চিরঞ্জীব সঞ্জীব



রায়হান রহমান রাহিম, কন্ট্রিবিউটর
নগরীর দেয়ালে সঞ্জীব চৌধুরীর গ্রাফিতি

নগরীর দেয়ালে সঞ্জীব চৌধুরীর গ্রাফিতি

  • Font increase
  • Font Decrease

এক ডানা ভাঙা শালিক পাখির সুরে প্রজন্মের তরে যে মানুষটি গোটা জীবন আগুনের কথা বলেছেন, গানে গানে শুনিয়েছেন রঙিন হৃদয়ের সমস্ত দাবি, তিনি সঞ্জীব চৌধুরী৷ বেঁচে থাকার প্রতিটি সময় দলছুট ভাবনার সাথে তাঁর অন্তরঙ্গ মিশে থাকার গল্প বাংলা গানের জগতকে সম্পূর্ণ নতুন এক মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছিল৷ প্রিয় পাঠক, আজন্ম অন্তরের কথা বলতে চাওয়া এই কিংবদন্তী শিল্পীর জীবন ও সৃষ্টি নিয়ে চলুন একটু জেনে আসা যাক৷

১৯৬৪ সালের আজকের এই দিনে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং উপজেলার মাকালকান্দি গ্রামে সঞ্জীব চৌধুরীর জন্ম হয়৷ পিতা গোপাল চৌধুরী এবং মা প্রভাষিণী চৌধুরীর নয় ছেলে-মেয়ের মধ্যে সঞ্জীব ছিলেন সপ্তম সন্তান৷ বাড়িতে তাঁর ডাকনাম ছিল কাজল৷ বসতভিটা বানিয়াচংয়ে হলেও জানা যায় তাঁদের মূল বাড়ি ছিল সিলেট জেলার বিশ্বনাথ থানার দশঘর গ্রামে৷ তাঁর পিতামহ শরৎ রায় চৌধুরী সেখানকার জমিদার ছিলেন ৷

হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে সঞ্জীব চৌধুরী ঢাকায় চলে আসেন৷ ঢাকায় এসে বকশীবাজারের নবকুমার ইন্সটিটিউটে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৭৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মেট্রিক পাশ করেন৷ ছাত্রজীবন থেকেই সঞ্জীব চৌধুরী তুখোড় মেধাবী হিসেবে পরিচিত ছিলেন ৷ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জাতীয় মেধাতালিকায় ১২তম হয়ে তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হবার পর পর তাঁর জীবন-দর্শনের আমূল পরিবর্তন ঘটে ৷

বলা যায়, ঢাকা কলেজের ক্যান্টিন থেকেই সঞ্জীব চৌধুরীর সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছিল৷ অসম্ভবের পৌরুষোদ্দীপ্ত কন্ঠে সত্তরের দশকের অকালপ্রয়াত লেখক, ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী খান মোহাম্মদ ফারাবীর রচনা থেকে প্রায়ই আবৃত্তি করতেন—

আমি তো তাদেরই জন্য,
সূর্যের দিকে চেয়ে থাকবার অভ্যাসে যারা বন্য!
আমি তো তোমারই জন্য,
কপাল রাঙানো যে মেয়ের টিপ রক্তের ছোপে ধন্য!

আস্তে আস্তে সমাজতন্ত্রের দিকে ঝুঁকতে থাকা অবস্থায় কবিতার বই হাতে কলেজ ক্যান্টিনের তুমুল আড্ডার দিনগুলিই ছিল তাঁর মৌলিক বিকাশের মূল সময়৷ তখনকার উত্তাল দিনগুলির সাথে পাল্লা দিয়ে সঞ্জীবও যেন ছুটছিলেন আগুনের ফুলকি বুকে নিয়ে৷ ১৯৭৯-৮০ সালের ঢাকা কলেজ ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ তারপর ১৯৮০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন এবং সেই বছরই স্নাতকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হয়ে যান৷ বিজ্ঞানের এই তুমুল মেধাবী ছাত্রটির, কোনো এক অজানা কারনে গণিত বিভাগে পড়া চালিয়ে যেতে ইচ্ছে করল না৷ তারপর ভর্তি বাতিল করে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন৷ এবং সেখান থেকেই গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে মাস্টার্স পাশ করেন৷

