

তাঁর আশি বছরের জীবনের বাকি অংশ তিনি কাটালেন তাঁর মোক্ষলাভের সূত্র এবং লোভ, হিংসা-দ্বেষহীন পরোপকারের জীবন ধারণের জন্য শিষ্য এবং শিষ্যদের মাধ্যমে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধ করে। বারানসীর অদূরে সারনাথে প্রথম পাঁচজনকে তিনি শিষ্যত্বে বরণ করেন। এই সংখ্যা ধীরে ধীরে বর্ধিত হতে থাকে এবং প্রচার ছড়িয়ে পড়তে থাকে দিকে দিকে। বৃহৎ এক জনগোষ্ঠীকে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয় তাঁর এই প্রচার।প্রথমে গাঙ্গেয় অববাহিকাতে চলে এই প্রচারাভিযান। পরে তা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

এইভাবে শান্তির অমোঘ বাণী প্রচারে বাকি জীবন কাটিয়ে তিনি যখন বুঝলেন তাঁর ধরাধাম ত্যাগের সময় হয়েছে, তখন তিনি তাঁর প্রচার সাথী শিষ্যদের উদ্দেশ্যে শেষ দেশনা প্রদান করেন। সেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের বলেন যে তিনি তাঁদের পথের দিশা দেখিয়ে গেলেন মাত্র। মানুষ মরণশীল।মানব জীবনে দুঃখ,কষ্ট জরা,ব্যাধি অবশ্যম্ভাবী।তাই জীবদ্দশায় উচিৎ সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে সৃষ্টির সকল জীবের কল্যাণসাধন করা।তাঁদেরকে নিজের আত্মাকে আলোকিত করে নিজেকেই আলোকপ্রাপ্ত হতে হবে।

মল্ল রাজত্বভুক্ত কুশিনগরে তিনি মহাপরিনির্বাণ প্রাপ্ত হন। কি আশ্চর্য! সেই দিনটিও ছিল বৈশাখী পূর্ণিমা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই তিন বিশেষ দিনের সমষ্টিকে ভেসাক ডে হিসাবে পালন করা হয়। ভারত থেকে তিব্বত হয়ে চীন, জাপান, মিয়ানমার, কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর সহ পুরো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বৌদ্ধ ধর্ম একসময় ছড়িয়ে পড়ে। যার বিপুল প্রভাব এখনো বিদ্যমান।

শাক্যমুণি গৌতমবুদ্ধর প্রধানতম শিক্ষা ও প্রার্থনা হলো জগতের সকল প্রাণী সুখী হউক। সিদ্ধার্থ গৌতমের ধর্ম গ্রহণ করে সম্রাট অশোক তা তাঁর রাজত্বের দিকে দিকে ছড়িয়ে দেন। সম্রাট অশোক লুম্বিনীতে তীর্থভ্রমণ করাকালীন একটি স্তম্ভ স্থাপন করেন। সেই স্তম্ভে ব্রাহ্মী লিপিতে শাক্যমুনি বুদ্ধ কথাটি পাওয়া যায়। এর অর্থ করা যায় শাক্যদের মধ্যে তপস্বী ও আলোকপ্রাপ্ত।

মহামতি বুদ্ধের বাণী প্রথম দিকে ছিল শ্রুতি নির্ভর। পরবর্তীতে তা ভিনায়া বা প্রচারকদের (বর্তমানকালের শ্রমন বা ভান্তে) জন্য প্রতিপালনীয় বিধান ও সুত্ত পিতাকা বা বুদ্ধদেবের উপদেশসমূহ তাঁর শিক্ষা হিসাবে লিপিবদ্ধকরণ করা হয়। আরও পরে তাঁর অনুসারীরা অভিধর্ম, জাতক কাহিনী, মহাযান সূত্র ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থ প্রকাশ করেন। তার মধ্যে জাতক কাহিনীতে সিদ্ধার্থ গৌতমের পূর্ববর্তী জন্মসমূহের কথা লিপিবদ্ধ আছে। আলোকপ্রাপ্ত হয়ে পুনর্জন্ম থেকে মহামুক্তির আগে তিনি পূর্ব জন্মসমূহের কথা স্মরণ করতে পেরেছিলেন।বেশিরভাগ বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ আদিকালে পালি ভাষায় লিখিত হয়েছিল।

