নতুন কমিটির ওপর নাখোশ শিল্পী সমিতি নির্বাচনের প্রধান কমিশনার



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
এবার শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন খোরশেদ আলম খসরু

এবার শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন খোরশেদ আলম খসরু

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করাই চলচ্চিত্র শিল্প সমিতির মূল লক্ষ্য। কিন্তু এই অলাভজনক সংগঠনের নির্বাচন নিয়ে বহু জলঘোলা আর কাদা-ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটছে।

যদিও এবারের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ, ফল ঘোষণা-সবই ছিল শান্তিপূর্ণ। ঝামেলা শুরু হয় গত মঙ্গলবার, শপথ অনুষ্ঠানের দিন। এদিন বিকেলে অনুষ্ঠিত এই শপথে নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ পড়িয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, যে কাজ তার করার কথা ছিল না। সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী শপথ পড়ানোর কথা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা খোরশেদ আলম খসরু।

উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও শপথ পড়াতে ডাকা হয়নি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে। কাজী হায়াৎ যখন শপথ পড়াচ্ছিলেন, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়ে দ্রুতই ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন খসরু। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে কথাও বলেছেন তিনি।

খসরু বলেন, ‘শপথের দিন আমি উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমাকে ডাকেনি। এটা সংগঠনগুলোর একটি নিয়ম, যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, তিনি শপথবাক্য পাঠ করান। সেখানে আমি থাকা অবস্থায় যখন দেখলাম, তারা আমাকে কিছু বলছে না, ডাকছে না। যখন কাজী হায়াৎ সাহেবের নাম ঘোষণা দিল, তখন আমি চলে এলাম, কিছুটা অপমানিত বোধ করে চলে এলাম। আমার মেয়াদকাল ছিল। কাজী হায়াতের কি মেয়াদ আছে?’

খোরশেদ আলম খসরু

তিনি আরও বলেন, ‘এটা সংকীর্ণ মনমানসিকতার পরিচয় ছাড়া কিছুই নয়। হয়তো ইশারা-ইঙ্গিতে হয়েছে। কারণ, আগের দিনই সভাপতি বলেছে, শপথ আমিই পড়াব। তারপর সেখান থেকে সরে আসছে। ওনার কথামতো আমি উপস্থিত ছিলাম। এটা তো নিয়ম। নির্বাচন কমিশন অপারগতা প্রকাশ করলে আগের মেয়াদের সভাপতি দিয়ে পড়ানোর কথা। তখন ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেব পড়াতেন। এটাই নীতি। কিন্তু তারা যা খুশি তা-ই করল।’

এ সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়া প্রসঙ্গে এই প্রযোজকনেতা বলেন, ‘নির্বাচিত সব সদস্যরা কীভাবে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাল? এটা সম্পূর্ণই অনাকাঙ্ক্ষিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। এটা হওয়া উচিত ছিল না। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অবশ্যই ধৈর্যশীল হওয়া উচিত ছিল।’

   

প্রথম আন্তর্জাতিক কনসার্টের অভিজ্ঞতা আজীবন স্মৃতিময় হয়ে থাকবে : আনিসা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
অস্ট্রেলিয়ার সমূদ্র সৈকতে আনিসা; (ইনসেটে) মেলবোর্নের শোতে গাইছেন তিনি

অস্ট্রেলিয়ার সমূদ্র সৈকতে আনিসা; (ইনসেটে) মেলবোর্নের শোতে গাইছেন তিনি

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরটি ছিল তরুণ সঙ্গীতশিল্পী আতিয়া আনিসার জন্য স্বর্ণালী একটি সময়। কেননা, একই বছরে তিনি অল্প দিনের সঙ্গীত ক্যারিয়ারে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। তার গাওয়া ‘পরান’ সিনেমার ‘চলো নিরালায়’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায় গত বছরেই।

এই শিল্পী এখন গান আর পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সদ্য অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে আয়োজিত কনসার্টে গাইতে। এবারই প্রথম তিনি দেশের বাইরে গাইতে গেলেন। প্রসঙ্গটি তুলতেই আনিসা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এটা আমার প্রথম আন্তর্জাতিক সঙ্গীত সফর। তাও আবার অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে। চমৎকার অভিজ্ঞতাও হয়েছে। সবমিলিয়ে এ শোটি আজীবন স্মৃতিময় হয়ে থাকবে।’

মেলবোর্নের শোতে গাইছেন আনিসা

প্রথম যে কোন অভিজ্ঞতাই অন্যরকম মনে হয়। কেমন ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক শোয়ের অভিজ্ঞতা, সে কথাও জানালেন আনিসা। তার ভাষ্য, ‘এক কথায় অনবদ্য অভিজ্ঞতা। আমি জানতামও না, অস্ট্রেলিয়ার মতো ব্যস্ত দেশে থেকেও বাঙালিরা আমার গান এভাবে শোনেন, আমাকে এভাবে ভালোবাসেন! তারা আমার গানের নাম ধরে ধরে গাওয়ার অনুরোধ করেছেন। চলো নিরালায় গানটি তো আমার গাইতেই হয়নি। তারা আমার সঙ্গে অনবরত ঠোট মিলিয়ে গেছেন। সে সময় তাদের এক্সপ্রেশন দেখে বেশ গর্ব অনুভব হয়েছিল। এই ভালোবাসাটা আমি ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাবো।’

আতিয়া আনিসা আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াতে ছিলাম ৬ দিন। দুটি শো নিয়ে গিয়েছিলাম। ২৮ এপ্রিল মেলবোর্নে শোটি সফলভাবে সম্পন্ন করি। কিন্তু ৫ মে সিডনির শোটি আর করতে পারিনি। কারণ ৩ মে থেকে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ পড়ে হুট করেই। বাধ্য হয়ে একটি শো করে দেশে ফিরি। এখন পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। আর একটা পরীক্ষা বাকী। এরমধ্যে ঢাকায় যে শোগুলোর কথা চলছিল সেগুলো নিয়েছি।’

মেলবোর্নের শোতে মুগ্ধ হয়ে আনিসার গান শুনছেন দর্শক

এতোদিন পর দেশের বাইরে গাইতে যাওয়ার সুযোগ পেলেন? জানতে চাইলে আনিসা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘‘আসলে বেশ আগে থেকেই বিভিন্ন দেশে শো করার প্রস্তাব পাই। কিন্তু নিজেই তখন শোগুলো করিনি। আমার সব সময় মনে হয়েছে, নিজের পরিচিতি তৈরী করার পর আমি দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে দেশের বাইরে যাব। এরমধ্যে আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু পুরস্কার অর্জন করেছি। সবচেয়ে বড় কথা- আমার মৌলিক কয়েকটি গান হয়েছে যা দর্শক শোনার জন্য আবতার করে। বলতে গেলে, ‘চলো নিরালায়’ গানটি আমার গলায় লাইভ শোনার জন্যই অস্ট্রেলিয়াতে আমাকে শো করতে নিয়ে গিয়েছেন আয়োজকরা। সবমিলিয়ে এখন নিজেকে সেই যোগ্যতা সম্পন্ন মনে করেছি বলেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শো করতে সম্মত হয়েছি।’’

মেলবোর্নের সবচেয়ে সুন্দর জায়গার একটি এই সমূদ্র সৈকত। সেখানে ঘুরেছেন আনিসা

গত বছর মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পাওয়ার পর এবারও এই সম্মানজনক পুরস্কারের সেরা গায়িকার মনোনয়ন পেয়েছেন আনিসা। এবার দর্শক ভক্তরা তাকে সেরার তালিকায় রেখেছেন চরকির ওয়েব ফিল্ম ‘পুর্নমিলনে’র গান ‘পুড়ে গেলাম’-এর জন্য। তার সঙ্গে মনোনয়ন তালিকায় আরও রয়েছেন কোনাল, অবন্তী সিথি ও জেফার রহমান। এবার পুরস্কার নিয়ে কতোটা আশাবাদী জানতে চাইলে আনিসা বলেন, ‘নিজের জন্য সবাই শতভাগ আশাবাদী থাকেন। আমিও তার বাইরে নই। কেননা, একটি বছরের এতো গানের ভীড়ে যখন ভক্তরা আমার গানটিকে সেরা চার-এ স্থান দেন তখন প্রত্যাশা না বেড়ে পারে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, পুরস্কার পাই আর না পাই, মনোনয়ন পাওয়াটাও পুরস্কারের চেয়ে কোন অংশে কমকিছু নয়।’

;

ভারতের ইউটিউবাররাও শাকিব খানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
‘তুফান’-এর টিজারে সুপারস্টার শাকিব খান

‘তুফান’-এর টিজারে সুপারস্টার শাকিব খান

  • Font increase
  • Font Decrease

গত মঙ্গলবার বিকেলে প্রকাশ করা হয়েছে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান অভিনত ‘তুফান’ সিনেমার টিজার। ব্যবসাসফল নির্মাতা রায়হান রাফী পরিচালিত সিনেমাটির ঘোষণার পর থেকেই দর্শকের মধ্যে অন্য রকম এক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

