ঢাবি শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি

, ক্যাম্পাস

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 14:32:16

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের বরাদ্দকৃত কক্ষে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে উঠতে এলে, বরাদ্দকৃত কক্ষে উঠতে না দিয়ে গলাধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন।

একই সঙ্গে এ ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালনে দৈনিক আজকালের খবরের সাংবাদিক আবু সাঈদ ইসিয়ামকে হেনস্তা করা হয় বলে, অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায়ও তদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। হলের আবাসিক শিক্ষক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আইনুল ইসলাম কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন আইনুল ইসলামসহ, আবাসিক শিক্ষক ইমাউল হক সরকার টিটু ও সংশ্লিষ্ট ফ্লোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী আবাসিক শিক্ষক হারুনুর রশিদ।

এদিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা জোরপূর্বক বের করে দেয়ার ২৪ ঘণ্টার পরও সেই কক্ষে উঠতে পারেননি গণযোগাযোগ ও সংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনে শিক্ষা সাইফুল ইসলাম। এ ঘটনায় হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি অভিযোগও দেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, আমি সাইফুল ইসলাম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মুহসীন হলে সংযুক্ত একজন শিক্ষার্থী। অদ্য ৫৬২নং কক্ষ বরাদ্দ পাওয়ার পর আমি কয়েকজন বন্ধুসহ কক্ষটিতে অবস্থান করছিলাম। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে আমার পরিচয় জানতে চায়।

তিনি আরও লিখেছেন, আমি বৈধ শিক্ষার্থী মর্মে হলের পরিচয়পত্র দেখালেও তারা আমাকে মারধর করে বের করে দেয়। এ সময় শরিফুল (ম্যানেজমেন্ট, ২০১৯-২০) সহ আরও কয়েকজন আমাকে মারধর করে। এসময় সাখাওয়াত অভি (সমাজকল্যান, ২০১৮-১৯), শেখ ইমরান ইসলাম ইমন, টিএইচএম, ২০১৮-১৯), মুনতাসির (ইসলামিক স্টাডিজ, ২০১৯-২০), সাখাওয়াত হোসেন শান্ত (আইইআর, ২০১৬-১৭) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলো এবং আমাকে টানা হেঁচড়া করে কক্ষ থেকে বের করে দেয়। পরে তারা জোরপূর্বক দখল করে করতে কক্ষে অবস্থান থাকে।

বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে উল্লেখ করে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও পুনরায় ওই কক্ষ ফেরত পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ দেবার ২৪ ঘণ্টা গড়ালেও হল প্রশাসের দায়িত্বশীল কেউ যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন সাইফুল ইসলাম। ঘটনার পর ৫৬২নং কক্ষটি তালাবদ্ধ রেখেছে হল প্রশাসন। নিজ কক্ষে থাকতে না পারায় তিনি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন বলে জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, আমি অভিযোগটি পেয়েছি এবং প্রক্টরকে অবহিত করেছি। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আমরা ইতিমধ্যে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত রিপোর্ট পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী জানান, ঘটনাটি আমি অবগত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে প্রভোস্ট মহোদয়ের সঙ্গে আমার একাধিকবার কথা হয়েছে। আমাদের একজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। হল প্রশাসন এ বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রক্টর অফিস সে সহায়তা দেবে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাইফুল ইসলাম নামে ওই শিক্ষা, তার নামে বরাদ্দ ৫৬২ নং কক্ষ থেকে বের করে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হোসেনের অনুসারী। একই সাথে হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের রাজনীতি করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর