ডাকসু নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারেনি ছাত্রদল

বিএনপি, রাজনীতি

শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-24 01:56:51

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু) সম্পন্ন হয়েছে সোমবার। কেন্দ্রের ২৫টি পদের জন্য লড়েন বিভিন্ন প্যানেলের ২২৯ জন প্রার্থী। এতে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেয় ছাত্রদল। কিন্তু দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনে সামান্য প্রভাবও ফেলতে পারেনি ছাত্রদল।

সোমবার (১১ মার্চ) দিনভর ভোট হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে। একচেটিয়াভাবে জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। অপর দিকে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল একটি পদেও জয়ী হতে পারেনি।

এজন্য ছাত্রদল নেতারা সরকার, প্রশাসন ও ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন। বিএনপি ও ছাত্রদলের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে। ফলে প্রত্যাশিত ফল পায়নি ছাত্রদল। 

ঘোষিত ফলাফলে ডাকসুর ভিপি পদে নুরুল হক নুর, জিএস পদে গোলাম রাব্বানী ও এজিএস পদে জয়ী হয়েছেন সাদ্দাম হোসেন। শেষের দুজনই ছাত্রলীগের। নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই ছাত্রলীগের প্রার্থীরা জয়ী হন। এছাড়া হলগুলোতে ছাত্রলীগ ছাড়া কিছু পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।

ভোটের দিন সকাল থেকেই ঢাবি এলাকায় ছাত্রলীগের আধিপত্য দেখা যায়। এছাড়া সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রদল, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, ছাত্র ফেডারেশন একজোট হয়ে মাঠে ছিল বেশ সরব অবস্থানে। 

দলটির নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রদল তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ক্যাম্পাসের বাইরে থাকায় তার প্রভাব পড়েছে ডাকসু নির্বাচনে। যার ধাক্কা অল্প সময়ে কাটিয়ে উঠতে পারেনি সংগঠনটি।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এটাতো কোনো নির্বাচনই হয়নি। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চেয়েছেন, সেভাবেই হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন ভিপি নুরু হবে, শোভন হবে না, সেটাই হয়েছে। এতো খারাপ নির্বাচন আর কখনো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এটা নির্বাচনের নামে অপমান।’

ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘১০ মার্চ রাতেই ভোট ডাকাতি হয়েছে। ভিপি, জিএস, এজিএস সব পদেই সরকারের একটা প্রজেক্টের অংশ হিসেবে অন্যান্য নির্বাচনের মতোই হয়েছে। সবগুলো হল ছাত্রলীগের দখলে ছিল।’

ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের কী রকম প্রভাব ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যতগুলো প্রোগ্রাম ছিল সবগুলোতেই আমরা অংশগ্রহণ করেছি। নির্বাচনের সময় খুব কম ছিল। তারপরেও সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।’

দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে আসতে না পারায় নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়েছে কিনা- এমর প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল যদিও ক্যাম্পাসে বাইরে ছিল কিন্তু আমরা সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় ছিলাম। এই নির্বাচনে যদি সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ভোট দিতে পারতো তাহলে আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হতাম।’

বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘কুয়েত মৈত্রী, রোকেয়া, বেগম সুফিয়া কামাল হলে বস্তা ভর্তি ব্যালট পেপার পাওয়া গিয়েছে। যা আগের রাতেই প্রতিটি হলেই এটা করা হয়েছে। যাতে করে শাসক দলের ছাত্রসংগঠন জয় নিশ্চিত হয়। এর সাথে সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রলীগ জড়িত। গতকালের নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সৃষ্টি করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে দীর্ঘদীন ক্যাম্পাসের বাইরে রাখা হয়েছে। তার পরেও তারা যেভাবে ভূমিকা রেখেছে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী যদি ভোট দিতে পারতো, তাহলে ফলাফল ভিন্ন হতো। সরকার প্রশাসন এবং ছাত্রলীগের যৌথ প্রযোজনায় ফলাফল নির্ধারণ করা হয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর