মাকে ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখতে নগদ কর্মীদের ছুটি



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এই নগরের ব্যস্ত কর্মদিবসগুলোতে তো মাকে সময় দেওয়াই কঠিন। এমনকি মা দিবস কর্মদিবসে হওয়ায় এ উপলক্ষ্যেও থাকা হয় না মায়ের পাশে। কিন্তু এবারের মা দিবসে ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষ মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ।

প্রতিষ্ঠানে কাজ করা কর্মীরা যাতে দিনটিতে মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারেন সে জন্য সকল কর্মীদের আধা বেলা করে ছুটি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুকের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।

তানভীর এ মিশুক বলেন, ‘‘আমি নিজে আমার মাকে দেখেছি যে, তিনি সন্তানের জন্য কতটা আত্মত্যাগ করেছেন। সকল মা-ই তাই করে থাকেন। আমার অনুরোধ, আজকের দিনটা অন্তত মাকে একটু সময় দিন। এ জন্য আমি আমার নগদ পরিবারের সকল কর্মীকে আজকে প্রথম বেলা কাজ করার পর পর বাসায় যেতে বলেছি, মায়ের সাথে সময় কাটানোর জন্য।’

শুধু নিজের কর্মীদের জন্য নয়, মা দিবসে নগদের গ্রাহকদের জন্যও বিশেষ ঘোষণা নিয়ে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি। দিনটি উপলক্ষ্যে দেওয়া ক্যাম্পেইনে মায়ের মোবাইলে নগদ থেকে ১০০ টাকা বা তার বেশি রিচার্জ করে বিজয়ীরা পাবেন মাকে নিয়ে ২০ হাজার টাকার শপিং, মাকে নিয়ে লাঞ্চ বা ডিনার করা এবং মাকে নিয়ে সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো বাংলাদেশেও মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করা হয়। সারা বিশ্বের সমাজ গঠনে এবং উন্নয়নে মায়েদের অসীম ভূমিকা স্মরণ করা হয় এই দিনে। কিন্তু সমস্যা হলো, রবিবার বাংলাদেশে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। ফলে সন্তানদের চাইলেও এই দিনটি মায়ের সাথে কাটানোর খুব একটা সুযোগ থাকে না। সেই সুযোগ এবার করে দিল নগদ।

নগদ মনে করে, যেসব কর্মী মায়ের কাছে থাকেন, তারা ইচ্ছে করলেই এই অর্ধদিবস ছুটি নিয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারবে। সে জন্য তার বার্ষিক প্রাপ্য ছুটি থেকে কোনো কিছু বিয়োগ করা হবে না। এ ছাড়া এই দিনটি উপলক্ষ্যে কর্মীদের মায়েদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

এমন সিদ্ধান্ত নগদের জন্য নতুন কিছু নয়। কর্মীবান্ধব এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিটি কর্মীর জন্মদিন পালন করে থাকে কেক কেটে। এছাড়া জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকল কর্মীর অর্ধদিবস ছুটি নিয়ে পরিবারের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ আছে।

কয়েকদিন আগে ভয়ানক তাবদাহের সময় মাঠকর্মীদের নিরাপদ রাখতে অভিনব সিদ্ধান্ত নেয় নগদ। যেকোনো মূল্যে কর্মীদের নিরাপদ রাখতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুক নির্দেশনা দিয়েছিলেন এপ্রিল মাসে ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণের সঙ্গে সঙ্গে শরীর ঠিক রাখার লক্ষ্যও পূরণ করতে হবে। এজন্য অফিসে কর্মীদের পোশাকের বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়। সব প্রতিষ্ঠানের মতো নগদেও কেতাদূরস্ত পোশাক পরাটা নিয়ম থাকলেও এ সময় এ নিয়মে ছাড় দেয়। ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরে অফিস করার জন্য বলা হয়।

