খুলনায় ৭ কোটি টাকার টেন্ডার ভাগাভাগির অভিযোগ

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, খুলনা | 2023-08-30 08:26:16

সিন্ডিকেট রুখতে ই-টেন্ডার চালু করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এবার খুলনায় আওয়ামী লীগের দু’নেতার মধ্যস্থতায় সাত কোটি টাকার কাজ ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে জেলার দাকোপ উপজেলার কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ কাজের এ টেন্ডার নিয়ে ইতোমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট রাতে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে সম্ভাব্য দরপত্র ক্রেতাদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনেককে দরপত্র দাখিল করতে দেওয়া হয়নি। তবে বরিশালের একজন ঠিকাদার বৈঠকে হাজির না হয়ে যথারীতি দরপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাকেও ম্যানেজ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের আওতায় দাকোপের উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে পশ্চিম বানিশান্তা ও মধ্য দাকোপ প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালাবগী সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পানখালী-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজের জন্য সম্প্রতি টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারে পশ্চিম বানিশান্তা ও মধ্য দাকোপ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য তিন কোটি ২৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, কালাবগী সুন্দরবন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য এক কোটি ৫৭ লাখ নয় হাজার টাকা এবং পানখালী-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য এক কোটি ৫০ লাখ ৫১ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।

টেন্ডার আহ্বানের পর অন্তত ১৫/২০ জন ঠিকাদার প্রস্তুতি নেন। কিন্তু বিষয়টি বুঝতে পারেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান জামাল এবং মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আলহাজ।

মফিদুল ইসলাম টুটুল সম্ভাব্য কিছু ঠিকাদারকে ম্যানেজ করতে গত ১৮ আগস্ট নগরীর হোটেল ওয়েস্টার্ন ইন-এ বৈঠক করেন। তারা সেখানে কয়েকজন দরপত্র ক্রেতাকে নগদ টাকা দিয়ে দরপত্র দাখিল করা থেকে বিরত রাখেন। আবার যাদের দরপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাদের কাছ থেকে ওই দু’নেতা ৬ শতাংশ কমিশন দাবি করেন। যার কিছু অংশ আগেই পরিশোধ করা হয়।

এ বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মফিদুল ইসলাম টুটুল বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘টেন্ডারের বিষয়ে সমঝোতা করতে বসেছিলাম, কিন্তু কাজ হয়নি। বরিশালের একজন ঠিকাদার দরপত্র জমা দিয়েছেন।’

এ সময় তিনি এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ না করার অনুরোধ জানান।

গত ১৯ আগস্ট তিনটি কাজের জন্য পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের আটটি দরপত্র জমা পড়েছে। দরপত্র জমা দিয়েছে- এটিসি-এফকেটিআই (জেভি), এম. এ. জলিল খান, এমজেই+এমএসই (জেভি), আইএ অ্যান্ড এনই জেভি এবং মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স। তবে এর মধ্যে শুধুমাত্র এটিসি-এফকেটিআই (জেভি) বাদে বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠান সব টেন্ডারে অংশ নিয়েছে।

টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান ও দাকোপ উপজেলা প্রকৌশলী ননী গোপাল দাস বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘অনলাইনে দরপত্র বিক্রি করায় সিন্ডিকেটের কোনো সুযোগ নেই। তবে বাইরে কোনো মিটিং হয়েছে কি-না সেটি আমার জানা নেই। নির্দিষ্ট দিনে ১৯ আগস্ট আটটি দরপত্র জমা পড়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর