অক্সিজেন দিতে গিয়ে অক্সিজেনের অভাবেই নৌ ডুবুরির মৃত্যু
ঢাকা: সামান কুনান (৩৮)। সাবেক থাই নৌ সদস্য। ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ চিয়াং রাই এলাকার থাম লুয়াং নং নন গুহায় আটকা পড়ার ঘটনায় গোটা থাইল্যান্ড যখন তাদের উদ্ধারে একত্রিত। এই ঘটনায় বসে থাকতে পারেন নি সাবেক নৌ ডুবরি সামানও। উদ্ধারকারী টিমের সঙ্গে যোগ দেন তিনি।
তার দায়িত্ব পড়ে গুহায় আটকা পড়া কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে অক্সিজেন সরবরাহ করার। খুদে ফুটবলারদের জীবন বাঁচাতে অক্সিজেন সরবরাহ করে নিজের ফেরার জন্য পর্যাপ্ত রাখতে পারলেন না। তাই গুহা থেকে বন্যা কবলিত ট্যানেল দিয়ে ফেরার পথে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়লেন সাবেক এই নৌ ডুবুরি।
উদ্ধারকাজে সংশ্লিষ্টরা জানান, সামান কুনান উত্তরাঞ্চলীয় চিয়াং রাই এলাকার থাম লুয়াং গুহায় আটকা কিশোরদের খাদ্য ও ঔষধ সরবরাহ করে ফেরার পথে অচেতন হয়ে পরে। অন্য উদ্ধারকর্মীরা চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি।
আরও পড়ুন, গুহায় ইন্টারনেট সংযোগ দিচ্ছে উদ্ধারকারীরা
এই ডুবুরি অনেক অগে নৌবাহিনী থেকে অবসর নেয়। গোটা বিশ্বে আলোচিত এই ঘটনায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে উদ্ধারকারীদের সাহায্য করার জন্য সামান কুনান আবারও নৌ সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন।
চিয়াং রাইয়ের ডিপুটি গর্ভনর পাসার্কন বুনিয়ালাক জানান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে গুহায় আটকা কিশোরদের সাহায্য করতে গিয়ে একজন সাবেক নৌ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহত এই ডুবুরি কাজ ছিলো অক্সিজেন সরবরাহ করা। গুহায় আটকা খুদে ফুটবলারদের অক্সিজেন সরবরাহ করে, তার কাছে ফিরে আসার মত পর্যাপ্ত অক্সিজেন ছিলো না। এ কারণেই তার মৃত্য হয়েছে।
ওয়াইল্ড বোয়ার ফুটবল দলের ১২ কিশোর ও তাদের কোচ ২৩ জুন বেড়াতে গিয়ে উত্তরাঞ্চলীয় চিয়াং রাই এলাকার থাম লুয়াং নং নন গুহায় আটকা পড়ে। কিশোরদের বয়স ১১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। গুহাটি প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ। এটি থাইল্যান্ডের দীর্ঘতম গুহার একটি। এখানে যাত্রাপথের দিক খুঁজে পাওয়া কঠিন। ভারী বর্ষণ আর কাদায় থাম লুয়াংয়ের প্রবেশমুখ বন্ধ হয়ে গেলে তারা আটকা পড়ে। নিখোঁজের পর গুহার পাশে তাদের সাইকেল এবং খেলার সামগ্রী পড়ে থাকতে দেখা যায়।
নয় দিন আটকে থাকার পর সোমবার (২ জুলাই) দুইজন বৃটিশ ডুবুরি চিয়াং রাই এলাকার থাম লুয়াং নং নন গুহায় তাদের জীবিত সন্ধান পান। পরে থাইল্যান্ডে নৌ বাহিনী গুহায় আটকা পড়া কিশোরদের ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন।
প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আটকা পড়া খুদে এই ফুটবলারদের উদ্ধার করার জন্য নানা গবেষণা করা হচ্ছে। বর্ষাকাল হওয়ায় উদ্ধার কাজে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। উদ্ধারের আগে কিশোরদের কাছে খাবার, ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করানোর জন্য ইন্টারনেট লাইন সংযোগ দেওয়ারও চেষ্টা চালাচ্ছে থাই সরকার।