শহুরের গ্রাম দরশন



মাহমুদ হাফিজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর
জালালপুরের মাঠপ্রান্তর

জালালপুরের মাঠপ্রান্তর

  • Font increase
  • Font Decrease

দুপুরের ভাতঘুম থেকে উঠে আমরা বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি। রিসোর্টকর্মীরা রুমে রুমে নক করে খবর দিল, নিচে টমটম তৈরি। আমাদের কক্ষগুলো দোতলায়। বড় জানালা দিয়ে সামনের রাস্তার দুয়েকটি ইজিবাইক চলাচল অদূরের ফাঁকা মাঠ, দূরগ্রামের সবুজ দেখা যায়। অন্যদিকে গ্রাম্য টিনের ঘরবাড়ি। নিচে নেমে দেখি, রিসোর্টের গেটমুখে ইজিবাইক দাঁড়ানো, টমটমের দেখা নেই। প্রসঙ্গ তুলতেই বলা হলো, ইজিবাইককেই অনেকে টমটম বলে। ভাবলাম, ঘোড়ার গাড়ির টমটম হলেই বোধ হয় গ্রামপর্যটনের সঙ্গে মানানসই হতো। তবে আজ ঘোড়াও যে বাংলার গ্রামগুলো থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে!

হাওর ও গ্রামপর্যটন বিস্তারে জালালপুর ইকো রিসোর্ট

পরিকল্পনামতো, বৃন্দভ্রমণের পুরুষদল ইজিবাইকে উঠে বসল, মেয়েরা হেঁটে হেঁটে পাড়া বেড়াতে যাবে—যার পোশাকি নাম ভিলেজ ওয়াকিং ট্যুর। ইজিবাইক আমাদের নিয়ে গ্রামের পর গ্রাম আর ফাঁকা মাঠ পেরিয়ে যাত্রা শুরু করল। আমাদের বলতে পুরুষদলে আমি, কবি কামরুল হাসান ও ভ্রমণবিদ সৈয়দ জাফর। ফাঁকা মাঠের মধ্যে ইজিবাইক থামিয়ে অদূরের সবুজ গ্রামকে পটভূমি করে আমরা কিছু ছবি তুললাম। পথিমধ্যে একটি গ্রাম্যবাজার। দোকানের সাইনবোর্ড দেখে বুঝলাম, এর নাম দশপাখি বাজার। বৈকালিক হাটে হাটুরের সংখ্যা খুব বেশি না। তরতাজা শাক সবজি, ডিম, দুধ, মাছ নিয়ে পাংশুমুখে বসে আছে অজস্র বিক্রেতা। ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের এই বিরসবদন। চলতিপথে ইজিবাইকের মধ্য নানা আলাপ হচ্ছে। আলোচনার বিষয় পুরো এলাকাটি হাওর অববাহিকা বলে এখানে মেঘবৃষ্টির আশীর্বাদ সবসময়। চারদিকে ‘ভেজিটেশন’ বা সবুজপ্রকৃতির মায়াময় রূপ অপরূপ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/09/1562673357632.jpg
পুরুষ পর্যটক দলের গ্রামপর্যটন

 

আমাদের আজকের গাইড রিসোর্টের ম্যানেজার জিহান। যাওয়ার পথে সে গ্রামগুলোর নাম বলে যাচ্ছিল। পর্যটকদলে সে আজ অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার। কিছুক্ষণের মধ্যে অদূরে দৃষ্টগোচর হলো একটি নতুন সেতু। আশপাশের সবচেয়ে পরিচিত জায়গা পাইকান বাজার। লোকেদের কাছে পাইকানবাজার শেখ রাসেল সেতু হিসেবে জায়গাটির পরিচয়। নিচ দিয়ে স্রোতহীন মজা নদী। গুগলে নাম খুজে পেলাম না। লোকজন বলল, এটা আড়িয়াল খাঁ নদী। এতে পানির চেয়ে কচুরিপানা বেশি। বুঝলাম স্রোতের শক্তি নেই বলে কচুরিপানার এতটা দাপট। যা উল্লেখের তা হচ্ছে, সবুজ প্রকৃতির মধ্যে কংক্রিটের ব্রিজে লাল রঙ করে দেশের পতাকার থিমটি উদ্ভাসিত করা হয়েছে। নদীর নাম গুগলে নেই, স্থানীয়রা বলল, আড়িয়াল খাঁ। সেতুটির অন্য বৈশিষ্ট্য এটি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী আর নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলাকে যুক্ত করেছে। দু’জেলার সীমান্তসেতু। জেলাসীমান্ত দেখার জন্য এখানে সেতুটিতে সকাল বিকাল ভিড় করে থাকে মানুষ। মনে পড়ল আমার সুইজারল্যান্ডের সীমান্তশহর বাজেল (Basel) ভ্রমণের কথা। বাজেলে রাইন নদী ঘেঁষা একটি জায়গা তিনদেশের সীমান্তবিন্দু। বর্ডার ট্রায়াঙ্গেল বলা হয় থাকে। ত্রিকোণাকৃতি স্তম্ভের তিনদিকে সুইজারল্যান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্সের নাম। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলেছে সুইজারল্যান্ড।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/09/1562673491953.jpg
নদীতে কচুরিপানার দাপট

 

সেতু পেরিয়ে মনোহরদী তথা নরসিংদী জেলার পাইকান বাজার এলাকায় পৌঁছালাম। মানুষের পর্যটন আগ্রহকে আমলে নিয়ে বছরখানেক আগে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে ‘জলতরঙ্গ’ নামের পার্ক। মজা নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চরের ওপর রেস্টুরেন্ট, গোলাকৃতি একাধিক ওয়াচটাওয়ার, নৌকা ঘাট, ফুলবাগান, বিচ চেয়ার নিয়ে জলতরঙ্গ। ছোট্ট কাঠের সেতু পেরিয়ে ২৫ টাকার টিকেট কেটে ঢুকতে হয়। চেয়ার বা ওয়াচ টাওয়ারে বসে শেখ রাসেল সেতুটি নব্বুই ডিগ্রি কৌণিকে চমৎকার দেখা যায়। সবুজ পটভূমিতে লাল সবুজ রঙে সাজানোয়, সেতুর সঙ্গে পার্কের রঙসাজুয্যও নজর কাড়ে। আমাদের এর কিছুই জানা ছিল না। এসেছি জালালপুর ইকো রিসোর্টের গ্রাম পর্যটন ট্যুরের অংশ হিসাবে। রিসোর্টের প্যাকেজের মধ্যে সেতু-পার্ক অন্তর্ভুক্ত থাকায় হাওর দর্শনার্থীরা রিসোর্টের অতিথি হলেও গ্রামস্মৃতিকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/09/1562673583089.jpg
নদী থেকে শেখ রাসেল সেতু

 

আমরা সেতুতে ছবি তুলি। পার্কে ঢুকে কিছু খাই। ওয়াচ টাওয়ার ও বিচ চেয়ারে বসে নদী দেখি। ফেরার পথে প্রবেশমুখের গ্রাম্য চা দোকানে বসে দুধ চা খাওয়ার ছুতোয় অলস আড্ডায় মেতে থাকা গ্রাম্যবুড়োদের সঙ্গে গল্প করি। ইজিচালক সোহেল তাড়া দেয়, দূরের আকাশে মেঘ জমছে, যে কোনো সময় ঝুপ করে বৃষ্টি নামতে পারে।

ফিরতি পথে একদল হাঁসের ছন্দময় চলা আমাদের চোখে প্রশান্তি ঢেলে দেয়। দশপাখি গ্রামের শেষপ্রান্তের একটি গ্রাম্য পুকুরপাড়ে এই খামার। দেখি বাম দিকের ফাঁকা মাঠ থেকে উদোম গায়ের দুই হাঁসরাখাল একপাল হাঁস তাড়িয়ে রাস্তার দিকে আসছে। হাঁসদলের চলার ছন্দ তৈরি করেছে বিরল এক দৃশ্য। গাড়ি থেকে নেমে উল্লসিত হয়ে আগুয়ান হাঁসের দলটির ভিডিও করতে থাকি। স্থানীয় গ্রাম্য মানুষের কাছে এই দৃশ্য আটপৌরে... তাদের কাছে আমাদের উল্লাসমুখরতা নতুন। আমরা যখন হাঁসদলের চলাছন্দ দেখি, তারা তখন অবাক বিস্ময়ে দেখতে থাকেন আমাদের। মাঠ থেকে রাস্তায় উঠে হাঁসদল সামনে দিয়ে ডান দিকের পুকুরে নেমে ডুবসাঁতার খেলায় মেতে উঠল। দুই উদোম গা’কে জিজ্ঞেস করতেই জানাল, হাঁসের সংখ্যা চারশো। মাঠ থেকে রাতের খাওয়ার খেয়ে তাদের ফিরিয়ে আনা হলো। গোসল সেরে এখনই উঠে যাবে পুকুরপারের খামারঘরে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/09/1562673729484.jpg
হাঁসদল মাঠ থেকে খাবার খেয়ে ফিরছে

 

পর্যটকদলের কামরুল হাসান আপাদমস্তক কবি ও ভ্রমণলেখক। বহুদর্শী হলেও যা কিছু দেখেন, সদ্যভূমিষ্ঠের মতো বিস্ময়াভিভূত হয়ে দেখেন, নোট নেন। হাঁসবৃত্তান্তের নোট নেওয়া শেষ হলে আবার ইজিবাইকে চাপি। রিসোর্টগ্রাম জালালপুর এলে ইজিবাইক থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে রিসোর্টে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ইজিচালক সোহেল ও গাইড জিহানকে বিদায় দিই। সামনে জালালপুর হাইস্কুল। বৈকালিক খেলা শেষ করে ছেলেরা ঘরে ফিরতে উদ্যত। জনে জনে সাইকেল। সৈয়দ জাফর একজনের হাত থেকে সাইকেল চেয়ে নিয়ে মাঠের মধ্যে চালাতে শুরু করলেন। দেখাদেখি আমিও। চার যুগ পরে কৈশোরে ফিরে যাওয়া। ভালোই লাগল। কবি কামরুল হাসান বসে থাকবেন কেন! তিনি একটিতে চাপলেন। তিন বুড়োর সাইকেলকাণ্ডে উপস্থিত স্কুলবালকরা খুব মজা পেল। একজন জিজ্ঞেস করল, আঙ্কেলরা বুঝি রিসোর্টে আছেন। তাদের আলাপচারিতা ও শরীরী ভাষা আমাদের বোঝাল, রিসোর্টের সুবাদে হালে তারা জালালপুরে নিত্যনতুন মানুষ দেখছে। তারা একেকজন একেকরকম। মানুষের সঙ্গে আলাপ করে তাদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হচ্ছে। রিসোর্টকে তারা গ্রামের আশীর্বাদ হিসেবে নিয়েছে।

আমরা এখানকার দু’দিনের যোগী। হেঁটে গন্তব্যের পথ ধরেছি। দিগন্তরেখায় তখন সান্ধ্য রক্তিমাভা। গ্রামের মিনার থেকে ভেসে আসছে মাগরিবের আজান।

   

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় শান্তা-শাওন দম্পতি



তৌফিক হাসান, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, ট্রাভেল এন্ড ট্যুর
পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় দম্পতি

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি এক প্রাণোচ্ছল ভ্রমণপিপাসু দম্পতি পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়াতে পৌঁছান। ‘প্রতিটি প্রাণ মূল্যবান, আত্মহত্যা নয়- বাঁচতে শিখি’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চলতি বছরের গত ২৮ জুন পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে ভ্রমণ শুরুর পর শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে ভ্রমণ শেষ করেন তারা।

ব্যাংকার শারাবান তহুরা শান্তা এবং আর্কিটেক্ট আল ইমরান শাওন তাদের পেশাগত ব্যস্ততার মাঝেও এই সময় বের করে আত্মহত্যা নয় বাঁচতে শেখার প্রতিপাদ্যকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। দম্পতির ভাষ্যমতে তাদের এই ভ্রমণে তারা প্রচুর মানুষের সাথে বিশেষ করে তরুণ তরুণী এবং স্কুলের বাচ্চাদের সাথে কথা বলেছেন, দেশকে দেশের মানুষকে নতুন করে চিনেছেন এবং অনেককে নতুনভাবে চিনতে সাহায্য করেছেন ও সচেতন করেছেন। চলার এই পথে তারা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। নতুন কিছু শিখতে, মানুষকে জীবন সম্পর্কে জানাতে ও সচেতন করার অভিপ্রায় তাদের পিছু হটতে দেয়নি।

ইনানীতে কয়েকজন তরুণ তাদের স্বাগত জানায়

বার্তা২৪ কে শান্তা বলেন, বিগত ২৮ জুন আমরা হাঁটা শুরু করি টেকনাফের শাহীপরীর দ্বীপ থেকে। প্রথমদিন প্রায় ২৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে বড়ডিলের মরিসবুনিয়া স্কুলের নৈশপ্রহরীর বাড়িতে রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা হয়। সেদিন রাতে আমাদের সাথে একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। মাঝরাতের দিকে হাতির পাল আমাদের থাকার ঘরে আক্রমণ করে বসে। নৈশ প্রহরীর পরিবারের সাথে দৌড় দিয়ে স্কুল ঘরে গিয়ে উঠি এবং বাকি রাতটা আমাদের সেখানেই কাটে। দ্বিতীয় দিন ছিল ঈদের দিন, সেদিন প্রায় ৩৬ কিলোমিটার হেঁটে থেকে ইনানী বিচ পর্যন্ত যাই। ঈদের ছুটিকে কাজে লাগিয়ে ১০ দিনে ৪০০ কিলোমিটার কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত পৌঁছাই। পরের সপ্তাহে দাউদকান্দি থেকে হেঁটে ঢাকার রামপুরা পর্যন্ত আসি। অতঃপর মায়ের অসুস্থতা, পারিবারিক সমস্যা এবং অফিসের ব্যস্ততার কারণে কয়েক সপ্তাহ বিরতি নিয়ে পুনরায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হাঁটা শুরু করি। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে আরিচা হয়ে ট্রলারে যমুনা পাড়ি দিয়ে কখনো হাইওয়ে ধরে আবার কখনো লোকাল রাস্তা দিয়ে হেঁটে উত্তরের সীমান্ত তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছে ভ্রমণ শেষ করি।

 পুরো ভ্রমণে কোনো সমস্যায় পরতে হয়েছিল কিনা তার জবাবে শান্তা জানান। ফেনী ক্রস করার পর আমার স্বামী আমাকে ফেলে বেশ খানিকটা এগিয়ে যাওয়ায় ৫/৬ জন বখাটে আমাকে ঘিরে ধারে নানানভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে এবং অনৈতিক কথা বলতে থাকে। সেসময় আমি সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করায় এবং উপস্থিত বুদ্ধি খাঁটিয়ে ওদের ভয় দেখানোতে ওরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনা ছাড়া তেমন কোন সমস্যা হয়নি। তবে আমাদের দেশে পাবলিক টয়লেট না থাকে চলতি পথে ভ্রামনিকদের খানিকটা সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের দেশের মানুষজন খুব ভাল এবং সাহায্যপরায়ণ।

অনিন্দ্যসুন্দর এক রাস্তায় ভ্রামনিক শান্তা

শাওন বার্তা২৪ কে বলেন, আমরা ঐকান্তিক চেষ্টা ছিল দেশব্যাপী পায়ে হেঁটে ঘোরার এবং মানুষের মধ্যে জীবনের বানী পৌঁছে দেবার এবং শত বাধার পরেও আমরা চেষ্টা করে গেছি। ভবিষ্যতেও আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এবং মূল প্রতিবাদ্যকে মাথায় রেখে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ভ্রমণ করার ইচ্ছে আছে আমাদের। আমি বন্ধু এবং শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানাই এবং আউটডোর বিডি এর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি এই ভ্রমণে বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ ও সহায়তা দেবার জন্য।

স্কুলের বাচ্চাদের সাথে মতবিনিম

আউটডোর বিডির ফাউন্ডার জুয়েল রানা বার্তা২৪ কে বলেন, আমি নিজে একজন ভ্রমণপাগল মানুষ। আউটডোর বিডি’র উদ্দেশ্যেই হলো একজন পরিব্রাজক বা ভ্রমণকারী যাতে হাতের কাছেই সহজলভ্যে সকল ভ্রমণ সামগ্রী পান। শান্তা ও শাওন দম্পতি এই ভ্রমণ সম্পন্ন করায় আমরা খুশি এবং তাদের এই ভ্রমণ দেখে আরও মানুষ উদ্বুদ্ধ হোক আমরা সেটাই চাই।

;

ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে গোল্ড পুরস্কার পেলো এয়ার এ্যাস্ট্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
গোল্ড পুরস্কার নিচ্ছেন এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ। ছবি : সংগৃহীত

