‘ভালো থেকো মহাকালের মহারাজা!’



বিনোদন ডেস্ক
আবদুর রাজ্জাক

আবদুর রাজ্জাক

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজ্জাক একটা কমন নাম।

এমন মানুষ পাওয়া যাবে না, যার রাজ্জাক নামের বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিত কেউ নাই। রাজ্জাক নামে আমাদের একজন ড্রাইভার ছিল। আবার রাজ্জাক নামের টিচারও ছিলেন। ইউনিভার্সিটিতে রাজ্জাক নামে এক ছাত্রকে দেখতাম রাজনীতিতে খুব অ্যাকটিভ। আবার রাজ্জাক নামের একাধিক বরেণ্য রাজনীতিবিদ আছেন। ‘রাজ্জাক হোসিয়ারি’ ট্যাগ লাগানো গেঞ্জি দেখেছি, মফস্বলের এক শহরে ‘রাজ্জাক সুইটমিট’ মিষ্টির দোকান ছিল। বংশালের আল রাজ্জাক’স হোটেলের কাচ্চি বিরিয়ানি যে খায় নাই, সে নার্ভাস নাইন্টিজে কাচ্চির সেঞ্চুরি মিস করেছে। এই বিজ্ঞাপনের জন্য আল রাজ্জাক’সকে টাকা দিতে হবে না। কারণ, ২০ বছর আগে যখন তাদের কাচ্চির হাফ প্লেট ৪৬ টাকা ছিল, তখন গুলশান থেকে ৭০ টাকা আসা-যাওয়া খরচ দিয়ে সেই ৪৬ টাকার আধা ইঞ্চি লম্বা বাসমতী চালের কাচ্চি খেয়ে এসেছি। রাজ্জাক নামের মানুষগুলো বেশির ভাগ নিজ নিজ ক্ষেত্রে ফেমাস হন। তবে একটা জায়গায় রাজ্জাক নামের তেমন কাউকে পাওয়া যায়নি। রাজ্য শাসনে। ভারতে মুঘল কোনো সম্রাটের নাম রাজ্জাক ছিল না। পারস্যে রাজ্জাক নামের কোনো শাসক দেখা যায়নি। পাকিস্তানে আবদুর রাজ্জাক নামের একজন ক্রিকেটারের দেখা মিললেও এই নামে কোনো মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী পাওয়া যায়নি। অবশেষে রাজ্জাক নামের ‘রাজা’ খুঁজে পাওয়া যায় ঢাকায়। তা আবার খোদ এফডিসিতে। সম্ভবত শাসক হিসেবে বিশ্বে তিনিই একমাত্র রাজ্জাক। শাসন করেছেন ঢাকাই সিনেমা। দুর্দান্ত শাসক। ‘নায়করাজ’ উপাধি নিয়ে বর্ণাঢ্য বিদায় নিয়েছেন এই রাজা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856106405.jpg
নায়করাজ

নায়করাজ হলেও সিনেমায় তাঁর শুরুটা এক পাসিং শট দিয়ে। পাসিং শট মানে এক ঝলক দেখা যাওয়া কথাবিহীন শট। যেমন: কেউ চা দিয়ে গেল বা কেউ সামনে দিয়ে একটু হেসে হেঁটে গেল অথবা কোনো পিয়ন চিঠি দিয়ে চলে গেল। রাজ্জাকও চিঠি দিয়ে চলে যান। তবে পিয়ন হিসেবে না। চিঠি দিয়েছিলেন সেই ছবির নায়িকাকে। নায়কের হয়ে। নায়িকা বাসার সামনের গেটে দাঁড়িয়ে ছিল। রাজ্জাক সাইকেল করে এলেন, নায়কের চিঠি দিলেন, চলে গেলেন। ১৯৬৬ সালে সেটা ছিল ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ ছবি।

বটগাছের বীজ সরষে দানার সমান। সেই সরষে দানার সমান অভিনয় থেকেই হয়েছিলেন বটবৃক্ষ ‘নায়করাজ’।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856148203.jpg
‘আগুন’ ছবির দৃশ্যে রাজ্জাক-শাবানা

রাজ্জাক ধূমকেতুর মতো নজরে আসেন ‘রংবাজ’ ছবি দিয়ে। ‘রংবাজ’ ছবি সুপারহিট হওয়ার কারণ ছিল অনেক। তখন ঢাকায় মহল্লাভিত্তিক একক রংবাজি ছিল কমন কালচার। প্রতিটি পাড়ায় একজন বা দুজন স্বীকৃত রংবাজ ছিল। তাদের সবাই ভয় পেয়ে চলত। বয়সে তরুণ এই রংবাজদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় ছিল না। নিজগুণে রংবাজ। গুণ বললাম, কারণ তাদের বেশ কিছু গুণ ছিল। তারা মারামারিতে সিদ্ধহস্ত হলেও নীতিমান ছিল। তারা রংবাজি করত খারাপ মানুষের বিরুদ্ধে। চাঁদাবাজি করত না। অন্যায় দেখলে রুখে দাঁড়াত। দোষের মধ্যে ছিল ফ্যান্টাসি মার্কা মারামারি আর ড্রিংকট্রিংক করে সবার সামনে মাতলামি করা। সাধারণত পরিচিত ভদ্র পরিবারেরই হতো এই রংবাজরা। ভদ্র পরিবারের বখে যাওয়া ছেলে। তাদের খুব একটা প্রেম করতে দেখা যেত না। পাড়ার নম্রশম্র মেয়েরা এদের ভয় পেত। কিন্তু বেশির ভাগ রংবাজই পাড়ার সেরা সুন্দরী মেয়েটার ওয়ান সাইডেড প্রেমে পড়ে থাকত।

এ রকম একজন রংবাজ ছিলেন আমাদের আজিমপুরের খালেদ ভাই। আমি তখন অনেক ছোট। সন্ধ্যায় দেখি, আজিমপুর রোডের দুধারে সব দোকানদার বেরিয়ে এসে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে। আর পুরো রোডের এমাথা-ওমাথা খালেদ ভাই মাতলামি করে চলেছে। কেউ তাকে থামাতে সাহস করছে না। তার বড় ভাই ছিলেন খুব ডাকসাইটে। নাম মিয়া ভাই। কেউ খবর দিয়েছে। মিয়া ভাই ঐতিহ্যবাহী ঢাকাইয়া সাদা লুঙ্গি পরে এসে গুরুগম্ভীরভাবে খালেদ ভাইকে বাসায় যেতে বললেন। বড় ভাইয়ের আদেশ সম্মান করে বাসায় চলে গেলেন মাতাল খালেদ ভাই। রংবাজের ওপর এক নেগেটিভ ছাপ পড়ল আমার মনে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856207896.jpg
রাজ্জাক

কিন্তু ভুল ভেঙে গেল পরদিন। চাচাতো বোন পড়ে ইডেন কলেজে। বাসার গেটে এসে রিকশাভাড়া দেওয়ার পর রিকশাওয়ালা ভাড়া নিয়ে তর্ক শুরু করে বাজে ভাষায়। পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন খালেদ ভাই। শাট করে দাঁড়ালেন। আমার বোনকে বললেন, ‘আপা, আপনে বাসায় যান।’ আপা চলে গেলেন। খালেদ ভাই রিকশাটা খুঁটির সঙ্গে বাঁধলেন। রিকশাওয়ালাকে শুধু বললেন, ‘তুই মহিলা মাইনসের লগে খারাপ কথা কইসোশ ক্যান?’ শুরু হলো রিকশাওয়ালার ওপর চায়নিজ কুংফু! ব্রুস লি দেখলে হয়তো কিছু শট শুধরে দিতেন। বাবা গো, মা গো বলে মাফ চাইল রিকশাওয়ালা। থামলেন খালেদ ভাই। রিকশাওয়ালাকে পাশে বসিয়ে কেক-ফান্টা খাওয়ালেন। বোঝালেন, মেয়েদের সম্মান করতে হয়। তারপর রিকশাওয়ালার হাতে ২০ টাকা দিয়ে বিদায় করলেন। সেদিন ওর আর রিকশা না চালালেও চলবে।

এ রকম রংবাজদের নিজেদের এলাকায় দেখে দেখে অভ্যস্ত ছিল মানুষ। কিন্তু সিনেমার পর্দায় দেখেনি। ‘রংবাজ’ মুভি তাই দৃষ্টি কাড়ল দর্শকের। একজন বখে যাওয়া রংবাজ নায়ক? তা আবার প্রেম করবে? নাচবে-গাবে? ফাইট করবে? গেল সিনেমা হলে। আর গিয়েই দেখা পেল এক বিরল প্রতিভার। নাম রাজ্জাক। দেখতে স্মার্ট, গুড লুকিং। মারপিট করে ফাটাফাটি। গান গায় খুব সুইট স্টাইলে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856229635.jpg
তখনকার রাজ্জাক

আমার ছোট ভাইয়ের তখন মুখে আধো আধো বোল এসেছে। বাসার ক্যাসেট প্লেয়ারে ‘রংবাজ’ ছবির হিট গান ‘এই পথে পথে, আমি একা চলি’ গানটি প্রায়ই বাজে। গানটি মাতাল হয়েই রাজ্জাক গেয়েছেন মুভিতে। গানের আগে কিছু মাতলামির কথা আছে। ছোট ভাইয়ের সেই কথাগুলো মুখস্থ হয়ে গেল। সবাই তাকে বলতে বললে সে গড় গড় করে বলে, ‘আরেত্থালা (আরেশ শালা), কে আওয়া (কে বাবা?), পথ লেলে আথো (পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছো?), কী বললে? থাইত তলবে (ফাইট করবে?), আমি ন্যাম্পোত আওয়া (আমি ল্যাম্পপোস্ট বাবা), আমাতে মাপ তলে দাও (আমাকে মাফ করে দাও), হু হু হু হা হা হা (হাসি)!’

