রমজান মাসে ছুটি চায় জবি শিক্ষার্থীরা



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রমজান মাসে ছুটি চায় জবি শিক্ষার্থীরা

রমজান মাসে ছুটি চায় জবি শিক্ষার্থীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

একটি বছর ঘুরে আবারো এসেছে পবিত্র রমজান মাস। ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের জন্য এক রহমত ও বরকতময় মাসের নাম রমজান মাস। রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা, যে রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এই মহিমান্বিত মাসে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকে পুরো মুসলিম উম্মাহ। 

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে দেশ-বিদেশের সকল মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি)  মুসলিম শিক্ষার্থীদের মাঝেও সেই পবিত্র মাসের খুশির আমেজ লক্ষণীয়।

মহান আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য রমজানের এক মাস ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পার করতে চায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ক্লাস-পরীক্ষা-ল্যাব চলমান থাকলে সেই ইবাদত-বন্দেগিতে কিছুটা ভাটা পড়ে। রোজা রেখে দীর্ঘ সময় ক্লাসে মনোযোগ দেওয়া, পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া যেমন কষ্টকর, তেমনি ৬ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ল্যাব করাটাও কষ্টকর।  

এদিকে প্রকৃতির রুক্ষ আচরণ শিক্ষার্থীদের কষ্টকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিবে। কারণ, বাংলাদেশে এখন বসন্তকাল চললেও প্রকৃতির বিচারে সেটি গ্রীষ্মকাল মনে হয়। প্রচন্ড রোদে একটু হাটলেই হাসফাস অবস্থা হয় সকলের। পাশাপাশি ব্যস্ত সময়সূচিতে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

রসায়ন বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মারুফা হাকিম বলেন, আমরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও আমাদের পূর্ববর্তী জেনারেশন থেকে বিবেক, বিচার-বুদ্ধি, মেধা ও মননশীলতায় পিছিয়ে আছি। রমজানে আল্লাহর সন্তষ্টির কথা চিন্তা না করে টানা ক্লাস করতে হয়, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ল্যাব করতে হয়। কেন এ বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়না? রমজানে সেহেরীর পরে সকাল সকাল ক্লাস রাখা হয়। ক্লাস করে বাসায় গিয়ে ক্লান্ত থাকার জন্য সময়মতো নামাজ পড়া হয়না। ইফতারের পরে বিশ্রাম নেওয়ার বদলে নিতে হয় মিড পরীক্ষার প্রিপারেশন। পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এবারও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পবিত্র রমজান উপলক্ষে ৪০ দিনের দীর্ঘ ছুটি দিয়েছে, তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান পিয়াস বলেন, রমজান মাসে রোজা রেখে ক্লাস, পরীক্ষা ও ল্যাবে মনোযোগ দেয়া  কষ্টকর। সারাদিন রোজা রেখে ক্লাস-পরিক্ষার পর আবার টিউশনের জন্য সময় বের করতে হয়। দিনে এতটা দৌড়ঝাপ করে ইফতারের পর শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ি। ফলে মিডের পড়ার প্রতি মনোযোগ আসে না। আবার তারাবী নামাজ পড়তে হয়। ১২ টার দিকে ঘুমাতে গেলে সেহরীর জন্য উঠতে হয় ৪ টায়। ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমানোর প্রিপারেশন নিতে নিতে ৬ টা বেজে যায়। আবার ৮ টায় উঠে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হয়। ফলে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে ক্লাস ও ল্যাবে কনসেনট্রেট করতে পারি না। আবার, পড়াশোনার পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় মিড পরিক্ষা খারাপ হয়।

সাভার থেকে আসা ১৪তম আবর্তনের আরেক শিক্ষার্থী মাহাদী হাসান সিয়াম বলেন, রমজান মাসে রোজা থেকে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো ভার্সিটির বাস ধরা। যেহেতু আমাদের আবাসন সুবিধা নেই, তাই প্রশাসনের উচিত ছিল রমজান মাসে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিয়ে ভাবা। সেহরী করে ঘুমানোর সময় পাই না। বাসা থেকে ৬ টায় বের হয়ে সাড়ে ৬ টায় ভার্সিটির বাস ধরতে হয়। আবার ভার্সিটির বাস মিস হয়ে গেলে লোকাল বাসে আসলে ক্লাস ধরতে পারি না। রোজা থেকে যাওয়া আসা নিয়ে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় বাস জার্নি করতে হয়; যা খুবই কষ্টকর। রাস্তায় জ্যামের কারণে অনেক সময় ইফতার করা যায় না। বাসায় ফিরে ইফতার করে পড়াশোনায় কনসেনট্রেট করতে পারি না। ফলে সেশনজট কমানোর চেষ্টা থাকলেও আল্টিমেটলি রেজাল্ট খারাপ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জি. এম. আল-আমীন বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা সেশনজটে আছে। কম্পিটিশনের এই যুগে আমাদের শিক্ষার্থীরা দ্রুত গ্রাজুয়েশন শেষ করার চেষ্টা করছে। অন্যান্য বছরে রোজার মধ্যে যেভাবে ক্লাস-পরীক্ষা চলেছে, এবারও সেভাবেই চলবে আমাদের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী। 

দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ল্যাব করার বিষয়ে তিনি বলেন, রসায়ন বিভাগ ছাড়া বিজ্ঞান অনুষদের অন্যান্য বিভাগে খুব বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। আমাদের শিক্ষকরা সেভাবেই এডজাস্ট করেন। যে ল্যাবগুলোতে সময় বেশি লাগবে সেগুলো রোজার পরে রাখেন।

তিনি আরও বলেন, করোনার পরবর্তী সময়ে আমরা এখনো রাইট ট্র‍্যাকে যেতে পারি নি। তাই আমরা এখন চাচ্ছি শিক্ষার্থীরা দ্রুত কারিকুলাম শেষ করুক এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাক।

   

মধ্যরাতে জবির ছাত্রী হলে আগুন, ভয়ে অসুস্থ ১



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে হঠাৎ গ্যাস লিকেজ থেকে গ্যাসের চুলায় আগুন ধরে যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো হলে। তবে দ্রুতই আগুন নেভাতে সক্ষম হয় ছাত্রীরা।

শুক্রবার (৩ মে) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এক ছাত্রী। তবে প্রাথমিকভাবে ওই ছাত্রীর নাম পরিচয় জানা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রী হলের এক শিক্ষার্থী জানান, হলের অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নষ্ট অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ। আগুনের ঘটনায় সবাই আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকায় ভেজা কাথা দিয়ে আগুন নেভানো হয়।

ওই ছাত্রী আরও জানান, আজ হলের কোনো ফ্লোরেই কোনো হাউজ টিউটর নেই। যে ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়ার মতোও পরিস্থিতি নাই। হলের ম্যাক্সিমাম গ্যাস লাইনে লিকেজ আছে। লাল টেপ দিয়ে লিকেজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এগুলো ঠিক না করলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

 

 

 

;

জাবিতে খাবার হোটেলে দাম বেশি রাখার অভিযোগ: ১৫ হাজার টাকা জরিমানা



মাহমুদুল হাসান, বার্তা২৪.কম, জাবি করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলাস্থ ‘রাঁধুনী’ হোটেলের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের কাছ থেকে খাবারের দাম বেশি রাখার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি)।

শুক্রবার (৩ মে) বটতলায় এবং সালাম-বরকত হল সংলগ্ন খাবারের দোকানগুলোতে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ, মূল্য তালিকা পর্যবেক্ষণ ও হোটেল মালিকদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি) জাবি শাখার উপদেষ্টা ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া।

অভিযান পরিচালনাকালে ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘রাঁধুনী’ হোটেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি এবং যথোপযুক্ত জরিমানা করেছি। প্রত্যেক দোকানে খাবারের মান ঠিক রাখতে সতর্ক করা হয়েছে। নিয়মিত আমাদের এই অভিযান চলবে। ভবিষ্যতে পচা-বাসি খাবার খাওয়ানোর কিংবা দাম বেশি রাখার অভিযোগ পেলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত বুধবার (১ মে) দর্শন বিভাগের এক অধ্যাপক ‘রাঁধুনী’ হোটেলে খাবার খেতে গেলে খাবার মূল দামের দ্বিগুণ রাখেন হোটেল মালিক রিপন মিয়া।

ভাউচারে দেখা যায়, ৩০ টাকা মূল্যের তিন প্লেট ভাতের দাম রাখা হয়েছে ৯০ টাকা। ৩৫ টাকা মূল্যের দইয়ের দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। ৬০ টাকা মূল্যের টেংরা মাছের দাম রাখা হয়েছে ৮০ টাকা। শাক ও কচুর লতির দাম ৮০ টাকা হলেও রাখা হয়েছে ৩শ ৪০ টাকা। ১শ টাকা মূল্যের দুই পিস রুই মাছের দাম রাখা হয়েছে ৩শ টাকা।

;

চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে ১১ মে ঢাবিতে সমাবেশ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর চেয়ে আন্দোলন জোরদার করতে আগামী ১১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশের ডাক দিয়েছে ‘চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থী সমম্বয় পরিষদ’।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের মুখপাত্র শরিফুল হাসান শুভ এ ঘোষণা দেন।

শরিফুল হাসান শুভ বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি চাই। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ৩৫ বছর চাই। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট থেকে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর ডিও লেটার প্রদান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্ন, এমপি জোর সুপারিশ করেছেন এবং সেই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে ৩৫ জন স্থানীয় সংসদ সদস্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নীতিগত সমর্থন করে জোর সুপারিশ করেন।

সেই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে ৫ জন পেশাজীবী সংগঠন ও ৩ জন ছাত্র সংগঠনের লিখিত সুপারিশের ভিত্তিতে দ্রুত প্রজ্ঞাপন চেয়ে আগামী ১১ মে শিক্ষার্থী সমাগম পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া হলো।

তিনি আরো বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়াতে হবে অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এটা নির্ধারণ করতে হবে। এ দাবি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, এ সময় তিনি চাকরির বয়স ৩৫ বছর চাওয়ার নানাবিধ যৌক্তিকতা ও উপকারিতা উপস্থাপন করেন।

;

জবি শিক্ষককে দেখে নেয়ার হুমকি, সতর্ক করেই দায় সেরেছে প্রশাসন



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিস্তার জাহান কবিরকে প্রকাশ্য হেনস্থা ও হুমকির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম সাঈদকে সতর্ক করেই দায় সেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘদিনের দায়সারা কাজের ফলশ্রুতিতেই এখন শিক্ষককেও হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এভাবে অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ার ফলে অপরাধ প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কতির ফলে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক মারধরের শিকার হলেও সেটিতে কেউ অবাক হবে না।

গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ২৮ আগস্ট, সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষকদের বাস ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে আপনি (সাঈদুল ইসলাম সাঈদ) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ মোঃ নিসতার জাহান কবিরের সঙ্গে চরম ধৃষ্টতামূলক আচরণ করেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির মতামত অনুসারে আপনাকে ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মকান্ড না করার এবং করলে কঠিনতম শাস্তি প্রদান করা হবে মর্মে সর্তক করা হলো।

এই ঘটনায় গত বছর ৩১ আগস্ট তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহা, সদস্য হিসেবে সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার হেদায়েতুল্লা তুর্কিকে মনোনীত করা হয়।

এভাবে প্রকাশ্যে একজন শিক্ষককে হেনস্তা ও হুমকির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম সাঈদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এছাড়া সাঈদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর আলাদা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিল। পরে সাঈদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের ডাক দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে মানববন্ধন স্থগিত করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহা বলেন, তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানি নিয়ে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই অনুযায়ী কিছু সুপারিশমালা দেওয়া হয়েছে৷ এখন প্রশাসন এটাকে কীভাবে নিষ্পত্তি করবে সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে। এখন বাকী দায়িত্ব প্রশাসনের ওপর, তদন্ত কমিটির না। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাদের পছন্দ না হলে তদন্ত আবার করতে পারে। তদন্ত একাধিক বার হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের সাপেক্ষে উপাচার্যের নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ অপরাধের ধরনের উপর ভিত্তি করেই তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক যদি এই বিচারে সন্তুষ্ট না হোন তবে পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবির বলেন, সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয়ে কিছু বলবো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সকল সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করি। তবে মতামত প্রকাশ বা সমালোচনার অধিকার সকলেরই রয়েছে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ইতিবাচক কিছুই হয় নি। এর ফলে অন্যায়কারীরা আরও শক্তিশালী হবে, তারা আরও সাহস পাবে। তারা ভাববে অন্যায় করে কিছু হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো কিছু করতে পারে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্ষমতা নেই।

তিনি আরও বলেন, ছেলেটি আমাদের বিভাগের এসে বিভাগের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে। বিভাগের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা বা শক্তির উৎস কোথায় সেটি খুঁজে বের করা উচিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

জানা যায়, ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অভিযুক্ত সাঈদুল ইসলাম সাঈদ তার পছন্দের ২ জনকে ভোটার করার জন্য অধ্যাপক শাহ নিস্তারকে অনুরোধ করেন। এ সময় অধ্যাপক নিস্তার বলেন, প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। তারা বাছাই করে তা নির্ধারণ করেন। তবে সাঈদ অধ্যাপক নিস্তারকে নিজের পছন্দের লোককে ভোটার করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। পরে তিনি অস্বীকৃতি জানালে প্রকাশ্যে 'দেখে নেয়ার' হুমকি দেন।

;