গোল্ড পুরস্কার নিচ্ছেন এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফ। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মনিটর এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার ২০২৩’- এর বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছে এয়ার এ্যাস্ট্রা।

রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত গালা অ্যাওয়ার্ড নাইটে এয়ার এ্যাস্ট্রার সিইও ইমরান আসিফের হাতে বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস ক্যাটাগরির গোল্ড পুরস্কার তুলে দেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, এমপি।

যাত্রী সন্তুষ্টির প্রতিশ্রুতির জন্য পরিচিত এয়ার এ্যাস্ট্রা ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে বর্তমানে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর এবং সিলেটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বহরে বর্তমানে তিনটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে, যা ফ্রান্সে নির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টার্বোপ্রপ এয়ারক্রাফট এবং ৭০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম।

বাংলাদেশ মনিটর তাদের বাৎসরিক কার্যক্রম হিসেবে ২০০৭ সালে বাংলাদেশে ‘এয়ারলাইন অব দ্য ইয়ার’ প্রবর্তন করে। এভিয়েশন ও পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা ‘বাংলাদেশ মনিটর’-এর জরিপের ভিত্তিতে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয়।

বিগত এক বছরে যারা কমপক্ষে তিনবার আকাশপথে ভ্রমণ করেছেন, তারা অনলাইনে নিজের পছন্দের এয়ারলাইন্সকে ভোট দিতে পেরেছেন।

;

সিলেটে একসঙ্গে ঘুরে দেখা যাবে ২৩টি পর্যটন স্পট



মশাহিদ আলী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেট। সিলেটের অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বজুড়ে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে উঁকি দিয়ে ডাকছে প্রকৃতির সৌন্দর্য। আর সেই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিপাসুরা। প্রতিদিন সিলেটে বেড়াতে আসেন হাজার হাজার পর্যটকরা।

কিন্তু পর্যটন স্পটগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব একটা ভালো না থাকায় বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয় ঘুরতে আসা পর্যটকদের। তবে এবার পর্যটক ও এই অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে নেয়া হয়েছে উদ্যোগ। দুই দিনে এক সঙ্গে ২৩টি স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন ভ্রমণপিপাসুরা।

জানা যায়, সিলেটের ৪ আসনের সংসদ সদস্য এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপির দিক নির্দেশনায় সিলেটের জেলা প্রশাসক এবং বিভাগীয় কমিশনার প্রেরিত ২০২৩ সালের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর হয়ে জাফলং পর্যন্ত একটি সড়ক তৈরির প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। আর সেই প্রস্তাবনা শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপ সম্পন্ন করেছে সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এই তিনদিন সিলেটে পর্যটকদের আনাগোনা বেশি থাকে। কারণ শুক্রবার ও শনিবার সরকারি বন্ধ থাকায় চাকরিজীবিরা আসা যাওয়া করেন। তাদের অনেকেই একদিনে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের লীলাভূমি জাফলং ও পাথর সাম্রাজ্য সাদাপাথর ঘুরে দেখতে চান। কিন্তু সময় ও ভোগান্তির কারণে তা আর একদিনে ঘুরে বেড়ানো যায় না। কারণ যেখানে মাত্র ত্রিশ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিলে জাফলং থেকে সাদাপাথর যাওয়া সম্ভব সেখানে পাড়ি দিতে হয় ১২০ কিলোমিটার। আর এই ১২০ কিলোমিটারে পাড়ি দিতে গিয়ে হাতছাড়া হয়ে যায় আর ৫টি পর্যটন স্পট। জাফলং থেকে ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর প্রতিমধ্যে পান্তুমাই, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, শ্রীপুর, শাপলা বিল, লাক্কাতুড়া চা বাগানসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখা যাবে।

সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমণকে সহজতর এবং আরামদায়ক করণে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশিত সড়কটি বাস্তবে রূপান্তরিত হলে এখানে আসা পর্যটকরা একটি সড়কে যাতায়াত করে ২ দিনে ২৩টি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন। সড়কটি নির্মাণ করা হলে সিলেটের পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে। সেই সাথে পর্যটন শিল্পে সরকারি এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও এই অঞ্চলের মানুষের কর্মস্থানের বিশাল সুযোগ তৈরি হবে।

