দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোবার মত বোরখার আড়াল থেকে কেবল ছদ্মবেশী পুরুষই নয়, বেরিয়ে আসে সব দাগি আসামি। পত্রিকায় বড়-বড় হেডলাইনে সংবাদ ছাপে। তিনটি কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিরাই সুবর্ণদ্বীপের ছদ্মবেশী নৌকারোহীর দল। এদিকে পত্রিকার সংবাদের জোর প্রতিবাদলিপি পাঠিয়ে টেলিফোনেও সাংবাদিকদের কড়া ভাষায় ধমক লাগাতে থাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষ। মনগড়া সংবাদ ছাপবার জন্যে তারা রূঢ় ভাষায় সমালোচনার তীর ছোঁড়ে সাংবাদিকদের লক্ষ করে। কেননা, তাদের দাবি, তাদের কারাগারে যেহেতু কয়েদিসংখ্যা পূর্ববৎ বহাল থাকে, সেহেতু সুবর্ণদ্বীপের মহিলাবেশী যাত্রীদের জেলপালানো আসামি হওয়া কেবল উন্মাদগ্রস্ত কল্পনার ফল হওয়াই সম্ভব। কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়েছিল সাপ, কিন্তু সেই সাপ যে অজগর এবং তার বৃহদন্ত্রে যে আস্ত দেহ নিহিত ছিল সেটাও অবশেষে জানা গেল।

আরও পড়ুন দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান (পর্ব-১)

