দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান



মহীবুল আজিজ
গ্রাফিক্স: বার্তা২৪.কম

গ্রাফিক্স: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এটাও সত্য, লোকেরা আশেপাশের এলাকা থেকে নতুন জেগে ওঠা দ্বীপটাতে বসবাস করতে না এলে লুইগিদেরও আসবার অবকাশ তৈরি হতো না। কাজেই এক্ষেত্রে গ্রাম্য অশিক্ষিত-অল্পশিক্ষিতরাই ছিল পথপ্রদর্শক। সুবর্ণদ্বীপে এমনই প্রাণচাঞ্চল্য জেগে ওঠে, লোকে ভুলেই যায় যে এটি মাত্র কিছুকাল আগেও ছিল সমুদ্রের অভ্যন্তরে। লোকেরা তাদের পুরনো অভ্যেস ছাড়তে পারে না। ঘরে-বাইরে তারা নানা ঘটনার সূত্রে জড়িয়ে পড়ে বিবাদে-বিসংবাদে। ফলে আইন-আদালত দ্বীপটিতে প্রতিষ্ঠিত হয় বেশ তোড়জোড়ের সঙ্গে। অথবা এমনও হতে পারে, লোকেরা মোটামুটি বসবাস নিশ্চিত হওয়ার পরপরই যে-কাজটা শুরু করবে সেটা হলো আত্ম ও পারস্পরিক কলহ- কর্তৃপক্ষ তা আগেভাগে জেনেই সুবর্ণদ্বীপে আইনের শাসন নিশ্চিত করে। দ্বীপটিতে একটি কারাগার রয়েছে যেখানকার আসামিরাও তারাই যারা সুবর্ণদ্বীপের প্রথম দিককার বসতি স্থাপনকারী। নৌকা-লঞ্চই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এবং শিক্ষিত-অশিক্ষিত ভদ্র-ভদ্রেতর সবাইকে সুবর্ণদ্বীপে অবতরণ করবার সময় নৌকা-স্পিডবোট বা লঞ্চ থেকে লাফ দিয়ে নামতে হয় প্রথমে কাদায় তারপর কাদামাটিতে এবং সবশেষে মাটিতে। ভাগ্য ভাল হলে তারা কলঙ্কমুক্ত বস্ত্রে দ্বীপে পৌঁছাতে পারে তা নাহলে কলঙ্কিত হয়েই উঠে আসতে হয় নদীতীর হতে। এটা কোন লজ্জা অলজ্জা বা মান-অসম্মানের ব্যাপার নয়। লঞ্চ থেকে নামতে গিয়ে এম. এ. পাশ বা গ্র্যাজুয়েট সরকারি কর্মচারি চিৎ হয়ে কাদায় পড়ে গেলেও অধঃস্তন-তৎপরতায় তৎক্ষণাৎ সে ধরণি-উত্থিত হয় এবং তার ব্র্যান্ডের শার্ট-প্যান্ট রং বদলে কৃষ্ণকায় রূপ নিলে সে মনে-মনে ভাবে সুবর্ণদ্বীপের কাদায় কিন্তু গন্ধ মানে সে-অর্থে দুর্গন্ধ নেই। ঢাকা শহরের নর্দমার কাদায় যে-প্রাগৈতিহাসিক গন্ধ থাকে সেটা সুবর্ণদ্বীপের কাদায় চিন্তাই করা যায় না। বরং এই কাদা দেখলেই ইচ্ছে হয়, একটু গায়ে মাখি। মাঝে-মাঝে ছাপা হয় কাগজে, এমন পারমাণবিক যুগেও কাদা গায়ে মেখে সৌন্দর্যচর্চা করে বিশে^র সেরা সুন্দরীরা। অনেকে অবশ্য আজকাল চালাকির আশ্রয় নেয়। গোটা পথ পাড়ি দিয়ে দ্বীপের কাছাকাছি এলেই তারা পোশাক বদলে তার বদলে পরে নেয় নিতান্ত আটপৌরে ঘরোয়া পোশাক। লাগলে কাদা লাগুক ঘরের পোশাকে। বাইরের পোশাক অক্ষত থাকলেই হলো। 

সেটা ছিল নিষ্ঠুর এপ্রিল মাস। এপ্রিল এর আগেও এসেছিল কিন্তু এমন নিষ্ঠুরতার ছাপ রেখে যায় নি। কয়েকদিন ধরেই প্রচারণা চলছিল, ভয়ংকর দুর্যোগের মেঘ জমছে সুবর্ণদ্বীপের আকাশে। লোকেরা যাতে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যায় সেজন্যে দিনভর মাইকে রেডিওতে টেলিভিশনে চলে ঘোষণার পর ঘোষণা। সমস্যা হলো, অধিকাংশ লোক সব ঘোষণা শোনে খুব মনোযোগ দিয়ে এবং তারা সেসব ঘোষণাকে উপেক্ষাও করে সচেতনভাবে। বিপদের কথা ভেবে আগাম স্থানত্যাগের অর্থ তাদের নিকটে নিজেদের অবলম্বন হারানো এবং সম্পদের মালিকানা অন্যের হাতে তুলে দেওয়া। এর জন্যে অবশ্য তাদের দোষও দেওয়া কঠিন। বেশ কয়েকবার এমন দুর্যোগের ঘোষণায় সুবর্ণদ্বীপের অনেক লোক নিজ-নিজ জায়গা ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ এবং উঁচু স্থানে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ঝড়ের পরে বাড়ি ফিরে তারা দেখতে পায় তাদের বাড়িঘর চোরেদের তৎপরতার পরিণামে শূন্যতা-আক্রান্ত। ফলত তারা দুই ঝড়-কবলিত হয়ে হায়-হায় করাঘাতে আর্তনাদ করে। সেই এপ্রিলেও অনেকেই আশ্রয় নেয় নিরাপদ বলে প্রতীয়মান প্রশাসন-চিহ্নিত স্থলে যদিও উঁচু জায়গা বলে তেমন কিছুই ছিল না সুবর্ণদ্বীপে যেহেতু সবটাই জেগে উঠেছিল সমুদ্রের গর্ভ থেকে। মধ্যরাতে শুরু হওয়া কয়েক ঘণ্টার ঝড়ো তা-বে সুবর্ণদ্বীপ প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে একদিনেই। ঢেউ এতটাই উচ্চতা ছোঁয় সাইক্লোন কেটে যাওয়ার পরে গাছে-গাছে মানুষ ও জীব-জন্তুর মৃতদেহ ঝুলে থাকতে দেখা যায়। কোন কোন পরিবারে মৃতদের জন্যে শোক করবার লোকও অবশিষ্ট থাকে না। সভ্য লোকেরা ভাবে, এত মৃত্যু কেন! যে-দ্বীপে মানুষই বসবাসের কথা নয় সেখানে মানুষ বসবাস করতে থাকলে তারা যে মূলত কবলিতই হবে, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সেই সরল বাস্তবতাকে মেনে নিতে কষ্ট হয় মানুষের। যখন পত্রপত্রিকা ছিল না, যোগাযোগ এতটা বিস্তৃতজাল ছিল না তখনও এমন মৃত্যু ঘটেছিল এবং সেসব মৃত্যুর কোন হিসেব কেউ রাখে নি।

সুবর্ণদ্বীপের প্রায় সত্তর সতাংশ স্থলভাগ জলকবলিত হলেও সাইক্লোনের পরে যখন ফের সাম্যাবস্থা ফিরে আসে মানে দ্বীপের স্থলভাগ পরিপূর্ণভাবে পূর্বাবস্থায় রূপ নেয় তখন লোকেরা এত মৃত্যুর পরেও এই ভেবে আশায় বুক বাঁধে, না, সুবর্ণদ্বীপ আসলে নিশ্চিহ্ন হবে না, জেগে থাকবে মৃত্যুর মধ্য দিয়েই। আবার লোকেরা আসে, আসে চারদিক থেকে- মূলত প্রতিবেশী অঞ্চল-জেলা থেকে। এসেই তারা মৃতদের শূন্যতা পূরণ করে নিতে থাকে দিকে-দিকে। চাষ-বাস ফসল-বাণিজ্য এইসব করণের প্রক্রিয়ায় আবার জীবন চতুর্দিকে বিস্তৃত হতে থাকে সুপরিসরে। এমন একটা হৃদয়বিদারক ঘটনা সুবর্ণদ্বীপের জন্যে অপকারী এবং উপকারী দুই ফল-ই বয়ে আনে। মৃত্যু ধ্বংস ক্ষয় প্রভূত অপকারের পরে আসে উপকারের দিন। এপ্রিলের নিষ্ঠুরতার কাহিনি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে পড়লে দ্বীপটি পরিণত হয় আন্তর্জাতিক বিষয়বস্তুতে। বিশে^র বিখ্যাত পত্র-পত্রিকায় সুবর্ণদ্বীপের সাইক্লোনের প্রতিবেদন ছাপা হলে অনেক দেশ এগিয়ে আসে দ্বীপের ভবিষ্যতের মঙ্গল-সাধনে। অনেক ধনি দেশ দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম স্থাপনা তৈরি করে দেয় দ্বীপটিতে। সেটা তারা করে শতভাগ নিশ্চয়তা সহকারে। তারা দেশটির কিংবা দ্বীপের লোকেদের ওপর আস্থা না রেখে নিজেরাই উপস্থিত থেকে নির্মাণ করে দেয় জরুরি স্থাপনাগুলো। তারা দেখে, যে-দেশের বইয়ে দুধের সঙ্গে পানি মিশিয়ে লোকেদের অপুষ্টিতে নিক্ষেপ করাটাও প্রকাশ্য বিষয়, যে-দেশের বইয়েতে জনসাধারণের প্রধান খাদ্যবস্তু চালের সঙ্গে পাথর মেশানোকে অনৈতিক না ভেবে বরং গণিতের হিসেবে শেখানো হয় সে-দেশের লোকেরা কালক্রমে শিক্ষিত হয়ে আরও-আরও অপকৌশল রপ্ত করে ফেলে। দুধ-পানি এবং চাল-কাঁকরের উন্নততর সংস্করণ হিসেবে তারা বেছে নেয় সিমেন্ট-বালি, এমনকি লোহার রড ও বাঁশের কঞ্চি। তারা আতঙ্কিত হয় ভেবে, যে-দেশের লোক গৃহসামগ্রিতে লোহার রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের দুঃসাহস দেখাতে পারে তাদের বানানো আশ্রয়কেন্দ্রগুলির ঝড়-সাইক্লোনের পূর্বাভাসেই ধ্বসে পড়বার সম্ভাবনা। পরিণামে সুবর্ণদ্বীপের লোকেরা পায় মজবুত কিছু ভবন যেগুলো প্রচ- ঝড়েও উৎপাটিত হয়ে যাবে না।

লুইগিকে তাদের অনেকেই প্রথমটায় যাজক ভাবে। এর কারণ তার পরনে ছিল উর্ধাঙ্গে ফতুয়ার মত দেখতে ঢিলেঢালা ধরনের পোশাক এবং নিম্নাঙ্গে সুতির কাপড়ের ঢোলা পায়জামা। হয়তো আবহাওয়ার চরমভাবাপন্নতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যেই তার এমন পোশাক কিন্তু লোকেরা তাকে যাজকই ভাবে। কিন্তু তার সঙ্গে থাকা গোলাম কবির নামের সহকারীটি লোকেদের সে-ভুল ভাঙিয়ে দিয়ে বলে, সুবর্ণদ্বীপের লোকেরা অত্যন্ত ভাগ্যবান। এই প্রথম দ্বীপে একজন বিদেশি ডাক্তারের পদার্পণ ঘটেছে। লোকেরা এখন থেকে রোগেশোকে নিশ্চিত নির্ভরতা হিসেবে লুইগি পালোমারের কাছে গিয়ে নিজ-নিজ সমস্যার বিবরণ দিতে পারবে। অল্প সময়ের মধ্যেই লুইগির আগমনের সংবাদ রটে যায় সমগ্র দ্বীপে। যেসব লোক এরিমধ্যে অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে তারা বিদেশি ডাক্তারের নাম শুনেই আরাম বোধ করতে শুরু করে এবং অচিরেই লুইগির সাক্ষাৎ লাভের জন্যে মনে-প্রাণে অপেক্ষা করতে থাকে।

আরও পড়ুন: দ্বীপ অথবা একটি আন্তমহাদেশীয় উপাখ্যান

৩য় পর্ব আগামী শুক্রবার

   

রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার পাচ্ছেন ১৫ কবি-সাহিত্যিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব পুরস্কার’ ২০২২ ও ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ ক্যাটাগরিতে ১৫ জন কবি ও সাহিত্যিককে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের জ্যৈষ্ঠ সদস্য কবি আসাদ মান্নান।

তিনি জানান, ২০২২ সালে কবিতায় পুরস্কার পেয়েছেন- শাহ মোহাম্মদ সানাউল হক ও রিশাদ হুদা। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে মালিক মো. রাজ্জাক। এছাড়া প্রবন্ধে বিলু কবীর, শিশুসাহিত্যে আনজীর লিটন, অনুবাদে ইউসুফ রেজা এবং কথাসাহিত্য জুলফিয়া ইসলাম।

আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে, কবি খুরশীদ আনোয়ারকে।

কবি আসাদ মান্নান জানান, ২০২৩ সালে কবিতায় মিনার মনসুর ও মারুফুল ইসলাম পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রবন্ধে আসাদুল্লাহ, কথাসাহিত্যে জয়শ্রী দাশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ে নাজমা বেগম নাজু, শিশুসাহিত্য আমীরুল ইসলাম এবং অনুবাদে মেক্সিকো প্রবাসী আনিসুজ্জামান।

আগামী ১৯ মে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি-সাহিত্যিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা দেওয়া হবে। পুরস্কার ঘোষণা কমিটির প্রধান ছিলেন কবি শ্যামসুন্দর শিকদার। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন কবি মুহম্মদ নুরুল হুদা।

;

ঢাকার মিলনায়তনেই আটকে ফেলা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলকে! 



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে তাদের জন্মজয়ন্তীর জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রথা কি তবে লুপ্ত হতে চলেছে? দীর্ঘসময় ধরে মহাসমারোহে কয়েকদিন ধরে এসব জন্মজয়ন্তী আয়োজনের রেওয়াজ থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণ দেখিয়ে সেই মাত্রায় আর হচ্ছে না রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর মহাআয়োজন। ঢাকার বাইরে উন্মূক্ত স্থানের বদলে রাজধানীতেই সীমিত পরিসরে মিলনায়তনে আটকে ফেলা হচ্ছে এসব আয়োজনের পরিধিকে। 

বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির এই দুই পুরোধা পুরুষের জন্ম ও মৃত্যুদিন ঘিরে বিশাল আয়োজনে তাদের পরিধিবহুল সৃষ্টিকর্ম ও যাপিত জীবনের আখ্যান তুলে ধরা হতো। রাজধানীর বাইরে জেলা পর্যায়ে কবিদের স্মৃতিধন্য স্থানসমূহে এই আয়োজনকে ঘিরে দীর্ঘসময় ধরে চলতো সাজ সাজ রব। যোগ দিতেন সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু নানা অজুহাতে পর্যায়ক্রমে রাজধানী ঢাকাতেই যেমন আটকে যাচ্ছে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় আয়োজন, তেমনি রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণও কমে এসেছে। 

জাতীয় কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে এবারও কোন ভিন্নতা থাকছে না জানিয়ে কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর জাতীয় পর্যায়ের আয়োজনগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পালিত হয়। আর মৃত্যুবার্ষিকীগুলো নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। যেমন কবি নজরুল ইনস্টিটিউট যেহেতু কবির নামে প্রতিষ্ঠিত, তাই নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানটি ইনস্টিটিউটই আয়োজন করে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর যেভাবে উদযাপিত হয় এবারও সেভাবেই আয়োজন করা হচ্ছে। এবারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২৫ মে (২০২৪) বেলা ৪টায় জাতীয় জাদুঘরে শুরু হবে। রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানগুলো কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে অনুষ্ঠিত হত। এই বারও হবে, তবে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানগুলো ঢাকার বাইরে হবে না।’

‘ঢাকার বাইরে যেসব জেলাগুলো নজরুলের স্মৃতিসংশ্লিষ্ট; যেমন-ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, চট্টগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা-এসব জেলাগুলোতে নজরুল গিয়েছেন, থেকেছেন আত্মীয়তা বা বন্ধুত্বের সূত্রে। এবার জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানও ঢাকায় হয়েছে, নজরুলের জন্মজয়ন্তীও ঢাকায় হবে। ঢাকার বাইরে এবার নজরুল জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান না হওয়ার পেছনে সরকারের কাছে যে যুক্তি তা হচ্ছে-এই সময়ে দেশের উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। বিশেষত জেলা প্রশাসন এইগুলো আয়োজনে মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করে থাকে। জেলা প্রশাসনগুলো নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকবে। নজরুল জয়ন্তী আয়োজনে মনযোগ হয়ত কম দেবে। যে উদ্দেশ্যে জনমানুষের কাছে পৌছানোর জন্য এই অনুষ্ঠান, তা পরিপূর্ণ সফল হবে না বিধায় এবার এই আয়োজনগুলো ঢাকায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে’-বলেন সরকারের এই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি আছে। এতে দেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও রয়েছেন। গত ২ এপ্রিল (২০২৪) কমিটির মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়, রবীন্দ্র জয়ন্তী হবে শিল্পকলা একাডেমিতে এবং নজরুল জয়ন্তী হবে বাংলা একাডেমিতে।

জানা গেছে, বাংলা একাডেমিতে কিছু রেনুভশন ওয়ার্ক চলমান থাকায় বিদ্যুতের সমস্যা হতে পারে। ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা থাকায় মুক্তমঞ্চেও এই আয়োজন না করে জাতীয় জাদুঘরে প্রধান মিলনায়তনে নজরুল জয়ন্তীর তিন দিনব্যাপী জাতীয় অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২৫ মে বেলা ৪টায় উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। স্মারক বক্তা থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান, এমপি। আলোচনা অনুষ্ঠানের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা।

২৬মে আয়োজনের দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাজ্জাদুল হাসান, এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল। সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান। ২৭ মে তৃতীয় দিনের আয়োজনের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক। শেষ দিনের স্মারক বক্তা কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী উদযাপনে জাতীয় কমিটির একজন সদস্যের কাছে জয়ন্তী আয়োজনে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঐতিহ্যিক ধারা বজায় না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে রবীন্দ্র ও নজরুল অনুরাগীরা বলেছেন, মূল্যবোধের অবক্ষয়ের এই সময়ে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের সাহিত্য-জীবনদর্শন আমাদের পাথেয়। তাদের জন্ম ও মৃত্যুদিনে মহাসমারোহে ঢাকার বাইরে কবিদের স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে আয়োজনের যে ধারাবাহিকতা ছিল তা দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক চর্চাকে বেগবান করতো। কিন্তু এই আয়োজনকে সীমিত করে রাজধানীর মিলনায়তনে আটকে ফেলা নিশ্চিতভাবেই আমাদের সংস্কৃতির বিকাশকে রূদ্ধ করারই অংশ। এর পেছনে সুক্ষ্ণভাবে কারা কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করা জরুরি বলেও মনে করেন তারা।

;

হাসান হাফিজের একগুচ্ছ কবিতা



অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

অলঙ্করণ: মামুনুর রশীদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পিপাসার্ত ঘোরে

