ধর্মনিরপেক্ষ নববর্ষ

  ‘এসো হে বৈশাখ’


কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
মঙ্গল শোভাযাত্রা/ ছবি: নূর এ আলম

মঙ্গল শোভাযাত্রা/ ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪৩০ বঙ্গাব্দের সর্বশেষ সূর্যটা ওঠে আবার ডুবেও গেছে। দিনটাও শেষ, প্রতিদিনের মত রাত ১২টায়। ১৪ এপ্রিল ভোরে যে সূর্য ওঠবে ওটা নতুন বছরের। শনিবার দিন শেষে মাঝরাতে যে দিন শুরু ওটা নতুন বছরের; ১৪৩১ বঙ্গাব্দের।

নতুনে আমাদের চাওয়া কী—এনিয়ে ভাবছি না; পুরনোয় আমাদের হতাশা কী—এনিয়েও ভাবছি না। স্বাভাবিক জীবনের স্বাভাবিক দিন-রাত, ঘূর্ণাবর্ত। আমাদের কী চাওয়ার সে আলোচ্য নয়, আলোচ্য হলো আমাদের বাঙালিয়ানা আর উদযাপন। সকলেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করুক। সর্বজনীন হোক সে উৎসব, সে উদযাপন। এখানে কূপমুণ্ডক আছে, থাকবে; থাকুক। তবু তাদের চপেটাঘাত করে বাঙালির নববর্ষ আপন আলোয় ভাস্বর হোক, হবে।

প্রতিবছরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখে লক্ষ লোক রাস্তায় নামবে, এটা তাদের কাছে উৎসব। এই বেরিয়ে আসা মানুষদের সবার মধ্যে বাঙালিয়ানা খুঁজে নেওয়া অর্থহীন। এক দিনে, এক উৎসবে, এক আলিঙ্গনে শুদ্ধতা সম্ভব না—এর জন্যে সময়ের দরকার। গত কয়েক বছরে মানুষ এভাবে রাস্তায় উৎসব উৎসাহে বেরিয়ে আসছে বলে কূপমুণ্ডকেরা গর্ত লুকাচ্ছে, উঁকি দিচ্ছে আবারও আপন আশ্রয় ভেবে খুঁজে নিয়েছে সে গর্ত। এটা আমাদের আশাবাদের জায়গা। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

গ্রামাঞ্চলেও দেখেছি পহেলা বৈশাখের দিনে আজকাল মানুষজন নতুন জামা কেনে। ঈদ-পূজার বাইরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে ক্রমশ এটাকেও উৎসব হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মানসিকতা দারুণ এক আনন্দের। এভাবেই বদলে যাবে, আগে উৎসাহে উৎসব করে, পরে এর ভেতরের মধু খুঁজে নিয়ে।

এবার পহেলা বৈশাখের ছুটির আগে ছিল দীর্ঘ ঈদের ছুটি। ঈদ, সাপ্তাহিক ছুটি, পহেলা বৈশাখের ছুটি মিলিয়ে টানা পাঁচদিনের ছুটি উদযাপন করছে মানুষ। এই ছুটি জরা-খরা, অপ্রাপ্তি ভেঙে নূতনের পথে আবাহনের। ডিএল রায়ের ভাষায়—❛নূতন আলোকে নূতন পুলকে/ দাও গো ভাসায়ে ভূলোকে-দ্যুলোকে/ নূতন হাসিতে বাসনারাশিতে/ জীবন মরণ ভরিয়ে দাও...❜ এই আবাহন, এই আহ্বান কাঙ্ক্ষিত, অতি-কাঙ্ক্ষিত মানুষের, অন্তর্গতও বটে। এরবাইরে বহিঃস্থ রূপ অনেকটাই মুখোশের দৃশ্যায়ন।

এই সময়ের বাঙালি-মানস অনেকটাই বিভক্ত। বাঙালি জাতিসত্তার একজন হয়েও অনেকেই নিজেদের শেকড় অস্বীকার করে। ধার করা কিংবা আমদানি করা সংস্কৃতিকে নিজেদের সংস্কৃতি প্রকাশে মরিয়া একদল। উচ্চকণ্ঠ যারা তারা অন্যের উৎসব সহ্য করতে পারে না। এখানে বারবার আক্রমণের শিকার বাঙালির সংস্কৃতি, বাঙালির উৎসব। আছে ধর্মীয় ব্যাখ্যা। পহেলা বৈশাখের উদযাপনকে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি বলে উচ্চকণ্ঠ যে শ্রেণির লোকজন তাদের অনেকেই আবার ধর্মীয় সংস্কৃতিকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করায় যখন তখন। কেবল পহেলা বৈশাখ নয়, একদল লোক দেশে এখন দাঁড়িয়ে গেছে যারা ইসলাম ধর্মের পবিত্র শবে বরাত ও ২৭ রমজানের শবে কদর পালন নিয়েও প্রশ্ন তোলে। প্রশ্ন তোলে গুরুজনদের পা ছুঁয়ে করা কদমবুসিকেও। নামাজ শেষে করা মোনাজাতও অনেকের কাছে অশুদ্ধ। কাপড় কোথা পর্যন্ত পরা হবে এনিয়েও আছে বিবিধ বিতর্ক। এই বিতর্ক, বিভক্তির যতটা না প্রাসঙ্গিক কিংবা যৌক্তিক, তারচেয়ে বেশি গোষ্ঠীবদ্ধ প্রচারণা।

ধর্মও যেখানে প্রশ্নের মুখে তাদের কাছে, সেখানে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ নিয়ে প্রশ্নও অস্বাভাবিক নয়। অথচ ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখ একটি ❛ধর্মনিরপেক্ষ নববর্ষ❜। কারণ নানা আলোচনা-গবেষণা শেষে বাংলাদেশ নির্ধারণ করেছে কবে হবে বাংলা নববর্ষ। এখানে তাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে কিছুটা পার্থক্য। বাংলাদেশে বাংলা নববর্ষ যখন ১৪ এপ্রিল, তখন ভারতে সেটা ১৪ অথবা ১৫ এপ্রিল। বাংলাদেশ বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং রাষ্ট্রীয় বিশেষ দিনগুলোকে বঙ্গাব্দ-খ্রিস্টাব্দের একই তারিখে রাখতে সংস্কারকে গ্রহণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গ সংস্কারকে গ্রহণ করেনি, ফলে তাদের কাছে নববর্ষ এখনো ধর্মীয় দিনপঞ্জিকা। হতে পারে তাদের ইতিহাসের সঙ্গে ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চের যোগ নেই বলে তাগিদও নেই।