মা দিবসের বিশেষ অফার

মা দিবসে শুধু কর্মীদের জন্য নয়, বিশাল গ্রাহক পরিবারের জন্যও অফার নিয়ে এসেছে নগদ। এই অফারে মায়ের মোবাইল নম্বরে নগদ অ্যাপ বা *১৬৭# থেকে ১০০ টাকা বা তার বেশি রিচার্জ করে দিতে হবে। এর ফলে পাওয়া যেতে পারে আকর্ষণীয় সুবিধা।

এই রিচার্জ করা গ্রাহকদের মধ্যে দৈবচয়নের ভিত্তিতে বেছে নেওয়া হবে ৫ জনকে। বিজীয়রা সুপারশপ মীনা বাজার থেকে মাকে নিয়ে ২০ হাজার টাকার শপিং করতে পারবেন। পাশাপাশি মাকে নিয়ে ফ্রি লাঞ্চ অথবা ডিনার করা এবং সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন বিজয়ী গ্রাহকরা।

১২ মে, মা দিবস থেকে শুরু হয়ে ১৬ মে অবধি চলবে এই ক্যাম্পেইন।

 

 

   

জ্বালানি খাতে অবদানের জন্য সম্মাননা পেলো এফইআরবি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
সম্মাননা গ্রহণ করছেন বার্তা২৪.কম’র সেরাজুল ইসলাম

সম্মাননা গ্রহণ করছেন বার্তা২৪.কম’র সেরাজুল ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের বিশেষ অবদানের জন্য ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) কে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে ২৪তম ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি কনফারেন্স অ্যান্ড গ্রিন এক্সপো-২০২৪ কর্তৃপক্ষ। এফইআরবির পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন চেয়ারম্যান মো. শামীম জাহাঙ্গীর।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্রেস্ট হস্তান্তর করা হয়। সিনেট ভবনে বসেছিল ২৪তম ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি কনফারেন্স অ্যান্ড গ্রিন এক্সপো-২০২৪ এর দৃই দিনের আসর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এনার্জি এবং গ্রিনটেক ফাউন্ডেশন যৌথভাবে কনফারেন্স আয়োজন করে। এতে সহযোগী হিসেবে ছিলেন, ইউএসএআইডি, স্রেডা, ইডকল ও বিএসআরইএ।


আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে কাজ করে আসছে এফইআরবি। সংগঠনটির সদস্যরা তাদের লেখনীর মাধ্যমে বিশাল অবদান রেখে চলেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আজকের উন্নয়নে সংগঠনটির অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই। সে কারণে এফইআরবিকে সম্মানিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আগামী বছর থেকে এফইআরবির সদস্যদের জন্য ফেলোশিপ প্রদানের বিষয়ে আমরা আগ্রহী।

এফইআরবি’র পাশাপাশি এফইআরবির ২০২৪-২৫ সালের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. শামীম জাহাঙ্গীর, ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান কাকন (দৈনিক আমাদের সময়), নির্বাহী পরিচালক সেরাজুল ইসলাম সিরাজ (বার্তা২৪.কম), পরিচালক (উন্নয়ন ও অর্থ) হাসনাইন ইমতিয়াজ (দৈনিক সমকাল), পরিচালক (গবেষণা ও প্রশিক্ষণ) নাজমুল হক লিখন (দৈনিক দেশ রূপান্তর) পরিচালক (ডাটা ব্যাংক) মো. ইয়ামিন (এফএপি), পরিচালক (বিনোদন ও কল্যাণ) মুজিব মাসুদ (দৈনিক যুগান্তর), নির্বাহী সদস্য আশরাফুল ইসলাম (দৈনিক নয়াদিগন্ত), হাসান আজাদ (দৈনিক কালবেলা) শাহেদ সিদ্দিকী (ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি), ফয়েজ আহমেদ খান তুষারকে (দৈনিক সংবাদ) সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।

এছাড়া এফইআরবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এনার্জি এন্ড পাওয়ার এর এডিটর মোল্লাহ এম আমজাদ হোসেনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

২৪তম ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি কনফারেন্স অ্যান্ড গ্রিন এক্সপো-২০২৪ উপলক্ষ্যে প্রদর্শনীর পাশাপাশি ৪টি উচ্চ পর্যায়ে সেমিনার আয়োজন করা হয়। এতে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী, আমলা, শিক্ষাবিদ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, উন্নয়ন সহযোগী এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত, সুইডিস রাষ্ট্রদূত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি অংশ নেন।

;

'শিল্পের ভিত বাড়াতে উদ্যোক্তাদের কাছে মুদ্রা সরবরাহ বাড়াতে হবে'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সংকোচনমূলক মূদ্রানীতি, সুদের হার বৃদ্ধি আর ক্রলিং পেগের মত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনীতির বড় কল্যাণ হবে না।

তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর পরিবর্তে উদ্যোক্তাদের কাছে ব্যাপক পুঁজি সরবরাহের মাধ্যমে দেশের শিল্পের ভিত্তি বাড়াতে হবে।

বিনিয়োগ বাড়িয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগে বাজারে সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে মূল্যস্ফীতি এমনিতেই কমে আসবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আয়োজনে বৃহস্পতিবার (২৩ মে) অনুষ্ঠিত এক ডায়ালগে প্যানালিস্টের বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত “What Lies Ahead for the Banking Sector in Bangladesh?” শীর্ষক ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

মূল প্রবন্ধে দেশের ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন অব্যস্থাপনা তুলে ধরে শক্তিশালী আর্থিক খাত গড়ে তুলতে ব্যাংকিং কমিশন গঠন, উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিসহ বিভন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন ড. ফাহমিদা।

প্যানালিস্টের বক্তব্যে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতিতে ভালনারেবিলিটি (ঝুঁকিপ্রবণতা) বাড়ছে এবং ব্যাংকিং খাতের অবস্থা ঠিক না হলে এই অস্থিরতা কমবে না।

সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না নিয়ে সাময়িক প্রয়োজনে হঠাৎ করেই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া আর্থিক খাতের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে মন্তব্য করেন সালেহিউদ্দিন।

এ সব সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক আইনি সংস্কারে উল্টো পথে হাটঁছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উদাহারণ দিয়ে তিনি বলেন, এক পরিবার থেকে ব্যাংকে সর্বোচ্চ দুই জন পরিচালক ছয় বছরের জন্য মনোনয়নের সুযোগ থাকলেও এখন তিনজন পরিচালক নয় বছর ধরে থাকতে পারছেন। আগে কোন ব্যাংকে কোন শিল্প গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান খেলাপী হলে এই গ্রুপের অন্য কোন প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারত না। এখন খেলাপী প্রতিষ্ঠানের মূল গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কয়েক বছর ধরে রিজার্ভে চাপ থাকলেও বিনিময় হার ৮২ টাকায় ধরে রাখতে ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়েছে। এখন এক সাথে ২৭ শতাংশ কমাতে হচ্ছে টাকার মান।

বাংলাদেশ ব্যাংক এখন দুষ্টের দমন শিষ্টের লালন না করে দুষ্টের পালন শিষ্টের দমন করে চলছে বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই গভর্নর।

তিনি বলেন, অতীতে মোট ঋণ সঞ্চিতির ১০ শতাংশ জমা দিয়ে ঋণ রিশিডিউলের সুযোগ ছিল। দ্বিতীয়বার ও তৃতীয়বার রিশিডিউলের জন্য এই হার আরও বাড়ত। এখন মাত্র দুই শতাংশ জমা দিয়েই এই ঋণ রিশিডিউলের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। তা ছাড়া ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ হলে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেয়া নতুন বিজনেস মডেলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন সালহউদ্দিন। এর ফলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার দুর্বলতার কারণে ব্যাংকিং খাতে এমনটা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সমঝোতা, রাজনৈতিক চাপ অতীতেও ছিল। তবে অতীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বায়ত্তশাসনের চর্চা করায় পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়নি।