এই হাসির পর রাজ্জাক আর পেছনে তাকাননি। রাজ্জাক মানেই সুপারহিট ছবি। বর্তমান বলিউডে যেমন সব নায়িকা বলেন, আমির খানের সঙ্গে তাঁরা একটি দৃশ্যে অভিনয় করতেও রাজি, তখন ঢাকার নায়িকারা মুখে না বললেও সবাই জুটি বেঁধেছিলেন এই ভয়াবহ জনপ্রিয় নায়কের সঙ্গে। রাজ্জাক-সুচন্দা, রাজ্জাক-কবরী, রাজ্জাক-শাবানা, রাজ্জাক-ববিতা, সব জুটির সব ছবিই হিট! হিটের আরেক অর্থ, তাপ। এই তাপের মধ্যে আরেকটু উত্তাপ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন রাজ্জাক-কবরী। পর্দার বাইরেও তাঁদের ইমোশনাল সম্পর্ক তখন টিনেজারদের নাড়া দিয়েছিল। একসঙ্গে হলেই স্কুল-কলেজের মেয়েরা রাজ্জাক-কবরী নিয়ে ফিসফাস-ফুসফাস করত। সেটাকে স্রেফ স্ক্যান্ডাল বলে আমরা হয়তো উড়িয়ে দিতে পারতাম, কিন্তু পরে দীর্ঘ সময় মান-অভিমানজনিত বিচ্ছেদ তাঁদের ইমোশনের গভীরতা প্রমাণে যথেষ্ট। উচ্ছল বয়সে এক-আধটু এ রকম হতেই পারে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856268725.jpg
রাজ্জাকের পরিবার

শুধু পর্দায় না, ব্যক্তিজীবনেও পাক্কা নায়ক ছিলেন এই নায়করাজ। তাঁর একটি ঘটনা। আরেক মহানায়ক উত্তমকুমারের মেহমান হয়ে গেছেন কলকাতায়। কলকাতা শহরে একা চলছেন। হঠাৎ তাঁর পকেট মেরে এক পকেটমার চলে যাচ্ছে। পকেটমার তো আর ঢাকার রাজ্জাক চেনে না। দিলেন ধাওয়া রাজ্জাক। কলকাতার রাস্তায় মানুষ জলজ্যান্ত লাইভ দেখতে লাগল ভয়ানক বেগে এক স্মার্ট তরুণ আরেক উষ্কখুষ্ক যুবককে ধাওয়া দিচ্ছে! যেন ভিলেনকে তাড়া করছে নায়ক। ধরেও ফেললেন। দিলেন ঢিসুম ঢুসুম। উদ্ধার করলেন মার যাওয়া টাকা। সোপর্দ করলেন পুলিশের কাছে। নিজের পরিচয় দিলেন। লোকজন তাঁর পরিচয় জেনে মহাখুশি। ঢাকাইয়া পোলা, কোটি টাকা তোলা!

খবরটা সেই সময়ের পত্রিকায় এসেছিল।

রাজ্জাকের প্রধান আকর্ষণ ছিল তাঁর রোমান্টিক চেহারা আর এক্সপ্রেশনে। সে সুযোগ নিলেন পরিচালক। বাংলাদেশে প্রথম চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করালেন। তাঁর ‘চুমু পার্টনার’ ছিলেন ববিতা। ‘অনন্ত প্রেম’ ছবিতে। যদিও সেন্সর বোর্ড মূল চুম্বনের ওপর রোলার স্টিম চালিয়ে ছ্যাড়াব্যাড়া করে দিয়েছিলেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856298005.jpg
নায়ক বয়সে

যদিও অরিজিন্যাল কোঁকড়ানো ছোট ছোট চুলে রাজ্জাককে মানাতো বেশ, তবুও দুই ধরনের চুলে অভিনয় করতেন নায়করাজ। চরিত্রের প্রয়োজনে। পরচুলায়ও তাঁকে সমান ভালো লেগেছে। সম্ভবত এ দেশে এখন পর্যন্ত রাজ্জাকই একমাত্র সুপারস্টার, যাঁর কোনো ছবি ফ্লপ হয়নি। পোশাকি ছবি কম করেছেন, কিন্তু সেগুলোও হয়েছে হিট। রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন করে তা থেকে ভালো কিছু করতে চেয়েছিলেন। লক্ষ্মী তাঁর স্ত্রীর নাম। দুজনের নাম মিলিয়েই রাজলক্ষ্মী। বউকে অসম্ভব ভালোবাসতেন।

একজন সুপারস্টার সেই দেশের একজন অনুসরণীয় পারসোনালিটি। রাজ্জাক তা মেনে চলেছেন। পারিবারিক বন্ধন ও মূল্যবোধ কড়াকড়ি মেনেছেন। তার প্রতিফলন দেখা গেছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও। নিরহংকারী ছিলেন। একজন নায়করাজই তো হন নিরহংকারী। শেষ জীবনের কয়েকটি টিভি সাক্ষাতে চেপে রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু অলক্ষ্যে বেরিয়ে গেছে তাঁর গুমরে গুমরে হতাশার বেদনা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/21/1534856328652.jpg
একটি ছবির দৃশ্যে

উন্নত দেশ লিভিং লিজেন্ডদের বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে উপস্থিতি ঘটিয়ে তাদের প্রতিভাকে কাজে লাগায়। প্রতিভা ছাড়া লিজেন্ড হয় না। আর এই অভিজ্ঞ প্রতিভাদের কাছ থেকে উদ্দীপিত হয়ে জন্ম নেয় নতুন সব প্রতিভা। পাশের দেশেই মিঠুন চক্রবর্তী বা অমিতাভ বচ্চনরা এখনো তাঁদের প্রতিভা ছড়াচ্ছেন। প্রতিভা ছাড়া কি একজন ‘নায়করাজ’ বা ‘মহানায়ক’ হয়ে যাওয়া যায়? কখনোই না। সেটা তিনিও জানতেন।

হয়তো না-বলা একরাশ বেদনা নিয়েই গত বছর এই দিনে আমাদের ছেড়ে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন আমাদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়করাজ রাজ্জাক। এই দেশ বহু দশক মিস করবে তাঁকে। আমাদের সময় এসেছে গুণ জানার, গুণী চেনার, গুণের কদর করার। গুণীদের কখনো অবসর হয় না। ভুললে চলবে না, যে দেশ গুণের কদর করে না, সে দেশে গুণী জন্ম নেয় না।

ভালো থেকো মহাকালের মহারাজা!

[লিখেছেন শায়ের খান]

আরও পড়ুনঃ

ভক্তরা সত্যিকারের নায়লা নাঈমকে খুঁজে পেয়েছেন

অ্যালেন শুভ্র’র বাড়ি ফেরা

‘যতদিন বেঁচে থাকবো, এফডিসিতে কোরবানি দেবো’

   

বানসালির ‘হীরামন্ডি'র প্রিমিয়ারে পুরো বলিউড, দেখুন ছবিতে



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘হীরামন্ডি'র প্রিমিয়ারে নির্মাতা বানসালির সঙ্গে পুরো স্টার কাস্ট

‘হীরামন্ডি'র প্রিমিয়ারে নির্মাতা বানসালির সঙ্গে পুরো স্টার কাস্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

বলিউডের একাধিক জনপ্রিয় গণমাধ্যম বলছে, এ বছরের সবচেয়ে বড় প্রিমিয়ার শো হয়ে গেলো গতকাল! সঞ্জয় লীলা বানসালির বহুল প্রতীক্ষিত নেটফ্লিক্স ওয়েব সিরিজ ‘হীরামন্ডি : দ্য ডায়মন্ড বাজার’-এর প্রিমিয়ার শোতে যেন পুরো বলিউড এসে হাজির হন। এমনিতে সিরিজটিতেই রয়েছেন ১ ডজনের মতো জনপ্রিয় তারকারা। তারকা তো ছিলেনই, তাদের উৎসাহ দিতে কিংবদন্তি রেখা থেকে সালমান খান, কে না হাজির ছিলেন।

আলিয়া ভাট এসেছিলেন মা এবং শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে

বানসালির প্রিয় ‘গাঙ্গু’ আলিয়া ভাট এসেছিলেন মা অভিনেত্রী সোনি রাজদান এবং শাশুড়ি প্রখ্যাত অভিনেত্রী নিতু সিং কাপুরকে সঙ্গে নিয়ে।

ভিকি কৌশল, সোনি রাজদান, অনন্যা পাণ্ডে আার করণ জোহরের খুনসুটি

বানসালির ক্রিয়েটিভিটিকে মনে মনে হিংসা করা করণ জোহরও হাজির ছিলেন। শুধু কি তাই, এ প্রজন্মের জনপ্রিয় তারকা ভিকি কৌশল, আদিত্য রয় কাপুর, অনন্যা পাণ্ডে, রাশমিকা মান্দানা, ভূমি পেডনেকার, সুরজ পাঞ্চলি থেকে শুরু করে রনদ্বীপ হুদা- নানা প্রজন্মের তারাকায় মুখরিত ছিল অঙ্গন।

আড্ডায় মেতে ওঠেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী রেখা ও হীরামন্ডি সিরিজের শিল্পী অদিতি রাও হায়দারি, সোনাক্ষী সিনহা ও মনিষা কৈরালা

সঞ্জয় লীলা বানসালির সিরিজ ‘হীরামন্ডি : দ্য ডায়মন্ড বাজার’ ঘিরে দর্শকের আগ্রহ ক্রমে বেড়েই চলেছে। বানসালি মানেই যেন এক জাদুকরি দুনিয়া। ‘হীরামন্ডি’ সিরিজের মাধ্যমে ছয় নায়িকাকে একসঙ্গে তিনি ওটিটির পর্দায় আনতে চলেছেন। সিরিজটির মাধ্যমে বানসালিও ওয়েব সিরিজের দুনিয়ায় পা রাখতে চলেছেন।

বানসালি ও তার প্রিয় ‘গাঙ্গুবাঈ’ আলিয়া ভাট

নেটফ্লিক্স আয়োজিত ‘নেক্সট অন নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া’ আসরে প্ল্যাটফর্মটির নতুন সিরিজ ও সিনেমার ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানেই ‘হীরামন্ডি’র নায়িকাদের চরিত্রের নাম ও তাঁদের লুক প্রকাশ্যে এসেছে। অনুষ্ঠানটিতে নায়িকারা বানসালিকে ঘিরে নিজেদের অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন।

হীরামন্ডির ছয় নায়িকা ও অভিনেতাদের সঙ্গে নির্মাতা বানসালি

হীরামন্ডির ছয় নায়িকা হলেন মনীষা কৈরালা, সোনাক্ষী সিনহা, অদিতি রাও হায়দারি, রিচা চাড্ডা, সানজিদা শেখ, শারমিন সেহগাল। এদিন এই ছয় নায়িকার লুক আর তাদের চরিত্রের নাম প্রকাশ করা হয়। এই সিরিজটির মাধ্যমে ২৫ বছর পর মনীষা আবার বানসালির সঙ্গে কাজ করলেন। আর অভিনেতা ফারদিন খানও দীর্ঘদিন পর কামব্যাক করছেন এই সিরিজের মাধ্যমে।

সুপারস্টার সালমানের সঙ্গে বানসালির অন্যরকম সম্পর্ক! মাঝে অভিমান জমলেও এখন তারা আবারও আগের মতো বন্ধু

১৯৯৬ সালে এই পরিচালকের ‘খামোশি : দ্য মিউজিক্যাল’ সিনেমায় সালমান খানের নায়িকা ছিলেন তিনি। বানসালির সঙ্গে আবার কাজ করতে পেরে উচ্ছ্বসিত এই নায়িকা। মনীষা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা সবাই নিজেদের সেরাটা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কারণ, আমরা এক মাস্টারের সঙ্গে কাজ করেছি। খামোশি ছবির ২৫ বছর পর এ সিরিজে কাজ করার চেয়ে আর ভালো কিছু হতে পারে না। আমি তাঁকে শিল্পী, ওস্তাদ আর একজন প্রতিভাবান নির্মাতা হিসেবে বিকশিত হতে দেখেছি। উনি ভারতের একজন গুণী চিত্রনির্মাতা। আমরা ভাগ্যবান যে ওনার সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি।’

তরুণ প্রজন্মের আলোটিত অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডে এসেছিলেন নীল সালোয়ার কামিজ পরে

সিরিজের আরেক নায়িকা রিচা চাড্ডা বলেছেন, ‘নায়িকাদের সুন্দর পোশাক অনেকেই পরাতে পারেন। কিন্তু বানসালি একমাত্র, যিনি অভিনেত্রীকে ৩০ কেজি ওজনের লেহেঙ্গা পরিয়ে তাঁর সৌন্দর্য বিকাশের পাশাপাশি সেরা অভিনয়টা বের করে আনতে পারেন। একজন অভিনয়শিল্পীর মধ্যে নিজেকে আরও উন্নত করার প্রবল খিদে থাকে। উনি সেই খিদেকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারেন। কিছুদিন আগেই রানি মুখার্জির (অভিনেত্রী) সঙ্গে দেখা হয়েছিল। উনি বলেছিলেন, সঞ্জয় লীলা বানসালির সঙ্গে কাজ না করা পর্যন্ত কেউ নিজের প্রতিভা উপলব্ধি করতে পারেন না।’ রিচা এর আগে বানসালির ‘রামলীলা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন।

‘হীরামন্ড ‘র প্রিমিয়ারে আবেদনময় অভিনেতা আদিত্য রয় কাপুর

এ সিরিজের আরেক অভিনেত্রী অদিতি রাও হায়দারি বানসালির সঙ্গে আগে কাজ করেছেন। তাঁকে ‘পদ্মাবত’-এ দেখা গিয়েছিল। অদিতি এই অনুষ্ঠানে বানসালির প্রসঙ্গে বলেন, ‘বানসালির সঙ্গে কাজ করা স্বপ্নের মতো। এটা অনেক বড় আশীর্বাদ। যখন কোনো ছবির শুটিং করেছি, তখন বানসালির সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে পেরেছি।

‘হীরামন্ড ‘র প্রিমিয়ারে জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানা ও ভূমি পেডনেকার

কিন্তু সিরিজটির শুটিংয়ের সময় আমরা ওনার সঙ্গে অনেক বেশি সময় কাটাতে পেরেছি। অনেকে তাঁর সৃষ্টির মধ্যে সৌন্দর্য, পোশাক, অলংকার এ সবকিছু দেখতে পান। কিন্তু তাঁর প্রতিটা সৃষ্টির মধ্যে আমি অফুরান অভিজ্ঞতা, আবেগ, আর আত্মাকে খুঁজে পাই। উনি ওনার সৃষ্টি করা চরিত্রের মধ্যে শ্বাস নেন, বেঁচে থাকেন। আর উনি আপনার সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, তার মধ্যে থাকে ভালোবাসা। আমি এই অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য সত্যি কৃতজ্ঞ।’

‘হীরামন্ড ‘র প্রিমিয়ারে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ভিকি কৌশল ও কমেডি কিং কাপিল শর্মা