টিজার প্রকাশের পর প্রশংসাসূচক মন্তব্যে সত্যিই যেন ‘তুফান’ এসে গেছে! শুধু বাংলাদেশের শাকিবিয়ানরাই নয়, পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় ইউটিউবাররাও মুগ্ধ ‘তুফান’-এর টিজারে। ভিডিও কনটেন্টে তারা এই টিজারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

কলকাতার জনপ্রিয় ইউটিউবার অরিত্র ব্যানার্জি নিজের চ্যানেল ‘অরিত্রস জ্ঞান’-এ ‘তুফান’-এর টিজার নিয়ে বলেন, ‘শাকিব খানের সুপারস্টার ইমেজ রায়হান রাফী যেভাবে তুলে ধরেছেন, সেটা আগে দেখা যায়নি। এ ছাড়া টিজারে শাকিব খানের অভিনেতা সত্তাকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে।

টিজারের শেষ দৃশ্যে যেখানে বাথটাবে শাকিব বসে আসেন, চারপাশে আগুন জ্বলছে-দৃশ্যটি দেখতে ব্যাপক লাগছে। এ শাকিব চিৎকার করছেন, দৃশ্যটিতে তার অভিনয়ের দিকটাও উঠে এসেছে।’
এ ছাড়া মাত্র কয়েক সেকেন্ডের উপস্থিতিতে চঞ্চল চৌধুরী নিজের জাত চিনিয়েছেন, সেটাও উল্লেখ করেছেন অরিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় ইউটিউবাররাও মুগ্ধ ‘তুফান’-এর টিজারে। কোলাজ

পশ্চিমবঙ্গের আরেক জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেল ‘রূপমস রিভিউ’-এর রূপস ‘তুফান’-এর টিজার নিয়ে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে যত বড় তারকার সিনেমার টিজার এসেছে, তার থেকে এটা অনেক গুণ এগিয়ে।’নির্মাতার রাফীর প্রশংসা করে রূপম আরও বলেন, ‘যাঁরা এখন মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমা বানাচ্ছেন, এই পরিচালকের কাছ থেকে শেখা উচিত। কারণ, এ ছবির বাজেট তো ১৫ বা ২০ কোটি নয়, কীভাবে অল্প বাজেটে এ ধরনের লুক অ্যান্ড ফিল দিতে পারেন, তাকে কুর্নিশ করা উচিত।’

শাকিবের প্রশংসা করে রূপম বলেন, ‘শাকিবকে যদি ভালো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে দেওয়া হয়, তিনি দারুণ কাজ করবেন। শাকিব খানের যে লুক, সেটা দারুণ।’একই সঙ্গে তিনি টিজারের শুরুর মনোলগ আর গানেরও প্রশংসা করেন।

আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল ‘আর্টিস্টিক সেভেন সেন্স’-এর সাগরনীল বলেন, ‘এটা এমন একটি টিজার, যেটা নিয়ে মানুষ আরও কয়েক সপ্তাহ কথা বলবে। কারণ, বাংলা ছবির যে বাজেট, সেখানে এ ধরনের টিজার স্বপ্নের অতীত। সেখানে রায়হান রাফী স্বপ্নকে সত্যি করে দেখিয়েছেন।’

আলোচিত এই ইউটিউবার ‘তুফান’-এর টিজার নিয়ে আরও বলেন, ‘ছবিটি ভালো হবে, খুব ভালো হবে, এমন প্রত্যাশা আমাদের সবারই ছিল। কিন্তু এই টিজার সে প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। টিজারে দেখে মনে হয়েছে, রাফী তারকা শাকিব খানের সঙ্গে অভিনেতা শাকিব খানকেও ছবিতে তুলে এনেছেন।’

‘তুফান’-এর টিজারে সুপারস্টার শাকিব খান

সাগরনীলও ‘তুফান এল রে’ গানটির প্রশংসা করেন। তিন ইউটিউবারই ‘তুফান’-এর প্যান ইন্ডিয়ান বা সর্বভারতীয় মুক্তি দেওয়ার পরামর্শ দেন। পবিত্র ঈদুল আজহায় মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সিনেমাটিতে শাকিব খান ছাড়াও অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, মিমি চক্রবর্তী, নাবিলাসহ আরও অনেকেই।

;

সোহেল চৌধুরী খুনের রায় শুনে যা বললেন মেয়ে লামিয়া



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
(বাঁমে) বাবা সোহেল চৌধুরী ও মা দিতির সঙ্গে ছোট্ট লামিয়া, বর্তমানে লামিয়া চৌধুরী (ডানে)

(বাঁমে) বাবা সোহেল চৌধুরী ও মা দিতির সঙ্গে ছোট্ট লামিয়া, বর্তমানে লামিয়া চৌধুরী (ডানে)

  • Font increase
  • Font Decrease

২৫ বছর আগে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক অরুণাভ চক্রবর্তী এই রায় ঘোষণা করেন।

রায় ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে সোহেল চৌধুরীর মেয়ে লামিয়া চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা তো ফেরত আসবে না। উনারা (অপরাধীরা) যেটা করেছেন, সেটার জবাব উনাদেরই দিতে হবে। উনাদের যাবজ্জীবন হোক কিংবা যেটাই হোক—বাবার মৃত্যু আমার জীবনে যে প্রভাব ফেলেছে, সেটা কোনোভাবেই পরিবর্তন হবে না। রিয়েলিটি নিয়েই আমাকে থাকতে হবে। এখন তাঁদের বিচারে আমাদের কোনো কিছুই পরিবর্তন হয়নি, হবেও না।’

(বাঁমে) লামিয়া চৌধুরী, বাবা সোহেল চৌধুরীর কোলে ছোট্ট লামিয়া (ডানে)

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্প ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেই খুনের মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আবদুল আজিজ, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাকি আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

ঢাকাই সিনেমার তারকা জুটি সোহেল চৌধুরী ও দিতির দুই সন্তানের মধ্যে লামিয়া চৌধুরী বড়। ছেলে শাফায়েত চৌধুরী কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে করে ইউরোপে থিতু হয়েছেন। কানাডার টরন্টো ফিল্ম স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় এসে নির্মাণে মনোযোগী হয়েছিলেন লামিয়া।

শৈশবেই বাবাকে হারানোর পর মা দিতির কাছেই বেড়ে উঠেছেন লামিয়া ও শাফায়েত। ২০১৬ সালে দিতির মৃত্যুর পর মা-বাবার স্মৃতিচিহ্ন নিয়েই বেঁচে আছেন তারা।

ঢাকাই সিনেমার তারকা জুটি সোহেল চৌধুরী ও দিতির দুই সন্তানের মধ্যে লামিয়া চৌধুরী বড়

এদিকেম গতকালেই লামিয়া তার নিজের কারণে আলোচনায় এসেছেন। তিনি সিনেমা নির্মাণ করতে যাচ্ছেন। ‘মেয়েদের গল্প’ শিরোনামের নারীকেন্দ্রিক সেই সিনেমাটি প্রযোজনা করবেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজেমেরী হক বাঁধন। এই ছবিতে অভিনয়ও করবেন বাঁধন।

;

নন্দিত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের আদ্যোপান্ত



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

২৫ বছর আগে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী খুনের ঘটনায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আদনান সিদ্দিকীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তারা তিনজনই পলাতক। বাকি ছয় আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার কাগজপত্র ও রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ট্রাম্প ক্লাবের সামনে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। পরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তদন্তে উঠে আসে আলোচিত ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্প ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়।

স্ত্রী চিত্রনায়িকা পারভীন সুলতানা দিতি ও কন্যা লামিয়ার সঙ্গে সোহেল চৌধুরী

আদালতে সাক্ষীরা যা বলেছিলেন

সাক্ষীরা বলেছেন, ওই দিন রাতে বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে গান বন্ধ করতে বলেছিলেন সোহেল ও তার বন্ধুরা। গান বন্ধ করা নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেলের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী আজিজের ওপর খেপে যান। তখন সোহেলের বন্ধু কালা নাসির আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গুলি করতে যান। এ সময় ক্লাবের বাথরুমে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। এই ট্রাম্প ক্লাবের মালিকানা ছিল বান্টি ও আশীষের। বিরোধের শুরু এখান থেকেই।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য বলছে, ট্রাম্প ক্লাবের কার্যক্রম চলত বনানীর আবেদিন টাওয়ারের সপ্তম তলায়। ক্লাবের পশ্চিম পাশে ছিল একটি জামে মসজিদ। জবানবন্দিতে একাধিক সাক্ষী বলেছেন, ওই ক্লাবে নাচ-গানসহ অসামাজিক কার্যক্রম চলত। ক্লাবের অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে স্থানীয় মুসল্লিদের পক্ষে অবস্থান নেন সোহেল চৌধুরী।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সোহেল চৌধুরী মসজিদ কমিটির লোকজন নিয়ে ক্লাব বন্ধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝামেলা হয়। ট্রাম্প ক্লাবের কাজ ব্যাহত হলে সোহেল চৌধুরীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা।