প্রান্তরের মাঝে আছে নিঃস্বতার ডাক
আত্ম অনুসন্ধানের
ফিরতি ঢেউ
আছড়ে পড়ে
আশ্লেষের বালুকাবেলায়
মুমূর্ষু যেমন তীব্র পিপাসায়
জীবনের আলিঙ্গন চায়-
আর্ত রাত্রি হিমেল কামের ঘোর
নীরবে দংশায়
ঘর পোড়ে, আকাক্ষার
বাতি নিভে যায়
কোথায় প্রান্তর, শূন্যতা কোথায়
আছে সে নিকটে জানি
সুদূরের এলানো চিন্তায়
যেখানে গোধূলিদগ্ধ
সন্ধ্যা কী মায়ায়
গুটায় স্বপ্নের ডানা
দেবদারু বনে বীথিকায়
তার দিকে সতৃষ্ণ সমুদ্রঘোর
ছটফট করছি পিপাসায়।

না, পারে না

লখিন্দর জেগে উঠবে একদিন
বেহুলার স্বপ্ন ও সাধনা
বৃথা যেতে পারে না, পারে না।

কলার মান্দাস, নদীস্রোত
সূর্যকিরণের মতো সত্য ও উত্থিত
সুপ্ত লখিন্দর শুয়ে, রোমকূপে তার
জাগৃতির বাসনা অপার
এই প্রেম ব্যর্থ হতে পারে না পারে না

মনসার হিংসা একদিন
পুড়ে টুড়ে ছাই হবে
এমন প্রতীতি নিয়ে স্বপ্নকুঁড়ি নিয়ে
প্রতীক্ষা-পিদিম জ্বেলে টিকে থাকা
এমন গভীর সৌম্য অপেক্ষা কখনো
ম্লান হয়ে নিভে যেতে পারে না পারে না

রেণু রেণু সংবেদবর্ণালি-৮

ক.
আমার না পাওয়াগুলি অবরুদ্ধ দীর্ঘশ্বাসগুলি
মুক্তি চায়, বেরোতে পারে না
কার্বনের নিঃসরণ
নতুন মাত্রিক আর বিপজ্জনক
সেও তো দূষণ বটে
বলতে পারো প্রণয়দূষণ!

খ.
আদিপ্রাণ বৃক্ষতলে
ছায়াশান্তি মাঙনের সুপ্তি বর্তমান
এসো লই বৃক্ষের শরণ
পরিবেশ প্রশান্তির সেও এক
স্বস্তিমন্ত্র, অনিন্দ্য ধরন।

গ.
নদীকে বইতে দাও নিজস্ব নিয়মে
গলা টিপে ধোরো না ধোরো না,
নদী হচ্ছে মাতৃরূপ বাৎসল্যদায়িনী
দখলে দূষণে তাকে লাঞ্ছিত পীড়িত
হে মানুষ এই ভুল কোরো না কোরো না

ঘ.
উচ্চকিত শব্দ নয় বধিরতা নয়
মৃদু শব্দ প্রকৃতির সঙ্গে কথা কও
শব্দ যদি কুঠারের ঘাতকপ্রতিম
তবে হে মানুষ তোমরা অমৃতের পুত্রকন্যা নও

ঙ.
মৃত্তিকার কাছ থেকে সহনশীলতা শিখি
মৃত্তিকাই আদি অন্ত
জীবনের অন্তিম ঠিকানা
মৃত্তিকাই দেয় শান্তি সুনিবিড়
ক্ষমা সে পরমা
শরীর মূলত মাটি
গন্তব্য যে সরল বিছানা।

ছিন্ন কথন

আমি ভুখা পিপীলিকা
চেয়েছি আলোর দেখা।
পুড়ে যদি মরি তাও
ওগো অগ্নি শান্তি দাও।
অঙ্গার হওয়ার সাধ
এসো মৃত্যু পরমাদ।
চলো ডুবি মনোযমুনায়
এসো এসো বেলা নিভে যায়!

