কোরবানির গোশতের সামাজিক বণ্টন



মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোরবানির গোশত কোরবানিদাতার ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিলি-বণ্টন করা ঐতিহ্যবাহী রেওয়াজ। ইসলামের শুরু থেকেই এভাবে চলে আসছে। সামাজিকভাবে সমাজপতিদের নেতৃত্বে কোরবানির গোশত বণ্টনের কোনো দৃষ্টান্ত অনুসরণীয় প্রথম তিন যুগে পাওয়া যায় না। তার পরও নতুন চালু হওয়া এ সামাজিক বণ্টন প্রথা বেশ দ্রুত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।

প্রচলিত সামাজিক বণ্টনের ধরণ, স্থানভেদে সামান্য ভিন্নতার সঙ্গে অনেকটাই এমন- প্রত্যেক কোরবানিদাতা তার কোরবানির গোশতের এক তৃতীয়াংশ মসজিদে দিয়ে আসেন। মসজিদ কমিটির নেতৃত্বে সবার জমাকৃত গোশত সমাজের সবার মাঝে সমান করে বণ্টন করা হয়।

এ পদ্ধতির একটাই মাত্র সুবিধা, তা হলো- কোরবানিদাতার বাড়িতে ভিক্ষুকদের ভিড় থাকে না এবং কোরবানিদাতাকে গোশতের ব্যাগ নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেতে হয় না। এ সুবিধার কারণেই মূলত কোরবানিদাতাদের অনেকেই এ পদ্ধতিকে পছন্দ করে থাকেন। কিন্তু এ পদ্ধতির বেশ কিছু শরয়ি সমস্যা রয়েছে। সেগুলোর অন্যতম হলো-

>> ইসলামের প্রথম তিন যুগের অনুসৃত পদ্ধতি বদলে যাচ্ছে।

>> কোরবানি একটি ব্যক্তিগত ইবাদত, দলবদ্ধ ইবাদত নয়। কিন্তু প্রচলিত গোশত বণ্টন পদ্ধতির জেরে কোরবানি দলবদ্ধ ইবাদতের রূপ পরিগ্রহ করছে।

>> কোরবানির গোশত আদৌ বিতরণ করা হবে কি-না, বিতরণ করা হলে কতটুকু অংশ বিতরণ করা হবে তা সম্পূর্ণ কোরবানিদাতার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। শরিয়ত তাকে কোনো কিছুতেই বাধ্য করেনি। কিন্তু প্রচলিত সামাজিক বণ্টন পদ্ধতিতে সমাজপতিরা কোরবানিদাতার এ ঐচ্ছিক অধিকার হরণ করে। গোশতের নির্ধারিত একটি অংশ সামাজের জন্য দিতে তাকে বাধ্য করা হয়। কোথাও কোথাও তো গোশত না দিলে সমাজচ্যুত করার হুমকিও দেওয়া হয়। আবার কোথাও জোরাল কোনো হুমকি না থাকলে সমাজের লোকদের বাঁকাদৃষ্টি ও তীর্যক মন্তব্যের ভয়ে সমাজপতিদের নির্ধারিত অংশ দিতে কোরবানিদাতা বাধ্যবাধকতা অনুভব করেন। যা আল্লাহতায়ালা বাধ্য করেননি, আল্লাহ যা ঐচ্ছিক রেখেছেন সমাজ ও সমাজপতিরা তা বাধ্য করার অধিকার কিভাবে পায়?

>> মসজিদের মাসিক চাঁদা, মুষ্ঠির চাল না দিলে কোরবানির গোশতের ভাগ না দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অপরদিকে যারা মসজিদের মাসিক চাঁদা, মুষ্ঠির চাল ইত্যাদি দিয়ে আসছেন তারা এ সূত্র ধরে গোশতের ভাগকে নিজের প্রাপ্য অধিকার জ্ঞান করে। দ্বি-পাক্ষিক বস্তু আদান-প্রদানে যখন একটি অপরটির ওপর নির্ভরশীল থাকে- তখন স্পষ্টই তা বেচাকেনা। অতএব, প্রচলিত সামাজিক বণ্টনে সারা বছরের মাসিক চাঁদা ও মুষ্ঠির চালের বিনিময়ে কোরবানির গোশত বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ এ মাসয়ালা সবাই জানে যে, কোরবানির গোশত বিক্রি করা নাজায়েয। না জেনে বিক্রি করে থাকলে তার মূল্য অথবা সেই পরিমাণ গোশত কোরবানির বাইরে থেকে গরিবদের মাঝে দান করা ওয়াজিব।

>> অন্য সমাজের মসজিদে নামাজ পড়লে কোরবানির গোশতের ভাগ না দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় কোথাও কোথাও। অথচ কোরবানির গোশত প্রদানে ইসলাম কোনো শর্ত রাখেনি। এমনকি অমুসলিমদেরও কোরবানির গোশত দেওয়ার অনুমতি ইসলামে আছে। ইসলাম যা নিঃশর্তে প্রদান করতে বলেছে, তা প্রদানের জন্য নিজেদের মসজিদে নামাজ পড়ার শর্ত দেওয়ার অধিকার সমাজপতিরা কোথায় পায়?

>> প্রচলিত বণ্টন পদ্ধতিতে সমাজের সবাইকে গোশতের ভাগ দেওয়া হয়। যারা কোরবানি করেনি তাদেরকে দেওয়া হয়, আবার যারা কোরবানি করেছেন তাদেরও দেওয়া হয়। ফল দাঁড়াচ্ছে, সমাজের জন্য গোশত দিয়ে দেওয়ার পর তার কিছু অংশ কোরবানি দাতারা ফিরিয়ে নিচ্ছেন। দেওয়ার পর ফিরিয়ে নেওয়া একটি ঘৃণিত কাজ, নিকৃষ্ট স্বভাব। হাদিসে এর উপমা দেওয়া হয়েছে নিজের বমি নিজেই খাওয়া। সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দেওয়ার পর ফিরিয়ে নেওয়া কোনো মানুষের জন্য হালাল নয়। এর দৃষ্টান্ত হলো- কুকুরের মতো। কুকুরের যখন খেতে খেতে তৃপ্তি মিটে যায়, তখন সে বমি করে। কিছুক্ষণ পরে নিজেই আবার নিজের সেই বমি চেটে চেটে খায়।’ -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২২১৩১

>> যদিও কোরবানির গোশত বিলি করা ওয়াজিব না, সবটুকু গোশত নিজের পরিবারের লোকদের খাওয়ানো জায়েয আছে কিন্তু মুস্তাহাব হলো তিন ভাগের দুই ভাগ বিলি করা। এক ভাগ গরিবদের মাঝে বিলি করা, আরেক ভাগ আত্মীয়, পড়শি ও বন্ধুদের মাঝে বিলি করা। প্রচলিত সামাজিক বণ্টনে যারা কোরবানির গোশত জমা দেয় তারা কিন্তু গরিবের ভাগটাই এখানে জমা দেয়। যার জন্য বাড়িতে কোনো গরিব, মিসকিন, ভিক্ষুক আসলে তাদের সোজা বলে দেয়, গরিবের ভাগ মসজিদে দিয়ে দিছি। অথচ মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও সমাজপতিরা কোরবানির গোশতের এ গরিবের ভাগ সমাজের ধনি, গরিব, স্বচ্ছল, অস্বচ্ছল নির্বিশেষে সবাইকে দেয়। এটা চরম লজ্জাকর একটি কাজ।

>> সাধারণত প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলে অনেক পাড়া, মহল্লা এমন থাকে যেখানের কেউই কোরবানি দেয় না। মহল্লাবাসী সবাই দরিদ্র, দিনমজুর। কিন্তু পাশের মহল্লায়, গ্রামে অনেকেই কোরবানি দেয়। আগে এ ধরণের পাড়ার দরিদ্ররা কোরবানির দিন আশ-পাশের পাড়া-মহল্লার কোরবানিদাতাদের বাড়িতে যেত। সবার থেকে কিছু কিছু গোশত পেত। যাতে তাদের দু’এক দিন অনায়েসেই চলে যেত। তৃপ্ত করে গোশত খেত। কিন্তু সামাজিক বণ্টন প্রথার রেওয়াজ তাদের গোশত খাওয়ার এ সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন তারা পাশের মহল্লার কোরবানিদাতাদের বাড়িতে গেলে গোশত পায় না। কোরবানিদাতা উত্তর দেয়, গরিবের ভাগ মসজিদে দিছি। তোমরা মসজিদে যাও। আর মসজিদে গেলে সমাজপতিরা তাদের উত্তর দেয়, খাতায় তোমার নাম নেই। তুমি এ সমাজের না। তোমাকে আমরা গোশত দিতে পারব না।