২৪ জুলাইয়ের পার্টিতে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝামেলার পর থেকে তার ওপর ট্রাম্প ক্লাবে ঢোকায় অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আসে। সেটি ক্লাবের কর্মচারীরাও পুলিশকে তখন জানিয়েছিলেন।

সোহেল চৌধুরীর মা নূরজাহান বেগম আদালতকে বলেছিলেন, বনানীর ট্রাম্প ক্লাবে অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। ক্লাবের পাশের মসজিদ কমিটি ও মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ করেছিলেন।

পলাতক আজিজ মোহাম্মদ ভাই এই বয়সেও এমন আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন বিদেশে

আজিজ ও সোহেলের বিরোধ

আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও সোহেল চৌধুরীর মধ্যে যে গন্ডগোল হয়েছিল, সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী মির্জা মাহাফুজ আদালত ও পুলিশের কাছে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। ১৬১ ধারার জবানবন্দিতে তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই রাত ১০টার দিকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ক্লাবে যান তিনি। তখন ক্লাবে আসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। আজিজ মোহাম্মদ তার স্ত্রীকে গান গাইতে বলেন। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরী ও তার কয়েক বন্ধু গান থামাতে বলেন। একপর্যায়ে সোহেল চৌধুরী ও তার দলের লোকজন মাহাফুজের টেবিলের সামনে আসেন। তখন তারা আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের পাশে বসা এক নারীকে উঠে আসতে বলেন। ওই নারী না উঠলে সোহেল চৌধুরী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে যান।

মামলার আরেক সাক্ষী গোলাম মোহাম্মদ। তিনি সোহেলের বন্ধু। সাক্ষী হিসেবে তিনি তখন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে বিচারককে বলেছিলেন, খুন হওয়ার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর ঝগড়া হয়। বিষয়টি তার সামনে ঘটেছে। এ ছাড়া ট্রাম্প ক্লাবের বান্টি ইসলামের সঙ্গে সোহেলের দুই থেকে তিনবার ঝগড়া হয়। পরে তা মিটেও যায়। তবে আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। আশীষ চৌধুরীই সোহেল চৌধুরীকে ক্লাব থেকে বের করে দেন। ভবিষ্যতে সোহেলকে ক্লাবে না আসার জন্য হুমকিও দেন।

তরুণ সোহেল চৌধুরী

খুনের ১৫ দিন আগে সোহেলকে টেলিফোনে হুমকি

সোহেল চৌধুরী হত্যা নিয়ে তার মা নূরজাহান বেগম আদালতকে বলেন, তাদের বাসার উল্টো দিকে ট্রাম্প ক্লাব। হত্যাকাণ্ডের দিন রাত দুইটায় সোহেল বাসায় ফেরেন। ক্লাবের সামনে জামে মসজিদ। পরে সোহেল আবার ক্লাবে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে দুটি গুলি করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সোহেল চৌধুরীর মা আদালতকে আরও বলেছিলেন, সোহেল খুন হওয়ার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে টেলিফোনে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও বান্টি ইসলামের লোকজন হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, সোহেলের মৃত্যুর দিন ঘনিয়ে আসছে।

যেভাবে খুন

সোহেল চৌধুরীকে কীভাবে গুলি করা হয়েছিল, সে ব্যাপারে অভিযোগপত্রে বলা হয়, সেদিন সোহেল চৌধুরী ক্লাবে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে ক্লাবে ঢোকার অনুমতি না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে রাত তিনটার দিকে সোহেল চৌধুরী আবার ক্লাবের সামনে আসেন। তখন পেশাদার খুনিদের দিয়ে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

স্ত্রী পারভীন সুলতানা দিতি ও দুই সন্তানের সঙ্গে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী

মামলার সাক্ষী আবুল কালাম পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, সেদিন সোহেলসহ সাত থেকে আটজন লোক ক্লাবের সামনে গেলে হঠাৎ গুলি করা হয়। তার পেটে গুলি লাগে। তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। সন্ত্রাসীদের গুলিতে আরও গুলিবিদ্ধ হন নীরব ও দাইয়ান। আর সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। গুলি করার পর ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক গাড়িতে করে পালিয়ে যান। সোহেলের সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বান্টি ইসলাম ও আশীষ রায় চৌধুরীর আগের ঝগড়ার জেরে তাকে ঠান্ডা মাথায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

;