ব্যাংক ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ আর নীতিমালা প্রণয়নে আলাদা সংস্থা গঠনের তাগিদ দিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক একটা সমবায় সমিতির আদলে পরিচালিত হচ্ছে। ব্যবসায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক, ও ব্যাংক পরিচালক যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কঠোর নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার তাগিদ দেন তিনি।

;

স্বাধীনভাবে কাজ না করায় ব্যাংকিংখাতে পুঞ্জীভূত সংকট বাড়ছে: সিপিডি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজে বাধা এমন কি অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা স্বাধীনভাবে কাজ না করায় ব্যাংকিং খাতে পুঞ্জীভূত সংকট বাড়ছে বলে মন্তব্য করে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর লেকশোর হোটেলের লা ভিটা হলে সিপিডি আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য সামনে কী অপেক্ষা করছে?’ শীর্ষক সংলাপে এ মন্তব্য করে সিপিডি।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, স্বাধীনভাবে কাজ না করার অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক তার স্বাধীন সত্তা হারিয়ে ফেলেছে। এর ফলে সুদের হার, ব্যাংকের লাইসেন্স, সুদ মওকুফ, খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের মত বিষয়াদির নীতিমালা বাংলাদেশ বাংকের বাইরে থেকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।

ডা. ফাহমিদা বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও সুশাসনের অভাব, নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতা, আইনি জটিলতা আর অবাধ তথ্যের অভাবে ব্যাংকিং খাতের স্বাস্থ্য ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে।

পরিস্থিতির উত্তরণে খাতভিত্তিক সাময়িক উদ্যোগের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদী সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, দৃঢ় রাজনৈতিক সংকল্প এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে নির্দেশনা না আসলে এই খাতকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না।

অনুষ্ঠানে ব্যাংকগুলোর পরিচালক নিয়োগ থেকে শুরু করে ঋণ বিতরণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা চর্চা সমুন্নত করা, দুর্বল ব্যাংকগুলোর এক্সিট পলিসি নিশ্চিত করা, অর্থ ঋণ আদালতে চলমান মামলাগুলোর দ্রুত সমাধান করার সুপারিশ করা হয়।

এ সব সমস্যার সমাধানে বরাবরের মতই একটি স্বাধীন ব্যাংকিং কমিশন গঠনেরও তাগিদ দিয়েছে সিপিডি।

সংলাপে সভাপতির বক্তব্যে সিপিডির ফেলো প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকিংখাতের অবস্থা ভালো থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও ভালো থাকবে।

আর এই খাতে চ্যালেঞ্জ দেখা দিলে সামষ্টিক অর্থনীতিতে এর গুণক প্রভাব পড়বে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে গিয়ে অর্থনীতি নতুন করে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।

মূল প্রবন্ধে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ২০১২ সালের ৪২,৭২৫ কোটি টাকা থেকে তিন গুণ বেড়ে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১,৪৫,৬৩৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর বাইরে ২০২২ সালের হিসেবে অবলোপন করা ৪৪৪৯৩ কোটি টাকা এবং রিসিডিউল করা ২১২৭৮০ কোটি টাকা যোগ করলে মোট মন্দ ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩.৭৮ লাখ কোটি টাকায়।

বর্তমাণে অর্থঋণ আদালতে ৭২ হাজারের বেশি বিচারাধীন মামলায় ১.৭৮ লাখ কোটি টাকা আটকে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই টাকা কখন পাওয়া যাবে এ বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নয়।

খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট বৃদ্ধির পাশাপাশি সব ধরনের ব্যবসার ব্যয় বাড়ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ব্যয় বৃদ্ধির জন্য সুদের হারকে দায়ী করা হলেও খেলাপ ঋণের বিষয়টি আলোচনায় আসে না। বাস্তবতা হচ্ছে খেলাপি ঋণের আশঙ্কায় ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণের আগেই একটা কুশন রাখতে হয়।

