ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার নলেজেই শপথ নিয়েছি: মনসুর

ঢাকা, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 22:18:19

একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ শেষে ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার নলেজেই এটা করেছি।

শপথবাক্য পাঠ শেষে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি হিসেবে আমার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঐক্যফ্রন্টের অন্যরা যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা তা নেবেন। তবে একটা কথা বলতে পারি, আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতার নলেজেই এটা করেছি।

সুলতান মনসুর বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর প্রতিকূল অবস্থার মুখেও আমার সংসদীয় এলাকার জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। জনগণের সহযোগিতা ছিল বলেই শত প্রতিকূলতার মধ্যেও আমি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। দীর্ঘ ১৮ বছর পর আমি এই সংসদ এলাকায় আসলাম। আগেও ১৯৯৬ সালে আমি সংসদ সদস্য ছিলাম। এই ১৮ বছরে দেশের রাজনীতির সামাজিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এমপি হিসেবে আমার দায়িত্ব হচ্ছে- আমার সংসদীয় এলাকার জনগণের পক্ষে কথা বলা। সংসদ নির্বাচনে যখন অংশগ্রহণ করেছি স্বাভাবিক কারণেই সংসদে এসে কথা বলা বা সংসদে যোগদান করা হচ্ছে প্রথম কাজ।

তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতির শিক্ষাগুরু হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি যা ওয়াদা করতেন, তিনি তা রক্ষা করতেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী কর্মী। কাজেই সেই আদর্শের কর্মী হিসেবে আমি ৩০ ডিসেম্বরের পর জনসন্মুখে গণমাধ্যমে যা বলেছি, তাই কার্যকর করেছি এবং আজকে সেটা বাস্তবায়নের প্রথমিক পদক্ষেপ।

এক সঙ্গে চিঠি দিয়েও মোকাব্বির খান শপথ নেননি, আপনি নিয়েছেন; এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সুলতান মনসুর বলেন, আমি ৩ তারিখে চিঠি স্পিকারকে দিয়েছিলাম। মোকাব্বির কত তারিখে দিয়েছিলেন, সেটা তিনি বলতে পারবেন। আমি জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ছিলাম। আমি ঐক্যফ্রন্টের স্টেয়ারিং কমিটির সদস্য ছিলাম। সেই সদস্য হিসেবেই আমি স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিলাম।

ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে শপথ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি অবশ্যই সরকারি দলের প্রতিনিধিত্ব করছি না। আমি ধানের শীষ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছি। অনেকেই জানেন না, এই ধানের শীষ বা ধানের ছড়া এক সময় ছিল মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাপের মার্কা। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এটি হয়েছে বিএনপির মার্কা। বর্তমানে ২০১৯ সালে এসে এই ধানের ছড়া মার্কা বা ধানের শীষ মার্কা হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মার্কা। আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন নীতি নির্ধারক হিসেবে আমি সেই ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচন করেছি, তবে অবশ্যই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে বিএনপি একটি বড় দল, এটা স্বীকার করতেই হবে।

দল থেকে বহিষ্কার বা অন্যান্য ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা অবশ্যই, দল হিসেবে সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকুন আমার ভূমিকার অপেক্ষায়ও থাকুন। স্পিকার ৭০ অনুচ্ছেদ মেনেই শপথ পাঠ করিয়েছেন, আমিও একজন সাবেক এবং বর্তমান সংসদ সদস্য হিসেবে ৭০ অনুচ্ছেদের ব্যাখা জানি।

নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা গণশুনানিতে অংশ নিয়েছেন তাদের এলাকায় হয়তো সেরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন পঞ্চগড়ে কী হয়েছে, সেটা তো বলতে পারব না। দিনাজপুরে কী হয়েছে, সেটা বলতে পারব না। তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে ২৯২টি আসনে পরাজিত হয়েছে। আমাদের আটজন ছাড়া ওই ২৯২টি আসনে ২৯২ জন লোক নিয়েও একটা মিছিল কেউ করতে পারে নাই, করেন নাই। নির্বাচনে যদি গণভিত্তিক, সাংগঠনিক ভিত্তি মানুষকে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হতো, তাহলে আমাদের আটজনের মত হয়তো বা ফল হতে পারত।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ী বাকি সাতজনের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি চাইব, তাদের যে বক্তব্য বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যে বক্তব্য, সেটা সংসদের ভেতরে বাইরে দুই জায়গাতেই কথা উঠতে পারে, আওয়াজ হতে পারে। তখন দেশের জনগণ জানবে। তাদের আহবান জানাব, শপথ নিয়ে সংসদের ভেতরে বাইরে জনগণের দাবি নিয়ে কথা বলেন।

সুলতান মনসুর মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে বিজয়ী হন। শপথের পর কোথাও শ্রদ্ধা জানাবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ধৈর্য ধরুন, অপেক্ষা করুন, দেখুন কোথায় যাই।

আরও পড়ুন: শপথ নিলেন সুলতান মনসুর

আরও পড়ুন: মনসুরের ব্যাপারে গণফোরামের সিদ্ধান্ত বিকালে

এ সম্পর্কিত আরও খবর