ধ্রুব সত্য

না-পাওয়াই সত্য হয়ে ফুটে থাকে।
পুষ্পিত সে প্রতারণা, চেনা মুশকিল।
বৃতি কুঁড়ি পাপড়িতে মায়াভ্রম লেপটানো
দেখলেই ছুঁতে ইচ্ছা হয়। ছুঁলেই বিপদ।
সেই ফুলে সম্মোহন জড়িয়েমড়িয়ে আছে
কোমলতা লাবণ্যও পুঁজি তার, এমত বিভ্রমে
লোভী ভ্রমরের মতো প্রেমিকারা ছোটে তার কাছে
গিয়ে মোক্ষ পাওয়া দূর, অনুতাপে আহত পাথর
মাথা কুটে মরলেও স্রোতধারা জন্ম নেয় না
যা কিছু হয়েছে পাওয়া, তাও এক দম্ভ সবিশেষ
মর্মে অভ্যন্তরে পশে গতস্য শোচনা নাস্তি
এই বিষ গলাধঃকরণ করে কী যে পাওয়া হলো
হিসাবে নিকাশে মন থিতু নয় সম্মতও নয়
না-পাওয়াই ধ্রুব সত্য চিরন্তন মানুষ-জীবনে!

;

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী আজ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী। ১৮৬১ সালের (বঙ্গাব্দ ১২৬৮) এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল। তার বাবার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মা সারদা সুন্দরী দেবী। তার পূর্বপুরুষেরা খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার পিঠাভোগে বাস করতেন।

তিনি একাধারে কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী-গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত ও পাঠ্য সূচিতে সংযোজিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

লেখালেখির পাশাপাশি বিশ্বকবি ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রাহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে কবিগুরু সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে ও উড়িষ্যায় জমিদারিগুলো তদারকি শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান। ১৮৭৮ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত পাঁচটি মহাদেশের ৩০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেন তিনি। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ (৭ আগস্ট ১৯৪১) কলকাতায় পৈত্রিক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

রবী ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার দেওয়া বাণীতে বলেন, ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবনবোধের প্রধান পাথেয় ছিল মনুষ্যত্বের বিকাশ, মানবমুক্তি ও মানবপ্রেম। রবীন্দ্রনাথ সাহিত্য অঙ্গনের এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার ও প্রবন্ধকার। সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, সাহিত্যের মাধ্যমে তিনি গেয়েছেন মানবতার জয়গান। শুধু সাহিত্য সাধনা নয়, পূর্ববঙ্গের জমিদারি পরিচালনার পাশাপাশি দরিদ্র প্রজাসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক মুক্তি ও মানবিক বিকাশের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেওয়া বাণীতে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যে এক বিস্ময়কর প্রতিভা। তিনি একাধারে কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তার হাতেই বাংলা কবিতা, গান, ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতি নাট্য, নৃত্য নাট্য পূর্ণতা পেয়েছে। বাংলা সাহিত্য স্থান করে নিয়েছে বিশ্বসভায়। তিনিই প্রথম বাঙালি কবি, যিনি এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথ শান্তি ও মানবতার কবি। বিশ্বমানবতার সংকটে তিনি সবসময় গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। রবীন্দ্র দর্শনের প্রধান বিষয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্বমানবতাবোধ ও মানুষে মানুষে মিলন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষাভাবনা বিজ্ঞানভিত্তিক, যা আধুনিক শিক্ষায় অগ্রগামী হতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে তার (রবীন্দ্রনাথের) রচনা আলোক শিখা হয়ে বাঙালিকে দেখিয়েছে মুক্তির পথ। বাঙালির সুখে-দুঃখে তার গান যেমন দিশা দিয়েছে, বাঙালির জাতীয় সংকটেও তার গান হয়ে উঠেছে একান্ত সহায়। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গান হয়ে উঠেছিল মুক্তিকামী বাঙালির চেতনা সঞ্চারী বিজয় মন্ত্র।

 

 

;