শান্তির খোঁজে



সাজিদুর রহমান সাজিদ, অতিথি লেখক, ইসলাম
ইসলাম অর্থ শান্তি, ইসলাম মানলে উভয় জাহানে মিলবে শান্তি ও মুক্তি

ইসলাম অর্থ শান্তি, ইসলাম মানলে উভয় জাহানে মিলবে শান্তি ও মুক্তি

  • Font increase
  • Font Decrease

সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ স্বীয় মেহেরবানিতে আমাদেরকে মানব সম্প্রদায়ের মধ্যে মুসলমান হিসেবে জন্ম দান করেছেন। ধর্মসম্প্রদায়ের মধ্যে মুসলমান শ্রেষ্ঠ জাতি এবং ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম। ইসলাম মানলেই ইহকালে শান্তি এবং পরকালে মুক্তি। যারা ইসলাম মানে না, পরকালে তো শান্তি নেই-ই, ইহকালেও শান্তি নেই।

দুনিয়াতে কাফের-মুশরিকদের আরাম-আয়েশে দিনাতিপাত করতে দেখা যায়, এটা আসলে শান্তি নয়। অশান্তির দাবানল তাদের ভেতরে দাউ দাউ করে জ্বলছে, এটা দেখা যায় না। তাদের বিত্ত-সম্পদ আছে। গাড়ি-বাড়ি আছে। প্রভাব-প্রতিপত্তি আছে। ক্ষমতা-রাজত্ব আছে। আরাম-আয়েশের সবরকম উপকরণ আছে। এগুলোকে কাফের-মুশরিকরা যেভাবে শান্তি মনে করে, কিছু দুনিয়াদার মুসলমানও তাই মনে করে। আর কাফেরদের মত দুনিয়াদার মুসলমানও এর পেছনে প্রাণপাত করে জীবনটা বিলীন করে দেয়। তারা বুঝতে পারে না, এগুলো শান্তি নয়, শান্তির উপকরণ মাত্র। উপকরণ কারও সংগ্রহে থাকলে তা দ্বারা শান্তি লাভ করা অনিবার্য নয়। উপকরণ দ্বারা শান্তি অর্জিত হতে পারে আবার নাও হতে পারে। আমরা দেখি, কেউ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খায়, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে আয়েশি উপকরণের মধ্যে বাস করে। তারপরও সে জটিল রোগে ভোগে। রাতে ওষুধ খেয়েও ঘুম হয় না। টেনশন অশান্তি আর পেরেশানি দূর হয় না। স্ত্রীর কাছে শান্তি পায় না। ছেলে-মেয়েদের কাছে শান্তি পায় না। লোকেরা সম্ভ্রমের নজরে দেখে না। এটা কি কোনো শান্তির জীবন হলো? গোটা দুনিয়ার আসবাব-উপকরণ আর ধন-দৌলত দিয়ে তার কী হবে?

আসল কথা হলো, তাদের কাছে মূল জিনিস অর্থাৎ ইসলাম নেই। ইসলাম অর্থ শান্তি। ইসলাম মানলে উভয় জাহানে মিলে শান্তি ও মুক্তি। আমরা শান্তির ধর্মের অনুসারী। আমরা মুসলমান। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমরা মুসলমানদের অশান্তির মধ্যে জীবন যাপন করতে দেখি। বিপদ-মসিবত ও নানা সঙ্কটে পেরেশান ও ব্যতিব্যস্ত দেখি। দেখি শৌর্য-বীর্যহীন, প্রভাব-প্রতিপত্তিহীন, লাঞ্ছিত, বঞ্চিত অপমানিত জাতি হিসেবে। কিন্তু কেন? এর কারণ কী?

এককালে মুসলমানরা প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী ছিল। প্রায় পুরো পৃথিবীর শাসক ছিল। কুফরিশক্তি তাদের ভয়ে থরথর করে কাঁপত। তাদের রাজ্যে শান্তি ছিল। ইনসাফ ছিল। পরস্পরে মায়া-মহব্বত ছিল। সাম্যের পরিবেশ সর্বত্র বিরাজমান ছিল। কিন্তু আজ এসব তাদের থেকে সরে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। আজ মুসলমানরা নিঃস্ব, রিক্ত। অপাংক্তেয়, উপেক্ষিত। কিন্তু কেন?

