বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।
বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।
হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।
দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।
বিশ্বের নানা প্রান্তের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছেন পবিত্র মক্কায়। তীব্র গরম উপেক্ষা করেই এ বছরের হজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
স্থানীয় সময় আগামীকাল শুক্রবার (১৪ জুন) মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা। আগামী মঙ্গলবার জামারায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের হজের কার্যক্রম।
পবিত্র হজ পালনের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে হজযাত্রীরা সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এবার বিশ্বের ১৮০টির বেশি দেশের প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি হজ পালন করবেন।
শুক্রবার থেকে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। তবে হজযাত্রীর সংখ্যা বিবেচনায় সৌদি মুয়াল্লিমরা বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতেই হজযাত্রীদের তাঁবুর শহর মিনায় নেওয়া শুরু করবেন। এশার নামাজের পর মক্কার নিজ নিজ আবাসন থেকে ইহরামের কাপড় পরে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন হাজীরা। এ সময় গুঞ্জরিত হবে তালবিয়া- ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক। লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নালহামদা ওয়াননি-মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা শারিকা লাক।’
হজযাত্রীদের জন্য হজের পাঁচ দিনের ধারাবাহিক কাজগুলো বর্ণনা করা হলো-
প্রথম দিন [মিনার উদ্দেশে যাত্রা] ৮ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত এ পাঁচ দিনকে হজের দিন বলা হয়। আপনি যদি তামাত্তু হজ পালনকারী হয়ে থাকেন তাহলে আগের মতো আবার ইহরাম বেঁধে নিন। তারপর এভাবে ইহরামের নিয়ত করুন- ‘হে আল্লাহ! আমি তামাত্তু হজ করতে ইচ্ছা করেছি, আপনি এ হজ আমার জন্য সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে কবুল করুন।’
নিয়তের সঙ্গে সঙ্গে তিনবার তালবিয়া উচ্চস্বরে পড়ুন। (মহিলারা নিচু স্বরে পড়ুন)। যারা কিরান বা ইফরাদ হজ পালন করার নিয়ত করেছেন, তারা তো আগে থেকেই ইহরামের অবস্থায় আছেন, কাজেই নতুন করে ইহরাম বাঁধতে হবে না। ৮ জিলহজ সকালে ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। আজকের জোহর, আসর, মাগরিব, এশা এবং ৯ জিলহজের ফজরের নামাজ মিনায় আদায় করা এবং রাতে মিনায় অবস্থান করা সুন্নত।
দ্বিতীয় দিন [আরাফাতের ময়দানে অবস্থান]
হজের দ্বিতীয় দিন ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান ফরজ। ফজরের নামাজ মিনায় পড়ে আরাফাতের ময়দানের দিকে রওনা করতে হয়। প্রয়োজনে ফজরের আগে রাতেও আরাফাতের উদ্দেশে রওনা করা যাবে। আরাফাতের ময়দানে দুপুর ১২টার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করতে হবে। আরাফাতের ময়দানে দোয়া কবুল হয়। সুতরাং এ সময় সবাইকে দোয়ায় মগ্ন থাকা উচিত। আরাফাতের ময়দানে জাবালে রহমতের কাছাকাছি অবস্থান করা ভালো। জোহর এবং আসরের নামাজ মসজিদে নামিরায় জামাতের সঙ্গে নির্দিষ্ট শর্তানুসারে আদায় করা উত্তম। তবে ওই জামাতে শরিক হওয়া সম্ভব না হলে যথাসময়ে জোহরের ওয়াক্তে জোহর এবং আসরের ওয়াক্তে আসর নিজ নিজ তাঁবুতে আজান-ইকামতসহকারে জামাতের সঙ্গে পড়ুন।
রাতে মুজদালিফায় অবস্থান মিনা ও আরাফাতের মাঝখানে অবস্থিত ময়দানের নাম মুজদালিফা। এখানে ১০ জিলহজ রাত (৯ জিলহজ দিবাগত রাত) অতিবাহিত করা হাজিদের জন্য জরুরি। মুজদালিফায় পৌঁছে এশার ওয়াক্ত হলে এক আজান ও এক ইকামতে প্রথমে মাগরিবের ফরজ তারপর এশার ফরজ পড়ুন এরপর মাগরিবের ও এশার সুন্নত এবং বিতর পড়ুন। মাগরিব ও এশার নামাজ পড়ার পর সুবহে সাদিক পর্যন্ত মুজদালিফায় অবস্থান করা সুন্নতে মোয়াক্কাদা। সুবহে সাদেক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান ওয়াজিব। এখান থেকে জামারায় মারার জন্য পাথর সংগ্রহ করুন।
তৃতীয় দিন [পাথর নিক্ষেপ, কোরবানি, চুল মুণ্ডন ও তাওয়াফ] হজের তৃতীয় দিন ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর এ দিনের চারটি কাজ ধারাবাহিকভাবে পালন করতে হবে-
পাথর নিক্ষেপ করা : এই দিনের প্রথম কাজ হলো জামারায় আকাবায় (বড় জামারা) গিয়ে সাতটি পাথর নিক্ষেপ করা (ওয়াজিব)। পাথর নিক্ষেপের নিয়ম হচ্ছে-পাথর নিক্ষেপের সময় মিনাকে ডান দিকে রেখে দাঁড়ান। তর্জনী ও বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা পাথর ধরে নিক্ষেপ করুন। প্রথম পাথর নিক্ষেপের আগমুহূর্ত থেকে তালবিয়া পড়া বন্ধ করে দিতে হবে। পাথর নিক্ষেপের সময় বলুন : বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার।
কোরবানি করা : এই দিনের দ্বিতীয় কাজ হলো- দমে শোকর বা হজের শোকরিয়াস্বরূপ কোরবানি করা (ওয়াজিব)। নিজ হাতে করুন কিংবা কাউকে পাঠান; কিন্তু জবাই হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হোন।
চুল মুণ্ডন বা কর্তন করা : এই দিনের তৃতীয় কাজ হলো হলক বা কসর করা। (চুল মুণ্ডন বা কর্তন) এটি ওয়াজিব। কোরবানি করার পর পুরো মাথার চুল মুণ্ডন করে ফেলুন। মুণ্ডনকারীদের জন্য নবী কারিম (সা.) তিনবার দোয়া করেছেন। তাই এতে ফজিলত বেশি।
তাওয়াফে জিয়ারত : এ দিনের চতুর্থ কাজ হলো তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ)। এটা হজের শেষ রুকন। মিনায় উপরোক্ত কাজগুলো সেরে হাজিরা মক্কা শরিফ গিয়ে তাওয়াফ-ই-জিয়ারত করবেন। ১০ তারিখে সম্ভব না হলে ১১ বা ১২ তারিখের সূর্যাস্তের আগে অবশ্যই এ তাওয়াফ করতে হবে। যারা মক্কা থেকে ৮ জিলহজ আসার আগে একটি নফল তাওয়াফের সঙ্গে সায়ী করে আসেনি তাওয়াফে জিয়ারতে তাদের অবশ্যই সায়ী করতে হবে। তাওয়াফে জিয়ারতের কোনো বদলা নেই, এ তাওয়াফ করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
চতুর্থ দিন [মিনায় রাতযাপন এবং পাথর নিক্ষেপ] ১১ জিলহজ মিনায় রাতযাপন সুন্নত। এদিন মিনায় তিন শয়তানকে পাথর মারা ওয়াজিব। দুপুরের পর প্রথমে জামারায়ে সুগরা, (মসজিদে খাইফের সন্নিকটে) অতঃপর জামারায়ে উসতা, সর্বশেষ জামারায়ে আকাবায় ৭টি করে মোট ২১টি পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। প্রত্যেকটি পাথর নিক্ষেপের সময় তাকবির বলবেন।
পঞ্চম দিন [মিনায় রাতযাপন এবং পাথর নিক্ষেপ] ১২ জিলহজেও আগের দিনের মতো তিন জামারায় পাথর নিক্ষেপ করা ওয়াজিব। অনেকেই ১২ জিলহজ তাড়াতাড়ি মক্কায় ফিরে যাওয়ার জন্য সূর্য মাথার ওপর ওঠার আগেই পাথর নিক্ষেপ করে ফেলেন, অথচ এরূপ করা নাজায়েজ। মনে রাখতে হবে, সূর্য মাথার ওপর থেকে কিছুটা ঢলে যাওয়ার পর পাথর নিক্ষেপ করতে পারবেন। ১২ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ করে মক্কায় ফিরে যাওয়া জায়েজ, তবে ১৩ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ করে তারপর মক্কায় ফিরে যাওয়া উত্তম। ১২ জিলহজ পাথর নিক্ষেপ করে মক্কায় ফিরতে চাইলে সূর্যাস্তের আগেই মিনা থেকে বের হয়ে যাবেন। সূর্যাস্তের পর ফিরা মাকরুহ।
মক্কায় পৌঁছার পর বিদায়ী তাওয়াফ ছাড়া হজের আর কোনো জরুরি কাজ বাকি নেই। হজ আদায়ের তাওফিকদানের জন্য আল্লাহ পাকের শোকর, নফল তাওয়াফ, উমরা ও অন্যান্য ইবাদত করতে থাকুন।
বিদায়ি তাওয়াফ মক্কা শরিফ থেকে বিদায়ের আগে বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব) করুন। মাকামে ইবরাহিমে দুরাকাত নামাজ পড়ে মূলতাযাম, কাবার দরজা ও হাতিমে দোয়া করুন; জমজমের পানি পান করেও দোয়া করুন এবং বিয়োগ-বিরহের বেদনা দিয়ে কাবা ঘর থেকে বিদায় নিন। তাওয়াফে বিদা না করলে দম দিতে হবে।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের ফরজ আমল। আরাফাতের ময়দানে হাজিরা নির্দিষ্ট তাঁবুতে অবস্থান করে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকেন। সেখানে সৌদি মুয়াল্লিমের পক্ষ থেকে হজযাত্রী খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ছাড়া সৌদি আরব কর্তৃপক্ষসহ তালিকাভুক্ত বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে পানীয়, খাবার, ফল-মূল, ছাতা, জুতাসহ বিভিন্ন কিছু উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন।
হজযাত্রীদের সেবায় প্রচুর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকে। এক স্বেচ্ছাসেবক গত হজের স্মৃতিচারণের সময় বলেন, গতবার এক হাজির চা পানের তৃষ্ণা আমাকে অবাক করেছে।
আরব নিউজকে তিনি বলেন, আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের সময় একজন মিশরীয় হজযাত্রীর চা পানের জন্য অস্থির ও বিচলিত হয়ে পড়েন। আমি ভাবছিলাম, তিনি হয়ত অতিরিক্ত রোদে কাতর হয়ে গেছেন, তাই রোদ থেকে রক্ষার জন্য হাজিকে একটি ছাতা দিতে চাই। কিন্তু তিনি তা নিতে অস্বীকার করে বলেন, ‘ছাতা নয়, চা চাই।’
ওই স্বেচ্ছাসেবক বলেন, তাকে কেমন যেনো উদভ্রান্ত ও বিচলিত দেখাচ্ছিল। আমরা ভাবলাম, তিনি সূর্যের তাপের কারণে ক্লান্ত, তাই তাকে ঠাণ্ডা পানি ও ছাতা উপহার দিতে চাই। তিনি ছাতাটি ফিরিয়ে দেন।
তখন আমার সঙ্গী অপর এক স্বেচ্ছাসেবক তাকে বলেন, এই গরমে চা দিয়ে কী করবেন? এ বিষয়ে হাজি বলেন, ‘আমাকে গরম তাড়াতে চা দাও, আমার ছাতা লাগবে না, চা লাগবে।’
হাজির প্রবল ইচ্ছা ও চাওয়া দেখে স্বেচ্ছাসেবকরা তাকে চা খাওয়ালে তিনি খুশি হয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য দোয়া করেন, ‘আমার অনুরোধ পূরণ হয়েছে, আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।’
শরিকানা কোরবানির প্রথা বেশ পুরোনো। অর্থাৎ একটি গরু-মহিষ বা উট কয়েকজনে মিলে কোরবানি করা। এটা শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয় প্রায় সব দেশেই বেশ জনপ্রিয় একটি রীতি। তবে শরিকানা কোরবানির ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। না হলে কোরবানি নষ্ট হয়ে যাবে। বিষয়গুলো হলো-
শরিকদের কারও পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয়, তাহলে কারও কোরবানি সহিহ হবে না।
যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কোরবানি দেওয়ার নিয়তে কেনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরিক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কোরবানি করাই শ্রেয়। শরিক করলে ওই টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম।
গরু, মহিষ ও উট- এই তিন প্রকার পশুর একেকটিতে সর্বোচ্চ সাত ব্যক্তি পর্যন্ত শরিক হয়ে কোরবানি করতে পারবে। শরিকদের সংখ্যা জোড় হোক বা বেজোড় তাতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে কোরবানির জন্য শর্ত হলো- কারও অংশ যেন এক-সপ্তমাংশের চেয়ে কম না হয়। প্রত্যেক শরিককেই কোরবানি অথবা আকিকার মতো কোনো ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যলাভের নিয়ত করতে হবে।
যদি শরিকদের একজনও গোশত খাওয়ার নিয়ত করে, তবে কারো নিয়ত দুরস্ত হবে না। অনুরূপভাবে যদি কোনো শরিকের অংশ সপ্তমাংশের কম হয়, তবে সবার কোরবানিই নষ্ট হয়ে যাবে। -ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি : ৫/৩০৪
যদি গরু কেনার আগে অংশীদাররা সবাই মিলে কেনে, তবে তা জায়েজ। আর যদি কেউ একা কোরবানি করার জন্য একটা গরু কেনে এবং মনে মনে ইচ্ছা রাখে পরে আরো লোককে অংশীদার করবে, তবে তা-ও জায়েজ আছে।
তবে যদি ব্যক্তি এমন হয়, যার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় এবং তিনি কেনার সময়ও অন্যদের শরিক করার নিয়ত করেননি, তবে অন্য কাউকে নতুন করে অংশীদার করা যাবে না। এককভাবে কোরবানি করতে হবে। আর ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব হলে অন্যদের শরিক করতে পারবে। তবে এমনটি করা অনুচিত।
কোরবানি গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক হতে পারবে। এতে কোরবানি ও আকিকা দুটোই সহিহ হবে। -রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৬২
চলতি হজ মৌসুমে প্রথমবারের মতো বিশ্বের ৫০টি ভাষায় অনুবাদ করা হবে হজের খুতবা। বিশ্বের প্রায় সব প্রান্তের মানুষের কাছে হজ ও ইসলামের শান্তির বার্তা পৌঁছানোর লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ।
সৌদি আরবের মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববির জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগ জানিয়েছে, এবার আরাফাতের ময়দান থেকে প্রচারিত হজের খুতবার অনুবাদ প্রচার করা হবে ৫০টি ভাষায়।
খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের তত্ত্বাবধায়নে এটিই এখন পর্যন্ত হজের খুতবা অনুবাদের সবথেকে বড় প্রজেক্ট।
সৌদি সংবাদ মাধ্যম এসপিএ-এর খবরে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে বাংলা, উর্দুসহ বিশ্বের ৫০টি দেশের ভাষাভাষীর কাছে হজের খুতবার আহ্বান পৌঁছানো উদ্দেশ্য।
২০১৮ সালে সর্বপ্রথম বিশ্বের পাঁচটি আন্তর্জাতিক ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ প্রচার করা হয়। এরপরের বছর ১০টি ও ২০২২ সালে ১৪টি ভাষায় হজের খুতবার অনুবাদ করা হয়। ২০২৩ সালে তা বাড়িয়ে ২০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
এ বছর এক দশকেরও কম সময়ে হজের খুতবা অনুবাদের পরিধি বাড়িয়ে তা ৫০ ভাষা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সৌদি আরব রাষ্ট্রীয়-ধর্মীয় সহনশীলতা, সংযম ও শান্তির বার্তা তুলে ধরতে চায়, যাতে ইসলামের প্রকৃত চিত্র এবং এর উচ্চ মূল্যবোধ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
গত বছর যেসব ভাষায় হজের খুতবা অনুবাদ করা হয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম হলো- বাংলা, ফরাসি, ইংরেজি, ফার্সি, উর্দু, হাউসা, রুশ, তুর্কি, পাঞ্জাবি, চীনা, মালয়, সোয়াহিলি, স্প্যানিশ, পর্তুগিজ, আমহারিক, জার্মান, সুইডিশ, ইতালিয়ান, মালায়ালাম, বসনিয়ান, ফিলিপিনো এবং ফিলিপিনো ভাষা।
এ বছর হজের খুতবা প্রদান করবেন মসজিদে হারামের ইমাম ও খতিব শায়েখ মাহের আল মুয়াইকিলি। আরবিতে প্রদত্ত সেই খুতবার বাংলা অনুবাদ করবেন- ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী, মুবিনুর রহমান ফারুক ও নাজমুস সাকিব।