জ্ঞান অন্বেষণকে বৌদ্ধ ধর্ম সর্বোচ্চ মর্যাদা দেয়। বৌদ্ধ যুগেই পৃথিবীর বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় রূপে পরিচিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। আমরা গর্ব বোধ করতে পারি যে আমাদের মাটির সন্তান অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান বৌদ্ধ ধর্মকে তিব্বতে প্রচারে প্রধানতম ভূমিকা রাখেন।তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্ম রাজধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ও সেখান থেকে চীন,কোরিয়া,জাপান সহ এশিয়ার দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

ইতিহাসের এক পর্যায়ে ভারতবর্ষের বিশাল এলাকায় বৌদ্ধ ধর্মের প্রাবল্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।সম্রাট অশোকের কন্যা সংঘমিত্রা এই ধর্মকে সিংহল দ্বীপে(বর্তমান শ্রীলঙ্কা) প্রসারিত করেন।আজও পৃথিবীতে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা বিভিন্ন ধারায় তাঁদের মহান শান্তির ধর্মকে পালন ও সংরক্ষণ করে যাচ্ছেন। 

লেখক: প্রাবন্ধিক ও পরিব্রাজক

;

বিশ্ব চা দিবস



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চা / ছবি: বিং এআই

চা / ছবি: বিং এআই

  • Font increase
  • Font Decrease

কনকনে শীতে কাপছেন। সোয়েটার-চাদর মুড়ে বসলেও গা ভেতর থেকে কাঁপুনি কমছে না। অথবা কাজ করতে করতে মাথা ঝিমঝিম করছে। অস্বস্তি সহ্যও হচ্ছে না, অথচ এই স্বল্প ব্যথায় ঔষধও তো খাওয়া যায় না! কিংবা বাসায় আসা কোনো মেহমান বা বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বসেছেন। শুধু মুখে বসে থেকে গল্প করতে কতক্ষণই বা ভালো লাগে? এরকম সব পরিস্থিতি সামাল দিতেই রয়েছে- চা।

আজ ২১ মে বিশ্ব চা দিবস। তথ্য অনুযায়ী ২০০৪ সালে সর্বপ্রথম চায়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে একে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা চিন্তা করা হয়। বিশ্ব সামাজিক ফোরাম এই সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারপরের বছর ২০০৫ সালে প্রথমবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে বিশ্ব চা দিবস উদযাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায়েএই দিবস পালন করা হয়। ২০১৫ সালে চা দিবসে উদযাপন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়। ২০১৯ সালে জোতিসংঘ কয়েকটি দেশের সম্মিলিত উপস্থিতিতে ২১ , চা দিবসের আয়োজন করে।   

 চা পাতা তোলা / ছবি: বিং এআই

চায়ের জন্ম হয় ঠিক কবে হয়েছিল তার নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, আজ থেকে ৫ হাজার বছরেরও আগে সৃষ্টি হয় এই পানীয়। এশিয়ারই বৃহত্তর দেশ চীনে এর জন্ম হয়। তৎকালীন সময়ের পাওয়া জিনিসপত্রে চায়ের অস্তিত্বের প্রমান মেলে। ক্যামেলিয়া সিনেনসিস উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন হয় এই পানীয় তাই চীনের নামের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।  সাধারণ পাহাড়ি অঞ্চলে শক্ত পাথুরে মাটিতে জুমচাষে চা উৎপন্ন করা হয়। আমাদের দেশেও বৃহত্তর সিলেটঅঞ্চল এবং চট্টগ্রামের কিছু অংশে চা পাতা চাষকরা হয়।    

কম-বেশি চা খান না- এমন মানুষ হাতে গুনতে পারা যায়। মূলত উদ্ভিজ এই পানীয় জনপ্রিয় তার অনন্য স্বাদ, ঘ্রাণ এবং উপকারের জন্য। কফি অনেকেই পছন্দ করেন। তবে চিকিৎসকরা অনেককে কফির উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। চায়ের ক্ষেত্রে সেই বালাই নেই। তাই চা-কে অন্য সব পানীয়ের মতো শুধু একটি পানীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। বরং একে খাদ্যতালিকার পানির পরে পানীয় হিসেবে এক বিশেষ অংশ হিসেবে মনে করা হয়।  

চাষ করা চা পাতা শুকিয়ে নিয়ে, গরম পানি বা দুধে চিনি ও অনেকক্ষেত্রে মশলা মিশিয়ে শুকনো সেই পাতা দিয়ে বানানো হয় চা। আমাদের দেশ হোক বা বাইরের দেশে, অধিকাংশ মানুষের জীবন ধারার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো এই পানীয়।   

;