প্রিয় চায়ের অদেখা ‘চা ফুল’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
মনোমুগ্ধকর চা ফুল। ছবি: বার্তা২৪

মনোমুগ্ধকর চা ফুল। ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চা বা চা পাতার অপর নাম ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’। কারণ, দুটি পাতা আর একটি কুঁড়ি তোলা হয় বলেই এরূপ নামকরণ। অনেকে দুটি পাতা একটি কুঁড়ি বললেই বুঝে ফেনেন - চায়ের কথা বলা হচ্ছে।

চা তো আমাদের অনেকেরই প্রিয়। আমরা অনেকই চা পান করি। জন্মের পর থেকেই চায়ের সাথে খুব সহজেই পরিচিত হয়ে উঠেছি আমরা। পরিবারের সদস্যদের মুখে মুখে চা শব্দটির ব্যাপক চাহিদা। চা নামক পানীয়টির প্রয়োজনীতা তাদের মুখে মুখে ঘুরাফেরা করতে থাকে সময়ের প্রতিটি ক্লান্ত মুহূর্তে।

চা বা চা পাতা সম্পর্কে আমরা যতটা আগ্রহী তবে ‌চায়ের ফুল সম্পর্কে ততটা আগ্রহী বা পরিচিত নই আমরা। আমাদের অগোচরে বাংলাদেশের ১৬৭টি চা বাগানেই ফুটে এই ফুল। কিন্তু আমাদের দেখা হয় না। চেনা হয় না। সাধারণ চা-বাগানের গাছগুলো থেকে দু-এক সপ্তাহ পরপর পাতা তোলা হয় কুঁড়িসমেত। সে জন্য সেসব বাগানে ফুল ফোটার সুযোগ থাকে না।

গাঢ় সবুজ পাতার চায়ের সুগন্ধযুক্ত সাদা ফুলের মাঝখানে রয়েছে স্বর্ণাভ হলুদ রঙা পরাগকেশর। যা চা ফুলকে করে তুলেছে অতি আকর্ষণীয়। চা গাছ চিরসবুজ ঝোপাল গুল্ম কিংবা ছোট আকারের বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত একটি চা গাছ তিন থেকে চার মিটার লম্বা হয়ে থাকে। তবে চা বাগানের চা গাছগুলো ২ ফুটের বেশি লম্বা হয় না। এর মূল খুব শক্তিশালী। চা আর বিখ্যাত ক্যামেলিয়া একই প্রজাতির গাছ।

চোখ মেলে তাকিয়ে আছে ‘চা ফুল’। ছবি: বার্তা২৪

বাংলাদেশিয় চা সংসদের সিলেট ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান জিএম শিবলি বলেন, চা-গাছের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Camellia sinensis বা ক্যামেলিয়া সিনেনসিস। চিরসবুজ এ গাছ জন্মে পাহাড় বা টিলার ঢালে। চা-পাতা তুলে তুলে গাছগুলোকে খাটো করে রাখা হয়। পাতা না তুললে এসব গাছ প্রায় ৩০ ফুট লম্বা বৃক্ষ হতে পারত।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত চা-গাছে ফুল ফোটা শুরু হয় হেমন্ত থেকে। অক্টোবরের পরে। ফুল ফুটতে থাকে শীতকাল জুড়ে। চা-গাছ বাঁচে ৩০ থেকে ৫০ বছর। ফুল ফোটা শুরু হয় বছর সাতেক বয়স থেকে। ফুল উভলিঙ্গী, মৌমাছিরা পরাগায়ন ঘটিয়ে ফল তৈরি করে। চা-গাছের ফল, সে আরেক অদ্ভুত জিনিস। ফল পাকতে অনেক সময় লাগে।

ফল থেকে চারা হয়, আবার ফল ভাঙিয়ে তেল বের করা যায়। তেল সুগন্ধযুক্ত ও সুমিষ্ট। এ তেল দিয়ে রান্না করলে আলাদা স্বাদ আসে বলে জানান তিনি।

গবেষকদের ধারণা, খ্রিস্টপূর্ব দু’হাজার সাতাশ শতাব্দীতে চীন সম্রাট সিন নুং-এর সময় আবিষ্কৃত হয়। আবার ইতিহাসবিদের মতামত, বুদ্ধের জন্মের প্রায় এক হাজার বছর আগে চীনা সন্ন্যাসীরা চা আবিষ্কার করেন। আমাদের ভারত উপমহাদেশে ১৮৩৩ সালে প্রথম চা চাষ শুরু ভারতের লখিমপুর চা বাগানে। আর ১৮৫৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম সিলেটের মালিনীছড়ায়।

সবুজ পাতার ভিড়ে হলুদ-সাদা রঙে চা ফুল। ছবি: বার্তা২৪

জাতিসংঘের এক তথ্য থেকে জানা গেছে, প্রায় এক বিলিয়ন বা একশো কোটি মানুষ বর্তমানে প্রতিদিন কমপক্ষে দু’কাপ চা পান করে থাকেন।

যারা শহরের কোলাহলের মাঝে বন্দী। যাদের চা বাগান দেখার সৌভাগ্য হয়নি কখনো; যাদের চিরসবুজের প্লাবনে এসে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেবার সুযোগ হয়নি এখনো তাদের উদ্দেশ্য বলছি – শুধু চা নয়; ছোট চায়ের ফুলকে আপনার ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাইলে চলে আসুন বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে। চায়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা বিবেচনা করে এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট বা বিটিআরআই।

পাকা সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে হঠাৎই দেখবেন হাজার হাজার চা পাতার ভিড়ে একটি ছোট্ট চা-ফুল আপনার দিকে তাকিয়ে যেন হাসছে।

   

মাকে ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখতে নগদ কর্মীদের ছুটি



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এই নগরের ব্যস্ত কর্মদিবসগুলোতে তো মাকে সময় দেওয়াই কঠিন। এমনকি মা দিবস কর্মদিবসে হওয়ায় এ উপলক্ষ্যেও থাকা হয় না মায়ের পাশে। কিন্তু এবারের মা দিবসে ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ।

প্রতিষ্ঠানে কাজ করা কর্মীরা যাতে দিনটিতে মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারেন সে জন্য সকল কর্মীদের আধা বেলা করে ছুটি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুকের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।

তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘‘আমি নিজে আমার মাকে দেখেছি যে, তিনি সন্তানের জন্য কতটা আত্মত্যাগ করেছেন। সকল মা-ই তাই করে থাকেন। আমার অনুরোধ, আজকের দিনটা অন্তত মাকে একটু সময় দিন। এ জন্য আমি আমার নগদ পরিবারের সকল কর্মীকে আজকে প্রথম বেলা কাজ করার পর পর বাসায় যেতে বলেছি, মায়ের সাথে সময় কাটানোর জন্য।’

শুধু নিজের কর্মীদের জন্য নয়, মা দিবসে নগদের গ্রাহকদের জন্যও বিশেষ ঘোষণা নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। দিনটি উপলক্ষ্যে দেওয়া ক্যাম্পেইনে মায়ের মোবাইলে নগদ থেকে ১০০ টাকা বা তার বেশি রিচার্জ করে বিজয়ীরা পাবেন মাকে নিয়ে ২০ হাজার টাকার শপিং, মাকে নিয়ে লাঞ্চ বা ডিনার করা এবং মাকে নিয়ে সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো বাংলাদেশেও মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করা হয়। সারা বিশ্বের সমাজ গঠনে এবং উন্নয়নে মায়েদের অসীম ভূমিকা স্মরণ করা হয় এই দিনে। কিন্তু সমস্যা হলো, রবিবার বাংলাদেশে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। ফলে সন্তানদের চাইলেও এই দিনটি মায়ের সাথে কাটানোর খুব একটা সুযোগ থাকে না। সেই সুযোগ এবার করে দিল নগদ।