বাড়ি থেকে গোশত বিলি করার অসুবিধার কারণে যদি একান্তই দলবদ্ধভাবে গোশত বিলি করার উদ্যোগ নিতে হয় তবে নিম্নলিখিত শর্তগুলো নিশ্চিত করতে হবে। যথা-

>> গোশত বিতরণে এ দিকে আদৌ ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না যে, কে মসজিদে চাঁদা দেয় আর কে দেয় না। মসজিদ বা কোনো প্রতিষ্ঠানের দানের সঙ্গে কোরবানির গোশতকে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত করা যাবে না।

>> সামাজিক সীমানাকে গুরুত্ব দেওয়া যাবে না।

>> সামাজিক আয়োজনে গোশত জমা দিতে বা গোশতের নির্দিষ্ট পরিমাণ জমা দিতে কোরবানিদাতাদের বাধ্য করা যাবে না। এমনকি কোনো কোরবানিদাতা সমাজে গোশত জমা না দিয়ে নিজে ব্যক্তিগতভাবে গরিবদের মাঝে বিলি করলে তার সমালোচনা করা যাবে না, তার নিন্দা করা যাবে না, তাকে সমাজচ্যুত করা যাবে না। গোশত জমাদানকে সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক রাখতে হবে।

>> গোশতের ভাগ বিতরণের জন্য মুসলমান, নামাজি, পরহেজগার ইত্যাদি কোনো শর্তারোপ করা যাবে না।

>> যারা কোরবানি দিয়েছে এবং যারা সমাজে ধনি হিসেবে খ্যাত তাদেরকে সম্মিলিত গোশতের ভাগ দেওয়া যাবে না। সমাজের কোরবানিদাতাদের এবং ধনিদের গোশত দিতে হলে বাড়িতে কোরবানি দাতারা তিনের যে দু’ভাগ গোশত রেখে দিয়েছে তার দ্বিতীয় ভাগ থেকে নিজ উদ্যোগে দিবে। কেননা, এ দ্বিতীয় ভাগ আত্মীয়, পড়শি ও বন্ধুদের জন্য।

>> সামজের বাইরের ভাসমান দরিদ্রদের জন্য এবং অন্যান্য দরিদ্র সমাজগুলোর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গোশতের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। এটা দু’ভাবে হতে পারে। হয়তো কোরবানিদাতারা গোশতের একটা অংশ বাড়িতে রেখে দিবে। সমাজের বাইরে থেকে আগত ভিক্ষুকদের মাঝে নিজ হাতে দিবে। অথবা হয়তো দলবদ্ধ গোশত নিজ সমাজের দরিদ্রদের মাঝে বণ্টনের আগেই উল্লেখযোগ্য একটা অংশ আলাদা করে ফেলবে। যা নিজ সমাজের বাইরের গরিবদের মাঝে ও দূরদূরান্ত থেকে আগত ভিক্ষুকদের মাঝে বিতরণ করবে।

পরিশেষে বলব, ইসলাম যা ব্যক্তিগত রেখেছে তা ব্যক্তিগত রাখাই অধিকতর কল্যাণকর। তাকে দলবদ্ধ বা সমাজবদ্ধ রূপ দেওয়া অনুচিত। তাই কোরবানির গোশত বিতরণে সামাজিক বণ্টনের দিকে পারতপক্ষে না যাওয়াই শ্রেয়। আর সে দিকে যেতে হলে উদ্ভুত শরয়ি সমস্যাগুলোর সুষ্ঠু সমাধান করে, সকল শর্ত যথাযথভাবে পালন করে তবেই সামাজিক বণ্টনের উদ্যোগ নেওয়া। কেননা, সামাজিক বণ্টনের প্রচলিত ধরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

   

হজের সময় সৌদিতে তাপদাহের আশঙ্কা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজের আনুষ্ঠাকিতায় হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

হজের আনুষ্ঠাকিতায় হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হজের সময় সৌদি আরবের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন সৌদি ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজির প্রধান আয়মান গোলাম।

আসন্ন হজে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য সতর্ক করে প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আয়মান গোলাম বলেছেন যে, এ বছর হজের মৌসুম চলবে জুনের মাঝামাঝিতে। হজের মৌসুম সৌদি আরবে বছরের সবচেয়ে গরম সময়ের সঙ্গে মিলে গেছে।

বছরের এই সময়ে সাধারণত সৌদি আরবে তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতা দুটোই অনেক বেশি থাকে। ফলে হজে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক থাকতে অবহিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, হজ করতে আসা মুসল্লিদের ওপর তীব্র গরমের প্রভাব কমাতে তাদের বাসস্থানকে পর্যাপ্ত ঠাণ্ডা রাখা হবে হজ আয়োজনকারীদের অন্যতম অগ্রাধিকার। বিশেষ করে মিনা এবং আরাফাতের ময়দানে তাঁবুতে অবস্থান এবং হজের পাঁচতিন চলাচলে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

রোগীদের হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে সৌদির নির্দেশনা
যারা দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভুগছেন তাদের হজে যাওয়ার সময় চিকিৎসার নথিপত্র সঙ্গে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। রোগীরা হজে গিয়েও যেন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান তা নিশ্চিত করতেই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয় এমন কোনো রোগে যদি আপনি ভুগে থাকেন এবং বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে চিকিৎসার নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে ভুলবেন না। যেন সৌদিতে আসার ও যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান।

এ ছাড়া বিদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে আসার আগেই ‘নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস’ ভ্যাকসিন নিতে হবে এবং নিজ দেশের দ্বারা ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টির প্রমাণপত্র নিতে হবে।

বিদেশি হজযাত্রীদের পোলিও, কোভিড-১৯ এবং ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন নেওয়া থাকতে হবে। এতে করে সব হজযাত্রীর স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া সৌদিতে বসবাসরত যারা হজ করতে চান তাদের হজ সংক্রান্ত ভ্যাকসিনগুলো গ্রহণ করতে হবে।

এই ভ্যাকসিন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ হজযাত্রীদের পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের জন্য যেতে মন্ত্রণালয়ের সেহাতি অ্যাপে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে।

;

হজযাত্রী কমেছে ৩৭ হাজারের বেশি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন হাজিরা, ছবি: নূর এ আলম, বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন হাজিরা, ছবি: নূর এ আলম, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজের খরচ বাড়ায় গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় ৩৮ হাজার কমেছে হজযাত্রীর সংখ্যা। করোনা পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন বাংলাদেশি হজপালনে যান। যদিও বাংলাদেশের জন্য হজরে কোটা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের। গত বছর হজ কোটার বিপরীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কম ছিল নিবন্ধন সংখ্যা। যদিও সরকারি-বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার প্রাক-নিবন্ধনের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।

কিন্তু হজ প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধির দরুণ কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও এবার নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। অবশেষ ৮৩ হাজার ২০৯ জন চূড়ান্ত নিবন্ধন করেন। তন্মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৩১৪ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন হজপালন করবেন। আর ব্যবস্থাপনাসহ এবার হজে যাচ্ছেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এবার সারাদেশে হজযাত্রীর সংখ্যা কমেছে ৩৭ হাজার ৭৬৭ জন।

যদিও এখন পর্যন্ত সরকারি মাধ্যমে ২ হাজার ৭৭১ জন ও বেসরকারি মাধ্যমে ৭৮ হাজার ২৭৩ জন যাত্রী হজের জন্য প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন করে রেখেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতবারের তুলনায় এবার হজের মূল খরচ বেড়েছে। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজে যাওয়ার আগ্রহ কমেছে মানুষদের মধ্যে। এ কারণে অন্যবারের তুলনায় কমেছে হজযাত্রীর সংখ্যা।

আরও পড়ুন : বদলি হজ কখন করাবেন

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশনের (হাব) কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, হজের ব্যয় এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হজে যাওয়ার মানুষের সংখ্যা কমেছে।