আসুন! আমরা এর আসল কারণ খোঁজার চেষ্টা করি আল্লামা ইকবালের ভাষায়। তিনি বলেন, ‘মুসলমানরা পৃথিবীতে একদিন সম্ভ্রান্ত ও সম্মানী হয়েছিল কোরআনকে বুকে আঁকড়ে ধরে। কোরআন আনীত পবিত্র ধর্ম ইসলামের ওপর আমল করে। কিন্তু আজ তারা ধিকৃত উপেক্ষিত লাঞ্ছিত অপমানিত হচ্ছে- কোরআন পরিত্যাগের কারণে। কোরআনে কারিমের ধর্ম ইসলামকে ব্যবহারিক জীবন থেকে বাদ দেওয়ার কারণে।’

আল্লামা ইকবালের মূল্যায়ন শতভাগ সঠিক। আমাদের সম্পর্ক কি কোরআনে কারিমের সঙ্গে আছে? কোরআনের ধর্ম ইসলামের সঙ্গে আছে? আমাদের সন্তানাদিকে সব শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করি; কিন্তু কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করি না। নামাজ-রোজা, ইবাদত-বন্দেগি শিক্ষা দেই না। পাক-নাপাক, হালাল-হারাম শিক্ষা দেই না। পর্দা-পুশিদা শিক্ষা দেই না। ইসলামি কালচার ও সংস্কৃতি শিক্ষা দেই না। তাহলে ইসলামের ওপর আমল করলাম কিভাবে? ইসলামকে মানলাম কিভাবে? এই যে পরবর্তী প্রজন্ম এভাবে বেড়ে ওঠছে- দেখলে চিনবার কোনো উপায় থাকে না সে মুসলমান না বিধর্মী। নামেও চেনা যায় না সে কোন্ ধর্মের লোক। এজন্য দায়ী কারা? ইসলামের শান্তির পথ পরিত্যাগ করলে ভাগ্যে আর কী জুটবে অশান্তি ছাড়া?

এজন্য দায়ী আমি-আপনি-আমরা সবাই। কাল কিয়ামতে আল্লাহর সামনে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। দায়িত্ব এড়ানোর কোনো চেষ্টা সফল হবে না। আমাদের সন্তানেরা আল্লাহর দরবারে আমাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করবে। আজ গান-বাজনা হয়। মেলা কুস্তিখেলা ও ঘোড়দৌড়ের নামে মদ-জুয়ার আসর বসে। আমরা সমাজের বড়রা এর তত্ত্বাবধান করি, আশ্রয় দেই, সাহায্য-সহযোগিতা করি। পক্ষান্তরে ইসলামের কাজে, ভালো কাজে, জনসেবায়, মাদরাসা-মসজিদের কাজে আমাদের মুষ্ঠি খোলে না। উপরন্তু বিরূপ সমালোচনা করি। তাহলে ভালো ও কল্যাণকর জিনিস, নীতি-নৈতিকতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও সুস্থ পরিশীলিত সাংস্কৃতিক আবহ সমাজে গড়ে ওঠবে কিভাবে? নতুন প্রজন্মই বা কী শিখবে? আর যা শিখবে, তাদের সফর কোন দিকে হবে? তাদের এ উচ্ছন্নে যাওয়া- এ বিপথগামিতার জন্য আমরাই দায়ী। কোনোভাবেই এ দায়ভার এড়িয়ে যেতে পারব না। আল্লাহর দরবারে দেবার মত কোনো জবাব থাকবে না। বাঁচব কিভাবে- যে কোনোভাবেই বেঁচে থাকা যায়। কিন্তু মরব কিভাবে, মরণের পর কী হবে- এটাই আসল চিন্তার বিষয়।

আসুন আমরা চিন্তা করি। ইসলামসম্মত জীবন নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করি। আখেরাতে জবাবদিহিতার ভয় হৃদয়ে সঞ্চার করি। একই সঙ্গে সন্তান-সন্ততি, পরিবার-পরিজন ও সমাজ-সংসারকে নিয়ে ইসলাম শেখার জন্য তৎপর হই। ইসলামের ওপর মজবুতির সঙ্গে আমল করি। পরিবার ও ঘর-সংসারে ইসলামের হাওয়া ও ভাবধারা চালু করি। সন্তানাদিকে প্রয়োজনীয় ধর্মীয় শিক্ষা দান করি। মানুষ বানানোর মেহনত করি। এভাবে সবার মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হলে, ইনশাআল্লাহ সেই হারানো সুদিন আবারও ফিরে আসবে।

 

 

   

সৌদি পৌঁছেছেন ৩০ হাজার ৮১০ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৮১০ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।

সোমবার (২০ মে) হজ পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

সৌদিতে যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার হাজার ৭৪৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার গেছেন ২৭ হাজার ৬৩ জন।

বাংলাদেশ থেকে ৭৭টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ৩২টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৫টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

এদিকে, সৌদি আরবে হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত দুইজন বাংলাদেশি মৃত্যু হয়েছে।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদির উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমেই চলতি বছরের হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

হজের সময় সৌদিতে তাপদাহের আশঙ্কা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজের আনুষ্ঠাকিতায় হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