নগদ মনে করে, যেসব কর্মী মায়ের কাছে থাকেন, তারা ইচ্ছে করলেই এই অর্ধদিবস ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারবে। সে জন্য তার বার্ষিক প্রাপ্য ছুটি থেকে কোনো কিছু বিয়োগ করা হবে না। এ ছাড়া এই দিনটি উপলক্ষ্যে কর্মীদের মায়েদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এমন সিদ্ধান্ত নগদের জন্য নতুন কিছু নয়। কর্মীবান্ধব এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি কর্মীর জন্মদিন পালন করে থাকে কেক কেটে। এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকল কর্মীর অর্ধদিবস ছুটি নিয়ে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ আছে।

কয়েকদিন আগে ভয়ানক তাবদাহের সময় মাঠকর্মীদের নিরাপদ রাখতে অভিনব সিদ্ধান্ত নেয় নগদ। যেকোনো মূল্যে কর্মীদের নিরাপদ রাখতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক নির্দেশনা দিয়েছিলেন এপ্রিল মাসে ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণের সঙ্গে সঙ্গে শরীর ঠিক রাখার লক্ষ্যও পূরণ করতে হবে। এজন্য অফিসে কর্মীদের পোশাকের বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়। সব প্রতিষ্ঠানের মতো নগদেও কেতাদূরস্ত পোশাক পরাটা নিয়ম থাকলেও এ সময় এ নিয়মে ছাড় দেয়। ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরে অফিস করার জন্য বলা হয়।

মা দিবসের বিশেষ অফার

মা দিবসে শুধু কর্মীদের জন্য নয়, বিশাল গ্রাহক পরিবারের জন্যও অফার নিয়ে এসেছে নগদ। এই অফারে মায়ের মোবাইল নম্বরে নগদ অ্যাপ বা *১৬৭# থেকে ১০০ টাকা বা তার বেশি রিচার্জ করে দিতে হবে। এর ফলে পাওয়া যেতে পারে আকর্ষণীয় সুবিধা।

এই রিচার্জ করা গ্রাহকদের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে বেছে নেওয়া হবে ৫ জনকে। বিজীয়রা সুপারশপ মীনা বাজার থেকে মাকে নিয়ে ২০ হাজার টাকার শপিং করতে পারবেন। পাশাপাশি মাকে নিয়ে ফ্রি লাঞ্চ অথবা ডিনার করা এবং সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন বিজয়ী গ্রাহকরা।

১২ মে, মা দিবস থেকে শুরু হয়ে ১৬ মে অবধি চলবে এই ক্যাম্পেইন।

 

 

;

ডলারের মূল্যবৃদ্ধির বিকল্প কি ছিল, যা জানালেন ড. বিরূপাক্ষ পাল



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এক লাফে ডলারের দাম ৭টা বাড়ানোর ফলে দেশের অর্থনীতিতে সৃষ্ট উভয়সংকটের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরকে দায়ী করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. বিরূপাক্ষ পাল বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি পলিসি অস্থিরতার ফল। বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক এই প্রধান অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেন, ‘এই পরিস্থিতি তখনই আসে যখন কেউ পলিসি সম্পর্কে দৃঢ় নয়, জ্ঞানলব্ধ, প্রজ্ঞাশীল কিংবা স্থিতপ্রজ্ঞ নয়’।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক এর অর্থনীতির অধ্যাপক বিরূপাক্ষ পাল সাম্প্রতিক বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি দুর্বলতা, সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, একাডেমিয়ার সঙ্গে আমলাতন্ত্রের বিরোধ ছাড়াও সমকালীন অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়েও তাঁর মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন। কথা বলেছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম।

বার্তা২৪.কম: ডলারের দাম এক লাফে ৭টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অর্থনীতি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে পুরো আর্থিক খাতেই বড় ধরণের সংকট তৈরি হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এর বিকল্প আসলে আর কি ছিল?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: বিকল্প ছিল একটাই, সময় থাকতে কাজ করা। গেল সেপ্টেম্বরে (২০২৩) আমি লিখেছিলাম যে, টাকার মান কমলে জাতির মান কমে না। টাকার মানকে রিয়েল এক্সচেঞ্জ রেটের সঙ্গে এডজাস্ট করা। সেটা তো তারা (বাংলাদেশ ব্যাংক) কখনো করেনি। এক লাফে বাড়িয়ে এখন প্রশংসা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এটাকে বলছে ‘ক্রলিং পেগ’ কিন্তু আসলে এটা তো ক্রলিং নয়, তারা সবকিছু ফোর্সড করেন আন্ডার ভলান্টারি। মার্জারের মত, করছে ফোর্সড নাম দিচ্ছে ভলান্টারি। এককালীন ডলরের দাম বাড়িয়েছে শুধু আইএমএফ এর শর্তপূরণের জন্য। আইএমএফ এর ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ এর যে লিমিটটা ছিল তা তারা পূরণ করতে পারেনি, সুতরাং থার্ড গ্রেডে তারা কোয়ালিফাই করতে পারে। কোয়ালিফাই করতে পারেনি, যোগ্যতা না থাকায় বাধ্য হয়ে এখন এই কঠোর সিদ্ধান্তটা নিয়েছে এবং বলতে গেলে নিতে বাধ্য হয়েছে। এর বিকল্প ছিল একটাই-যা ইতিমধ্যে অর্থনীতিবিদরা যেটা বলেছেন সেটা অনুসরণ করা ।

বার্তা২৪.কম: পরিস্থিতির জন্য কাকে দায়ী করবেন?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: গভর্নর নিজে এই উভয়সংকটের জন্য দায়ী। উনি প্রথমে একবার গত জুলাই মাসে মনিটারি পলিসি দিয়ে বলেছেন, আমরা এক্সচেঞ্জ রেট বাজারভিত্তিক করব। ডিসেম্বরের দিকে সম্ভবত একটি অনুষ্ঠানের গিয়ে তিনি ভেতরের কথা বললেন যে এক্সচেঞ্জ রেটকে কোনভাবেই বাজারের উর্ধ্বে করা যাবে না। অর্থাৎ তাদের ভেতরের মধ্যে পলিসি ডিলেমা, নীতি অসংবেদনশীলতা। মুখে একটা বলা আর তা না করার শাস্তি হিসাবে এই এক লাফে ৭ টাকা বাড়াতে হল। জানা মতে, স্বাধীনতার পরে একবার এমন হয়েছিল বিশেষ একটি অবস্থায় ১৯৭৫ সালের দিকে। তাছাড়া এমন এক লাফে এভাবে ৭ টাকা আর বাড়েনি। যেখানে ৪ আনা, ৮ আনা করে বাড়ানো হয়-সেখানে ৭ টাকা বাড়ানোর কোন কারণ নেই। দ্বিতীয় আরও একটি হিপোক্রেসি তারা করেছেন, কিছুদিন আগে ডলারকে ১১০টাকা থেকে কমিয়ে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা করেছে, এটা এক ধরণের হিপোক্রেসি। এর মানেটা কি বোঝাতে চাচ্ছেন? মানেটা কি টাকা ডলারের সঙ্গে শক্তিশালী হয়ে উঠছে! এটা ফেইক সিগন্যাল। আসলে এই ফেইক সিগন্যাল দেওয়ার কোন দরকার ছিল না । তখনও বাজারে ১২০ টাকা দিয়ে ডলার কেনা লাগতো। এটা পলিসি হিপোক্রেসি। সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন যেটি বলেছেন, আমি সেটাকে আশ্রয় করে বলছি, উনি তো অনেক কথাই বলেছেন, যেটা কোন সাবেক গভর্নর বলেন না। যার সারমর্ম হচ্ছে কিছুসংখ্যক আমদানিকারককে খুশি করতে ডলারকে কৃত্রিমভাবে অবমূল্যায়ন করে রাখা হয়েছে, টাকাকে অতিমূল্যায়িত করে রাখা হয়েছে। এই আমদানিকারকদের ফোর্সটা এখানে স্ট্রং, এটা বুঝতে পারছি। তারা জিনিসপত্র আমদনি করবে এবং এই গোষ্ঠীটা এক্সচেঞ্জ রেটটা বাজারের সঙ্গে আসতে দিচ্ছে না। তারা বিগত দীর্ঘসময় দেয়নি, আসতে আসতে একটা বিল্ডিংয়ের মধ্যে চাপ নিতে নিতে কোভিডের সময় ফেটে পড়ে। এর জন্য কোভিডেরও দোষ নেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধেরও দোষ নয়। এগুলো খামোখা অজুহাত।

বার্তা২৪.কম: এটাকে কি তাহলে নীতিগত ব্যর্থতা বলা যায়?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: হ্যা অবশ্যই। তারা জ্ঞানভিত্তিক পলিসি নির্ধারণ করে না। তারা কিছু গোষ্ঠীর স্বার্থ দেখে কাজ করে। অর্থনীতিবিদদের কথা তারা কোনভাবেই শোনে না। আরেকটা মকারি তারা করেছেন, সমস্ত খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদদের বাংলাদেশ ব্যাংকে ডেকে নিয়ে উপদেশ শুনেছে, একটা উপদেশও তারা রাখেনি। উনি (গভর্নর) আমদানি করেছেন ‘স্মার্ট’, এটা আসলে একটা ভুয়া জিনিস। স্মার্ট মানে কি আমাদের ক্ষমতাকে অন্যের হাতে দিয়ে দেওয়া? পৃথিবীতে এমন উদ্ভট কাজ কেউ করে না। শেষ পর্যন্ত বাতিল করতে হয়েছে। এখন যে মার্জার নিয়ে কথা হচ্ছে, আমি মার্জার নিয়ে পড়াশোনা করেছি। এ নিয়ে আমিও লিখেছি, এটা হল ‘সামন্তবাদী বিয়ের’ মতন ব্যাপার। জোর করে বিয়ে দেওয়ার মতো। অলরেডি মার্জার থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আরেকটা জিনিস তারা শুরু করল, ক্রলিং পেগ। এটি যেভাবে শুরু হওয়ার কথা, সেটা কিছুই না। চাপে পড়ে করে এখন বলছে আমি করে ফেলেছি। ঘটনাটি বোঝাতে একটি গল্প বলা যেতে পারে, জাহাজের কিনারায় দাঁড়িয়ে একটা লোক দৃশ্য দেখছিল। হঠাৎ হইচই হচ্ছে, কেউ একজন পড়ে গেছে নীচে। হইচই, কান্নাকাটি। কিছুক্ষণ পর আরেকটা মানুষ ঝাঁপ দিয়ে উদ্ধার করল। তারপর ওই মানুষকে যখন মেডেল দিচ্ছে, তখন তিনি বললেন, ‘আমি তো আসলে মেডেল নেওয়ার যোগ্য নই। আমি দেখলাম কেউ আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে, এর জন্য আমি মহান হয়ে গেছি।’ এখন ধাক্কাটি মেরেছে আইএমএফ, আর এক ধাক্কায় ডলারের দাম বাড়িয়ে দিয়ে বলছে ‘ক্রলিং পেগ’। ‘জাম্পিং পেগ’ কখনো ক্রলিং প্যাক হয় না। আরেকটা ভুয়া নামের আশ্রয় তারা নিয়েছেন। কেন করলেন? কারণ তারা কমিট করেছিলেন এটা তারা করবেন। এত কথা, কবিরাজি, টুটকা চিকিৎসার প্রয়োজন কি? ঝাড়ফুঁক দেওয়ার প্রয়োজন কি পড়ল? যেটা মানা উচিত সেটা মেনে চললেই তো হয়। তারা ভুয়া জিনিস আমদানি করে চমক লাগায়। ‘স্মার্ট’, ‘সোয়াপ’, ‘এক্সচেঞ্জ রেট’ ইত্যাদি নানাকিছু। এজন্যই আমি বলছি, বর্তমান পরিস্থিতিটা হল পলিসি অস্থিরতা। এটা কখন আসে যখন কেউ পলিসি সম্পর্কে দৃঢ় নয়, জ্ঞানলব্ধ-প্রজ্ঞাশীল বা স্থিতপ্রজ্ঞ নয়, এমন অবস্থাতেই এই অস্থিরতাগুলো ভিতরে আসতে থাকে। হঠাৎ করেই কিছু টার্ম নিয়ে আসেন, যা আমদানির কোন দরকার ছিল না।

বার্তা২৪.কম: এই পলিসি অস্থিরতা কিংবা ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কি কি প্রভাব পড়বে আমাদের অর্থনীতিতে…

ড. বিরূপাক্ষ পাল: প্রভাবটাই বড় কথা নয়, যদি করতেই হল, তবে এত দেরি করে কেন? লাফ দিয়ে বাড়ানোর প্রয়োজন কেন পড়ল? কোন শিক্ষার্থী পড়াশোনা না করলে পরীক্ষার আগে সারারাত পড়লে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়-বিষয়টি তেমনি। ইট ইজ মুভিং টোয়ার্ড দ্য কামিং স্টিল এওেয়ে ফর্ম মার্কেট...‘যদি সেই নথ খসালি, তবে কেন লোক হাসালি’…মাঝে আবার ডলারের বিপরীতে টাকাকে শক্তিশালী করে দেয়। ব্যর্থতার জন্য হোচট খেয়ে এখন নানা অজুহাত নিতে হচ্ছে। মূল কথা আইএমএফ এর চাপে এটা করেছে। কোন দিন যেটা করেনি। বিকল্পটা ছিল ধীরে ধীরে জিনিসটাকে এডজাস্ট করা। মার্কেটে কি হয়েছে দেখুন, মানি চেঞ্জাররা বলছে, ‘ডলার নাই’ আসলে তো সব লুকিয়ে রেখেছে। তারা বলছে-‘আমাদের কাছে কোন ডিরকেশন নেই আমরা কত করে বিক্রি করব?’ এই ক্রলিং পেগের মার্জিন কত হবে তাও কি বলেছে? মার্জিনটা আবার কেন টানা হচ্ছে? যদি বাজারের ভিত্তিতে করা হয় তাহলে মার্জিন নিয়ে কথার প্রয়োজন কি? রেট যেটা আছে সেটা ঘোষণা করুন ‘অফিসিয়াল রেট’। বাজারের ওপরই একটা প্যানিক ক্রিয়েট করে দিয়েছে হঠাৎ করে।

বার্তা২৪.কম: আর্থিক সংকটের মাঝেই নতুন করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে যে সংকট সৃষ্টি হল সেটা কি তবে অদূরদর্শিতার ফল?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: অদূরদর্শিতা তো বটেই। ‘ক্রলিং পেগ’ বলে তারা আবার ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এটা ক্রলিং হয় নাকি? ক্রলিং করার কথা ছিল ১০-১৫টা দেশের ট্রেডিং পার্টনারের এক্সচেঞ্জ রেট নিয়ে একটা কম্পোজিট রেট বের করে তা নিয়ে অংক কষে বা গবেষণার মাধ্যমে নিরূপণ করা।

বার্তা২৪.কম: কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের ঢুকতে না দেওয়াকে কিভাবে দেখেন?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: সাংবাদিকদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর যদি মুখ বন্ধ করে রাখেন তাহলে বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পৃথিবীর উল্টো পথে চলছেন। যেমন ইন্টারেস্ট রিট নিয়ে বেশ কিছু দিন দ্যোদুল্যমান থেকে তারপর শেষ পর্যন্ত মানতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনৈতিক সংবাদ প্রদানের বড় উৎস। সচিবালয়ে তো রাখঢাক করে কিন্তু সেন্ট্রাল ব্যাংক পৃথিবীজুড়েই সংবাদের উৎস। সেই উৎস যদি রুদ্ধ করে দেয় তাহলে দৈনিক পত্রিকাতেই বা কি পড়ব আমরা?

বার্তা২৪.কম: একাডেমিয়ার সঙ্গে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতিনির্ধারকদের যদি এত দুরত্ব থাকে তাহলে দেশের অগ্রযাত্রায় কি ধরণের প্রভাব পড়ে?

ড. বিরূপাক্ষ পাল: আজকাল একাডেমিয়া লাগে না। আমরা অর্থনীতিবিদরা ফোরকাস্ট করি পসিবিলিটি দেখে..অন্যদের তা লাগে না। তারা যখন স্থির করেন কাজটি করবেন, ব্যস্হ-য়ে গেল! ড. ফরাসউদ্দিনও বললেন, ‘রিটায়ার্ড আমলাদের পলিটিক্সে আসা উচিত নয়। এতে কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যায় সার্ভিসে।’ কিন্তু এখন প্রবণতাটি হয়ে গেছে, সার্ভিসে বসেই চিন্তা করে কিভাবে রাজনীতিতে আসা যাবে…। নিয়োগেও যোগ্যতা হচ্ছে আনুগত্য। কটু কথা বলা লোকও যে অনেক বেশি উপকার করতে পারেন সেটা বোঝা হয় না। গেল আড়াই বছরে অর্থনীতিতে যে দূর্যোগটা হচ্ছে সেটা এই সকল অনুগত মানুষদের সৃষ্ট। এটা কোভিডেরও দোষ নয়, যুদ্ধেরও দোষ নয়। সংকটগুলো নীতি বিভ্রান্তির জন্য সৃষ্টি।

;

সোনার দামে রেকর্ড, ভরিতে বেড়েছে ১৮৩১ টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের বাজারে আবারও বেড়েছে সোনার দাম। এবার ভরিতে এক হাজার ৮৩১ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের একভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস।

আগামীকাল রোববার (১২ মে) থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।

নতুন দাম অনুযায়ী প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৮১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১১ হাজার ৯৫১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৫ হাজার ৯৬০ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৯ হাজার ৩৩৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৭ মে ২২ ক্যারেটের সোনার দাম ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৫০ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১০ হাজার ২০১ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ৯৪ হাজার ৪৫৫ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭৮ হাজার ৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এ নিয়ে গত ২৪ দিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ১৫ বার সোনার দাম সমন্বয় করল বাজুস। যার মধ্যে ৯ বার দাম কমানো হয়েছে, আর বাড়ানো হলো ৬ বার।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ২২ বার সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ১১ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ১১ বার। আর ২০২৩ সালে দাম সমন্বয় করা হয়েছিল ২৯ বার।

;

করেরহাট-চৌমুহনীসহ ৩ গ্রিড লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন শুরু



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

করেরহাট-চৌমুহনীসহ নবনির্মিত তিনটি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সফলভাবে চালু হয়েছে বলে জানিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিঃ (পিজিসিবি)।

লাইনগুলো হচ্ছে, করেরহাট-চৌমুহনী ২৩০ কেভি ফোর সার্কিট সঞ্চালন লাইন, চৌমুহনী-কচুয়া ২৩০ কেভি ফোর সার্কিট সঞ্চালন লাইন এবং চৌমুহনী-মাইজদী ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন।

শনিবার (১১ মে) দুপুর ১ টায় চৌমুহনী গ্রিড উপকেন্দ্র প্রান্ত থেকে ভোল্টেজ দিয়ে সফলভাবে চার্জ (চালু) করা হয়েছে করেরহাট-চৌমুহনী ২৩০ কেভি ফোর সার্কিট সঞ্চালন লাইন।

এর আগে, ১০ মে চৌমুহনী-কচুয়া ২৩০ কেভি ফোর সার্কিট সঞ্চালন লাইন’ এবং ‘চৌমুহনী-মাইজদী ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন’ চৌমুহনী গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে ভোল্টেজ দিয়ে সফলভাবে চার্জ (চালু) করা হয়।

নবনির্মিত লাইনগুলো জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ভুমিকা রাখবে এবং এর ফলে গ্রিডের সক্ষমতা বাড়বে। ‘করেরহাট-চৌমুহনী, চৌমুহনী-কচুয়া এবং ‘চৌমুহনী-মাইজদী’ লাইনসমূহের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৫৩ কিলোমিটার, ৫০ কিলোমিটার এবং ২০ কিলোমিটার।

পিজিসিবি’র “পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন ও ক্ষমতাবর্ধন (ইএসপিএনইআর)” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নতুন লাইনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক, বাংলাদেশ সরকার এবং পিজিসিবি সম্মিলিতভাবে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করেছে।

;