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আশির দশক বেশ উত্তপ্ত এক সময়৷ স্বৈরাচারী সরকারের শাসন মেনে না নেয়া হাজার হাজার স্বাধীনচেতা তরুণের মতো সঞ্জীব চৌধুরীও বিক্ষোভ বিপ্লবের দিকে জীবনকে ঠেলে দিয়েছিলেন৷ এভাবেই আন্দোলন সংগ্রামের ভেতর দিয়ে নিজের জীবনকে পোড়াতে পোড়াতে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে খাঁটি এক শিল্পীমন সঞ্জীব চৌধুরীর আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল৷

ছাত্রজীবনে সঞ্জীব শঙ্খচিল’ নামে একটি গানের দলের সাথে জড়িত ছিলেন৷ স্বৈরাচারী সরকার-বিরোধী আন্দোলনকারী সংস্কৃতি-কর্মীদের প্রতিটি সাংস্কৃতিক বিপ্লবসূচক প্রচেষ্টা আমাদের জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ইতিহাসে বিবেচিত৷ তখনকার বিভিন্ন সভা-সমাবেশে গান গাইতেন, কবিতা পড়তেন বলে অনেকেই সঞ্জীব চৌধুরীকে চিনতেন৷ কিন্তু গায়ক হিসেবে তখনও তিনি এতটা নাম কুড়াননি।

পড়াশোনার পাট চুকিয়েই তিনি সাংবাদিকতা পেশায় মনোনিবেশ করেছিলেন। দৈনিক উত্তরণ ছিল তাঁর প্রথম কর্মস্থল৷ তারপর একে একে ‘ভোরের কাগজ’, ‘আজকের কাগজ’, ‘যায় যায় দিন’ পত্রিকায় তিনি সাংবাদিকতা করেছেন৷

গদ্য ও কবিতা উভয় ক্ষেত্রেই সঞ্জীব চৌধুরী ছিলেন অসামান্য এক সৃজনশীল প্রাণ। তিনি ১৯৮৩ সালের একুশে বইমেলায় ‘মৈনাক’ নামে একটি লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছিলেন৷ এরপর ১৯৯০ সালে লোকালয় প্রকাশনী থেকে তাঁর ‘রাশ প্রিন্ট’ নামে একটি গল্পগ্রন্থ বের হয়৷ বইটি বের হওয়ার পরপরই সমালোচক মহল থেকে দারুণ প্রসংশা কুড়িয়ে নেয়৷ কিংবদন্তী লেখক আহমদ ছফা সেই সময় সঞ্জীব চৌধুরীর লেখার দারুণ প্রশংসা করেছিলেন৷ বইটি পরবর্তীতে বাংলা একাডেমি কর্তৃক সেরা গল্পগ্রন্থও নির্বাচিত হয়৷

তখনকার সময়ে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত আজিজ সুপার মার্কেট ছিল প্রগতিশীলদের দারুণ এক মিলনস্থল৷ সঞ্জীব চৌধুরীর বিস্তৃত পরিসরে গানের জগতে প্রবেশে এই আজিজ মার্কেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল৷ সঞ্জীব মূলত গান ও আড্ডার টানে এখানে প্রায়ই আসতেন৷ একদিন আজিজ মার্কেটে তাঁর গায়ক বন্ধু হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল তাঁকে শিল্পী বাপ্পা মজুমদারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন৷ বাপ্পা মজুমদার এই দেশেরই কিংবদন্তী সংগীত নক্ষত্র বারীণ মজুমদারের ছোট ছেলে৷ সেই সময়ে বাপ্পা ছিলেন বয়সে তরুণ একজন মেধাবী গায়ক এবং সুরকার৷ ক্রমশই বাপ্পার সাথে সঞ্জীব চৌধুরীর হৃদ্যতা বাড়তে থাকে৷ বাপ্পার একক অ্যালবামে সঞ্জীব চৌধুরীর লেখা গান বাপ্পার কণ্ঠে গীত হয়৷ তারপর দুজন আরো বেশ কয়েকটি প্রজেক্টে একসঙ্গে কাজ করে, শেষে শিল্পকলা একাডেমিতে শিল্পী অশোক কর্মকারের প্রদর্শনীতে ২৮ মিনিটের একটি মিউজিক তৈরির সময় হঠাৎ ব্যান্ডজাতীয় একটা কিছু তৈরি করবার পরিকল্পনা আঁটেন৷ সে পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করেই ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্যান্ডদল ‘দলছুট’৷

ব্যান্ড তৈরি হবার ২ বছর পর ১৯৯৭ সালে দলছুটের প্রথম অ্যালবাম ‘আহ’ প্রকাশিত হয়৷ ‘আহ’ অ্যালবামটি শ্রোতাদের জন্য এক ভিন্নতার স্মারক হয়ে এলেও, প্রকাশের প্রায় আটমাস পর বিটিভির ‘শুভেচ্ছা’ অনুষ্ঠানে এই অ্যালবামের রঙ্গিলা গানটির মিউজিক ভিডিও প্রচারিত হলে, অ্যালবামটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল৷

‘আহ’ অ্যালবামের ‘নিষিদ্ধ’ নামের আরেকটি গান বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল৷ সঞ্জীব চৌধুরীর কথায় বাপ্পা ও সঞ্জীব মিলে গেয়েছিলেন—

কণ্ঠ নিষিদ্ধ সুর নাই
যন্ত্র নিষিদ্ধ বাদ্য নাই
আমাদের গানের আদেশ নাই
ও গান গাওয়ার নিয়ম নাই...
আকাশ নিষিদ্ধ পক্ষী নাই
বৃক্ষ নিষিদ্ধ পুষ্প নাই
আমাদের মনে উড়াল নাই
উড়াল প্রজাপ্রতি নাই

এরপর ২০০০ সালে দলছুটের সবচেয়ে বিখ্যাত অ্যালবাম ‘হৃদয়পুর’ প্রকাশিত হয়৷ এই অ্যালবাম প্রকাশের পরপরই শ্রোতাদের অন্তরে ব্যান্ড ‘দলছুট’ এক স্থায়ী প্রেম রূপে নিজেদের আসন পাকা করে নেয়। এই অ্যালবামের ‘গাড়ি চলে না’, ‘বাজি’, ‘চাঁদের জন্য গান’, ‘তোমাকেই বলে দেব’ গানগুলো দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল ৷

সঞ্জীব চৌধুরীর ছিলেন চির বোহেমিয়ান৷ জীবনের পরতে পরতে অন্বেষণ আর স্বাধীনতার চিন্তায় সঞ্জীব কখনো জীবনকে জটিল করেননি৷ বরং ছেড়ে দিয়েছেন৷ সহজ জীবন শুধু বিপ্লবী থেকেই ক্ষান্ত হয়নি৷ বোকা, অভিমানী প্রেমিকও সেজেছেন সময়ের প্রয়োজনে৷ সঞ্জীব গেয়েছেন—

আমি তোমাকেই বলে দেব
কি যে একা দীর্ঘ রাত
আমি হেঁটে গেছি বিরান পথে
আমি তোমাকেই বলে দেব
সেই ভুলে ভরা গল্প
কড়া নেড়ে গেছি ভুল দরজায়
ছুঁয়ে কান্নার রং, ছুঁয়ে জোছনার ছায়া’
এই চির অভিমানী প্রেমিক সঞ্জীবই আবার গেয়েছেন—
‘কে আমাকে হাত ধরে
নিয়ে এলো তোমার উঠানে
আমি যে বসেই আছি
খোল দরজা, বলি খোল দরজা
আমি রাগ করে চলে যাব
ফিরেও আসব না
আমি কষ্ট চেপে চলে যাব
খুঁজেও পাবে না
মেয়ে আমাকে ফেরাও

দলছুটের ৩য় অ্যালবাম ‘আকাশচুরি’ প্রকাশিত হয় ২০০২ সালে ৷ এই অ্যালবাম থেকে ‘হৃদয়ের দাবি’, ‘ফিরে পেতে চাই’, ‘কার ছবি নেই’, ‘এই নষ্ট শহরে’, ‘বায়োস্কোপ’—গানগুলো আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে৷

কামরুজ্জামান কামুর লেখা ‘হৃদয়ের দাবি’ গানটি সঞ্জীব ছাড়া অন্য কারো গলায় সম্ভবত কোনোদিনই মানাত না৷ একজন সঞ্জীব চৌধুরীর হৃদয়ের অতলান্ত নিংড়ে বেরিয়ে আসা সুরে আত্মকথাকে গেঁথে কাউকে বলে দেবার যে তাড়না এই গানে উঠে এসেছে তাতে শ্রোতারা এক অদ্ভুত মায়ায় জড়িয়ে গিয়েছেন বারবার৷

মায়ায় জড়িয়েই টের পেয়েছেন সঞ্জীব যেন তাদের কথাই একের পর এক নতুন গানে উঠিয়ে নিয়ে আসছেন৷ প্রশ্ন আর উত্তরের অতীতে আমাদের একান্ত যে ডুবে যাওয়া সেখানে ডুবে যেতে যেতে আবার সঞ্জীবই গাইছেন—