সাংবাদিকেরা তথ্য-উপাত্ত-প্রমাণ দিয়ে বললেন, যারা সুবর্ণদ্বীপে পাকড়াও হওয়া ছদ্মবেশী তারা বিভিন্ন শ্রেণির কয়েদি-ই। এদের মধ্যে খুনি, ডাকাত, মাদকাসক্ত অপরাধী, ধর্ষক, শিশুধর্ষক পরিচিত প্রায় সব ধরনের অপরাধীই রয়েছে যারা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে কখনই ধরতে সক্ষম হয় নি। ফলত তারা সবসময়েই ছিল হাতকড়ামুক্ত অর্থাৎ তাদের থাকবার কথা ছিল জেলখানায় কিন্তু তারা বসবাস করছিল মুক্তাঞ্চলে। পুলিশও তা জানতো। ভেতরে-ভেতরে তাদের সঙ্গে পুলিশের একটা ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলতেই থাকে। কর্তৃপক্ষ যখন অধীর হয়ে তাড়া লাগায়, আসামি কই, তখন পুলিশ ঠিক-ঠিক ধরে আনে আসামিদের। তারাও হয়তো উপযুক্ত সময় এবং অনুকূল পরিস্থিতি পেলে আসামিই হয়ে উঠতো কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তখনও তারা আসামি নয়, তারা অপরাধ সংঘটন করে নি। দেখা গেল জেলখানায় যতজন কয়েদি থাকবার কথা ঠিক ততজনই থাকে কিন্তু সংখ্যা তো গুণবাচকতার উপস্থাপক না-ও হতে পারে। হয়তো কারা এবং ঊর্ধ্বতন দুই কর্তৃপক্ষেরই তা জানা ছিল। এখন পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোলা হতে থাকলে সেই ঘোলা পানিতে বরাবরের মত মাছ-শিকারিদেরও দেখা যেতে থাকে। তারা নানা ধরনের ছিপ ফেলে মাছের তালাশ করতে থাকে। আবার, আরেকদল সাংবাদিক অন্য সম্ভাবনার সূত্র উত্থাপন করে। তাদের বক্তব্য, যারা সুবর্ণদ্বীপে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে তারা হয়তো কোন ধরনেরই অপরাধী নয়, তারা নিতান্ত ভাগ্যান্বেষণকারী। এদিকে, একটা মারাত্মক বিষয় এরই সমান্তরালে বেরিয়ে আসে, জেলখানার আসামি যদি তারা প্রকৃতই হয়ে থাকে তাহলে তারা জেল থেকে বেরোলো কী করে! নিশ্চয়ই একটা দুর্বৃত্ত চক্র পুরো ব্যাপারটার পরিকল্পনাকারী। তাদেরই চক্রান্তে এরা জেলখানা থেকে পালিয়েছে এবং তাদেরই চক্রান্তে তারা জেল পালালেও জেলখানায় তাদের অনুপস্থিতির পরিসংখ্যান থাকে উহ্য, মানে অন্য লোকেরা পূরণ করে সেই শূন্যতাকে। সারকথা যা দাঁড়ায়, একটা বড় কুচক্রী-মহল মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সাগর থেকে জেগে ওঠা দ্বীপ সুবর্ণদ্বীপে জেলখানা থেকে লোকেদের চোরাচালান করে পাঠিয়ে দিচ্ছে স্থায়ীভাবে বাকি জীবন বসবাসের জন্যে। বাকি জীবন কথাটা এ-কারণেই, তাদের তো কারাভ্যন্তরের অন্ধকারেই থাকবার কথা। সেখানে তারা কাটাবে মুক্ত আলোবায়ুতে। তাদের দিক থেকেই হিসেবটা স্পষ্ট- জেলখানার অন্ধকারে শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুটিয়ে কু-লি পাকিয়ে মরবার পরিবর্তে দূরের এই আলোবাতাসের দ্বীপাঞ্চলে থাকাটাও অনেক বেশি জীবনানন্দের। এরকম পক্ষে-বিপক্ষে বাকবিতণ্ডা চলতেই থাকে। সকলেই দৃঢ়কণ্ঠ। সকলের কাছেই নাকি রয়েছে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ। কিন্তু কে দেখবে, কাকে দেখাবে, কে কাকে দেখাবে, কে কার কাছ থেকে দেখতে চাইবে- এইসব জল্পনা-কল্পনা নিয়ে স্থানে-স্থানে জটলা পাকায় লোকেরা। তারা হুমড়ি খেয়ে পত্রিকার পাতা ওল্টায়। সবটা খবর পড়ে মনোযোগ দিয়ে। তারপর পরের দিনের পত্রিকার জন্যে অপেক্ষা করে। সে-পত্রিকা এলে সেটা অভিনিবেশ সহকারে সবটা পড়ে ফেলে। পড়ে তার পরের দিনের পত্রিকার জন্যে অপেক্ষা করে। সেটাও গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ে অক্ষরে-অক্ষরে। পড়ে অপেক্ষা করে পরের দিনের পত্রিকার জন্যে। এভাবে পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে চলে, সবাই সংবাদ পাঠ করতে থাকে এবং অপেক্ষা করতে থাকে। যারা অন্ধকারে দ্বীপে অবতরণ করতে গিয়ে ধরা পড়লো তাদের কথা তারপর আর কারও ভাবনাতেই থাকলো না। তারা কারা, কেন তাদের এমন পরিণতি, কোন্ কুচক্রের তারা শিকার এসব নিয়ে কেউ উৎসাহও প্রকাশ করে না। যে-লোকগুলো বোরখার আড়ালে নারী সেজেছিল তারা নারী নয়, নারী নয় বলে তারা কারও মা-বোন নয়, কিন্তু তারা তো কারও না কারও ভাই বা বাবা বা সন্তান। কারাগারে কয়েদির সংখ্যা ঠিক থাকলেও একথা তো অস্বীকার করবার কোন উপায় থাকে না, যে-মুহূর্তে লোকগুলো সুবর্ণদ্বীপে পা রাখলো ঠিক তখনই কোন না কোন ঘরে মানে সংসারে-পরিবারে সদস্যসংখ্যায় টান পড়েছিল। তারা নিশ্চয়ই জানে, তাদের সন্তানেরাই অন্ধকার থেকে চলে গেছে আরও অন্ধকারে। কিন্ত কোন সাংবাদিক কিংবা কোন কর্তৃপক্ষ তখনও সেখানে গিয়ে পৌঁছাতে পারে নি।

নাম-পরিচয়হীন লোকেরাও কেবল কর্মগুণে নিজেদের সংকীর্ণ সীমাকে ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় বৃহত্তর অঙ্গণে। আন্তর্জাতিক ‘ফ্রিকনমিস্ট’ পত্রিকার কল্যাণে এরিমধ্যে সুবর্ণদ্বীপের খ্যাতি দেশের সীমানা পেরিয়ে পাড়ি দিয়েছে বিদেশ। দু’জন বিদেশির অবস্থিতি সেই খ্যাতির মুকুটে নক্ষত্রের মত দু’টি পালক। ছদ্মবেশীদের ধরা পড়বার অল্প কিছুদিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ এবং গণমাধ্যমের হাল্কা বিতর্কের পরে যখন শুনশান না হলেও এক ধরনের নিরবতার সঞ্চার ঘটে তখনই ফের সুবর্ণদ্বীপের মাত্র একজন ব্যক্তি ব্যক্তি থেকে পরিণত হলো ব্যক্তিত্বে। যেটা অকল্পনীয় প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন স্থানীয় ব্যক্তি সবকিছুকে ছাপিয়ে রশ্মিপাত করতে আরম্ভ করলো। অথচ যার মধ্যে বস্তুত আলোকের চেয়ে অন্ধকারের ভাগই অধিক। আলিম বক্স ছিল একসময়কার জেলপালানো আসামি। দেশের অন্ধকার সাম্রারাজ্যের রাজধানীর সে ছিল এক উল্লেখযোগ্য অধীশ্বর। আবার, রাজধানির বিখ্যাত পতিতাপল্লী ছিল তার করতলগত। তবে, বাতির নিচে অন্ধকারের বাস্তবতার মত তার সাম্রারাজ্যেই তার পতনের বীজ রোপিত হয়। রাজধানির সেই বিখ্যাত পতিতাপল্লীর সবচাইতে সুন্দরী নারীটি ছিল তার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। কিন্তু সেই নারী অন্য এক নায়কোপম যুবকের প্রেমে পড়ে তার সঙ্গে শারীরিক সংসর্গ রচনা করে। মধ্যপ্রাচ্যফেরত সেই যুবকের সংবাদ জেনে ক্রুদ্ধ আলিম ভয়ংকর নির্যাতনের ছাপ তার শরীরে প্রায় স্থায়ীভাবে এঁকে দেয়। তারপরের ঘটনা আরও নাটকীয় মোড়ে যাত্রা করে। মধ্যপ্রাচ্য-ফেরত যুবকটি যে এইচআইভি পজিটিভ মানে এইড্স্ রোগের বাহক ছিল তা জানা ছিল না পল্লীসুন্দরীর। পরে, অসুস্থতার বশে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে সে জানতে পারে, একই সংক্রমণের শিকার সে-ও। তা জেনেও কেবল অর্থের প্রয়োজনে সে তা গোপন করে যায়। এমনকি মাঝে-মাঝে সে আলিম বক্সের সংসর্গও অব্যাহত রাখে। সেটা সে করে প্রতিশোধের বশে। আলিম বক্সের নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই সে এমন কাজ করে।

আরও পড়ুন➥ দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান(পর্ব-২)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান (পর্ব-৩)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান(পর্ব-৪)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান(পর্ব-৫)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান(পর্ব-৬)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান(পর্ব-৭)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান(পর্ব-৮)

দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান (পর্ব-৯)

   

রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ কবি-সাহিত্যিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার’ ২০২২ ও ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৫ জন কবি ও সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের জ্যৈষ্ঠ সদস্য কবি আসাদ মান্নান।

তিনি জানান, ২০২২ সালে কবিতায় পুরস্কার পেয়েছেন- শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক ও রিশাদ হুদা। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে মালিক মো. রাজ্জাক। এছাড়া প্রবন্ধে বিলু কবীর, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, অনুবাদে ইউসুফ রেজা এবং কথাসাহিত্য জুলফিয়া ইসলাম।

আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, কবি খুরশীদ আনোয়ারকে।

কবি আসাদ মান্নান জানান, ২০২৩ সালে কবিতায় মিনার মনসুর ও মারুফুল ইসলাম পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রবন্ধে আসাদুল্লাহ, কথাসাহিত্যে জয়শ্রী দাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ে নাজমা বেগম নাজু, শিশুসাহিত্য আমীরুল ইসলাম এবং অনুবাদে মেক্সিকো প্রবাসী আনিসুজ্জামান।

আগামী ১৯ মে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে। পুরস্কার ঘোষণা কমিটির প্রধান ছিলেন কবি শ্যামসুন্দর শিকদার। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।

;

ঢাকার মিলনায়তনেই আটকে ফেলা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে! 



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে তাদের জন্মজয়ন্তীর জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রথা কি তবে লুপ্ত হতে চলেছে? দীর্ঘসময় ধরে মহাসমারোহে কয়েকদিন ধরে এসব জন্মজয়ন্তী আয়োজনের রেওয়াজ থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণ দেখিয়ে সেই মাত্রায় আর হচ্ছে না রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর মহাআয়োজন। ঢাকার বাইরে উন্মূক্ত স্থানের বদলে রাজধানীতেই সীমিত পরিসরে মিলনায়তনে আটকে ফেলা হচ্ছে এসব আয়োজনের পরিধিকে। 

বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই দুই পুরোধা পুরুষের জন্ম ও মৃত্যুদিন ঘিরে বিশাল আয়োজনে তাদের পরিধিবহুল সৃষ্টিকর্ম ও যাপিত জীবনের আখ্যান তুলে ধরা হতো। রাজধানীর বাইরে জেলা পর্যায়ে কবিদের স্মৃতিধন্য স্থানসমূহে এই আয়োজনকে ঘিরে দীর্ঘসময় ধরে চলতো সাজ সাজ রব। যোগ দিতেন সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু নানা অজুহাতে পর্যায়ক্রমে রাজধানী ঢাকাতেই যেমন আটকে যাচ্ছে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় আয়োজন, তেমনি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণও কমে এসেছে। 

জাতীয় কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে এবারও কোন ভিন্নতা থাকছে না জানিয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় পর্যায়ের আয়োজনগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পালিত হয়। আর মৃত্যুবার্ষিকীগুলো নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। যেমন কবি নজরুল ইনস্টিটিউট যেহেতু কবির নামে প্রতিষ্ঠিত, তাই নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি ইনস্টিটিউটই আয়োজন করে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর যেভাবে উদযাপিত হয় এবারও সেভাবেই আয়োজন করা হচ্ছে। এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২৫ মে (২০২৪) বেলা ৪টায় জাতীয় জাদুঘরে শুরু হবে। রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানগুলো কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে অনুষ্ঠিত হত। এই বারও হবে, তবে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানগুলো ঢাকার বাইরে হবে না।’

‘ঢাকার বাইরে যেসব জেলাগুলো নজরুলের স্মৃতিসংশ্লিষ্ট; যেমন-ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা-এসব জেলাগুলোতে নজরুল গিয়েছেন, থেকেছেন আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বের সূত্রে। এবার জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানও ঢাকায় হয়েছে, নজরুলের জন্মজয়ন্তীও ঢাকায় হবে। ঢাকার বাইরে এবার নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান না হওয়ার পেছনে সরকারের কাছে যে যুক্তি তা হচ্ছে-এই সময়ে দেশের উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষত জেলা প্রশাসন এইগুলো আয়োজনে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করে থাকে। জেলা প্রশাসনগুলো নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকবে। নজরুল জয়ন্তী আয়োজনে মনযোগ হয়ত কম দেবে। যে উদ্দেশ্যে জনমানুষের কাছে পৌছানোর জন্য এই অনুষ্ঠান, তা পরিপূর্ণ সফল হবে না বিধায় এবার এই আয়োজনগুলো ঢাকায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে’-বলেন সরকারের এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি আছে। এতে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও রয়েছেন। গত ২ এপ্রিল (২০২৪) কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, রবীন্দ্র জয়ন্তী হবে শিল্পকলা একাডেমিতে এবং নজরুল জয়ন্তী হবে বাংলা একাডেমিতে।