কয়েক বছর আগে ডয়চে ভেলেতে প্রকাশিত একটা সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদনে বাংলা একাডেমির সাবেক পরিচালক ফরহাদ খান ❛কেন ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ পহেলা বৈশাখ হিসাবে বেছে নিয়েছিল❜ তার একটা যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন—❛অবিভক্ত বঙ্গদেশে নবদ্বীপের পণ্ডিত স্মার্ত রঘুনন্দন বাংলা পঞ্জিকা সংস্করণ করেন। এরপর ১৮৬৯ সালে আবারও সংস্করণ হয়। পরে সেটা মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত হয়। এরপর ১৮৯০ সালে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে পঞ্জিকার প্রকাশ চলতে থাকে। ১৯৫২ সালে মেঘনাদ সাহাকে ভারত সরকার পঞ্জিকা সংস্কারের দায়িত্ব দেন। তিনিই শকাব্দ সংস্কার করেন। সেই শকাব্দ অনুযায়ী পয়লা বৈশাখ ১৪ এপ্রিল। মেঘনাদ সাহার এই সংস্কার বাংলাদেশেও ব্যাপক নাড়া দিয়েছিল। ১৯৬৩ সালে বাংলা একাডেমি ড. শহীদুল্লাকে সভাপতি করে পঞ্জিকা সংস্কার শুরু করে। আগে ৩০, ৩১, ৩২ দিন ছিল। তারপর ঠিক হয়, প্রথম ৫ মাস ৩১ দিনের, বাকি ৭ মাস ৩০ দিনের হবে। এরপর ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশে আবারো পঞ্জিকা সংস্কার করা হয়। সেই পঞ্জিকা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত। এতে বৈশাখ থেকে ভাদ্র হলো ৩১ দিনে, আশ্বিন থেকে চৈত্র হলো ৩০ দিনে আর খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডারের লিপ ইয়ারে ফাল্গুন মাস ৩১ দিনের হবে। অর্থাৎ যে বছর খ্রিষ্টীয় সনে লিপইয়ার, সে বছর বাংলা সনেও লিপইয়ার। এ সংস্কারের ব্যাপারটি যখন আনা হয়, তখন আমাদের গৌরবময় মাস, আমাদের শোকের মাস, আমাদের বিজয়ের মাস, ১৯৭১ সালকে মনে রাখা হয়েছিল। ১৯৭১ সালে আমাদের যেমন ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চ, ২১ ফেব্রুয়ারির যে প্রতিসঙ্গী খ্রিষ্টীয় সবের দিনগুলো, সেগুলোকে এক রাখার জন্যই বাংলা একাডেমি এই সংস্কারটা করে। এতে এখন যেটা দাঁড়িয়েছে, সরকারি পঞ্জিকা অনুসারে ২১ ফেব্রুয়ারি হলো ৯ ফাল্গুন, ২৬ মার্চ হলো ১২ চৈত্র এবং ১৬ ডিসেম্বর হলো ২ পৌষ। এর কোনোদিন এর হেরফের হবে না।❜ [ডয়চে ভেলে, ১৬ এপ্রিল ২০১৮]

বাংলা বর্ষপঞ্জিকা নিয়ে বাংলাদেশের যে সংস্কার সেটাকে দেশের ইতিহাসকে উপজীব্য করে। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ সরকারি নথিতে বাংলায় তারিখ লেখা শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই নিয়ম জোরদার হয়। ১৯৮৭ সাল থেকে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে শহীদুল্লাহ কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করে বাংলা দিনপঞ্জিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হলেও অধিবর্ষ গণনার ক্ষেত্রের জটিলতা দেখা দেয়। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হারুন-উর-রশিদকে প্রধান করে পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ, ভাষা, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের প্রাজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এই কমিটি মেঘনাদ সাহা ও শহীদুল্লাহ কমিটির মূল সুপারিশের নিরিখে ২০টি সুপারিশ পেশ করে। তারপরেও জাতীয় দিবসগুলোয় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ও বাংলা বর্ষপঞ্জি মূলানুগ হয়নি। ফলে ২০১৫ সালে বাংলা বর্ষপঞ্জির অসামঞ্জস্য দূর করে পুরোপুরি বিজ্ঞানভিত্তিক এবং জাতীয় দিবসগুলোকে মূলানুগ করতে এবার তৃতীয়বার সংস্কার কমিটি করা হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানকে সভাপতি করে গঠিত ওই কমিটিতে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক অজয় রায়, পদার্থবিজ্ঞানী জামিল চৌধুরী, অধ্যাপক আলী আসগর, একাডেমির পরিচালক অপরেশ কুমার ব্যানার্জি প্রমুখ। এই কমিটির সংস্কারকে ১৪২৬ বাংলা থেকে বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে।

