অস্থায়ী ক্যাম্পাসেই ৭ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

, ক্যাম্পাস

আহসান জোবায়ের, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-01-31 18:30:24

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সত্ত্বেও দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থানান্তর করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বারবার তাগাদা দিলেও তা আমলে নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বার বার সময় নিয়েও ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এর কয়েকটির নিজস্ব ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার সামর্থ থাকা সত্ত্বেও সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তর করছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বলছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিষয়ে কমিটি গঠন ও পরিদর্শন প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৪টি। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতেই রয়েছে ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, যার মধ্যে অন্তত ৪৭টি স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে গেছে। আবার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম না চালিয়ে ‘লিয়াজোঁ অফিসের’ নামে ঢাকায় ভাড়া বাড়িতেও শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ১৯৯৬ সালে অনুমোদিত পিপলস ইউনিভার্সিটি, ২০০২ সালে স্থাপিত স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ (ইউডা), ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি এবং ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আশা ইউনিভার্সিটি।

২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তর করতে দেশের ২২টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আলটিমেটাম দিয়েছিল ইউজিসি। তা না হলে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বেশিরভাগই স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে গেলেও এই সাতটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও যেতে পারেনি। এমনকি স্থায়ী ক্যাম্পাসে সকল কার্যক্রম স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত বছর চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তিতে জারি করে ইউজিসি। পরবর্তীতে সেই নিষেধাজ্ঞাও তুলে ফেলা হয়। নিষেধাজ্ঞা পাওয়া তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি।

জানতে চাইলে দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সরকারি রাস্তা যেখানে হচ্ছে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ভাগের এক ভাগ স্থাপনা পড়ে গেছে। সেগুলো দ্রুতই ভাঙা শুরু হবে। ফলে সরকার ক্ষতিপূরণ দিলে এরপর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ পুনরায় শুরু করা যাবে।

ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফফাত কায়েস চৌধুরী বলেন, গাজীপুর ও বছিলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনা রয়েছে। কিন্তু কোথায় স্থায়ী ক্যাম্পাস করা হবে সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। যেকোনো এক জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ইউজিসির কাছে আরও ছয় মাস সময় চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল মতিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আরেকটি ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যেই স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে যেতে পারব।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিদর্শনের জন্য একটি কমিটি গঠন করব। কমিটি পরিদর্শন শেষে এসে যে রিপোর্ট দিবে তার আলোকেই ব্যবস্থা নেব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর