অ্যাসিডিটির সমস্যা: কারণ ও পরিত্রাণের উপায়



ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। অস্বস্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক এই সমস্যাটির ফলে রোগীদের দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে হয়। টক ঢেঁকুর ওঠা, বুক জ্বালাপোড়া করা, পেট ফেঁপে যাওয়া সহ নানান ধরণের শারীরিক উপসর্গ দেখা দেয় এই সমস্যাটির ফলে।
কেন অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়?
নানান কারণেই অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে। তার মাঝে কিছু হলো-

১. খাবার খাওয়ায় অনিয়ম করা।

২. অস্বাস্থ্যকর ও ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া।

৩. অতিরিক্ত ধূমপান কিংবা মদ্যপান করা।

৪. ওজন বেশি বেড়ে যাওয়া।

৫. গর্ভকালীন অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেওয়া।

কীভাবে অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে?
সঠিক জীবন ব্যবস্থা ও নিয়মতান্ত্রিক খাদ্যাভাসই অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে পারে অনেকখানি। বিরক্তিকর অ্যাসিডিটি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে মেনে চলুন কিছু সহজ নিয়ম-

খাওয়ার শুরুতে পানি পান

খাবার খাওয়ার মাঝে কখনোই পানি পান করা যাবে না। এতে অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। খাবার খাওয়ার অন্ততপক্ষে আধাঘন্টা আগে ও পরে পানি পান করতে হবে।

নাস্তা খেতে হবে ভারী

সাধারণত সকালের নাস্তা খুব হালকা কিছু খাওয়া হয়। আসলে নিয়ম হলো সকালেই ভারী কিছু নাস্তা করা। দুপুরে তার চেয়ে কিছুটা কম খাবার ও রাতে সবচেয়ে কম খাবার খেতে হবে।

পেট কিছু খালি রাখতে হবে

খাওয়ার সময় বেহিসেবিভাবে খাওয়ার ফলে পেট অনেক বেশি ভরে যায়। যা অনুচিত। খেতে হবে পেট কিছুটা খালি রেখে। অর্থাৎ পেট ভরে খাবার খাওয়া যাবে না। এতে পাকস্থলিস্থ খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হতে পারে না। বিধায় দেখা দেয় অ্যাসিডিটির সমস্যা।

ঘুম থেকে উঠেই পানি পান

সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করতে হবে। এক গ্লাসের বেশি পানি পান করতে পারলে আরও ভালো।

প্লাস্টিকের বোতল পরিহার করা

প্লাস্টিকের বোতল ব্যবহার করা শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। যার প্রভাব দেখা দেয় অ্যাসিডিটির সমস্যার উপরেও। নিত্য ব্যবহারের জন্য তাই কাঁচের বোতল ব্যবহার করতে হবে।

রাতে আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়া

রাতের বেলা খাবার নির্বাচনে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অতিরিক্ত আঁশযুক্ত খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি করে। তাই রাতের খাবার হতে হবে আঁশবিহীন অথবা স্বল্প আঁশযুক্ত।

দুই ঘন্টা পর অল্প পরিমানে খাবার খাওয়া

অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি হওয়ার অন্যতম বড় কারণ হলো একবারে অনেক বেশি পরিমানে খাবার খাওয়া। যে কারণে পরামর্শ দেওয়া হয় দুই ঘন্টা অন্তর স্বল্প পরিমাণ খাবার খাওয়ার জন্য। এতে করে খাবার ঠিকভাবে পরিপাক হবার সময় পায় ও অ্যাসিডিটির সমস্যা এড়ানো যায়।

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান

প্রতিদিন অন্তত আট থেকে দশ গ্লাস পানি অবশ্যই পান করতে হবে। পানি কম পান করা হলেই অ্যাসিডিটির প্রকোপ দেখা দেওয়া শুরু করবে।

ভরপেটে এক্সারসাইজ করা যাবে না

খাবার খাওয়ার দুই-তিন ঘন্টা পর এক্সারসাইজ করা যাবে। ভরপেটে এক্সারসাইজ করার ফলে পাকস্থলিস্থ অ্যাসিড অনেক বেশি নিঃসৃত হয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়।

নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে ওজন

সঠিক ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজনকে নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। বাড়তি ওজন ও ওবেসিটি অ্যাসিডিটি দেখা দেবার অন্যতম একটি কারণ। ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকলে অ্যাসিডিটির সমস্যাও নিয়ন্ত্রনে চলে আসে।

ধূমপান বর্জন করতে হবে পুরোপুরি

ধূমপানের ফলে তৈরি হওয়া নেতিবাচক চাপ অ্যাসিডিটির সমস্যা তৈরি করে, যা থেকেই দেখা দেয় বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা। দীর্ঘমেয়াদী অ্যাসিডিটির সমস্যাও ধূমপানের অভ্যাস বাদ দেবার ফলে কমে যায়।

বাদ দিতে হবে অ্যালকোহল

মদ্যপানের ফলে শরীরে তৈরি হয় পানি শূন্যতা। যার প্রভাব থাকে বহুদিন পর্যন্ত। এই পানিশূন্যতা থেকে অ্যাসিডিটির প্রভাব তৈরি হয় ও দেখা দেয় বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা। যে কারণে মদ্যপানের অভ্যাস বাদ দিতে হবে একেবারেই।

অতিরিক্ত ঝালযুক্ত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে

বিস্বাদ কিংবা পানসে খাবার খেতে ভালো না লাগলেও বাড়াবাড়ি ঝালযুক্ত খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না। বিশেষত কোন খাবার তৈরিতে শুকনা মরিচ ব্যবহার করা হলে, সেই খাবার এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়।  

পরিহার করতে হবে ক্যাফেইন

কফি কিংবা চায়ের স্ট্রং ক্যাফেইন অনেক ক্ষেত্রেই অ্যাসিডিটি তৈরি জন্য দায়ী। অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে বাদ দিতে হবে ক্যাফেইন গ্রহণ।

পেটের কাছে টাইট জামা পরা যাবে না

পেটের কাছে টাইট ফিট জামা পরার ফলে খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হতে পারে না। ফলে দেখা দেয় অ্যাসিডিটির সমস্যা।

 

কোন খাবারে বাড়ে অ্যাসিডিটির সমস্যা
একেকজন মানুষের একেকটি খাবারে অ্যাসিডিটির সমস্যা বৃদ্ধি পায়। কারোর হয়তো চকলেট খাওয়ার সাথে সাথেই বুক জ্বালাপোড়া শুরু হয়, কেউ হয়তো টমেটো একেবারেই খেতে পারেন না। নিজের কোন খাবারে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়ে সেটা নির্ধারন করতে হবে।

চেয়ারে দিতে হবে দুপুর ঘুম

অ্যাসিডিটির সমস্যার সাথে দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস আছে? তবে চেষ্টা করুন চেয়ারে আধশোয়া হয়ে ঘুমানোর। এতে অ্যাসিডিটি কম হবে।

ঘুমাতে হবে মাথা কিছুটা উঁচু রেখে

অ্যাসিডিটির সমস্যা খুব বেড়ে গেলে ঘুমাতে হবে কিছুটা উঁচু বালিশে মাথা রেখে। এতে পেটের খাবার ভালোভাবে পরিপাক হয় এবং অ্যাসিডিটি তৈরি হয় না।

প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম

প্রতিদিন অন্তত ছয়-আট ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। ঘুম কম হলে পাকস্থলিস্থ খাদ্য ভালোভাবে পরিপাক হয় না। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয় অথবা বেড়ে যায়।

ঘুমানোর আগে খাবার না খাওয়া

যদি ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে পেট ভরে খাবার খাওয়া হয়, তবে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেবার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই-তিন ঘন্টা আগে খাবার খাওয়ার নিয়ম। এতে করে পাকস্থলী পর্যাপ্ত সময় পায় খাবার ঠিকভাবে পরিপাক হবার জন্য।

কোন খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে সহায়ক?
উপকারী খাবার কমাবে অ্যাসিডিটি

অ্যালোভেরার জুস, কলা, কাজু বাদাম ও আদা খাওয়ার ফলে বুক জ্বালাপোড়া ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে যায় অনেকটাই।

সুগার ফ্রি চুইংগাম

সুগার ফ্রি চুইংগাম চিবানোর ফলে স্যালাইভা অনেক বেশি নিঃসৃত হয়। যা অ্যাসিডিটির প্রকোপ ও বুক জ্বালাপোড়াভাব কমাতে অনেকটা কার্যকর।

ঠাণ্ডা পানি পান

যদি হুট করে বুক জ্বালাপোড়া ভাব দেখা দেয় তবে এক-দুই গ্লাস ঠাণ্ডা পানি পান করতে হবে। ঠাণ্ডার সমস্যা থাকলে নরমাল পানি পান করলেও হবে।

পান করতে হবে বেকিং সোডার মিশ্রণ

অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি চাইলে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে ধীরে ধীরে পান করতে হবে।

অ্যাসিডিটির সমস্যা না থাকলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন শরীর কতটা সুস্থ ও ঝরঝরে বোধ হয়। তাই সঠিক খাদ্যাভাস ও জীবন ব্যবস্থার মধ্যে থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং দূরে সরিয়ে দিতে হবে অ্যাসিডিটি নামক যন্ত্রনাকে।

   

তাপ ক্লান্তি ও হিটস্ট্রোক এক নয়, জেনে নিন-লক্ষণ এবং করণীয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
তাপ ক্লান্তি ও হিটস্ট্রোক এক নয়, জেনে নিন-লক্ষণ এবং করণীয়

তাপ ক্লান্তি ও হিটস্ট্রোক এক নয়, জেনে নিন-লক্ষণ এবং করণীয়

  • Font increase
  • Font Decrease

শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, মধ্যবয়সী-যুবক প্রচন্ড গরমের সকলের নাজেহাল অবস্থা। তার উপর নেই বৃষ্টির ছিটেফোঁটা সম্ভাবনাও। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও কয়েক ডিগ্রি তাপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মাসেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

সরকারপক্ষ থেকে রাজধানীতে নানারকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে৷ কৃত্রিম ভাবে পানি দিয়ে শহর ভিজিয়ে ক্ষণিকের জন্য হলেও প্রশান্তি দেওয়া বা ছাউনি তৈরি করা৷ এছাড়া গাছ লাগানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ চলছে জোরদমে৷ তবুও গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া লোকের সংখ্যা কমছে না। সাধারণ কিছু গরম জনিত সমস্যা ছাড়াও হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ৷

গরমে সাধারণত দুইটা সমস্যার বেশি আধিপত্য দেখা যাচ্ছে৷ হিট এক্সহসশন বা তাপক্লান্তি এবং হিটস্ট্রোক৷ হিটস্ট্রোক খুবই গুরুতর একটি সমস্যা, যা মৃত্যু ঘটাতেও সক্ষম৷ হিট এক্সহসশনকে বলা যায় হিটস্ট্রোকের আগের অবস্থা। তবে অনেকেই এই সমস্যা দু'টোকে একই মনে করেন৷ তবে এদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে৷  জেনে নেওয়া যাক সেসব পার্থক্য-

হিট এক্সহসশন বা ক্লান্তি: সাধারণত শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার কারণেই হয়। গরমের মধ্যে বাইরে গেলে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হতে থাকে৷ 

তাপমাত্রা এখন দিন দিন আরও বাড়ার কারণে ঘামও তুলনামূলক বেশি হয়৷ এই কারণে শরীর থেকে পানি আর লবণ বের হয়ে যায়৷ ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। একেই হিট এক্সহসশন বলে৷

হিট এক্সহসশনের উপসর্গ হলো হিট ক্র‍্যাম্পস বা পেশিতে ব্যথা হওয়া।

পানিশূন্যতাও এর একটি সাধারণ সমস্যা। সাধারণত ১০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৩৮.৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলেই হিটএক্সহসশনের সমস্যা দেখা যায়৷

এছাড়া অনেকের বমি হয়৷ বা বমি বমি ভাব হয়৷ হিট এক্সহসশনের সময় হৃদকার্য দুর্বল হয়ে যায়। তবে হার্টবিট দ্রুত হতে থাকে৷

তাপক্লান্তি হলে করণীয়: তাপক্লান্তিতে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে৷ অথবা ঠান্ডা পানিতে কাপড় ভিজিয়ে গা মুছিয়ে দিতে হবে৷ যেন শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়৷

দ্রুত হালকা ঠান্ডা পানি খাওয়াতে হবে৷। বা জলদি শক্তি আনার জন্য এনার্জি ড্রিংক (খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহৃত) খাওয়াতে হবে।

রোগীকে ঠান্ডা স্থানে স্থানান্তরিত করতে হবে। তাকে রিলাক্স করতে টান করে শুয়িয়ে রাখতে হবে৷

বমির সমস্যা গুরুতর প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। বমিরোধী ঔষধ সেবন করাতে হবে।

হিটস্ট্রোক: যখন অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকে তখন শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে৷ সংকুচিত হওয়ার কারণে লোমকূপ ঘাম বের হতে পারেনা৷ এতে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ব্যর্থ হয়৷

সে কারণে তাপ শরীরের ভেতরেই থেকে যায় আর শরীর শীতল হতে না পেরে স্ট্রোক হয়৷

সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি বেড়ে যায়৷ হৃদপিণ্ড খুব দ্রুত এবং শক্তিশালীভাবে কম্পিত হতে থাকে৷

হিটস্ট্রোক হলে মানুষ সাধারণত অজ্ঞান হয়ে যায়৷ অথবা সজ্ঞান হারিয়ে অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে। তাদের চোখ, ত্বক পরিবর্তন হয়ে যায়।

ত্বকে লালচে এবং শুষ্ক হয়ে যায়৷ অনেকের ক্ষেত্রে খিচুনি উঠতে দেখা যায়। শ্বাস প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে যায়। রোগীর প্রশ্বাস গ্রহণে অসুবিধা হতে দেখা যায়৷

হিটস্ট্রোক হলে করণীয়: রোগীকে দ্রুত ঠান্ডা এবং ছায়াযুক্ত স্থানে নিয়ে যেতে হবে৷

রোগীর গায়ের অতিরিক্ত কাপড় এবং জুতা খুলে দিতে হবে৷ যেন বাতাসের সংস্পর্শে আসতে পারে।

শরীর এবং মাথায় স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ঢালতে হবে। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে খাওয়াতেও হবে। কোনোভাবেই ঠান্ডা পানি খাওয়াবেন না। এতে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ আরও বেগতিক হবে৷

শরীরে ঠান্ডা বাতাস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে৷ অতি দ্রুত জরুরি চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে৷ জরুরি প্রয়োজন ৯৯৯ নম্বরে কল করতে হবে।

;

কাঠফাটা রোদে ত্বক পুড়ে যাচ্ছে? ঠান্ডা দুধ লাগিয়ে পাবেন সমাধান



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র গরমে ওষ্ঠাগত জনজীবন। প্রচণ্ড রোদে ত্বক পুড়ে গেলে ত্বকের লাবণ্য কমে যায়। এর প্রধান কারণ হলো সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। এদিকে রোদে পোড়া দাগ বা সানবার্ন নিয়ে অনেকের চিন্তার শেষ নেই। সানবার্ন নিয়ে সতর্ক থাকা দরকার। এখান থেকে স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় সানবার্নের জেরে চামড়া উঠতে শুরু করে। ত্বকের ওই অংশ লাল হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে সানবার্নের সমস্যায় ভুগলে এখান থেকে বার্ধক্যের লক্ষণও জোরালও হয়। সানবার্ন থেকে মুক্তি পেতে গেলে সানস্ক্রিন ছাড়া রোদে বেরোনো যাবে না। আর যদি সানবার্নের মুখোমুখি হন, সেক্ষেত্রে ঠান্ডা দুধকে কাজে লাগান।

ঠান্ডা দুধ সানবার্নের সমস্যা দূর করে

১) প্রখর রোদ সানবার্নের জন্য দায়ী। ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি ত্বকের উপর প্রদাহ তৈরি করে। সানবার্নের উপর ঠান্ডা দুধ লাগালে নিমেষের মধ্যে কমে যায় ত্বকের জ্বালাভাব ও লালচে ভাব।

২) দুধের মধ্যে প্রোটিন ও লিপিড রয়েছে, যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। সানবার্নের উপর ঠান্ডা দুধ লাগালে ত্বকের শুষ্কভাব দূর হবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৩) দুধের মধ্যে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে, যা মাইল্ড এক্সফোলিয়েটর। এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ পরিষ্কার করে এবং ক্ষত দ্রুত নিরাময় করে। সানবার্ন দূর করে ঠান্ডা দুধই সেরা।

সানবার্নের উপর যেভাবে ঠান্ডা দুধ প্রয়োগ করবেন -

১) ফ্রিজারে দুধ রেখে বরফ বানিয়ে নিন। রোদে বেরিয়ে ত্বক পুড়ে গেলে, বাড়ি ফিরেই সানবার্নের উপর ওই দুধের বরফ ঘষে নিন।

২) এছাড়া ফ্রিজে থাকা ঠান্ডা দুধে তুলার বল ডুবিয়ে নিন। এবার ওই তুলার বল সানবার্নের উপর কয়েক মিনিট রেখে দিন। আলতো হাতে বুলিয়েও নিতে পারেন।

৩) ঠান্ডা দুধ না থাকলে ঠান্ডা টক দইও মাখতে পারেন সানবার্নের উপর। দুধ ও দই দুটোই সানবার্নের চিকিৎসায় সেরা ফল। ত্বক থেকে ট্যান তুলতেও এই উপায় কাজে লাগাতে পারেন।

তথ্যসূত্র- টিভি৯ বাংলা

;

তাপপ্রবাহের কারণে হওয়া সাধারণ কিছু সমস্যা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রচণ্ড তাপদাহে পুড়ছে দেশ। আমাদের দেশে মূলত নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থাকে। তবে ক্রমাগত পরিবর্তনশীল জলবায়ুর কারণে গত কয়েক বছরে আবহাওয়ায় বেশ পরিবর্তন এসেছে। এখন গরমে তাপমাত্রা বেশ বাড়তি থাকে। তাই গরমে এখন অসুস্থ হওয়ার ঘটনা বেড়ে গেছে। গরমের কারণে হওয়া সমস্যাগুলোকে অনেকেই গুরুত্ব দেয় না। তারা মনে করেন ঠান্ডা পানি পান করলেই সমাধান হবে। তবে গরমে অসুস্থ হওয়াকে অবহেলা করলে মৃত্যু ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। তাই উপসর্গ দেখার পরই সাবধান হতে হবে।

চিকিৎসক থমাস ওয়াটার্স এই নিয়ে সাবধান হওয়ার জন্য জোর দিয়েছেন। গরমে যে সব সমস্যা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে দেখা যায়, সেগুলো হলো-

১। ফুসকুঁড়ি বা হিট র‍্যাশ

গরমে ঘাম হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাপ অতিরিক্ত বেশি হওয়ার কারণে গরমে ঘাম এবং ঘাম জমেও বেশি। কনুই, হাঁটুর পেছনের অংশ, ঘাড় ইত্যাদি স্থানে ঘাম জমে লাল ছোট ছোট ঘামাচি ও ফুসকুঁড়ি দেখা যায়।


২। হিট ক্র্যাম্পস

গরম আবহাওয়ায় অনেকেই ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম করেন। গরমের মধ্যে পেশিতে চাপ পড়ার কারণে অনেক সময় ব্যথা হতে পারে। একে হিট ক্র্যাম্প হতে পারে। কারণ এমনিতেই গরমে ঘাম বেশি হয়। এরপর যারা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন তাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ এবং তরল বের হয়ে যায়।

৩। ক্লান্তি বা হিট এক্সহসশন

প্রাকৃতিকভাবে মানুষের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখার কিছু কর্মকাণ্ড ঘটে থাকে। গরমের সময় শরীরের ভেতর থেকে ঘাম বের করে দেয়। এতে অভ্যন্তরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে শরীর ঘাম বের করা বন্ধ করে দেয়। কারণ শরীররের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যায়। এই কারণে শরীর ঠান্ডা হতে পারেনা।


৪। হিট স্ট্রোক

অতিরিক্ত গরমে শরীরে তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেড়ে যায়। হঠাৎ এই পরিবর্তন শরীর নিতে পারে না। ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা হলেই হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। হিট স্ট্রোক অনেক গুরুতর হতে পারে। এমনকি এই কারণে মৃত্যুও হতে পারে।

দিন দিন তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিহীন একটানা খা খা রোদের কারণে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই জরুরি কাজ ছাড়া সকালে ১ টা থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন।

তথ্যসূত্রঃ ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক

;

জেনে নিন ওটস খাওয়ার অপকারিতা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুভ সূচনায় সুন্দর দিন। সকাল সক্রিয়তার সাথে শুরু করতে পারলে পুরোদিন অনেক ভালো কাটে।  তাই সকালের খাবার হতে হয় পুষ্টিসম্পন্ন। ব্রেকফাস্টে উন্নত পুষ্টির খাবার খেলে পুরোদিন শরীরে তা সরবরাহ হয়।  সকালে অনেকেই ভারী খাবার খেতে পারেন না। তাই হালকা কিন্তু পুষ্টি সম্পন্ন খাবার খেতে পছন্দ করেন, যা পেটও ভরাবে। 

সকালের নাস্তায় অনেকে ওটস খেতে পছন্দ করেন। ওটস একটি পুষ্টিকর খাবার, উচ্চ ফাইবার এবং প্রোটিন, এবং অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে, যেমন কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানো এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি। বিশ্বাস করা হয়, ওটস খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। তবে এইটা কতটা সত্য, তা নিয়ে এখন সন্দীহান বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন চিকিৎসক স্টিভেন গুন্ড্রি ওটস বা ওট থেকে বানানো খাবার খাওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন।  

তিনি জানান, আমেরিকায় যেসব ওটস জাতীয় খাবারে গ্লাইফোসেটের উপস্থিতি রয়েছে,এই ব্যাপারটি তিনি বেশ জোর দিয়ে বলেন। তিনি উল্লেখ করেন গ্লাইফোসেট একটি ভেষজনাশক। স্টিফেন তার বর্ণনায় একে ‘সবচেয়ে  বিষাক্ত’ বলে অভিহীত করেন।

ওটস, ওটস দুধ এবং এই জাতীয় পণ্য প্রচুর পরিমাণে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োমকে মেরে ফেলে। এছাড়া কিছু কোম্পানির ওটসে এক প্রকার  নিষিদ্ধ হার্বিসাইড সনাক্ত করা হয়েছে। এই হারবিসাইড ক্যান্সার সহ স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করে।

প্রতিদিন ওটস খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও ব্যথা হয়। ওটস খাওয়ার কারণে পেটে গ্যাস জমিতে থাকে। যাদের বেশি পরিমাণে ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস নেই তারা হঠাৎ ওটস খাওয়া শুরু করলে সমস্যা দেখা যায়। তাদের পেট ফোলা ও ফাঁপা ছাড়াও অস্বস্তির সমস্যা দেখা যায়।

ওটস খাওয়া অন্ত্রের সমস্যা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এন্টারোকোলাইটিস, ক্রোনস ডিজিজ, ডাইভারটিকুলাইটিস ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীদের সংবেদনশীল খাবার খেতে হয়।  তাই এই ধরনের রোগীদের ওটস এড়াতে হবে।   

এছাড়া ওটসে বেশি পরিমাণে শ্বেতসার থাকে। তাই ডায়বেটিসের রোগীদের ওটস খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।  কারণ তাদের নিয়ন্ত্রিত কার্বোহাইড্রেট খাওয়া নিশ্চিত করতে হয়।

পাশাপাশি যারা রক্তশূণ্যতায় ভুগছেন তাদেরও ওটস এড়িয়ে চলা উচিত। অন্ত্রের ট্র্যাক্ট থেকে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার সময় আয়রন সম্পূর্ণভাবে শোষিত হতে পারে না ওটসের কারণে। 

তথ্যসূত্রঃ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস+এইচএসএন স্টোর

;