২০১৯ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বাংলা বর্ষপঞ্জি নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। ১৯৯৫ সালের সংস্কার অনুযায়ী বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র—বছরের প্রথম এই পাঁচ মাস ৩১ দিন গণনা করা হতো। কিন্তু ১৪২৬ বঙ্গাব্দ থেকে ফাল্গুন মাস ছাড়া অন্য পাঁচ মাস ৩০ দিনে পালন শুরু হয়েছে। ফাল্গুন মাস হচ্ছে ২৯ দিনের, কেবল লিপইয়ারের বছর ফাল্গুন ৩০ দিনের মাস হবে। সবশেষ এই সংস্কারের কারণ সম্পর্কে বাংলা একাডেমির গবেষণা, সংকলন এবং অভিধান ও বিশ্বকোষ বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেছিলেন, ❛২১ ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চের মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস সমূহ বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী যে দিনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই দিনে পালন করা হবে।❜ অর্থাৎ ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা বর্ষপঞ্জিকায় তখন যে দিন ছিল আজীবন বাংলাদেশ সেই একই তারিখে এখন থেকে পালন করে যাবে।

বাংলা বর্ষপঞ্জিকা সংস্কার এবং বাংলা নববর্ষের এই তারিখ নির্ধারণ এবং উদযাপনের সঙ্গে যারা সংকীর্ণ দৃষ্টির প্রচারণায় বিভাজনের চেষ্টা চালায় তারা যে ভুল এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ তাই ধর্মনিরপেক্ষ নববর্ষ। এটা গৌরব আর ইতিহাস ঠিক যে দিনে ঘটেছিল সে দিনকেই মহিমান্বিত করতে।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা বর্ষপঞ্জিকার ওই সময় যে তারিখে ঘটেছিল আজীবন বাংলাদেশ সে একই তারিখ পাচ্ছে নতুন সংস্কারে। একইভাবে ১৬ ডিসেম্বর, ২৬ মার্চসহ সকল জাতীয় দিবস, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম-মৃত্যুর তারিখও দুই ক্যালেন্ডারে হয়েছে মূলানুগ।

❛❛রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি/ আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ/ মায়ার কুজ্ঝটিজাল যাক দূরে যাক।❜❜

শুভ নববর্ষ ১৪৩১!

   

জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ দিবে ফ্রান্স



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ দিবে ফ্রান্স

জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ দিবে ফ্রান্স

  • Font increase
  • Font Decrease

ফ্রান্স সরকার বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৩০০ মিলিয়ন ইউরো ঋণ প্রদান করবে।

এ লক্ষ্যে সোমবার (২০ মে) বাংলাদেশ সরকার ও ফ্রেঞ্চ ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এএফডি) ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর করেছে। এই অর্থ মূলত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় করা হবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এএফডির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সেসিলিয় কর্টসি সিএফএ চুক্তিতে সই করেন।

ঋণ চুক্তির আওতায় এই অর্থ জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের বিরুদ্ধে কার্যকর ও শক্তিশালী ভিত্তি প্রস্তুত করা এবং জলবায়ু-সহিঞ্চু ও স্বল্প কার্বন নিঃসরণ ভিত্তিক অগ্রযাত্রায় ব্যয় করা হবে।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;

সিলেটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, মোটরসাইকেলে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবিঃ বার্তা২৪.কম

ছবিঃ বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (২০ মে) পৌঁণে ১০টার দিকে শুরু হয়ে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়েছেন দুজন। এসময় একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর ও তিনটি মোটরসাইকেল আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

এঘটনায় আহত দুজন হলেন -রোহান (৩৮), রাজু (২৪)। তারা দুজনেই সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের অনুসারী সিলেট সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি পিয়াং সোম ও সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদের অনুসারী রোহানের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে রাত পৌনে ১০টার দিকে হাউজিং স্টেট এলাকায় একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে সোমবার রাত ১০টার দিকে রোহানসহ তার পক্ষের নেতাকর্মীরা নগরীর দাঁড়িয়াপাড়া এলাকায় মোটরসাইকেল করে পিয়াংয়ের খোঁজ নিতে এলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে রোহানের পক্ষের তিনটি মোটরসাইকেল আটকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এসময় রোহান ও রাজু নামে দুজন আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এব্যাপারে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমদ জানান, তারা দুজনেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে ঢাকায় অবস্থান করছেন। সিলেটে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলার বিষয়টি শুনেছেন। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখান থেকে আগুনে দগ্ধ তিনটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে ও দুজন আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;

গফরগাঁওয়ে আগুনে পুড়ল ২ ভাইয়ের ঘর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
গফরগাঁওয়ে আগুনে পুড়ল ২ ভাইয়ের ৪ ঘর

গফরগাঁওয়ে আগুনে পুড়ল ২ ভাইয়ের ৪ ঘর

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে ২ ভাইয়ের ৪ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ১২লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা।

সোমবার (২০ মে) রাত সোয়া ৯টার দিকে উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের পাতলাশি গ্রামের বেপারী বাড়িতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেপারী বাড়ির পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে আগুন লেগে সালাম বেপারী ও তার ভাই সামাদ বেপারীর বসত ঘরে ছড়িয়ে যায়। স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে নিজেরাই আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌছানোর আগেই স্থানীয়রা এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে ৫টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী সালাম বেপারী বলেন, দুই ভাইয়ের পরিবারের প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আসবাবপত্র ও নগদ অর্থ পুড়ে সব শেষ কিছুই উদ্ধার করতে পারিনি।

নিগুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মৃধা বলেন, ওই দুটি পরিবার খুব গরিব। এক জন নরসুন্দা ও অন্যজন রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
আগুনে ওদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল।

ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রামপ্রসাদ পাল বলেন, স্টেশন থেকে ঘটনাস্থল অনেক দূরে। তাছাড়া রাস্তাঘাটের অবস্থা তেমন ভাল না। তাই, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;

প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান বলেছেন, শুধু নগরকেন্দ্রিক উন্নয়নে আবদ্ধ না থেকে প্রান্তিক পর্যায়ে দক্ষ এসএমই উদ্যোক্তা তৈরি ও তাদের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনকে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন ঋণ দিবে, তাকে তো কিছুর উপর ভিত্তি করে ঋণ দিতে হবে। সেটা যে অংকের ঋণ হোক। ২০২৪ সালে এসে শুনতে হয় আমি ব্যবসার হিসাব রাখতে পারছি না। কত টাকার মালামাল বিক্রি করছি, কত টাকার কিনছি তার হিসাব রাখতে পারছি না। যে জন্য ব্যাংকে যেতে পারছি না। খাতা বা মোবাইলে বিভিন্ন এ্যাপের মাধ্যমে হিসাব রাখা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে উদ্যোক্তারা অনলাইন ও ইউটিউব থেকে ব্যবসার অভিজ্ঞতা নিতে পারে।

সোমবার (২০ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসএমই মেলায় আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর বাজেটে একশ' কোটি টাকা রাখা হয় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য, সেটা ব্যবহার হয় না। উদ্যোক্তারা যদি আরও তৎপর হন, তাহলে তাদের ব্যবসার অর্থায়নের যথেষ্ট সুযোগ আছে। আমরা স্মার্ট ফাইন্যান্সিং করছি। পাঁচ বছর পর ব্যবসা কোথায় নিবেন, সে বিষয়ে পরিকল্পনা থাকতে হবে। সরকারের দেওয়া সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপান্তরকারী নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার শিল্পনীতি-২০১৬ ও এসএমই নীতিমালা-২০১৯ প্রণয়ন করেছে। এসডিজি-২০৩০, রূপকল্প-২০৪১, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন নীতিমালা ও কৌশলপত্রে এসএমই খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক মো: মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুলেখা রানী বসু।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী।

সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে সিটি ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ,এসবিকে টেক ভেঞ্চারের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির, ব্রাক ব্যাংকের হেড অব এসএমই মো: জাকিরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সেমিনার শেষে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এসএমই মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন ও উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলেন।

  ‘এসো হে বৈশাখ’

;