শরীরের যে অংশগুলো পরিষ্কার করা প্রয়োজন নিয়মিত

স্বাস্থ্য, লাইফস্টাইল

ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল | 2023-09-01 14:19:38

নিয়মিত গোসল করা ও দাঁত ব্রাশ করা মানেই একদম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা- আমরা সবাই কিন্তু এমনটাই ভাবি এবং অবশ্যই এই ধারণাটি সঠিক। তবে নিজের শরীরের প্রতি বাড়তি যত্ন ও খেয়াল রাখার তাগিদে আরো একটু বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন। যতই সাবান, শ্যাম্পু ব্যবহার করা হোক না কেন, শরীরের কিছু অংশের যত্ন ও পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে আমরা বরাবরই অসচেতন। যার ফলে খুব দ্রুতই সেই সকল অংশে জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া।

জেনে নিন শরীরে কোন অংশগুলোর প্রতি বাড়তি মনোযোগ দেওয়া ও নিয়মিত পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন।

আরো পড়ুন: জিমে নতুন? জেনে নিন প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য

কনুই ও কনুয়ের ভাঁজ

একটু ভাবুন তো, আপনার কনুই কতগুলো নোংরা স্থানে রাখা হয় প্রতিদিন? সেই হিসেবে কনুই যেভাবে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন, সেভাবে কিন্তু রাখা হয় না। কনুই তো বটেই, কনুইয়ের ভাঁজেও জমে থাকে ময়লা ও ঘাম। যার ফলে এই দুইটি অংশেই অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। যা থেকে দেখা দেয় টিস্যু ইনফেকশন সহ নানান রকম চর্মরোগ। যে কারণে ডাঃ গ্ল্যাটার পরামর্শ দেন, প্রতিদিন গোসলের সময় লোফা কিংবা সফট স্পঞ্জের সাহায্যে কনুই ও কনুয়ের ভাঁজের অংশ ভালোভাবে ঘষে পরিষ্কার করার জন্য।

পিঠ

প্রতিদিন বডি সোপ ও সাবান দিয়ে গোসল করা হলেও, পিঠ কি পরিষ্কার করা হয়? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উত্তর হবে- না। পিঠের দিকে কিন্তু সেভাবে খেয়াল করাই নয় না। ফলে পিঠে ময়লা জমে থাকে অনেকদিন যাবত। শরীরের অন্যান্য অংশের মতো পিঠেও ঘাম হয়। ফলে সেখানেও ব্যাকটেরিয়ার জন্ম নেয়। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সোনিয়া বাত্রা সুপারিশ করেন, গোসলের পূর্বে পরিবারের কারোর সাহায্যে পিঠ পরিষ্কার করিয়ে নেওয়ার। সফট স্পঞ্জ কিংবা লোফা ব্যবহার করে প্রতি সপ্তাহে অন্তত দুই-তিন দিন পিঠ পরিষ্কার করতে হবে।

কানের পেছনের অংশ

অনেকেই কান নিয়মিত পরিষ্কার করলেও, কানের পেছনের অংশ পরিষ্কার করতে একেবারেই ভুলে যান। ডাঃ গ্ল্যাটার জানান, কানের পেছনের অংশ পরিষ্কার না করার ফলে সিবাসকাস গ্ল্যান্ড থেকে নিঃসৃত সিবাম জমে থাকে। যা স্ট্যাফ অরাস (Staph Aureus) ও করপরিস (Corporis) নামক ব্যাকটেরিয়ার অভয়ারণ্য। এই ব্যাকটেরিয়াগুলোই কানের পেছনের অংশে দুর্গন্ধ তৈরির জন্য দায়ী। যে কারণে প্রতিদিন নিয়মমাফিক কানের পেছনের অংশ সাবান কিংবা বডি ওয়াশ দ্বারা পরিষ্কার করা প্রয়োজন।

পায়ের নিচের অংশ ও আঙ্গুলের মাঝের অংশ

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সোনিয়া বাত্রা জানান, গোসল কিংবা নিয়মিত পা ধোয়াই যথেষ্ট নয়। প্রতিদিন গোসলের সময়ে পিউমিক স্টোন ও ব্রাশের সাহায্যে পায়ের নিচের অংশ ও পায়ের আঙ্গুলের মাঝের অংশ পরিষ্কার করতে হবে। কারণ স্ট্যাফ অরাস ও টিনে ক্যাপিটাস (Tinea Capitis) ব্যাকটেরিয়া পায়ে ফাংগাস তৈরির পাশপাশি বাজে গন্ধও সৃষ্টি করে।

নাভিমূল

এটা সবাইকে স্বীকার করতেই হবে, গোসল যতই পরিপাটিভাবে করা হোক না কেন, নাভিমূল পরিষ্কারের কথা কারোর মাথাতেই কাজ করে না। ডাঃ গ্ল্যাটার জানান, তুলনামূলক উষ্ণ, হাওয়া চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত ও ঘাম জমে থাকার ফলে খুব দ্রুতই নাভিমূলে ময়লা জমে যায়। তিনি পরামর্শ দেন, গোসলের সময়েই কটন বাডে সাবান মাখিয়ে ধীরে ধীরে নাভিমূল পরিষ্কার করার জন্য।

আরো পড়ুন: অ্যাসিডিটির সমস্যা: কারণ ও পরিত্রাণের উপায়

জিহ্বা

নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা ও মাউথওয়াশের সাহায্যে কুলকুচি করাই জিহ্বা পরিষ্কার রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। দাঁত ব্রাশ করার সময় মনে করে জিহ্বার উপরেও ব্রাশের আঁচড় বুলিয়ে নিতে হবে। নাইলে জিহবার ক্ষুদ্র ও উঁচু স্থানের ফাঁকে ব্যাকটেরিয়া জমে দুর্গন্ধ তৈরি করতে পারে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর