চোখের সামনে থেকেও অচেনা মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ও শেষ শহীদের সমাধিসৌধ



খন্দকার আসিফুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

যানবাহনের যানজট আর মানুষের ভিড়ে ব্যস্ত মৌচাক মোড়ের ঠিক মধ্যভাগে চোখে পড়বে সাদা টাইলসের মোড়ানো একটি স্তম্ভ। এই মোড় দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। কিন্তু ৯০ ভাগ মানুষই জানেন না এই স্তম্ভটি আসলে কিসের এবং কেন! স্তম্ভটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ ফারুক ইকবাল এবং শেষ শহীদ তসলিম উদ্দিনের সমাধিস্থল।

দুই শহীদের সমাধিস্থলের তিন পাশ দিয়ে চলাচল করা সাধারণ মানুষেরও বা কি দোষ। খুব কাছে গিয়ে না দেখলে সাধারণ চোখে স্থানটি দেখে বুঝারও উপায় নেই এখানেই শুয়ে আছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম এবং শেষ শহীদ। সমাধিসৌধের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা আবর্জনা আর মোটরসাইকেল পার্কিং দেখে মনে হবে যেন এটি একটি অবহেলিত সাধারণ নির্মাণ।

১৯৭১ সালের ৩ মার্চ, পাকিস্তানের পরাধীনতা থেকে মুক্তি পেতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে ছাত্র-জনতার মিছিল নিয়ে ঢাকার রামপুরায় অবস্থান করছিলেন আবুজর গিফারী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা ফারুক ইকবাল। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে সেখানেই তাকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। শহীদ হন ফারুক ইকবাল। সেসময় মৌচাক মোড়ে সমাহিত করা হয় তাকে।

ফারুক ইকবালের পাশেই সমাহিত করা হয় মুক্তিযুদ্ধের শেষ শহীদ কিশোর তসলিম উদ্দিনকে। সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। যুদ্ধ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ১৭ই ডিসেম্বর ঘাতকদের হাতে নিহত হন।

মুক্তিযুদ্ধের ৩৭ বছর পর ২০০৮ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন শহিদদের সমাধিস্থলে নির্মাণ করেন সমাধিসৌধ। তবে সমাধিসৌধটি দেখভালের দায়িত্ব কাউকে না দেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সেটি পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়।

এই দুই বীর শহিদের স্মৃতি এবং তাদের সমাধিসৌধের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হয় শহীদ ফারুক ইকবালের বড় ভাই এএনএম জুলফিকার হারুন ও শহীদ তসলিম উদ্দিনের ভাই জাহাঙ্গীর হাসান মানিকের সাথে।

শহীদ ফারুকের বড় ভাই জুলফিকার হারুন বার্তা২৪-এর সাথে আলাপকালে ভাইয়ের সে সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ফারুক যেদিন শহীদ হয় পল্টন ময়দানে সেদিন ছাত্রলীগের মিটিংয়ে বঙ্গবন্ধুর আসার কথা ছিল। সেই মিটিং অরগানাইজ করার জন্যই সে নাস্তা না করেই সকাল সকাল বাসা থেকে বের হয়ে যায়। আবুজর গিফারী কলেজের সামনে থেকে ফারুক যখন মিছিল নিয়ে রামপুরার দিকে রওনা হয় তখন আমি সেখানেই ছিলাম। আমি বাসায় চলে আসলাম। একটু পর একজন এসে বলল রামপুরায় একজনকে পাকিস্তানি বাহিনী গুলি করেছে। এই কথা আম্মা শুনে বলে উঠল ‘আল্লাহ জানেন কোন মায়ের বুক জানি খালি হল’। আমি বাসা থেকে বের হয়েই দেখি একটা ছেলে ফারুকের পায়ের জুতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি দেখেই বুঝে ফেললাম ঘটনা কি! এটাই ছিল ফারুককে আমার শেষ দেখা। এভাবেই ভাই ফারুকের শহীদ হওয়ার ঘটনা বলছিলেন হারুন। এবং জানান সেদিন ফারুকের জানাজায় ছাত্রনেতা বীরবিক্রম মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আ স ম আব্দুর রব, নূরে আলম সিদ্দিকী, আব্দুল কুদ্দুস মাখনসহ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে জুলফিকার হারুন বলেন, পরিবার থেকে আমরা কখনও আবেদন করিনি তালিকায় নাম তোলার জন্য। এরশাদ সরকারের আমলে একবার একটা ফরম দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আব্বা আবেদন করতে দেননি। আব্বার একটাই কথা ‘আমার ছেলে শহীদ হইছে, এটাই সম্মানের। এর বিনিময়ে সরকার থেকে আমরা কোনো সুবিধা নেব না। এরপর আর আবেদন করা হয়নি। সরকার থেকেও আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। শুধুমাত্র ৩ মার্চ এলেই সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে, একটু আলোচনা সভা করে সবাই আবার ভুলে যায়। তবে তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদকে তুলে ধরার জন্য সরকার যদি কোনও ব্যবস্থা নিতো তাহলে সবাই তার ব্যপারে জানতে পারতো।

৩ মার্চ যখন শহীদ ফারুক ইকবালের মরদেহ বাড়িতে আনা হয় তখন কফিনের সামনে পেছনে হাজার হাজার মুক্তিকামি মানুষের মিছিল। কে জানতো বাড়ির উঠানে তখন অবস্থান করছিল দেশ প্রেমিক আরেক শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ তসলিম উদ্দিন- ঠিক এভাবেই নিজের ভাইয়ের গল্পটা শুরু করলেন জাহাঙ্গীর হাসান মানিক।

শহীদ তসলিম উদ্দিনের ভাই জাহাঙ্গীর হাসান মানিক বলেন, হাজার হাজার জনতা যখন স্লোগান দিতে দিতে ফারুক ভাইয়ের (শহীদ ফারুক ইকবাল) মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসলো এই দৃশ্য দেখেই আমার ১৩ বছরের ভাই মাকে বলে ‘দেখ মা, ফারুক ভাই কত ভাগ্যবান! হাজার হাজার জনতা তাঁর মরদেহ নিয়ে মিছিল করছে! তাঁর মৃত্যু নতুন ইতিহাসের সূচনা করছে!’ মা ধমক দেয়, "চুপ কর! কী সব অলুক্ষণে কথা কস!" মায়ের ধমকে ভাই তখন চুপসে যায়।

২৫ মার্চ রাতে ঢাকা শহরে শুরু হয় পাকবাহিনীর বর্বরতা, শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। সে রাতে ঢাকার যে আগুন তসলিম দেখেছে, সেই আগুনই তসলিমের মধ্যে জন্ম নেয় আগ্নেয়গি। মা-বাবা লক্ষ করলো কেমন জানি চুপচাপ হয়ে গেল সে। আগের মত তার মধ্যে চঞ্চলতা নেই, আবার কারো সঙ্গে ঠিক মত কথাও বলেনা। জানতে চাইলেও ভাই মা-বাবাকে কিছু বলেনি। এভাবে চলতে থাকার মধ্যে মার্চ কিংবা এপ্রিলে হঠাৎ একদিন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তসলিমকে। বিভিন্ন জায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর কয়েকদিন পরই জানা যায়, তৎকালীন আমাদের এলাকারই আলাউদ্দিন সুইট- এর ম্যানেজার আজিম খোকন, বাচ্চ্‌ ও তসলিমকে যুদ্ধে পাঠাতে সহযোগিতা করে।

১৩ বছরের তসলিম যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করছে। সে বাসায় না থাকায় এদিকে শহরের রাজাকারদের সন্দেহ তসলিম মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে। তাই ক'দিন পরপরই বাসায় পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে এসে আব্বাকে খুব বিরক্ত করতো। ৮ বার আব্বাকে আর্মিরা তুলেও নিয়ে গেছিল। তসলিমের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় আমাদের বাসা জ্বালিয়েও দিয়েছিল। আমাদের অন্যত্র গিয়ে থাকতে হয়েছে এই পাকিস্তানিদের অত্যাচারে।

রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষ হয়। তসলিমরা জয়ী হয়। একটি নতুন সকাল ১৬ ডিসেম্বর। দেশ আজ স্বাধীন। জনতার বিজয়ের উল্লাসের সাথে পৃথিবীর সব খুশি যেন বাবার মধ্যে। বাবার অপেক্ষা শেষ হয় ১৭ ডিসেম্বর। মুক্তিযোদ্ধাদের বরণ করতে এলাকার মানুষ বিজয় স্লোগান দিচ্ছে। একে একে তসলিমদের দলের প্রধান মোশাররফসহ আরও অনেকেই ফিরে এসেছে। কিন্তু তসলিম আর ফিরল না।

যে ফারুক ভাইয়ের মরদেহ দেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তসলিম, মৌচাক মোড়ে সে ফারুক ভাইয়ের কবরের পাশেই তাকে কবর দেওয়া হয়- বলেই চোখের পানি মুছলেন শহীদ তসলিম উদ্দিনের ভাই জাহাঙ্গীর হাসান মানিক।

এভাবেই ঢাকার মৌচাক মোড়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম এবং শেষ শহিদের সমাধিস্থল পাশাপাশি।

তবে ফারুক-তসলিমের সমাধিসৌধের বর্তমান অবস্থা দেখে কিছুটা আক্ষেপ নিয়েই দুই শহীদের দুই ভাই জানান, যদি সরকার থেকে সমাধিসৌধের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ না করা হয় তাহলে দুই পরিবার থেকেই যতটুকু সম্ভব করা হবে। অন্তত সমাধিসৌধের স্থানটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সেখানে বড় করে দুই শহীদের নামফলক লাগাবেন। যাতে মানুষ দূর থেকেই দেখতে পারে এবং ফারুক-তসলিম সম্পর্কে জানতে পারে।

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;