হজের আনুষ্ঠাকিতায় হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হজের সময় সৌদি আরবের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন সৌদি ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজির প্রধান আয়মান গোলাম।

আসন্ন হজে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য সতর্ক করে প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আয়মান গোলাম বলেছেন যে, এ বছর হজের মৌসুম চলবে জুনের মাঝামাঝিতে। হজের মৌসুম সৌদি আরবে বছরের সবচেয়ে গরম সময়ের সঙ্গে মিলে গেছে।

বছরের এই সময়ে সাধারণত সৌদি আরবে তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতা দুটোই অনেক বেশি থাকে। ফলে হজে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক থাকতে অবহিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, হজ করতে আসা মুসল্লিদের ওপর তীব্র গরমের প্রভাব কমাতে তাদের বাসস্থানকে পর্যাপ্ত ঠাণ্ডা রাখা হবে হজ আয়োজনকারীদের অন্যতম অগ্রাধিকার। বিশেষ করে মিনা এবং আরাফাতের ময়দানে তাঁবুতে অবস্থান এবং হজের পাঁচতিন চলাচলে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

রোগীদের হজে যাওয়ার ক্ষেত্রে সৌদির নির্দেশনা
যারা দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভুগছেন তাদের হজে যাওয়ার সময় চিকিৎসার নথিপত্র সঙ্গে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। রোগীরা হজে গিয়েও যেন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান তা নিশ্চিত করতেই এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন হয় এমন কোনো রোগে যদি আপনি ভুগে থাকেন এবং বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে চিকিৎসার নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে ভুলবেন না। যেন সৌদিতে আসার ও যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পান।

এ ছাড়া বিদেশি হজযাত্রীদের সৌদি আরবে আসার আগেই ‘নেইসেরিয়া মেনিনজিটিডিস’ ভ্যাকসিন নিতে হবে এবং নিজ দেশের দ্বারা ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়টির প্রমাণপত্র নিতে হবে।

বিদেশি হজযাত্রীদের পোলিও, কোভিড-১৯ এবং ফ্লুয়ের ভ্যাকসিন নেওয়া থাকতে হবে। এতে করে সব হজযাত্রীর স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া সৌদিতে বসবাসরত যারা হজ করতে চান তাদের হজ সংক্রান্ত ভ্যাকসিনগুলো গ্রহণ করতে হবে।

এই ভ্যাকসিন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ হজযাত্রীদের পবিত্র মক্কা নগরীতে হজের জন্য যেতে মন্ত্রণালয়ের সেহাতি অ্যাপে বাধ্যতামূলকভাবে নিবন্ধন করতে হবে।

;

হজযাত্রী কমেছে ৩৭ হাজারের বেশি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন হাজিরা, ছবি: নূর এ আলম, বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে প্রবেশ করছেন হাজিরা, ছবি: নূর এ আলম, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজের খরচ বাড়ায় গত বছরের চেয়ে এবার প্রায় ৩৮ হাজার কমেছে হজযাত্রীর সংখ্যা। করোনা পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে এক লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন বাংলাদেশি হজপালনে যান। যদিও বাংলাদেশের জন্য হজরে কোটা ছিল এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের। গত বছর হজ কোটার বিপরীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কম ছিল নিবন্ধন সংখ্যা। যদিও সরকারি-বেসরকারিভাবে হজে যাওয়ার প্রাক-নিবন্ধনের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।

কিন্তু হজ প্যাকেজের মূল্য বৃদ্ধির দরুণ কয়েক দফা সময় বাড়িয়েও এবার নির্ধারিত কোটা পূরণ হয়নি। অবশেষ ৮৩ হাজার ২০৯ জন চূড়ান্ত নিবন্ধন করেন। তন্মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চার হাজার ৩১৪ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৮ হাজার ৮৯৫ জন হজপালন করবেন। আর ব্যবস্থাপনাসহ এবার হজে যাচ্ছেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। সে হিসেবে গত বছরের তুলনায় এবার সারাদেশে হজযাত্রীর সংখ্যা কমেছে ৩৭ হাজার ৭৬৭ জন।

যদিও এখন পর্যন্ত সরকারি মাধ্যমে ২ হাজার ৭৭১ জন ও বেসরকারি মাধ্যমে ৭৮ হাজার ২৭৩ জন যাত্রী হজের জন্য প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন করে রেখেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতবারের তুলনায় এবার হজের মূল খরচ বেড়েছে। ফলে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজে যাওয়ার আগ্রহ কমেছে মানুষদের মধ্যে। এ কারণে অন্যবারের তুলনায় কমেছে হজযাত্রীর সংখ্যা।

আরও পড়ুন : বদলি হজ কখন করাবেন

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশনের (হাব) কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, হজের ব্যয় এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হজে যাওয়ার মানুষের সংখ্যা কমেছে।

বিষয়টি নিয়ে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) নেতারা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, হজ কোটা পূরণ না হওয়ার প্রভাব তাদের ব্যবসায় পড়বে। কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পাওয়ায় অনেক ট্রাভেল এজেন্সি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চলতি বছর একজন বাংলাদেশিকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে গড়ে প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকা খরচ হবে, যা অনেক আগ্রহীকে হজ পালনে নিরুৎসাহিত করেছে। বিমানভাড়া, সৌদি আরবে বাসাভাড়া, মক্কা ও মদিনায় যাতায়াত ব্যয়সহ মোয়াাল্লিম ফি অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে মূল হজের খরচ অনেক বেড়ে গেছে।

হাব নেতাদের মতে, আগে মোয়াল্লিমের জন্য নির্ধারিত ফি ছিল এক হাজার থেকে ১২ শ রিয়াল, বর্তমানে তা করা হয়েছে পাঁচ হাজার রিয়াল, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিমানভাড়া করা হয়েছে এক লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া সৌদি সরকারের শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট আরোপ অন্যতম।

তাদের মতে, হজের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের করার কিছু নেই। তবে বিমানভাড়া নির্ধারণ বা ভাড়া কম রাখার বিষয়টি সরকার হস্তক্ষেপ করে হজের খরচ কমানোর ব্যবস্থা করতে পারত।

২০০৯ সালে বাংলাদেশের হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৬২৮ জন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে হয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন। করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২২ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা কমে দাড়ায় ৬০ হাজার ১৪৬ জনে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন।

;

বদলি হজ কখন করাবেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে হারামের প্রবেশ পথ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্যস্ততার কারণে কেউ হজে যেতে না পারলে অন্য কাউকে দিয়ে বদলি হজ করানো যাবে না। কারণ এটি শরিয়ত নির্দেশিত অপারগতা নয়। বদলি হজ কেবল শরিয়তের দৃষ্টিতে মক্কায় যেতে অপারগদের জন্য প্রযোজ্য। বদলি হজের বিধান হলো-

হজ ফরজ হওয়ার পর হজ করা হয়নি, এখন শারীরিকভাবে মক্কায় যেতে অক্ষম এমন ব্যক্তির জন্য অন্য কাউকে পাঠিয়ে হজ করা ফরজ। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম

বার্ধক্য বা অসুস্থতা থেকে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম হতে হবে। -মানাসিক লি-মোল্লা আলি কারি

অসিয়ত না করলেও মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা চাইলে তার জন্য বদলি হজ করাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শর্ত হলো- ওয়ারিশদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত অনুমোদন লাগবে এবং ওয়ারিশদের মধ্যে কেউ অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকলে তার ভাগের সম্পদ থেকে কিছুই নেওয়া যাবে না। -আদ দুররুল মুখতার

যার পক্ষ থেকে হজ করা হবে, তাকেই খরচ বহন করতে হবে। অসিয়ত করে গেলে প্রথমে তার রেখে যাওয়া সম্পদ থেকে ঋণ আদায় করতে হবে। এরপর অসিয়তের বিধান অনুযায়ী বাকি সম্পদ তিন ভাগ করতে হবে। এর মধ্যে এক ভাগ থেকে অসিয়তের অংশ নিতে হবে। হজের অসিয়ত করে গেলে সেই খরচও এই অংশ থেকে নিতে হবে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা

আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের সেবায় সৌদি ঐতিহ্য

বদলি হজের বিনিময়ে মজুরি নেওয়া নাজায়েজ। কারণ ইবাদতের বিনিময়ে কোনো মজুরি নেওয়া যায় না। কেউ দিলে এবং নিলে দুজনেই গোনাহগার হবেন। হজের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের বাইরে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। -আল-বাহরুল আমিক

টাকা-পয়সার হিসাবের ঝামেলা এড়ানোর জন্য হজে পাঠানো ব্যক্তি যদি বদলি হজকারীকে বলেন, আপনাকে পুরো টাকা হাদিয়া হিসেবে দিলাম, তাহলে এই টাকা দিয়ে বদলি হজ আদায় হবে না। কারণ হাদিয়া দেওয়ার কারণে বদলি হজকারী ওই টাকার মালিক হয়ে যান। -যুবদাতুল মানাসিক

হজ করেছেন এমন নেককার ব্যক্তিকে বদলি হজের জন্য পাঠানো উত্তম। হজ করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো বৈধ। তবে হজ ফরজই হয়নি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহে তানজিহি। আর হজ ফরজ হলেও আদায় করেননি এমন ব্যক্তিকে পাঠানো মাকরুহ তাহরিমি তথা নাজায়েজ। -সুনানে আবু দাউদ

;