বিষন্নতা ও মানসিক চাপ কমাতে কোরআন তেলাওয়াত



মাওলানা আবদুল জাব্বার, অতিথি লেখক, ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

মানুষ নানা কারণে মানসিক চাপে ভোগেন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিকসহ কর্মক্ষেত্রের জটিলতা, বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির প্রেক্ষিতেও সৃষ্টি হয় মানসিক চাপ। অনেক সময় আবার অর্থনৈতিক সঙ্কট, খারাপ স্বাস্থ্য, ঘনিষ্ঠ কারো মৃত্যুর কারণও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।

মানসিক চাপ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ঝুঁকি সৃষ্টি করে। তাই এ চাপ কমানো জরুরি। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনেও ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জীবনে চলার ক্ষেত্রে আনন্দ-উদ্দীপনা থেকে উৎসাহী হওয়া, জীবনকে উপভোগ্য করে তোলার জন্য সহজ-সরল জীবনযাপন করা এবং তাতে সন্তুষ্ট থাকার বিষয়ে কোরআন মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।

পক্ষান্তরে সাময়িক বিনোদন যা কেবল পার্থিব অস্থায়ী আনন্দের খোরাক জোগায়, সে ধরনের বিনোদনকে ভীষণভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা এমন বিনোদন প্রকৃত প্রফুল্লতা ও আনন্দের কাছে একেবারে তুচ্ছ। কোরআনে কারিমের বর্ণনা মতে, প্রকৃত মুমিনরা সবসময় প্রশান্ত, হাসিখুশি এবং প্রাণোচ্ছ্বল থাকে। তাদের চেহারায় এই বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে হাসির মাধ্যমে।

ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, সৎ কাজ, পরকালের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস, সদয় মানসিকতা, দান-সদকা, গরিবদের সাহায্য ইত্যাদি কাজের দরুণ মুমিনরা আত্মিক ও মানসিক প্রশান্তি লাভ করে। এসব কাজ কাজ মুমিনদের অন্তরাত্মায় প্রকৃত সুখ ও প্রশান্তি জোগায়।

আরও পড়ুন<< হজ: আল্লাহপ্রেমিকদের মিলনমেলা

এসব কাজ যে শুধু দুনিয়ায় জীবনে শান্তিদায়ক তা নয়- পরকালেও এসব কাজ মুমিনের পাশে থাকবে। কিয়ামতের দিনের ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে মুমিনদের রক্ষা করবে। এটা মুমিনদের প্রতি আল্লাহতায়ালার বিশেষ দয়া ও রহমত।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা তাদেরকে সেদিনের অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে সজীবতা ও আনন্দ দান করবেন।’ –সূরা আদ দাহার: ১১

অন্যদিকে সূরা আন নাহলের ৯৭ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘পুরুষ কিংবা নারী যেই সৎকাজ করবে, সে যদি মুমিন হয়, তাহলে তাদেরকে আমি দুনিয়ায় পবিত্র-পরিচ্ছন্ন জীবন দান করবো এবং আখেরাতে তাদের প্রতিদান দেবো তাদের সর্বোত্তম কাজ অনুসারে।’

তবে জীবন-যাপনের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা থেকে কিংবা ইতিবাচক অনুভূতির ভারসাম্য থেকে বেরিয়ে যাওয়া সব দিক থেকে অপছন্দনীয় ও নিন্দনীয়। জীবন চলার ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক। আনন্দ, হাসি ও প্রফুল্লতার মাত্রা যখন ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে তখন তা ফুটে ওঠে ব্যক্তির আত্মপ্রচার, অহঙ্কার ইত্যাদির মাধ্যমে। আর এ ধরনের অহঙ্কারীদের আল্লাহ পছন্দ করেন না বলে কোরআনে কারিমের সূরা কাসাসের ৭৬ নম্বর আয়াতের শেষাংশে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘অহঙ্কার করো না, আল্লাহ অহঙ্কারীদের পছন্দ করেন না।’

বস্তুত ইসলাস মানুষের কাছে প্রত্যাশা করে, তারা যেন তাদের আবেগ-অনুভূতি ইত্যাদিকে ইতিবাচকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। কোনোভাবেই আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তা ও মানবিক অনুভূতির বিলোপ সাধন করা যাবে নাঅ। সর্বাবস্থায় ভারসাম্যপূর্ণ থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, অনর্থক শোরগোলের মধ্যে আনন্দ খুঁজে লাভ নেই। আনন্দ অনুভবের একমাত্র স্থান- মানুষের অন্তর। সুতরাং আমাদের চেষ্টা করতে হবে অন্তরকে কল্যাণ ও সততার আলোয় পরিপূর্ণ করতে এবং প্রফুল্লতার সৌন্দর্য মনে ধারণ করতে।

আরও পড়ুন: ৫০ দিনে কোরআন মুখস্থ করেছে বাগেরহাটের আম্মান

কোরআনে কারিমে প্রফুল্লতার বহু উপাদান-উপকরণের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কোরআনে বর্ণিত এসব উপাদান হতে পারে একজন মুমিনের জীবন পাথেয়। এগুলোর সাহায্যে একজন মুমিন এবং তার প্রভুর মাঝে গড়ে উঠতে পারে প্রেমের সুদৃঢ় বন্ধন, সফলতা আসতে পারে উভয় জগতে। সর্বোপরি আসমানি নূরের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠতে পারে হৃদয়ভুবন।

অভিজ্ঞ ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, খোদ কোরআন মুমিনের প্রফুল্লতার অনাবিল উৎস। কোরআন তেলাওয়াতে বাড়ে মুমিন মনের প্রফুল্লতা, পাওয়া যায় মানসিক প্রশান্তি।

বস্তুত কোরআনে কারিম যে একটি বরকতময় গ্রন্থ তা আমরা ভালোভাবেই জানি। তবুও মানুষ পিছিয়ে কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে। অথচ ইতিহাস সাক্ষী, মাত্র তেইশ বছরে আরব জাহানের বর্বর একটা জাতিকে দ্রুত সভ্যতার আলোয় বদলে দেওয়া হয়েছিলো কোরআনের বদৌলতে।

তাই, মানুষকে মনে রাখতে হবে- সৃষ্টিকূলের ওপর যেমন আল্লাহতায়ালা সম্মান ও মর্যাদা অপরিসীম। তেমনি সকল বাণীর ওপর, সকল গ্রন্থের ওপর কোরআনের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অতুলনীয়।

মানুষের মুখ থেকে যা উচ্চারিত হয়, তার মধ্যে কোরআন পাঠ সর্বাধিক উত্তম। একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সুতরাং মানসিক প্রশান্তি ও জীবনের প্রফুল্লতার জন্য, সর্বপ্রকার বিষন্নতা ও মানসিক চাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য পবিত্র এই গ্রন্থ যত বেশি সম্ভব তেলাওয়াত করা উচিত।

   

লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়রের রেকর্ড



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাদিক খান, ছবি : সংগৃহীত

সাদিক খান, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাদিক খান হচ্ছেন লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র। যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান। লন্ডনের মেয়র হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে। তখন থেকেই পদটি ধরে রেখেছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম এই রাজনীতিক।

সাদিক খানের জন্ম লন্ডনে, ১৯৭০ সালের ৮ অক্টোবর। এর দুই বছর আগে ১৯৬৮ সালে তার মা-বাবা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হিসেবে পাড়ি জমান। বাবা আমানউল্লাহ ছিলেন বাসচালক। মা শেহরুন করতেন দরজির কাজ। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদিক পঞ্চম। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় তার দাদা-দাদি ভারত থেকে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন।

সাদিক খানের পড়ালেখা ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে। বিষয় ছিল আইন। পড়াশোনা শেষে মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কম বয়সেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টির রাজনীতিতে।

১৯৯৪ সালে লেবার পার্টির হয়ে লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থ বারার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। তখন তার বয়স মাত্র ২৪ বছর। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে গর্ডন ব্রাউন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন স্থানীয় সরকারের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাদিক খান। ২০১০ সালে লেবার পার্টি বিরোধী দলে গেলে তিনি ছায়া মন্ত্রিসভায় বিচার বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী, লর্ড চ্যান্সেলর (ছায়া অর্থমন্ত্রী) ও লন্ডন-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক।

এবার তৃতীয় দফায় সাদিক খানের জয় আগামী জাতীয় নির্বাচনে লেবার পার্টির মনোবল আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবনে সাদিক খানের দুই সন্তান রয়েছে। রাজনীতির পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতিও আগ্রহ রয়েছে তার। সাদিক খানের পছন্দের খেলা ফুটবল, ক্রিকেট ও বক্সিং। ২০১৪ সালে লন্ডন ম্যারাথনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে জনপ্রিয় সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিনে বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় জায়গা করে নেন সাদিক খান।

;

রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রীর অপেক্ষায় সৌদি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে যাচ্ছেন হাজিরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে যাচ্ছেন হাজিরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ৯ মে বাংলাদেশ থেকে শুরু হচ্ছে চলতি মৌসুমের হজ ফ্লাইট। হজযাত্রীদের নিয়ে ওইদিন প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে। এর পরের দিন ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ভারত থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব যাওয়া শুরু করবেন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর ১৪ জুন থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই মক্কায় ভিড় জমানো শুরু করবেন হজযাত্রীরা। এই সময়ে কোনো উমরাযাত্রী গ্রহণ করবে না দেশটি।

এ বছর মক্কায় রেকর্ড সংখ্যক হজযাত্রীর সমাগম হতে পারে, এমন ধারণা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে সৌদি আরব।

সুন্দর ও আরামদায়কভাবে যেন হাজিরা হজ সম্পন্ন করতে পারেন সে বিষয়টি মাথায় রেখে সৌদির সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে কাজ করছে।

হজ সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো ধারণা করছে, এবারের রমজান মাসে রেকর্ড সংখ্যক ৩ কোটি মানুষ উমরা পালন করার পর- হজেও মুসল্লিদের ঢল নামবে।

সদ্য বিদায় নেওয়া রমজান মাসে মদিনার মসজিদে নববিতে ৩ কোটি ৩০ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করেছেন। রমজানে প্রিন্স মোহাম্মদ বিন আব্দুল আজিজ বিমানবন্দর দিয়ে ৯০ লাখ মানুষ মদিনায় আসেন। হজের আগে ও পরে অনেক মানুষ মদিনায় যান।

গত বছর হজপালন করেছিলেন ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৪৫ জন পুরুষ ও নারী। যার মধ্যে বিদেশির সংখ্যা ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৯১৫ ও সৌদি আরবের হাজির সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ১৩০ জন। করোনা মহামারির কারণে এর আগের তিন বছর নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু গত বছর সব বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হয়।

হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এবার হজে ২৫ লাখ মুসল্লির সমাগম ঘটবে। তাদের প্রত্যাশা এবার গতবারের তুলনায় আরও বেশি মানুষ হজ করতে আসবেন। তাই হজের প্রস্তুতি অনেক আগে থেকেই নেওয়া শুরু হয়েছে।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজপালন করতে যাবেন ৮৩ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৪ হাজার ৩০৭ জন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন।

;

মেয়ের স্মৃতি রক্ষায় নির্মিত এক মসজিদের কথা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মালেকা বানু চৌধুরী জামে মসজিদ, ছবি : সংগৃহীত

মালেকা বানু চৌধুরী জামে মসজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের বাঁশখালী মালেকা বানু চৌধুরী জামে মসজিদ ইসলামের এক অনুপম ও প্রাচীন নিদর্শন। প্রায় পৌনে ৩০০ বছরের প্রাচীন মসজিদটি মোগল স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। এর মিনার গম্বুজ মেহরাব সবই নির্মিত হয়েছে দৃষ্টিনন্দনভাবে, যা দীর্ঘদিন ধরে প্রাচীন মোগল স্থাপত্য শৈলীর উপমা হয়ে আছে।

বাঁশখালী সরল ইউনিয়নে তৎকালীন প্রভাবশালী জমিদার আমীর মোহাম্মদ চৌধুরী ১৭৩০ খ্রিস্টাব্দে তার একমাত্র মেয়ে মালেকা বানু চৌধুরীর স্মৃতিস্বরূপ এ মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। সম্রাট শাজহান যেমন তার প্রিয়তমা সহধর্মিণীকে ভালোবেসে আগ্রার তাজমহল গড়েছিলেন। আমীর মোহাম্মদ চৌধুরী তার একমাত্র কন্যার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে তার স্মৃতি ধরে রাখতেই এই মসজিদটি স্থাপন করেছিলেন।

জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলার শোলকাটা গ্রামের তৎকালীন জমিদার জবরদস্ত খাঁ ওরফে মনু মিয়ার সঙ্গে মালেকা বানু চৌধুরীর বিয়ে হয়। বিয়ের পরে শ্বশুর বাড়ি চলে আসলে মালেকার স্মৃতি ধরে রাখতেই তৎকালীন জমিদার আমীর মোহাম্মদ চৌধুরী এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে ব্রিটিশ আমলে শাসক লর্ড চার্লস কর্নওয়ালিস শাসন আমল ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে মসজিদ ও তৎসম ভূমি জমিদারিতে নিবন্ধনভুক্ত হয়।

সংস্কারের আগে ও পরে, ছবি : সংগৃহীত

আমীর মোহাম্মদ চৌধুরীর বংশধরদের মধ্যে বর্তমানে দিদারুল কবির চৌধুরী বলেন, মসজিদটি সর্বপ্রথম ১৭৩০ সালে স্থাপিত হয়। পরে জমিদারি বন্দোবস্ত হয় ১৭৯৩ সালে।

১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি প্রথম সংস্কার করা হয়। সর্বশেষ চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও এর শ্রীবৃদ্ধিকরণে বাংলা ২০১০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটিতে টালি সংযোজন সংস্কার করে একটি ফলক স্থাপন করা হয়। পরবর্তী সর্বশেষ ২০২১ খ্রিস্টাব্দে মরহুম ফৌজুল কবির চৌধুরীর ছেলেরা মূল মসজিদের পুনঃসংস্কার করে একতলা বিশিষ্ট এর বর্ধিতাংশ নির্মাণ করেন। বর্তমানে মরহুম ফৌজুল কবির চৌধুরীর বংশধরগণ মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করে আসছেন।

মালেকা বানু চৌধুরীর ভাই দেওয়ান আলী চৌধুরীর সর্বকনিষ্ঠ বংশধর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিদারুল কবির চৌধুরীর বলেন, ইতিহাস থেকে জানা যায়, মালেকা বানু চৌধুরীর পিতা আমির মোহাম্মদ চৌধুরী ছিলেন তৎকালের প্রভাবশালী জমিদার। তার আট সন্তানের মধ্যে একমাত্র কন্যাসন্তান ছিলেন মালেকা বানু চৌধুরী। তার বাবার জীবদ্দশায় মালেকা বানু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন চট্টগ্রামের আনোয়ারার প্রভাবশালী জমিদার পুত্র জবরদস্ত খা ওরফে মনু মিয়ার সঙ্গে। তাদের এই বিবাহের পূর্বে মিলন-বিরহের ঘনঘটাপূর্ণ কাহিনী যাই থাকুক না কেন বর্তমানে কয়েকশত বছর ধরে মালেকা বানু চৌধুরী জামে মসজিদটি প্রাচীন অনুপম নিদর্শন হিসেবে ইসলামের দ্যুতি ছড়িয়ে আসছে।

মালেকা বানু চৌধুরী জামে মসজিদ, ছবি : সংগৃহীত

যেভাবে যাবেন : চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে বাঁশখালীগামী যেকোনো বাসে করে বাঁশখালী উপজেলার মিয়ার বাজার স্টেশনে নেমে প্রধানসড়কস্থ পশ্চিম দিকে হারুনবাজার সড়ক দিয়ে সিএনজি অটোটেক্সি, মাইক্রোবাসে সরাসরি সরল বাজার যেতে হবে। সরল বাজার থেকে সামান্য দূরে পশ্চিম দিকে একই গাড়ী নিয়ে মালেকা বানুর স্মৃতিবিজড়িত দীঘি ও মসজিদ স্পটে যাওয়া যাবে।

;

হাদিসের ঘটনা

সত্যবাদিতার প্রয়োজনীয়তা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সততায় বরকত, ছবি : সংগৃহীত

সততায় বরকত, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বরাতে হাদিসের বর্ণনা আছে। তিনি বর্ণনা করেছেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নবীদের মধ্যে কোনো একজন জিহাদে বের হওয়ার ইচ্ছা করলেন। তিনি তার সম্প্রদায়কে বললেন, ‘যে নতুন বিয়ে করেছে এবং তার সঙ্গে বাসর করার বাসনা রাখা সত্ত্বেও যে এ পর্যন্ত তা করেনি, তেমন লোক যেন আমার সঙ্গে না যায়। এমন লোকও যেন না যায়, যে ঘর তুলেছে, কিন্তু এখনো ছাদ ঢালেনি। তেমন লোকও নয়, যে গর্ভবতী ভেড়া-ছাগল বা মাদি উট কিনে সেগুলোর বাচ্চা হওয়ার অপেক্ষায় আছে।’

এরপর ওই নবী জিহাদের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লেন। তারপর তিনি আসরের নামাজের সময় বা তার কাছাকাছি সময়ে ওই গ্রামে (যেখানে জিহাদ করবেন) পৌঁছালেন। তারপর তিনি সূর্যকে (সম্বোধন করে) বললেন, ‘তুমিও (আল্লাহর) আজ্ঞাবহ এবং আমিও (তার) আজ্ঞাবহ। হে আল্লাহ! একে তুমি আটকে দাও (অর্থাৎ যুদ্ধের ফলাফল বের না হওয়া পর্যন্ত সূর্য যেন না ডোবে)।’ সূর্যকে আটকে দেওয়া হলো। এমনকি আল্লাহতায়ালা (ওই জনপদটিকে) তাদের হাতে জয় করালেন।

এরপর তিনি গণিমতের মাল জমা করলেন। তারপর তা গ্রাস করার জন্য (আসমান থেকে) আগুন এলো, কিন্তু সে তা খেল না (ভস্ম করল না)। (এ দেখে) তিনি বললেন, ‘নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে খিয়ানত আছে (অর্থাৎ তোমাদের কেউ গণিমতের মাল আত্মসাৎ করেছে)। সুতরাং প্রত্যেক গোত্রের মধ্য থেকে একজন আমার হাতে বায়াত করুক।’

তারপর (বায়াত করতে করতে) একজনের হাত তার হাতের সঙ্গে লেগে গেল। তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে খিয়ানত রয়েছে। তাই তোমার গোত্রের লোক আমার হাতে বায়াত করুক।’ দুই বা তিনজনের হাত তার হাতের সঙ্গে লেগে গেল। তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে খিয়ানত রয়েছে।’ তারা গাভির মাথার মতো একটি সোনার মাথা নিয়ে এলো। তিনি তা গণিমতের সঙ্গে রেখে দিলেন। তারপর আগুন এসে তা খেয়ে ফেলল।

নবী কারিম (সা.) বলেন, আমাদের আগে গণিমতের মাল কারও জন্য হালাল ছিল না। পরে আল্লাহতায়ালা যখন আমাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা দেখে আমাদের জন্য তা হালাল করে দেন। -সহিহ বোখারি

;