বহুত্ববাদ দেখতে চাইলে জগন্নাথ এলাকায় আসুন: জবি উপাচার্য

, ক্যাম্পাস

জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-03-17 20:23:55

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, বাংলাদেশে বহুত্ববাদ দেখতে চাইলে জগন্নাথ এলাকায় আসুন। এখানে আসলে আপনারা বহুত্ববাদ দেখতে পাবেন। এখানে চার্চও আছে, মন্দির আছে, মসজিদও আছে।

রোববার (১৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ যোহর দোয়া মাহফিলে উপস্থিত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় অবন্তিকার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেও দোয়া করা হয়।

উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু হিন্দু-মুসলিম সকলের সাথে সুসম্পর্ক রাখতেন। কারণ, তিনি ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করতেন। একটি দাঙ্গায় হিন্দু-মুসলিম উভয়পক্ষেরই সমান সংখ্যক মানুষ আহত হয় তখন বঙ্গবন্ধু সবার দেখাশোনা করেছেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা সবসময়ই বলতেন বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। অর্থাৎ ধর্ম নিয়ে আমরা রাজনীতি করবো না। আপনারা বার বার প্রমাণ করে দিচ্ছেন যে আপনারা ধর্মান্ধতার রাজনীতি করেন না। সেটার বড় প্রমাণ করোনা কালীন সময়ে পুরো দেশ দেখেছে। তখন হিন্দুরা মুসলিমদের দাফনে সাহায্য করেছেন এবং মুসলিমরা হিন্দুদের সৎকারে সাহায্য করেছেন।

আবেগঘন হয়ে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময়ই বলতেন আমি আমার জনগণকে ভালোবাসি। সমস্যাটা হলো আমি তাদেরকে একটু বেশিই ভালোবাসি। কিন্তু তাদেরকে বেশি ভালোবাসার ফলে তাদের মধ্যেই কাফের সৃষ্টি হলো। তারাই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করলো, ছোট্ট রাসেলকেও তারা ছাড় দিলো না।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য সাদেকা হালিম বলেন, তোমরা যেকোনো সময় তোমাদের অভিযোগ আমাকে জানাতে পারো। আমাকে ম্যাসেজ করে রাখবে। আমি তোমাদের অভিযোগ পড়ে যেভাবে হেল্প করা যায় সেটা করবো।

উপাচার্য আরো বলেন, আমাকে তো তুই বলে স্লোগান দেয়া হয়। জীবনের প্রথম আমাকে তুইতোকারি শুনতে হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি পঁয়ত্রিশ বছর শিক্ষকতা করেছি। অনেক উপাচার্যের ক্রাইসিসের মধ্যে আমি দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু কোনোদিনও কোনো উপাচার্যকে তুইতোকারি করতে শুনি নি। কেউ না কেউ ওদের শিখিয়েছে। আমি ওই শিক্ষার্থীদেরকে দোষ দিবো না। কেউ কখনো আমাকে তুইতোকারি করে কথা বলে নাই। অথচ জগন্নাথে এসে আমার তুইতোকারি শুনতে হচ্ছে।

দোয়া মাহফিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।

এর আগে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।

এরপর বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা সমিতি, বিভিন্ন সংগঠন, কর্মচারী সমিতি এর পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে একাডেমিক ভবনের নিচতলায় পুরানো ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশুদের অংশগ্রহণে ‘বঙ্গবন্ধু ও আগামীর শিশু’ শীর্ষক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন করেন তিনি।

এছাড়াও সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর