শীতের আগমনে ব্যস্ততায় লেপ-তোশকের কারিগররা
প্রচলিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক মাসে শীতের জন্ম হলেও গত কয়েক দিন ধরে উপকূলীয় বরগুনায় আবহাওয়া কিছুটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। দিনের বেলায় কিছুটা গরম অনুভূত হলেও সন্ধ্যা নামার পর পরই কুয়াশা জড়িয়ে ধরছে প্রকৃতিকে। এভাবেই ধীর ধীরে এগিয়ে আসছে শীত। তাই স্থানীয় লোকজন শীত মোকাবিলায় লেপ তোশক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
বরগুনা শহরের হাট বাজার ঘুরে এমনই চিত্র নজরে আসে। সারা বছর তেমন একটা চাহিদা না থাকলেও শীতের আগমনে চাহিদা বাড়ে লেপ তোশকের। শীতের এই আগমনকে কেন্দ্র করে জেলার হাট বাজারে লেপ-তোশকের কারিগররা পার করছেন ব্যস্ত সময়। সাদা, চায়না, গোলাপী, শিমুল, কার্পাস, হলুদ কম্বার, পলিউল তুলা দিয়ে লেপ আর কালো রাবিস কালো হুল, উইল তুলা দিয়ে জাজিম তৈরি করে বিক্রি করছেন তারাঁর
তবে আগের তুলনায় লেপ তোশকের উপকরণসহ পরিবহন খরচ বাড়লেও সে অনুযায়ী বাড়েনি কারিগরদের মজুরি। একই সাথে লেপ তোশকের বিকল্প হিসেবে ক্রেতাদের আধুনিক ম্যাট্রেস-কম্বলের দিকে আগ্রহ বাড়ায় এ নিয়ে কিছুটা মুখ শুকনো হাতে তৈরি লেপ-তোশক কারিগরদের।
স্থানীয় কারিগর আসিফ বলেন, আগের তুলনায় লেপ তোশক তৈরির উপকরণসহ পরিবহন খরচ বেড়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী আমারা যারা কারিগর রয়েছি আমাদের মজুরি বাড়েনি। চাহিদা অনুযায়ী ১৫০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত লেপ তোশকে পারিশ্রমিক পাচ্ছি আমরা মালিকের কাছ থেকে। দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতির বাজারে এ পারিশ্রমিকে আমাদের বেঁচে থাকা দায়।
কারিগর মাসুম বিল্লাহ্ বলেন, এখন লেপ তোশকের বিকল্প হিসেবে ক্রেতাদের আধুনিক ম্যাট্রেস-কম্বলের দিকে আগ্রহ বাড়ায় আমাদের হাতে তৈরি লেপ-তোশকের চাহিদা কমেছে।
ক্রেতা মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, আগের তুলনায় লেপ-তোশকের কয়েকগুণ দাম বেড়েছে। নতুন করে তৈরি করার থেকে ব্যবহৃত পুরাতন লেপ-তোশক যেগুলোতে তুলা কমে গেছে সেগুলো বাজারে এনে নতুন তুলা যুক্ত করে পুনরায় লেপ-তোশক তৈরি করছেন বেশিরভাগ ক্রেতাই। আমিও একটি লেপ ও একটি তোশক পুনরায় কিছু তুলা যুক্ত করে তৈরি করতে দিয়েছি। এতেও মজুরিসহ হাজার খানেক খরচ হবে।
সততা বেডিং হাউসের বিক্রেতা মোঃ কাইউম বার্তা২৪.কমকে বলেন, শীত পড়া শুরু করেছে। ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে। এখন ভালো তুলা দিয়ে একটা লেপ তৈরি করতে হলে দুই হাজার টাকার মতো লেগে যায় ও তোশকে ২ হাজার ৫০০ টাকার মতো। ক্রেতারা এসে বনিবনা করেন। দাম শুনে আগ্রহ কম থাকলেও যাদের একান্তই প্রয়োজন তারা ঠিকই নিচ্ছেন। পুরো শীত নামলে ক্রেতাদের আরও চাহিদা বাড়বে।