আসছে ১ মে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে ‘হীরামন্ডি : দ্য ডায়মন্ড বাজার’।

প্রিমিয়ার শোতে বানসালির সঙ্গে অতিথিরা
;

ঢাকার প্যারাসাইকোলজিক্যাল সিনেমায় লাস্যময়ী পাওলি



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
পাওলি দাম /  ছবি : ফেসবুক

পাওলি দাম / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার যে অল্প কয়েকজন অভিনেত্রী বাংলাদেশেও সমান জনপ্রিয় তাদের মধ্যে অন্যতম লাস্যময়ী পাওলি দাম। কারণ তিনি কলকাতাার পাশাপাশি বাংলাদেশের একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। যেমন এদেশে গৌতম ঘোষের আর্ট সিনেমা ‘মনের মানুষ’-এ অভিনয় করেছেন, তেমনি শাকিব খানের নায়িকা হয়ে ‘সত্তা’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন।

তবে বেশ কয়েক বছর হলো এ দেশের ছবিতে আর দেখা যায়নি পাওলিকে। ভক্তদের সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। আবারও ঢাকাই সিনেমায় কাজ করবেন সর্বভারতীয় এই মেধাবী অভিনেত্রী।

পাওলি দাম /  ছবি : ফেসবুক

নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খানের প্রথম ছবি ‘ভুবন মাঝি’তে দেখা গিয়েছিলো পশ্চিমবাংলার অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। এরপর তিনি নির্মাণ পশ্চিমবঙ্গের আরেক বরেণ্য অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীকে নিয়ে নির্মাণ করেন ‘গণ্ডি’ এবং ‘জেকে ১৯৭১’ নামের দুটো সিনেমা। এবার তার চতুর্থ সিনেমার অভিনয় করবেন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম। ছবিটির নাম ‘নীল জোছনা’।
সরকারী অনুদানের এই সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজি বিষয়ক উপন্যাস ‘নীল জোছনার জীবন’ অবলম্বনে। সিনেমাটির প্রধান নারী চরিত্র লায়লার ভূমিকায় দেখা যাবে পাওলিকে।

গত বুধবার কলকাতায় পাওলির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেন নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খান

গত বুধবার কলকাতার ডিকালগ ম্যানেজমেন্ট সেন্টারে পাওলির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেন নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খান। সিনেমায় পাওলির বিপরীতে কে থাকছেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে নির্মাতা জানিয়েছেন, পাওলির বিপরীতে খুব শিগগির দেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতাকে তিনি নির্বাচিত করবেন।

আবারও বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে পাওলি বলেন, ‘গত বছর নির্মাতা ফাখরুল আরেফিন খান আমার সঙ্গে এই সিনেমা নিয়ে যোগাযোগ করেন। প্রথমে তার কাছে থেকে গল্পটি শুনেছি, যেহেতু তখনও মোশতাক আহমেদের সেই বইটি আমার পড়া ছিল না, এরপর যখন বইটি পড়লাম, তখন দারুণ লাগলো। বলা যায় এই সিনেমার সঙ্গে সেদিন থেকেই জড়িয়ে আছি। যার আনুষ্ঠানিকতা গত বুধবার হয়েছে।’

পাওলি দাম /  ছবি : ফেসবুক

অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘সত্যি বলতে কী প্যারালাল ইউনিভার্স নিয়ে বাংলায় কাজ হয়নি বললেই চলে। হলিউডে কিছু কাজ হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিস্টোফার নোলানের ইন্টারেস্টলার, ইনসেফশনের উদাহরন দেওয়া যেতে পারে। আমরা সেই জনরার একটি ছবি করতে যাচ্ছি। আশা করছি ভালো কিছুই হবে।’

নির্মাতা জানান, ‘নীল জোছনা’ সিনেমার দৃশ্যধারণ শুরু হবে আগামী মাসের শেষদিকে, একটানা জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে।

পাওলি দাম /  ছবি : ফেসবুক

নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খান বলেন, ‘নীল জোছনা’ সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম প্রায় ৬ বছর আগে। সেই ২০১৮ সালের শেষের দিকে। প্যারাসাইকোলজি নিয়ে আমার ধারণা এর আগে বাংলাদেশে কোনো কাজ হয়নি। আর সে কারণেই যখন আমি মোশতাক আহমেদের উপন্যাসটি পড়ি, তখনই চিন্তা করি সিনেমা বানানোর। এরপর ২০১৯ সালে করোনা এবং আমার ‘জেকে ১৯৭১’ সিনেমার কারণে কাজটি বন্ধ ছিল। এরপর আবারও গত বছরের শুরু থেকে কাজটি শুরু করি।’

পাওলি দাম /  ছবি : ফেসবুক

নতুন এই সিনেমায় পাওলি দাম প্রসঙ্গে এই নির্মাতা বলেন, ‘আমাদের গল্পের অন্যতম নারী চরিত্র লায়লা, যা পাওলি দামের সঙ্গে খুব মানিয়ে যায়। এ কারণে আমরা তাকে এই চরিত্রের জন্য প্রথমে নির্বাচিত করি। এরপর পাওলির সঙ্গে যোগাযোগ হয়, তাকে চিত্রনাট্য পাঠানো হলে তিনিও আমাদের সিনেমায় অভিনয়ের জন্য রাজি হন। আশা করছি, আমরা পাওলিকে নিয়ে কাজটি খুব ভালোভাবে শেষ করতে পারব।’

;

বাস্তবের সঙ্গে মিল থাকায় ‘অমীমাংসিত’ আটকে দিল সেন্সর বোর্ড



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘অমীমাংসিত’ সিনেমার পোস্টার

‘অমীমাংসিত’ সিনেমার পোস্টার

  • Font increase
  • Font Decrease

নৃশংস খুনের বাস্তব ঘটনার সঙ্গে মিল থাকার অভিযোগ তুলে পরিচালক রায়হান রাফী পরিচালিত আইস্ক্রিন অরিজিনাল ফিল্ম ‘অমীমাংসিত’কে আটকে দিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সরবোর্ড। গতকাল বুধবার ‘অমীমাংসিত’ সিনেমার প্রযোজক শহিদুল আলম সাচ্চুকে দেওয়া সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনুদ্দীন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়েছে, সিনেমাটি ‘প্রদর্শন উপযোগী নয়’।

সেন্সর বোর্ড থেকে সিনেমাটিকে প্রদর্শনের অযোগ্য বলার কারণ হিসেবে যুক্তি দেওয়া হয়, ‘এতে নৃশংস খুনের দৃশ্য রয়েছে। কাল্পনিক কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপের বিষয়বস্তু বাস্তবতার সঙ্গে মিল রয়েছে। এ ধরনের কাহিনি বাস্তবে ঘটেছে এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট মামলা উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। চলচ্চিত্রটির কাহিনী/বিষয়বস্তু বিচারাধীন মামলার সঙ্গে মিল থাকায় ভুল বার্তা দিতে পারে এবং তদন্তের বিঘ্ন ঘটাতে পারে।’

মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানজিকা আমিন

কারা খুন করল অর্ণব আর নীরুকে? মুখোশধারী লোকগুলো কারা? এই অমীমাংসিত রহস্যের আদৌ কী জট খুলবে? গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ফেইসবুকে এই পোস্ট লিখেছিলেন নির্মাতা রায়হান রাফী, প্রকাশ করেছিলেন ‘অমীমাংসিত’ সিনেমার টিজার এবং পোস্টার। যা দেখে দর্শকদের কেউ কেউ বলছিলেন, সিনেমাটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানিয়েছেন রাফী। কেউ আবার আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এর মিল খুঁজে পান। যদিও সিনেমা সংশ্লিষ্ট কেউ কিংবা সেন্সর বোর্ডও সরাসরি সাগর-রুনির নাম বলেননি।

সেন্সর বোর্ডের চিঠিতে বলা হয়, গত ৩ মার্চ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিনেমাটি পরদিন ৪ মার্চ সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা পরীক্ষা করেন। এরপর সেটি অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ২২ এপ্রিল বোর্ড সদস্যরা পুনরায় পরীক্ষা করেন। পুনরায় যাচাই শেষে বোর্ড সভায় চলচ্চিত্রটির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই সভায় সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা মত দেন, ‘দি কোড ফর সেন্সরশিপ অব ফিল্মস ইন বাংলাদেশ, ১৯৮৫ এর ১ এর প্রথম, পঞ্চম ও সপ্তম দফায় বর্ণিত উপাদানসমূহ বিদ্যমান থাকায় ‘অমীমাংসিত’ চলচ্চিত্রটি জনসাধারণের মধ্যে প্রদর্শন উপযোগী নয়। তবে সিনেমাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা চাইলে এ পত্র প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে সরকার বরাবর আপিল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সেন্সর বোর্ডের উপপরিচালক মো. মঈনুদ্দীন।

আইস্ক্রিনের প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ আহমেদ

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে ‘অমীমাংসিত’ মুক্তির ঘোষণা ছিল। কিন্তু সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পেছানো হয় তারিখ। এরপর ঈদের বিশেষ চমক হিসেবে মুক্তির কথা জানানো হয়। সেটিও পরে হয়নি। সেন্সর বোর্ডের আপত্তির বিষয়ে আইস্ক্রিনের প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘তারা কেন এ সিনেমা নিয়ে আপত্তি করেছে, আমাদের বোধগম্য নয়, আমরা এখন আপিল করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি সাগর-রুনি হত্যার ঘটনা নিয়ে সিনেমা না। ২০১৮ সালের এক দম্পতি খুনের ঘটনা নিয়ে এই সিনেমাটি। ঘটনাক্রমে সেই দম্পতি ছিলেন সাংবাদিক। এর জন্য হয়ত কেউ কেউ মনে করছেন, এটা সাগর-রুনির খুনের ঘটনা নিয়ে। আমরা কিন্তু তা বলছি না। যদি ছবির গল্প সাগর-রুনির সঙ্গে আংশিক মিলেও যায়, তাহলে কি এটা বন্ধ করে দিতে হবে, আমি জানি না। ’
নির্মাতা রায়হান রাফী বলেন, ‘যে কোনো ধরনের গল্প নিয়েই তো সিনেমা হতে পারে। এই সিনেমায় আপত্তি করার মত কী আছে, ঠিক বুঝতে পারছি না।’

সিনেমার পোস্টারে দেখা যায়, মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ ও তানজিকা আমিন। তাদের পেছনে কয়েকজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে; যাদের মুখে কালো কাপড় বাঁধা। তবে তারা কারা, এর উত্তর মিলবে মূল ছবিতে।

নির্মাতা রায়হান রাফী

সিনেমাটি সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিনা- এমন প্রশ্নে নির্মাতা রায়হান রাফী বলেলেন, ‘সাংবাদিকের গল্প বলেই কেউ কেউ ধারণা থেকে বলছে, এটি সাগর-রুনির ঘটনা নিয়ে।’

;

অভিমান ভুলে ‘ব্ল্যাক’-এ ফিরছেন জন-তাহসান!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জন কবির ও তাহসান খানের একাল-সেকাল

জন কবির ও তাহসান খানের একাল-সেকাল

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলা রক গানে জোয়ার এনেছিল ব্যান্ড ‘ব্ল্যাক’। ১৯৯৮ সালে তিন বন্ধু জন কবির, জাহান ও টনির হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় এ ব্যান্ডের। পরে যোগ দেন মিরাজ ও তাহসান। ২০০২ সালে বাজারে আসে ব্যান্ডটির প্রথম অ্যালবাম ‘আমার পৃথিবী’। অ্যালবামের গানগুলো ব্যাপক সাড়া ফেলে দেশের তরুণ শ্রোতাদের মাঝে। এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরের বছর প্রকাশিত হয় ‘উৎসবের পর’।

এ অ্যালবাম ‘ব্ল্যাক’কে নিয়ে আসে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। তবে ২০০৪ সালে ব্যান্ডটি ছেড়ে দেন তাহসান। আর জন কবির ‘ব্ল্যাক’ থেকে বেরিয়ে আসেন ২০১১ সালে। শোবিজে গুঞ্জন, এই দুই তারকা মান অভিমান থেকেই আর একসঙ্গে কাজ করতে চাননি। এমনকি এতো বছরে এই দুজনকে একসঙ্গে আর কখনোই দেখা যায়নি।

তাহসান খান

তবে ‘ব্ল্যাক’ ভক্তদের জন্য দারুণ খবর রয়েছে। দীর্ঘদির পর আবার ‘ব্ল্যাক’-এ ফিরছেন জন ও তাহসান। ‘ব্ল্যাক’ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে গতকাল একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটি বিশেষ পরিকল্পনা করেছেন জন। সেটা ফোনে জানাচ্ছেন মিরাজকে। তিনি ফোন করে খবরটি জানান তাহসানকে। শুনেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তাহসান। প্যাডে জ্যামিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ব্ল্যাকের সদস্যরা। সেখানেও পৌঁছে যায় সুখবর। জাহানের ফোনে ঘুম ভাঙে টনির। বিষয়টি শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন টনি। কী নিয়ে কথা হয়েছে ব্ল্যাকের বর্তমান ও সাবেক সদস্যদের মধ্যে, ভিডিওতে সেটা জানানো হয়নি। তবে ক্যাপশনে লেখা ‘ব্যাক টু স্কুল’ থেকে অনেকে অনুমান করেছেন, আবারও এক হচ্ছেন ব্ল্যাকের সদস্যরা।’

জন কবির

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় ব্ল্যাকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বর্তমানে ইন্দালো ব্যান্ডের প্রধান জন কবিরের সঙ্গে। জন বলেন, ‘একসঙ্গে একটা শো করছি আমরা। এক থেকে দেড় ঘণ্টা পারফরম্যান্স করব। গাইব একসঙ্গে। বলা যায়, পুরোনো দিনের সবাই থাকবেন এতে।’

জানা গেছে, আগামী ১০ মে ঢাকায় ‘রক অ্যান্ড রিদম ৪.০’ কনসার্ট আয়োজন করেছে অ্যাডভেন্টর কমিউনিকেশন। এ কনসার্টেই দেখা যাবে ব্ল্যাকের পুরোনো লাইনআপ। কনসার্টটির জন্যই মূলত এক হচ্ছেন ব্ল্যাকের সাবেক ও বর্তমান সদস্যরা। এটিকে তাই বলা হচ্ছে ব্ল্যাকের রি-ইউনিয়ন।

তিশার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন জন কবির ও তাহসান খান

ওই দিনেই প্রকাশ করা হবে ব্যান্ডের নতুন গান। ব্ল্যাক ছাড়াও এ কনসার্টে পারফর্ম করবেন অনি হাসান, ব্যান্ড রিকল, পপাই বাংলাদেশ, ফারুক ভাই প্রজেক্ট, ক্রিপটিক ফেইটসহ অনেকে।

;