বিষয়টি নিয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) নেতারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, হজ কোটা পূরণ না হওয়ার প্রভাব তাদের ব্যবসায় পড়বে। কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় অনেক ট্রাভেল এজেন্সি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চলতি বছর একজন বাংলাদেশিকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে গড়ে প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকা খরচ হবে, যা অনেক আগ্রহীকে হজ পালনে নিরুৎসাহিত করেছে। বিমানভাড়া, সৌদি আরবে বাসাভাড়া, মক্কা ও মদিনায় যাতায়াত ব্যয়সহ মোয়াাল্লিম ফি অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে মূল হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।

হাব নেতাদের মতে, আগে মোয়াল্লিমের জন্য নির্ধারিত ফি ছিল এক হাজার থেকে ১২ শ রিয়াল, বর্তমানে তা করা হয়েছে পাঁচ হাজার রিয়াল, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিমানভাড়া করা হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া সৌদি সরকারের শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট আরোপ অন্যতম।

তাদের মতে, হজের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের করার কিছু নেই। তবে বিমানভাড়া নির্ধারণ বা ভাড়া কম রাখার বিষয়টি সরকার হস্তক্ষেপ করে হজের খরচ কমানোর ব্যবস্থা করতে পারত।

২০০৯ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৬২৮ জন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে হয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২২ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা কমে দাড়ায় ৬০ হাজার ১৪৬ জনে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন।

;

বদলি হজ কখন করাবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যস্ততার কারণে কেউ হজে যেতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো যাবে না। কারণ এটি শরিয়ত নির্দেশিত অপারগতা নয়। বদলি হজ কেবল শরিয়তের দৃষ্টিতে মক্কায় যেতে অপারগদের জন্য প্রযোজ্য। বদলি হজের বিধান হলো-

হজ ফরজ হওয়ার পর হজ করা হয়নি, এখন শারীরিকভাবে মক্কায় যেতে অক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য অন্য কাউকে পাঠিয়ে হজ করা ফরজ। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

বার্ধক্য বা অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম হতে হবে। -মানাসিক লি-মোল্লা আলি কারি

অসিয়ত না করলেও মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা চাইলে তার জন্য বদলি হজ করাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো- ওয়ারিশদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন লাগবে এবং ওয়ারিশদের মধ্যে কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকলে তার ভাগের সম্পদ থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না। -আদ দুররুল মুখতার

যার পক্ষ থেকে হজ করা হবে, তাকেই খরচ বহন করতে হবে। অসিয়ত করে গেলে প্রথমে তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায় করতে হবে। এরপর অসিয়তের বিধান অনুযায়ী বাকি সম্পদ তিন ভাগ করতে হবে। এর মধ্যে এক ভাগ থেকে অসিয়তের অংশ নিতে হবে। হজের অসিয়ত করে গেলে সেই খরচও এই অংশ থেকে নিতে হবে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা

আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের সেবায় সৌদি ঐতিহ্য

বদলি হজের বিনিময়ে মজুরি নেওয়া নাজায়েজ। কারণ ইবাদতের বিনিময়ে কোনো মজুরি নেওয়া যায় না। কেউ দিলে এবং নিলে দুজনেই গোনাহগার হবেন। হজের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের বাইরে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। -আল-বাহরুল আমিক

টাকা-পয়সার হিসাবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য হজে পাঠানো ব্যক্তি যদি বদলি হজকারীকে বলেন, আপনাকে পুরো টাকা হাদিয়া হিসেবে দিলাম, তাহলে এই টাকা দিয়ে বদলি হজ আদায় হবে না। কারণ হাদিয়া দেওয়ার কারণে বদলি হজকারী ওই টাকার মালিক হয়ে যান। -যুবদাতুল মানাসিক

হজ করেছেন এমন নেককার ব্যক্তিকে বদলি হজের জন্য পাঠানো উত্তম। হজ করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো বৈধ। তবে হজ ফরজই হয়নি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহে তানজিহি। আর হজ ফরজ হলেও আদায় করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহ তাহরিমি তথা নাজায়েজ। -সুনানে আবু দাউদ

;

হজযাত্রীদের সেবায় সৌদি ঐতিহ্য



রাহাফ জামবি
অতীতে হজযাত্রীরা দীর্ঘসময় নিয়ে জাহাজে করে আসতেন জেদ্দায়, ছবি: সংগৃহীত

অতীতে হজযাত্রীরা দীর্ঘসময় নিয়ে জাহাজে করে আসতেন জেদ্দায়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষাটের দশকে বেশিরভাগ মানুষ পবিত্র হজপালন করতে আসতেন জলপথে অর্থাৎ জাহাজে। কোনো হজযাত্রীর জেদ্দাবন্দরে পৌঁছাতে চার-পাঁচ মাস সময় লেগে যেত। জেদ্দায় আসার পরে চড়তে হতো মক্কার বাসে। এ সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের যাত্রার সঙ্গী হতেন একজন মুতাওয়িফ।

মুতাওয়িফ হলেন একজন গাইড, হজযাত্রীদের সেবা প্রদানকারী। তিনি মক্কা-মদিনায় হজযাত্রীদের নানাভাবে, নানাক্ষেত্রে সহায়তা করেন এবং তাদের যত্ন নেন, আবাসান ও খাবারের ব্যবস্থা করেন। ঐতিহ্যগতভাবে একজন মুতাওয়িফ পারিবারিকভাবে দায়িত্বটি পালন করতেন এবং এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এভাবেই রীতিটি হস্তান্তরিত হতো। একসময় এই অতীত রীতি ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।

রিয়াদের বাসিন্দা হায়াত ইদ একজন সাবেক মুতাওয়িফ। তিনি অতীতের কথা স্মরণ করে বলেন, এ সময়টাতে তিনি তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরে, বাড়িতে ধূপ জ্বালিয়ে দূর থেকে আসা হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত থাকতেন।

ইদের দাদা একসময় হজযাত্রীদের আবাসনের ব্যবস্থা করে দিতেন এবং সেগুলো নিজেই পরিষ্কার করতেন। তিনি হজযাত্রীদের সহায়তা দেওয়ার জন্য সুপারভাইজার এবং অনুবাদক নিয়োগ করতেন। পরে এ দায়িত্ব বর্তায় তার ছেলে ইদের বাবার হাতে।

হায়াত ইদের বাবা জামিল আবদুর রহমান ইদ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হজযাত্রীদের ‘শায়খ’ (শায়খ একটি সম্মানসূচক পদবি। এটি সাধারণত ধর্মীয় শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো। তবে সৌদি আরবে কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞদের পদবি হিসেবেও শায়খ ব্যবহৃত হয়।) ছিলেন বলে জানান তিনি। জনসাধারণের মাঝে মুতাওয়িফদের শায়খ হিসেবেই পরিচিতি ছিল।

ইদ পরিবার বংশ পরম্পরায় হাজিদের সেবা করে আসছেন, ছবি: সংগৃহীত

হায়াত ইদ বলেন, ‘আমার দাদার পাশাপাশি দাদীও মুতাওয়িফ ছিলেন। আমার দাদা ছিলেন ‘জাভার শায়খ’ অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়া থেকে আগত হজযাত্রীদের সেবা করতেন তিনি। আমার দাদা-দাদি মারা যাওয়ার পর আমার বাবা মুতাওয়িফের পদ গ্রহণ করেন।’

যাট ও সত্তরের দশকের সেই দিনগুলোর কথা মনে করে ৫০ বছর বয়সী ইদ বলেন, হজযাত্রীরা তার পরিবারকে চিঠি পাঠাতেন যেন তাদের আবাসনের সুযোগ হয়। হজযাত্রীদের জন্য ঈদের সময় বাড়তি খাবারেরও প্রস্তুতি নিত তার পরিবার।

শায়খরা হজযাত্রীদের হজের আচার-অনুষ্ঠান এবং তাদের কী করা উচিত সেসব বুঝিয়ে দিতেন। তাদেরকে মক্কা এবং অন্যান্য স্থানে নিয়ে যাওয়া এবং সঙ্গে করে বাড়ি ফিরে আনার দায়িত্ব ছিল তাদের।

এ সময় তার ভাই আদেল ইদ বলেন, মুতাওয়িফের ভূমিকা অতীতে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান ছিল কিন্তু এখন এটি একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকায় পরিণত হয়েছে।

হজযাত্রীদের খাবারের প্রস্তুতি, ছবি: সংগৃহীত

প্রত্যেক মুতাওয়িফকে তাদের সামর্থ্যের ভিত্তিতে নির্দিষ্টসংখ্যক হজযাত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হত। কেউ মাত্র ১০০ জনের দায়িত্ব নিত, আবার অনেকে ১ হাজার জনেরও দায়িত্ব নিতে পারত। তবে তাদের অবশ্যই হজযাত্রীদের ভাষা বোঝার জন্য বা তাদের সঙ্গে কথা বলতে দোভাষী নিয়োগ দিতে হত।

তিনি বলেন, প্রত্যেক মুতাওয়িফ একাই হজযাত্রীদের সেবা করতে পারতেন। তারা নির্দিষ্ট এলাকার হজযাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে সেবা প্রদানের জন্য সেসব দেশে ভ্রমণ করতেন এবং তাদের বিভিন্ন বিষয়গুলো শিখে আসতেন। তাদের খাদ্যাভ্যাস, রুচি, আচার-আচরণ ও ভাষা রপ্ত করাও ছিল একজন মুতাওয়িফের বিশেষ গুণ।

ইদ পরিবার ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা হজযাত্রীদের সহায়তা করত। তাই তারা মালয় ভাষা এবং তাদের মেহমানদের পছন্দের মশলা এবং খাবার সম্পর্কে শিখেছিলেন, যেন তারা হজযাত্রীদের যতটা সম্ভব মক্কাকে নিজের বাড়ি অনুভব করাতে পারেন।

একইভাবে ৪৬ বছর বয়সী উইজদান আবদুর রাজ্জাক লুলু বুকাস উত্তরাধিকারসূত্রে মুতাওয়িফের পেশা পেয়েছেন। তিনি মালয় ভাষায় সাবলীল ছিলেন। তার বাবা এবং দাদার কাছ থেকে মালয় ভাষা রপ্ত করেন তিনি।

১৯৯৩ সালে হজযাত্রীদের সঙ্গে আবদুর রাজ্জাক লুলু বুকাস, ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, কিছু জাতীয়তা বা দেশের ভাষা অন্যদের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং বলে মনে হয়। এক্ষেত্রে আমরা সে দেশের অনুবাদক নিয়োগ দিই। উদাহরণস্বরূপ, আমরা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার হজযাত্রীদের সেবাপ্রদানের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলি। কিন্তু চীনা ভাষা কঠিন, তাই আমরা চীনা যাত্রীদের জন্য একজন দক্ষ অনুবাদক নিয়োগ দিয়েছি।

বুকাস বলেন, কিছু হজযাত্রী ঈদুল আজহায় মুতাওয়িফকে উপহার দেওয়ার জন্য উপহার হিসেবে সোনা বা মুক্তা নিয়ে আসতেন। তার বাবা, আবদুল হান্নান লুলু বুকাস হজযাত্রীদের কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছেন বলে তার নামের সঙ্গে লুলু যোগ করেছেন যার অর্থ মনিমুক্তা।

মুতাওয়িফ থাকা অবস্থায় ঘটা এক অবিস্মরণীয় পরিস্থিতির বর্ণনা করেন বুকাস। তিনি একজন গর্ভবতী নারী হজযাত্রীর কথা বলেন, যিনি হজে এসে বাচ্চা জন্ম দিয়েছিলেন। তিনিই তখন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান এবং ওই নারী নিরাপদে সন্তান জন্ম দেন।

বুকাস বলেন, তিনি বছরের পর বছর ধরে হজের বহু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তবে বর্তমান সময়ে বেশ ভালোই পরিস্থিতির পরিবর্তন দেখেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, অতীতে এবং আধুনিক সময়ের হজের মধ্যে পার্থক্য হলো- যাতায়াত ও আবাসনের অসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগে কয়েক মাস সময় লেগে যেত। যা এখন মাত্র ঘণ্টায় সমাধান হয়ে যায়। এক্ষেত্রে সৌদি সরকারের প্রশাসনিক সুবিধার বিষয়টির ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

আরব নিউজ থেকে অনুবাদ আসমা ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম

;