তীর হারা এই দুঃসময়ে
স্বপ্ন ডাক দেয়
হাতছানিতে যাই হারিয়ে
আঁধার অচেনায়
আমার গানের সাথে
তোমার গান মেলাও

চতুর্থ অ্যালবাম ‘জোছনাবিহার’-এর পর সঞ্জীব এবং বাপ্পা দুজনই আলাদাভাবে নিজস্ব ক্যারিয়ারের দিকে ঝুঁকে পড়েন৷ তবে সঞ্জীবের একক অ্যালবাম ‘স্বপ্নবাজি’র গানগুলো শুনলেই সত্যিকারের সঞ্জীব চৌধুরীর দেখা মেলে৷ ওই অ্যালবামে আমরা দেখেছি কামরুজ্জামান কামু, জুলফিকার রাসেল, টোকন ঠাকুর, আনিসুল হক, প্রজ্ঞা নাসরিন, জাফর রাশেদ, গিয়াস আহমেদ—যারা ছিলেন তখনকার সব তরুণ কবি তাঁদের লেখা থেকে গান করেছেন৷ তরুণদের মাঝেই নিজেকে এমনভাবে খুঁজেছেন যে লোকটি সে লোকটি চঞ্চল প্রেমের প্রজাপতি হয়ে বিপরীত রিকশায় চলে যাওয়া সুন্দরী তরুণীর প্রতি গেয়েছেন ‘রিকশা যাচ্ছে হাওয়ায় উড়ে, আমার হৃদয় তুচ্ছ করে... রিকশা কেন আস্তে চলে না?’ আবার অনন্ত রাত্রির বিষাদে তাঁরই কণ্ঠ ভারি হয়েছে৷ উচাটন মন নিয়ে, চির বিরহী সঞ্জীব গেয়েছেন—

কথা বলব না
আগের মতো কিছু নেই
পিছু ডাকব না
পিছু ডাকার কিছু নেই
সর্বনাশী ঝড়ের বুকে
উড়ে যাবার কিছু নেই
আগুনে পুড়েছি এ হাত বাড়িয়ে
পুড়ে যাবার কিছু বাকি নেই

শুধু তারুণ্যের গানই গাননি এই চির স্বাপ্নিক শিল্পী৷ গেয়েছেন সাতাশ বছর বয়সী সাহসী যুবকের গানও৷ যার বুকে স্বপ্ন ভাঙার শঙ্কা নেই, তার চোখে জীবন মঞ্চের জটিল দৃশ্যায়নের ইতিবৃত্ত সময়কে মুঠোবন্দী করবার প্রেরণা দেয়৷ সঞ্জীব গেয়েছেন—

আমার বুক দেখাব তোকে
বুকে রয়েছে বিদ্যুৎ
কিছু করলি মনে ধুৎ
আমি খেয়েছি স্বপ্নকে
জানিস বজ্র সখা আমার
আমার সাধ এখানে থামার
তোর আঁচল পেলে বাতাস
আর দরকার কী নামার
আমার বয়স হলো সাতাশ
আমার সঙ্গে মিতা পাতাস,
তোর দু’হাত চেপে ধরি
চাই এটুকু মাত্তরি

অসীম সাহসী এই শিল্পী শুধু স্বপ্নের কথাই তাঁর গানে বলেননি৷ রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক নানা অনাচারের বিরুদ্ধে তিনি যে সদা একজন সদা জাগ্রত কণ্ঠস্বর ছিলেন সে প্রমাণও তাঁর গানে আমরা পেয়েছি৷ শুভাশিস সিনহার কথায়, নিজস্ব সুরে তিনি গেয়েছেন—

ওই কান্নাভেজা আকাশ আমার ভাল লাগে না
থমকে থাকা বাতাস আমার ভাল লাগে না
তুড়ির তালে নাচতে থাকা ভাল লাগে না
এই মরে মরে বেঁচে থাকা ভাল লাগে না

পুলিশের হাতে ধর্ষিত হয়ে খুন হওয়া ইয়াসমিনকে নিয়ে তিনি ছাড়া আর কেউ গাননি—

ওরে রক্তচোষা ডাকলো পেঁচা অলক্ষুণে রাত
আসে অন্ধকারে চুপিসারে ভীষণ কালো হাত
লোল ছেড়ে তার লোলুপ জিহ্বা ছিঁড়ল হৃদয় বিণ
আহ ইয়াসমিন আহ ইয়াসমিন আহ ইয়াসমিন