জানা গেছে, বাংলা একাডেমিতে কিছু রেনুভশন ওয়ার্ক চলমান থাকায় বিদ্যুতের সমস্যা হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় মুক্তমঞ্চেও এই আয়োজন না করে জাতীয় জাদুঘরে প্রধান মিলনায়তনে নজরুল জয়ন্তীর তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২৫ মে বেলা ৪টায় উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্মারক বক্তা থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান, এমপি। আলোচনা অনুষ্ঠানের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা।

২৬মে আয়োজনের দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান, এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। ২৭ মে তৃতীয় দিনের আয়োজনের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক। শেষ দিনের স্মারক বক্তা কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী উদযাপনে জাতীয় কমিটির একজন সদস্যের কাছে জয়ন্তী আয়োজনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঐতিহ্যিক ধারা বজায় না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে রবীন্দ্র ও নজরুল অনুরাগীরা বলেছেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সাহিত্য-জীবনদর্শন আমাদের পাথেয়। তাদের জন্ম ও মৃত্যুদিনে মহাসমারোহে ঢাকার বাইরে কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে আয়োজনের যে ধারাবাহিকতা ছিল তা দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক চর্চাকে বেগবান করতো। কিন্তু এই আয়োজনকে সীমিত করে রাজধানীর মিলনায়তনে আটকে ফেলা নিশ্চিতভাবেই আমাদের সংস্কৃতির বিকাশকে রূদ্ধ করারই অংশ। এর পেছনে সুক্ষ্ণভাবে কারা কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি বলেও মনে করেন তারা।

;

হাসান হাফিজের একগুচ্ছ কবিতা



অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পিপাসার্ত ঘোরে

প্রান্তরের মাঝে আছে নিঃস্বতার ডাক
আত্ম অনুসন্ধানের
ফিরতি ঢেউ
আছড়ে পড়ে
আশ্লেষের বালুকাবেলায়
মুমূর্ষু যেমন তীব্র পিপাসায়
জীবনের আলিঙ্গন চায়-
আর্ত রাত্রি হিমেল কামের ঘোর
নীরবে দংশায়
ঘর পোড়ে, আকাক্ষার
বাতি নিভে যায়
কোথায় প্রান্তর, শূন্যতা কোথায়
আছে সে নিকটে জানি
সুদূরের এলানো চিন্তায়
যেখানে গোধূলিদগ্ধ
সন্ধ্যা কী মায়ায়
গুটায় স্বপ্নের ডানা
দেবদারু বনে বীথিকায়
তার দিকে সতৃষ্ণ সমুদ্রঘোর
ছটফট করছি পিপাসায়।

না, পারে না

লখিন্দর জেগে উঠবে একদিন
বেহুলার স্বপ্ন ও সাধনা
বৃথা যেতে পারে না, পারে না।

কলার মান্দাস, নদীস্রোত
সূর্যকিরণের মতো সত্য ও উত্থিত
সুপ্ত লখিন্দর শুয়ে, রোমকূপে তার
জাগৃতির বাসনা অপার
এই প্রেম ব্যর্থ হতে পারে না পারে না

মনসার হিংসা একদিন
পুড়ে টুড়ে ছাই হবে
এমন প্রতীতি নিয়ে স্বপ্নকুঁড়ি নিয়ে
প্রতীক্ষা-পিদিম জ্বেলে টিকে থাকা
এমন গভীর সৌম্য অপেক্ষা কখনো
ম্লান হয়ে নিভে যেতে পারে না পারে না

রেণু রেণু সংবেদবর্ণালি-৮

ক.
আমার না পাওয়াগুলি অবরুদ্ধ দীর্ঘশ্বাসগুলি
মুক্তি চায়, বেরোতে পারে না
কার্বনের নিঃসরণ
নতুন মাত্রিক আর বিপজ্জনক
সেও তো দূষণ বটে
বলতে পারো প্রণয়দূষণ!

খ.
আদিপ্রাণ বৃক্ষতলে
ছায়াশান্তি মাঙনের সুপ্তি বর্তমান
এসো লই বৃক্ষের শরণ
পরিবেশ প্রশান্তির সেও এক
স্বস্তিমন্ত্র, অনিন্দ্য ধরন।

গ.
নদীকে বইতে দাও নিজস্ব নিয়মে
গলা টিপে ধোরো না ধোরো না,
নদী হচ্ছে মাতৃরূপ বাৎসল্যদায়িনী
দখলে দূষণে তাকে লাঞ্ছিত পীড়িত
হে মানুষ এই ভুল কোরো না কোরো না

ঘ.
উচ্চকিত শব্দ নয় বধিরতা নয়
মৃদু শব্দ প্রকৃতির সঙ্গে কথা কও
শব্দ যদি কুঠারের ঘাতকপ্রতিম
তবে হে মানুষ তোমরা অমৃতের পুত্রকন্যা নও

ঙ.
মৃত্তিকার কাছ থেকে সহনশীলতা শিখি
মৃত্তিকাই আদি অন্ত
জীবনের অন্তিম ঠিকানা
মৃত্তিকাই দেয় শান্তি সুনিবিড়
ক্ষমা সে পরমা
শরীর মূলত মাটি
গন্তব্য যে সরল বিছানা।

ছিন্ন কথন

আমি ভুখা পিপীলিকা
চেয়েছি আলোর দেখা।
পুড়ে যদি মরি তাও
ওগো অগ্নি শান্তি দাও।
অঙ্গার হওয়ার সাধ
এসো মৃত্যু পরমাদ।
চলো ডুবি মনোযমুনায়
এসো এসো বেলা নিভে যায়!

ধ্রুব সত্য

না-পাওয়াই সত্য হয়ে ফুটে থাকে।
পুষ্পিত সে প্রতারণা, চেনা মুশকিল।
বৃতি কুঁড়ি পাপড়িতে মায়াভ্রম লেপটানো
দেখলেই ছুঁতে ইচ্ছা হয়। ছুঁলেই বিপদ।
সেই ফুলে সম্মোহন জড়িয়েমড়িয়ে আছে
কোমলতা লাবণ্যও পুঁজি তার, এমত বিভ্রমে
লোভী ভ্রমরের মতো প্রেমিকারা ছোটে তার কাছে
গিয়ে মোক্ষ পাওয়া দূর, অনুতাপে আহত পাথর
মাথা কুটে মরলেও স্রোতধারা জন্ম নেয় না
যা কিছু হয়েছে পাওয়া, তাও এক দম্ভ সবিশেষ
মর্মে অভ্যন্তরে পশে গতস্য শোচনা নাস্তি
এই বিষ গলাধঃকরণ করে কী যে পাওয়া হলো
হিসাবে নিকাশে মন থিতু নয় সম্মতও নয়
না-পাওয়াই ধ্রুব সত্য চিরন্তন মানুষ-জীবনে!

;

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী। ১৮৬১ সালের (বঙ্গাব্দ ১২৬৮) এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল। তার বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মা সারদা সুন্দরী দেবী। তার পূর্বপুরুষেরা খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন।

তিনি একাধারে কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী-গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত ও পাঠ্য সূচিতে সংযোজিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লেখালেখির পাশাপাশি বিশ্বকবি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে কবিগুরু সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে ও উড়িষ্যায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন তিনি। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ (৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈত্রিক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

রবী ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার দেওয়া বাণীতে বলেন, ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয় ছিল মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য অঙ্গনের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার ও প্রবন্ধকার। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। শুধু সাহিত্য সাধনা নয়, পূর্ববঙ্গের জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি দরিদ্র প্রজাসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানবিক বিকাশের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তার হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তার গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তার গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র।

 

 

;