নীলাকাশ থেকে নেমেই নীল জলের অভ্যর্থনা!

, ফিচার

মানসুরা চামেলী, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-01 09:15:22

হুলু মালে, মালদ্বীপ থেকে: নীল জলের সামুদ্রিক স্বর্গরাজ্য- মালদ্বীপ। যেখানে আকাশ আর নীল জলের মিতালি! ভারত মহাসাগরের উষ্ণ যে জলে মাছ খুশিতে সাঁতার কাটে। যেখানে সূর্য তার আলোকরশ্মি ছড়িয়ে মানুষকে আলোয় ভরিয়ে তোলে। সুনীল সাগর চোখে প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে আবেশে আচ্ছন্ন রাখে। সাগরের ঢেউয়ের মূর্ছনায় হৃদয়ে এক অব্যক্ত আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায়।

ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের সড়ক

বাংলাদেশের ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ভ্রমণের সেই নৈসর্গিক রাজ্যে সরাসরি যেতে পৌনে চার ঘণ্টার আকাশ পথ! ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে করে সেই যাত্রা! প্লেনে উঠেই সবার মধ্যে সেলফি তোলার ব্যস্ততা শুরু হয়ে যায়! ছবি তোলার পাশাপাশি চলে আড্ডাবাজি- গ্রুপ ট্যুর হলে যা হয় আরকি! সেটা প্লেন হোক আর বাস! এভাবে চার ঘণ্টার তিন ঘণ্টা যেতেই ঝিমুনি ভাব আসে, কারো কারো ঘুমই চলে আসে! ‘আমরা এখন মালদ্বীপে ল্যান্ড করতে শুরু করেছি’- পাইলেটের এমন ঘোষণা। অর্থাৎ মালদ্বীপের আকাশে তখন আমাদের প্লেন। আবারও চাঙা ভাবটা ফিরে আসে সবার মধ্যে।

জেটিতে সারি সারি সাজানো স্পিড বোট

কেউ একজন পাশ থেকে বলে উঠলেন 'ওয়াও' নামতে শুরু করেছি। কিছুক্ষণ পরেই শুরু হলো মুগ্ধ হওয়ার পালা। নিচে তাকালেই চোখে পড়ে নীল স্বচ্ছ পানি বেষ্টিত সারি সারি দ্বীপ। দ্বীপগুলো সবুজে মোড়ানো। সৌন্দর্য্যের আলোক ঝলকানি! মেঘ সরে গেলে আস্তে আস্তে স্বাগত জানাতে শুরু করে নীল জলের দ্বীপ। সৌভাগ্যক্রমে যারা জানালার পাশের সিট পেয়েছে- তাদের চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস। ক্যামেরায় ধারণ করছেন সে দৃশ্য। পাশে বসা যাত্রীরাও উঁকি মেরে দেখে নিচ্ছেন নয়নাভিরাম সেই দৃশ্য।  

প্লেনের জানালা থেকে মালদ্বীপ

সবাইকে মোহিত করে উড়োজাহাজ ল্যান্ড করল মালদ্বীপের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সাগরের কোলে বসে আছে বিমানবন্দরটি। হু হু করে বাতাস বইছে, কড়া রৌদ্রজ্জ্বল দিন। বাংলাদেশিদের জন্য মালদ্বীপ সরকার অন-অ্যারাইভাল ভিসা দিচ্ছে। ঝটপট ইমিগ্রেশন শেষ করে বিমানবন্দর থেকে বের হতে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেলাম দিগন্ত বিস্তৃত নীলাকাশ ও স্বচ্ছ ঊর্মিমালার।

বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে পটে আঁকা চিত্রের মতো সেই দৃশ্যের সামনে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে গেল

চারপাশ যেন অতিরিক্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন! মাঝে মাঝে শান্তভাবে গর্জন তুলছে সাগরের ঢেউ। জেটিতে সফেদ রঙের সারি সারি সাজানো স্পিড বোট। কেউ যাচ্ছেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে, কেউ কেউ বেরিয়েছেন প্রমোদ ভ্রমণে।

বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে পটে আঁকা চিত্রের মতো সেই দৃশ্যের সামনে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে গেল। একজন সাংবাদিক বড় ভাই তার তোলা ছবি দেখে বলেই ফেললেন- ‘যেন মনে হচ্ছে- পিছনে কোন ছবির দৃশ্য রেখে আমাকে এডিট করে বসানো হয়েছে।’

হোটেলের বারান্দায় বের হলে ঝাউ গাছের আড়াল থেকে চোখে পড়ে অনন্ত নীল সিন্ধু

বিমানবন্দরে নেমেই এমন দৃশ্যের অবতারণা মালদ্বীপ নিয়ে সবার প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে তুললো। প্রত্যাশা পূরণের আশা নিয়ে হোটেলের গাড়িতে উঠলাম। আমাদের গন্তব্য তখন দেশটির ‘হুলু মালে’ নামে একটি দ্বীপে।

আরও পড়ুন: ভ্রমণ স্বর্গরাজ্যে ‘সস্তায় খাটছেন’ বাংলাদেশিরা!

আরও পড়ুন: জল ডুবুডুবু নীল দেশ মালদ্বীপ!

সাগরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা মৃসণ সড়ক হয়ে ছুটছে গাড়ি; সঙ্গে আসছে সমুদ্রের গর্জন। ১৫ মিনিটেই হোটেল ট্রপিকানা বিচ অ্যান্ড স্প্যাতে পৌঁছালাম। সমুদ্র সৈকতের পাশেই হোটেলটি। রুম থেকে শোনা যায় সাগরের গর্জন। বারান্দায় বের হলে ঝাউ গাছের আড়াল থেকে চোখে পড়ে অনন্ত নীল সিন্ধু।     

এ সম্পর্কিত আরও খবর