তাঁর ছিল এক কবির হৃদয়, যে হৃদয় সুরেই খুঁজে পেত জীবনের সত্য সুখ৷ কখনো দৃশ্যে, কখনো অদৃশ্যে জীবনকে উদযাপনে মগ্ন এই শিল্পীর চির বোহেমিয়ান চিন্তা জগৎ সর্বদাই জনমানুষের কাছাকাছি এসেই শিল্পের মানে খুঁজে পেয়েছে৷

সঞ্জীব চৌধুরীকে সব্যসাচী বলা যায় এক অর্থে৷ যেমন করে গান গেয়েছেন, সাংবাদিকতাও করেছেন তার সাথে পাল্লা দিয়ে৷ গান তো লিখেছেনই, গদ্য পদ্যের মতো নাটকের স্ক্রিপ্টও লিখেছেন এই মেধাবী মানুষটি৷ ‘সুখেরও লাগিয়া’ নামে একটি নাটকে অভিনয় করার অভিজ্ঞতাও ছিল তাঁর৷

সঞ্জীব গুণীর কদর করতে জানতেন৷ ‘হৃদয়পুর’ অ্যালবামে ‘গাড়ি চলে না’ গানটি গাওয়ার আগে শাহ আবদুল করিমের অনুমতি নিয়েছেন তিনি৷ তাঁর গানে যে রুচিশীলতার, গভীর বোধের দিকটি ধরা পড়ে তার কারণ অ্যাল স্টুয়ার্ট, পিংক ফ্লয়েড, বব ডিলান তাঁর গান শোনার জীবনকে আলোকিত করেছে৷ তিনি বাংলাদেশ, মরক্কো, স্পেনের লোকসংগীত দ্বারাও প্রচুর আকৃষ্ট ছিলেন৷

রোমান্টিক এই মানুষটি খন্দকার আলেমা নাসরিন শিল্পীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন৷ সঞ্জীব-শিল্পীর একমাত্র কন্যা কিংবদন্তীর জন্ম ২০০৪ সালের ১৮ মে৷

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর হঠাৎ বাইলেটারেল সেরিব্রাল স্কিমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত হন সঞ্জীব চৌধুরী৷ ওই দিন প্রচণ্ড অসুস্থ বোধ করার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ আইসিইউতে থাকাকালীন সেখানেই ১৯ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে এই মহান শিল্পী মৃত্যুবরণ করেন৷ চিরকাল শিল্পে মানুষের কথা এই মহান শিল্পী মৃত্যুর পরেও নিজেকে মানুষের সেবাতেই নিয়োজিত রাখতে চেয়েছিলেন৷ ঢাকা মেডিকেল কলেজকে দান করে দেয়া তাঁর কঙ্কালটি এখন চিকিৎসাবিজ্ঞান পড়ুয়া ছাত্রদের পড়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে৷

বেঁচে থাকার প্রতিটা সময় শুধু কাজ করে যাওয়া এই আপোসহীন, গুণী শিল্পীকে মানুষ তাঁর কাজেই হয়তো মনে রাখবেন৷ তাঁর স্বপ্নবাজি করে কাটিয়ে যাওয়া একেকটা মুহূর্ত এখনকার তরুণদের কী প্রবল অনুপ্রাণিত করে অন্তরের কথা বলবার তাগাদা দেয় তা রাত বাড়লে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল থেকে, আড্ডার কিনারা থেকে ভেসে আসা গিটারের সুর, আবেগমথিত গলার গান শুনেই অনুভব করা যায়৷

ছিলেন জমিদার পরিবারের সন্তান৷ তবু চিরকাল লালন করেছেন সাম্যবাদের সুদিনের স্বপ্ন৷ তথাকথিত প্রশাসন হয়তো বারবার তাঁর দিকে চোখ রাঙিয়েছে, তবু তিনি দমে যাননি৷ শক্তিশালী ডানা নিয়ে পারলেই উড়ে গিয়েছেন স্বাধীনতা নামক ঝকঝকে নীল আকাশে৷

সঞ্জীব নেই—এ কথা আজ কে বলবে? চোখ পুড়ে যায়, যাক৷ চোখ সমুদ্র সাজে, সাজুক ৷ সঞ্জীব আছেন, সঞ্জীব থাকবেন সারাজীবন৷

   

অকালে আম পাকে!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অপরিপক্ক পাকা আম / ছবি: পিক্সাবে

অপরিপক্ক পাকা আম / ছবি: পিক্সাবে

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বৈশাখে তোর রূদ্র ভয়াল,

কেতন ওড়ায় কালবৈশাখী!

