পশু-পাখি-উদ্ভিদের বাজার!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
পশু-পাখি-উদ্ভিদের বাজার / ছবি: সংগৃহীত

পশু-পাখি-উদ্ভিদের বাজার / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রামে-গঞ্জে-হাটে-বাজারে মোরগের লড়াই, পায়রার কসরত, পাখির খেলা এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। টিয়া পাখির ঠোঁটে ভাগ্য গণনার লোকায়ত জ্যোতিষীরাও কদাচিত আসেন পথের ধারে পসরা সাজিয়ে। বানর নাচের বিচিত্র খেলা দেখানো যাযাবর শ্রেণিটিও হাল আমলে অবলুপ্ত হয়েছে। এন্তার পশু-পাখি আজকাল বিক্রি হয় বাজারে ও নির্ধারিত মার্কেটে।

একদা ডাহুক, শালিক, ময়না, খনজনা, সারস পাওয়া যেতো সপ্তাহান্তের গ্রাম্য হাটে। প্রাচীন ঢাকাবাসীর স্মৃতিতে কাজি আলাউদ্দিন রোডের পশু হাসপাতালের সামনে কদাচিৎ বিভিন্ন পশু ও পাখ-পাখালি কেনা-বেচার ঘটনা স্মরণীয় হয়ে আছে।

ঢাকায় আনুষ্ঠানিক পশু-পাখির মার্কেট জমতে থাকে মধ্য আশির দশকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন-সূর্যসেন হলের গা ঘেঁষে কাঁটাবন-নীলক্ষেত মার্কেটে কয়েকটি দোকানে নানা জাতের পাখি, জীবজন্তু বিক্রি শুরু হয়। এখন তো সেখানকার মার্কেট ভীষণ জমজমাট।

তবে বৃহৎ বঙ্গদেশে পশুপাখির হাট প্রথমে শুরু হয়েছিল উনিশ শতকের ব্রিটিশ শাসিত ঔপনিবেশিক কলকাতায়। ইংরেজ পৃষ্ঠপোষকতায় সৃষ্ট নব্য-জমিদাররা পূর্ববঙ্গের জমিজমা থেকে আহরিত কাঁচা টাকা মৌজ-মাস্তিতে খরচ করতো কলকাতার বাগানবাড়িতে।

এইসব বাবু বাঙালিদের বিনোদন ছিল মোরগ লড়াই, বাজের যুদ্ধ, পায়রার উড়ালে টাকা-পয়সা বাজি ধরার খেলা। তখন বাবুদের কাছে সরবরাহের জন্য উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের বিখ্যাত ‘পাখির হাট’ বসতো। পরে একসময় তা আরও বিস্তৃতি লাভ করে চলে যায় পাশের বাগবাজার সংলগ্ন গ্যালিফ স্ট্রিটে।

লোকশ্রুতিতে পাখির হাট নামে পরিচিত হলেও আসলে তা উদ্ভিদ এবং পশুরও হাট। শ্যামবাজারের পাঁচ মাথার মোড় থেকে বি.টি. রোড (ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোড) ধরে উত্তরে এগোলে টালা পোস্ট অফিস। সেখান থেকে বাগবাজার বাটার দিকে যেতে রাস্তার ডানদিকে ট্রামলাইন বরাবর বসে এই পাখির হাট। সপ্তাহান্তে ছুটির দিন রোববারের পাখির হাট নজর ও মনোযোগ কেড়ে নেয় রঙিন-বাহারি পাখির কলকাকলিতে।

ঢাকার কাঁটাবন-নীলক্ষেতের মতো স্থায়ী ঠিকানা না পেলেও কলকাতার পাখির হাট পেয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা নির্বিশেষে প্রতি রোববারে সকাল ছ’টার আগেই শুরু হয় হাট। চলে প্রায় বারো ঘণ্টা।

বি.টি. রোড থেকে গ্যালিফ স্ট্রিটে ঢুকলে প্রথমেই নজরে আসে অসংখ্য রঙিন পাখির সম্ভার। দেশি-বিদেশি, চেনা-অচেনা পাখির কিচিরমিচির কানে আসে। নানা জাতের বদ্রী, কত রকমের টিয়া, কতশত পায়রা ইত্যাদি সকলকে ছাড়িয়ে এগোলে নজরে আসবে বিভিন্ন জাতের বিদেশি কুকুরের মেলা।

উত্তর কলকাতার বেলঘড়িয়া থেকে যাতায়াতের সময় এ হাটের মাঝ দিয়ে অনেক বার আসা-যাওয়া করতে হয়েছে। হাটের সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখেছি কুকুর বিক্রির জায়গাটুকুতে। কে না জানে কুকুর মানুষের প্রিয় বন্ধু এবং নির্ভরযোগ্য সহচর। এখান থেকে মানুষ বিপুল অর্থ খরচ করে বিভিন্ন প্রজাতির ছোটো ছোটো কুকুরছানা বাড়ি নিয়ে যান। পরম যত্নে সন্তানস্নেহে লালন-পালন করেন পরিবারের সদস্যের মতো।

আরও এগিয়ে গেলে দেখা যায় বিভিন্ন ছোটো প্রাণি, যেমন খরগোশ, গিনিপিগ, হ্যামস্টার, সাদা ইঁদুর নিয়ে বসেছেন কিছু মানুষ। বিক্রিবাটাও ভালো থাকে এইসব জায়গায়। লোহার খাঁচা, মাছের ট্যাঙ্ক, অ্যাকোরিয়ামের গাছ-সরঞ্জাম-সামগ্রী, হাঁস-মুরগির ছানা এইসব ছাড়িয়ে এগিয়ে দেখা পাওয়া যায় মাছের জায়গা। অসংখ্য প্রজাতির নাম-না-জানা মাছের সম্ভারে ভরপুর জায়গাটি।

জনবহুল রাস্তার দু’ধারে সজ্জিত ট্যাঙ্কগুলোতে ছোটো-বড়ো-মাঝারি মাছের ওঠানামা দেখলে মনে হয় যেন পানিতে রঙের জীবন্ত খেলা চলছে। বিভিন্ন রকমের ফাইটার-গোল্ডফিশ-অস্কার-ফ্লাওয়ার হর্ণ ইত্যাদি সমস্ত মাছের স্টলগুলোতে ভিড়ও প্রচুর।

কেউ মাছ কিনছেন, কেউ জেনে নিচ্ছেন মাছের পরিচর্যার সাতকাহন। এখানেই শেষ নয়। 'মাছ হাট' শেষ হলে শুরু হয় গাছ ও উদ্ভিদের সবুজ জগত । পৃথিবীর মাটি থেকে হারাতে বসেছে যে সবুজ, তা যেন পরম যত্নে লালিত হচ্ছে। অতি যান্ত্রিক, কল্লোলিনী কলকাতা মহানগরীর বুকেও যে গাছপ্রেমী মানুষের সংখ্যা নেহাৎ কম নয়, তা টের পাওয়া যায়।

ঢাকা ও চট্টগ্রামে যেমন চলতি পথের ধারে সাজানো নার্সারিতে নানাপ্রকার সুগন্ধি-গন্ধহীন ফুলগাছ থেকে শুরু করে সবজি বা ফলের গাছ, অর্কিড থেকে শুরু করে ক্যাকটাস-সাকুল্যান্ট, বনসাই থেকে শুরু করে ইন্ডোর প্ল্যান্ট সমস্তরকম গাছের দেখা মেলে, কলকাতার দৃশ্যও তেমনি। পার্থক্য হলো, পশু-পাখির হাটে মাছ আর গাছ-গাছালিও এখানে চলে আসে সগৌরবে, প্রতি সপ্তাহান্তের রোববারে।

নানা বয়সের বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষ ভিড় জমান হাটে। সবাই যে কেনাকাটা করেন, তা নয়। অনেকের জটলা করে আড্ডা মারেন গাছ, মাছ, পশু, পাখি বিষয়ে। অনভিজ্ঞ বা স্বল্প অভিজ্ঞকে শিখিয়ে-বুঝিয়ে দেন পশু ও প্রকৃতি সম্পর্কে। অভিজ্ঞ গাছপালক, মাছ বা পশু-পাখি ব্যবসায়ী জানান নানা নিগূঢ় তত্ত্ব।

পাখির হাটের হৈ চৈ আর হট্টগোলের মাঝে গড়ে ওঠে নজিরবিহীন বন্ধুত্ব, সামাজিক সুসম্পর্ক, চলতে থাকে লেনদেন, ব্যবসাও। হাটেই পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের গাছের জন্য প্রয়োজনীয় মাটি, সার, রকমারি টব, রাসায়নিক ইত্যাদি সমস্ত কিছুই।

কলকাতার সামাজিক কাঠামো ও নাগরিক সংস্কৃতির পরশে বেচা-কেনা, আলাপ-আড্ডা, প্রকৃতি, পাখি, পশু বিষয়ক ব্যবসা ও চর্চায় অবধারিতভাবে চলে আসে মাটির কাপের বিখ্যাত চা। পাওয়া যায় কাটা ফল। আশেপাশে থাকে চলমান ভ্যান ভর্তি খাবারের আয়োজন। ডাবের সুমিষ্ট পানিতে গলা ভিজিয়ে কিংবা খাবারের গুমটিতে দাঁড়িয়ে খিদে মেটানোর পাশাপাশি চলতে থাকে পশু, পাখি, প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক রচনার যাবতীয় উদ্যোগ।

অনেক বার জায়গা বদলালেও ‘পাখির হাট’ তার ভোল বদলে ফেলেনি। প্রাচীন কলকাতার ঐতিহ্য বহন করে এগিয়ে চলেছে বেচাকেনা, দরদাম, কখনো জমাটি আড্ডা, আবার কখনো বা চিরকালীন বন্ধুত্ব। তবে খাঁচায় বন্দি করে দূর-দুরান্ত থেকে আনা পশু, পাখি দেখলে বুকে ব্যথা জাগে। জীবিকার প্রয়োজনে বিক্রেতারা কিছু লাভের আশায় অবোধ পাখি বা পশুদের বিক্রি করে দেওয়ার দৃশ্যও হৃদয় বিদারক।

মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে শিল্প-সাহিত্য-দর্শনে যে পশু ও পাখিদের শাশ্বত অবস্থান, সে আসন চিরস্থায়ী। তাদের খাঁচায় বন্দি দেখলে কষ্ট হওয়াই স্বাভাবিক। আশার কথা হলো, বধ করার জন্য কোনও হন্তারক নয়, পরম মমতায় লালন-পালনের জন্য মানবিক মানুষজনই তাদেরকে ঘরে নিচ্ছেন, পরিবারের একান্ত সদস্য রূপে।

   

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;

আমার হাতের পাখা যেন তাদের আরাম দিচ্ছে!



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

ছবি: বার্তা২৪, তালপাতার পাখা বিক্রি করছে পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ

  • Font increase
  • Font Decrease

আবু বক্কর (৬২)। বয়সের ভারে অসুস্থ হয়ে তিনি এখন পাকা বিক্রেতা। প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষ যখন ঠান্ডা বাতাসের প্রশান্তি খুঁজছে, তখন তিনি গ্রামে গ্রামে গিয়ে তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন।

আবু বক্কর বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্ত্রীসহ ছয় মেয়ে নিয়ে আমার সংসার। তবে মেয়েদের বিয়ে দিতে পেরেছি। কিন্তু বয়সের ভারে ঠিকই আমরা একা থেকে গেলাম। শেষ বয়সে গ্রামে গ্রামে তালপাতা পাখা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। শুধু সংসার না, এই টাকায় আমার পায়ের শিরার ব্যথার ওষুধও কিনতে হয়। একবেলা ওষুধ না খেলে চলতে পারি না।

এদিকে, পুরনো ব্যবসার ঋণের বোঝা আর অন্যদিকে অসুস্থ হয়ে ওষুধসহ সংসারের খরচ। শেষ বয়সে তালপাতার পাখাই আমার একমাত্র জীবনসঙ্গী বলেন আবু বক্কর।

তালপাতার পাখা বিক্রি করছেন আবু বক্কর, ছবি- বার্তা২৪.কম

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার কলাগাছি গ্রামের কবিগানের অনুষ্ঠানে সরেজমিন দেখা যায়, একপাশে তালপাতার পাখা বিক্রি করতে ব্যস্ত ছোট্ট পাঁচ বছরের শিশু মাহমুদুল্লাহ। এই গরমে যখন তার ঘরে থাকার কথা, তখন সে নানা-নানীর সঙ্গে এসে তালপাতার পাখা বিক্রি করছে। কবিগানে বসে থাকা সব শ্রোতার কাছে গিয়ে বলছে, পাখা লাগবে, পাখা! কথা বলতে চাইলেও এ পাশ ওপাশ দিয়ে চলে যাচ্ছে, ক্রেতার কাছে।

এক ফাঁকে তাকে কাছে পেয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, এই বয়সে পাখা বিক্রি করছো কেন! এ প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে মাহমুদুল্লাহ বলে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল ছুটি। তাই, নানা-নানীর সঙ্গে চলে এসেছি মেলায় পাখা বিক্রি করতে। মানুষজন আমার কাছ থেকে যেন বেশি পাখা কেনে (ক্রয়), তাই আমি মেলায় তাদের সঙ্গে এসেছি।

অনেক উৎসাহের সঙ্গে সে বলে, গরমে আমার হাতের পাখায় যেন তাদের আরাম দিচ্ছে! মেলা হলে আমি সেখানে চলে যাই পাখা বিক্রি করতে। ঘোরাঘুরিও হয় আর টাকা ইনকামও হয়। টাকার জন্য বের হয়ে পড়েছি। আমরা পাখা বিক্রি করে পেট চালাই। নানা-নানী বুড়ো হয়ে গেছে। তাই, আমি সঙ্গে এসে তাদের কষ্টটাকে একটু ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।

যেখানে প্রচণ্ড তাপে মানুষজন নাজেহাল, সেখানে ছোট্ট মাহমুদুল্লাহ ছুটে চলেছে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে পাখা বিক্রি করতে। ছোট্ট শিশু হলেও গরম যেন তার কাছে কিছু না, পেটের তাগিদে!

আরেক পাখা বিক্রেতা তালা উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের বাসিন্দা ভদ্রকান্ত সরকার (৭০)। ১২-১৪ বছর ধরে এই পেশায় আছেন তিনি।

চলছে তালপাতার পাখার বিকিকিনি, ছবি- বার্তা২৪.কম

শেষ বয়সে পাখা কেন বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে বার্তা২৪.কমকে ভদ্রকান্ত বলেন, চাল কিনে খেতে হয়। খুব কষ্টের সংসার! ছেলে-মেয়ে আছে। তারা তাদের মতো কাজ করে খায়। মা বাবার বয়স হয়ে গেলে ছেলে আর আমাদের থাকে না। আমরা বৃদ্ধ বয়সে কেমন আছি, সেটা জানার সুযোগ তাদের থাকে না। শেষজীবনটা এভাবে পাখা বিক্রি করে কাটিয়ে দেবো। কী আর করবো! কপালে যা আছে, শেষপর্যন্ত তাই হবে। কপালে ছিল, এমন বৃদ্ধ বয়সে গ্রামে গ্রামে পাখা বিক্রি করতে হবে!

;