জাফলং-কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যন্ত সড়ক তৈরির বিষয়ে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরকে নির্দেশনা দিয়ে পত্র পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপের কাজ শেষ করেছে বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর সিলেট।

এব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে তারা প্রাথমিক জরিপ কাজ শেষ করেছেন। এই প্রকল্পটির আশপাশে আরও কয়েকটি চলমান প্রকল্প থাকায় এই সড়ক নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর।

আর গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিলুর রহমান বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় জাফলং থেকে সাদাপাথর বা সাদাপাথর থেকে জাফলং যেতে হলে ভিন্ন সড়ক ব্যবহার করতে হয়।এতে করে সময় খরচ দুটিই বাড়ে।গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণে সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সড়কটি বাস্তবায়িত হলে এক সড়ক দিয়েই অনেকগুলো স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন পর্যটক দর্শনার্থীরা।

;

থাইল্যান্ড ভ্রমণে তাপ ও বৃষ্টি থেকে সাবধান!



মাজেদুল নয়ন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সাউথ ইস্ট এশিয়া, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন ঋতুর দেশ থাইল্যান্ড। বর্তমানে চলছে বর্ষাকাল। তবে বৃষ্টি যখন থাকে না তখন প্রচণ্ড রোদের তাপ। অন্তত গত এক সপ্তাহ ধরে প্রায়ই বিকেলের দিকে বৃষ্টি হচ্ছে এবং দিনের বেলায় গরমে অতিষ্ঠ হচ্ছে মানুষ।

এরই মধ্যে থাইল্যান্ডের আবহাওয়া অধিদফতর প্রয়োজন না হলে জনগণকে রোদে বের না হওয়ার জন্য এবং বৃষ্টিতে ভিজলে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়েছে। 

এমন গরম আবহাওয়ায় স্থানীয় থাই জনগোষ্ঠীর পছন্দের বেড়ানো বা সময় কাটানোর জায়গা হচ্ছে বড় শপিংমলগুলো। তবে পর্যটকদের শুধু শপিং মলে ঘুরে পোষাবে না। তাই ছাতা, ক্যাপ এবং সঙ্গে পানি রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্যাংককের তামপাত্রা ৩২ ডিগ্রী ফারেনহাইট। তবে সেটা ৪০ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে। এমন গরমে বিশেষত শিশুদের বারবার পানি পান করানো এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

জুন মাসের পর থেকে থাইল্যান্ডে পুরোপুরি বর্ষা। তবে বর্ষাতেও বৃষ্টি ছাড়াও রোদের তাপ থাকে প্রচুর। থাইল্যান্ডে বর্ষা চলবে অক্টোবর পর্যন্ত। এরপরে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্দ্র এবং শীতল। এ সময়টায় চিয়াং মাই বা চিয়াং রাইয়ের মতো উত্তর থাইল্যান্ডে পুরোপুরি শীত অনুভূত হয়। তবে গালফ অব থাইল্যান্ড এবং আন্দামানের তীরের ভূমিতে শীত কখনোই অনুভুত হয় না। বরং গরমই থাকে।

যেহেতু বাংলাদেশের পর্যটকরা বেশিরভাগই সাগর তীরবর্তী অঞ্চলে বেড়াতে যান, তাই সবসময় হালকা এবং উজ্জ্বল রংয়ের কাপড় পড়ার পরামর্শ থাকবে। কারণ এই অঞ্চলগুলোতে এবং দ্বীপগুলোতে বেশিরভাগ সময় গরমই থাকে।

এসব স্থানে ভ্রমণের সময় শিশু ও বয়স্কদের গরম থেকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই ছায়ায় থাকা, পানি পান করা, ভিটামিন সি গ্রহণ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

তবে ব্যাংকক, উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে এখন বৃষ্টির পরিমাণ অনেক বেশি। ব্যাংককে বিকেল নাগাদ ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। তাই এসময় নাইট মার্কেট বা খোলা স্থানে যাওয়ার সময় সঙ্গে ছাতা বা রেইনকোট রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর এখানে সেভেন ইলেভেনের মতো সুপারশপগুলোতে একবার ব্যবহারের জন্য ছাতা এবং রেইনকোট পাওয়া যায়।

তবে বৃষ্টিতে ভিজে গেলে পরবর্তীতে গোসল করার পরামর্শ দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ।

;