জষ্ঠি মাসে বনে বনে

আম কাঠালের হাট বসে কি...’

রবিঠাকুরের কলমে রচিত এ পংক্তি যেন, কেবল কাগজের উপর কালিতে সাজানো কিছু শব্দ নয়। বাংলা বছরের প্রথম ঋতুর সকল বৈশিষ্ট্য খুব অল্প ভাষায় সুসজ্জ্বিত করে গানের রূপে সামনে আনেন বিশ্বকবি।

দিন গুনতে গুনতে বছরের প্রথম মাসটি অনায়াসে কেটে গেল। চলছে জৈষ্ঠ্য মাস। ভয়ংকর কাল বৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে; জৈষ্ঠ্যের পাকা আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুই যেন গ্রীষ্মের আসল আনন্দ।  

গ্রীষ্মের পরিপূরক হলো আম। আম পছন্দ নয়, এমন মানুষটি খুঁজে পাওয়া দায়! এজন্যই আমকে বলে ফলের রাজা। ত্যক্ত-বিরক্ত করা গরমেও পাকা টসটসে আমের সুঘ্রাণই যেন আনন্দের স্বস্তি। তবে সে আনন্দেও বালি ঢেলে দেয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ভোজন-রসিক মানুষরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে রসে টসটসে তাজা ফলের স্বাদ আস্বাদনের জন্য। অনেক ভোক্তদের সেই অপেক্ষা বৃথা হয়ে যায় অপরিপক্ক ফলের কারণে।

অনেক ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের আশায় রাসায়নিক উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করে আম পাকানোর চেষ্টা করে। আম যখন কাঁচা অবস্থায় থাকে তখন এর মধ্যে সাইট্রিক এসিড ম্যালিক এসিড, টারটারিক এসিড থাকে। এ কারণে আমের হাইড্রোজেন আয়নের ঋণাত্মক ঘনমাত্রার লগারিদম মান খুব কম হয়, ফলে আম অম্লধর্মী হয়। এছাড়া কাঁচা অবস্থায় আমে উচ্চ ওজনের পেকটিনের মজুদ বেশি থাকে।

অপরিপক্ক পাকা আম

সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে পাঁকার সময় এই পেকটিনের ওজন কমতে থাকে। আমের মধ্যকার ভিটামিন ‘সি‘ কালক্রমে বদলে ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। একই সঙ্গে ক্লোরোফিল পরিবর্তিত হয়ে গ্লোবুলার ক্রোমোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হয়। অ্যান্থোসায়ানিন পিগমেন্ট ফিনাইলপ্রোপানয়েডের সেকেন্ডারি মেটাবোলাইটসের  উপসি্থতি বাড়তে থাকে।(‘বিজ্ঞানচিন্তা’র তথ্যমতে) এই কারণে কাঁচা আমের সবুজ রঙ পরিবর্তন হয়ে লালচে-হলুদাভাব বর্ণ ধারণ করে। এভাবে পাকার ফলে আম হয় সুস্বাদু। আমের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে যায়।

তবে ক্যালসিয়াম কার্বাইড (CaC2)  এর প্রয়োগের কারণে আমের মধ্যে পরিবর্তন আসে। এর মধ্যে থাকা (৮০থেকে৮৫ভাগ) ক্যালসিয়ামের কারণে আমের অম্লত্ব নষ্ট হতে শুরু করে। অম্ল-ক্ষারের প্রশমনের কারণে আমের মধ্যে থাকা ম্যালিক এসিড ও সাইট্রিক এসিডের পরিমাণ কমতে থাকে। তাই কাঁচা অবস্থাতেই আমের রঙ পরিবর্তন হতে শুরু করে।

আমের ভিটামিন বি১ পানিতে দ্রবনীয়। আমের আর্দ্র অংশের সঙ্গে ক্যালসিয়াম কার্বাইড বিক্রিয়া করে অ্যাকটেলিন গ্যাস উৎপন্ন করে। এতে আম অসময়েই পাক শুরু করে। সামগ্রিকভাবে আমের রাসায়নিক পরিবর্তন না ঘটলেও বাহ্যিকভাবে রঙের পরিবর্তনের কারণে দেখলে মনে হয় আম পেকেছে। এই অপরিপক্ক আম খেলে কেবল রুচি ও ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, তাই নয়! শরীরের জন্যও অনেক বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।

;

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;