সচরাচর সরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেশি থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে পাল্লা দিয়ে খেলাপি ঋণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক। এর ফলে ব্যাংকে প্রভিশনিং ঘাটতির পাশাপাশি তারল্যের সংকট ঘনীভূত হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, গত বছরের অক্টোবর-ডিসেম্বরের সময় ৯৮৯৪১ কোটি টাকা প্রয়োজনের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর প্রভিশনিং ছিল ৭৯৬৭৯ কোটি টাকা। এ হিসেবে ব্যাংকের প্রভিশনিং ঘাটতি ছিল ১৯. ৫ শতাংশ। এ সময় ১৯২৬১ কোটি টাকা মোট প্রভিশনিং ঘাটতির মধ্যে সরকারি ব্যাংকগুলোর অংশ প্রায় সমান ছিল।

তিনি আরও বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংকিংখাতে বাড়তি তারল্য ১৬২০০০ কোটি টাকায় নেমে আসে, যা ২০২১ সালের জুনে ছিল ২৩২০০০ কোটি টাকা। এ সময় ব্যাংকের মোট তারল্যের বিপরীতে উদ্বৃত্ত তারল্যের হার  ৫২ শতাংশ থেকে কমে ৩৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাংক ব্যবস্থায় সুদের হার বাড়লেও আমানতের সুদের হার মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় অনেক নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ড. ফাহমিদা।

তিনি বলেন, সুদের গড় হার আর মূল্যস্ফীতির হার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আমানতের প্রকৃত সুদ হার ২০২০ সালের ০.০৩ শতাংশ থেকে কমে -৪.৭ শতাংশে নেমে এসেছে।

ব্যাংক ব্যবস্থায় তথ্য উপাত্তের বড় ঘাটতি রয়েছে মন্তব্য করে ফাহমিদা বলেন, ব্যাংকগুলো নিজেদের পারফর্মেন্সের তথ্য ওয়বসাইটে দেয়ার কথা থাকলেও ব্যাসেল-৩ সম্পর্কিত অনেক তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। আবার যে সব তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে, তার মান নিয়েও সংশয় রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার রুদ্ধ করার সমালোচনা করে এই অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে যে তথ্য আসছে সেগুলোর বড় অংশই সাধারণ মানুষের কাছে আসছে না। সেটার দরজাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহের জন্য আমরা মিডিয়ার ওপর নির্ভর করতাম, সেটাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সমস্ত তথ্য হাতের মুঠোয়, কম্পিউটারের একটা বাটনে থাকা উচিত। সেটা হলে সাংবাদিকদের তথ্যের জন্য কোথাও ঘুরতে হবে না।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ব্যাংকের একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েও বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন ড. ফাহমিদা। স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান এবং পরিষ্কার রোডম্যাপ ছাড়াই সাময়িক উদ্যোগ হিসেবে জোর করে মার্জার চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনেক দেশেই ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হলে অন্য ব্যাংককে তা কেনার প্রস্তাব দেয়া হয়। কোথাও জোর করে মার্জার চাপিয়ে দেয়া হয় না।

তিনি বলেন, দুটো ব্যাংক যোগ করে দিলেই হবে না। যারা চাকরি করছেন তাদের জব ইন্টিগ্রেশন, জব কালচার, প্রফেশনাল কালচার, টেকনোলজি ইন্টিগ্রেশন, তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান, অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আহসান এইচ মনসুর, সাবেক ব্যাংকার নূরুল আমিন, বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল দিপু ও সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাসহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

;

‘স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী পুরস্কার’ পেল আইবিসিএমএল



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসলামী ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (আইবিসিএমএল) দেশের পুঁজিবাজারে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মার্চেন্ট ব্যাংকার ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রদত্ত ‘‘ স্বাধীনতা সুবর্ণ জয়ন্তী পুরস্কার-২০২৩’’ লাভ করেছে।

বুধবার (২২ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বিএসইসি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী’র কাছ থেকে আইবিসিএমএলের চিফ কো-অর্ডিনেটর ও ইসলামী ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।

বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।

এসময় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোঃ আবদুর রহমান খান, বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং ড. রুমানা ইসলামসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

;