সে বাঁচার যন্ত্রণাটা মৃত্যু থেকেও বেশি: শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটেয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-09-01 06:30:32

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলেও সেদিন বিদেশে থাকায় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

সপরিবারে স্বজন হারানোর পরবর্তী দিনগুলোর কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করি—এটা আমাদের দুর্ভাগ্য ছিল যে, মাত্র ১৫ দিন আগে ২টি বাচ্চাসহ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে আমি দেশ ছেড়ে গিয়েছিলাম স্বামীর কর্মস্থলে; আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম। সে বাঁচাটা বাঁচা না, সে বাঁচার যন্ত্রণাটা মৃত্যু থেকেও অনেক বেশি। ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি। অন্য দেশে রিফিউজি হয়ে আশ্রয় নিয়ে থাকতে হয়েছিল।

শুক্রবার ( ১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/16/1565965030792.jpg
১৫ আগস্টের বর্বর হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, একই দিনে আমাদের বাসা, মেজ ফুপুর বাসা, সেজ ফুপুর বাসা, ছোট ফুপুর বাসা, এমনকি ৩২ নম্বরে যে বাসায় আমি থাকাতাম সে বাসাতেও তারা গিয়েছিল। আমাদের বাড়িতে যে কয়জন থাকত সবাই খুনের শিকার। কামালকে হত্যা করেছে। আমার আব্বা যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, জাতির জনক তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে; বোধ হয় বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, কখনও বাংলাদেশের মানুষ তাকে আঘাত করতে পারে, এভাবে হত্যা করতে পারে। আমার মা কিন্তু জীবন ভিক্ষা চাননি। আমার মা যখন জেনেছেন আমার আব্বাকে হত্যা করেছে সোজা বলে দিয়েছেন, ওনাকে হত্যা করেছ, আমাকেও হত্যা কর। আমি এখান থেকে এক পা-ও নড়ব না।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভাবখানা এরকম হয়েছিল যে, এটা শুধু একটা পরিবারের ওপর আঘাত। এখানেই বোঝার ভুল ছিল, এটা একটা পরিবারের ওপর না, যাদের হত্যা করেছিল তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা, সরাসরি হাতে বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করেছে। এই হত্যাকাণ্ড ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, সেই বিজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া এবং সে বিজয়কে ধুলিস্যাৎ করে দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীদের আবার ক্ষমতায় পুনর্বাসিত করা।

সভায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে অনুঘটক হিসবে ৭২ থেকে ৭৫ সময়কালীন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধান। তাদের বোধের অভাবকে দায়ী করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সদস্য অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানসহ আরও অনেকে।

যৌথভাবে সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর